মঙ্গলবার ২৫ মার্চ, ২০২৫


অলঙ্করণ : সৌমি দাসমণ্ডল।

সত্যব্রত বলছিলেন, কোন এক মিরাকেলের কথা। শাক্য এবং সুদীপ্ত অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল, সেই মির্যারকেলটির কথা শোনার জন্য। শাক্য মনে-মনে ভাবছিল, সত্যব্রত নিজে উদ্যোগী হয়ে যা করেছেন, তা কেবল ধন্যবাদার্হ নয়, অভাবনীয়। তদন্ত মানে বুদ্ধিহীন গতানুগতিক অনুসন্ধান নয়, পুলিশি তদন্ত অনেকসময়েই বাঁধাধরা পথে চলতে চায়, ভাবতে চায়, ফলে অনেক কেস দিনের পর দিন আনসলভড হয়ে পড়ে থাকে। জনগণের বিশ্বাস উঠে যায় পুলিশের উপর থেকে। তার ফলেই আইন নিজের হাতে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। যাঁরা তদন্ত করেন, তাঁরা তাদের বুদ্ধিটা ব্যবহার করে যখন-যেমন দরকার তেমন পন্থা অবলম্বন করলেই কোন কেসে সাকসেস রেট বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বেশিরভাগ তদন্তকারী তদন্ত করতে গিয়ে খোঁজেন, কে অপরাধটি করল? কেউ জোর দেন কীভাবে করল তার ওপর। কেউ আবার কেন অপরাধটি হল—তার দিকেই আগে নজর দেন। যে-কোনও গোয়েন্দার কাছে এই তিন ‘ক’ অর্থাৎ কে, কীভাবে এবং কেন—অতীব গুরুত্বপূর্ণ। শাক্য নিজে বাঁধাধরা পথে চলে না। ধরা যাক, কোথাও একটা খুন হয়েছে। সাধারণভাবে পুলিশি তদন্তকারী যে-কোন একটি ‘ক’-এর উপর জোর দিয়েই এগোবেন।

শাক্যর মতে, কে খুন করেছে, কীভাবে খুন করেছে এবং কেন খুন করেছের রাস্তায় তো যে-কোন তদন্তকারীকেই যেতে হবে, কিন্তু তার আগে যে ব্যক্তি খুন হয়েছে, তাঁর ‘হয়ার অ্যাবাউটস্’ জানাটা তার নিজের কাছে জরুরি। কারণ, সে মনে করে কোনও একটি অপরাধে পারিপার্শ্বিক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং খুনের ক্ষেত্রে ভিকটিমের জীবনবৃত্তান্ত। তারপরেই আসে কার্যকারণ। সম্ভাব্য কোন-কোন উপায়ে অপরাধটি করা যেতে পারত, সেগুলি ভাবা। কেন একটি ছাড়া অন্য পথে করা গেল না, সেগুলি নিয়ে ভাবলেই বোঝা যাবে, অন্য পন্থাগুলি অবলম্বন করার ক্ষেত্রে অপরাধীর কী-জাতীয় সমস্যা হতে পারত। এইবার সাসপেক্টস্‌দের তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে, কার-কার ওই একটি উপায়ে অপরাধ করার সম্ভাবনা কিংবা সুযোগ রয়েছে। এরপর আগের তালিকা আরও সংক্ষিপ্ত হয়ে এলে, তারপর মোটিভ। তবে বিভিন্ন কেসে বিভিন্নভাবেই ভাবতে হবে। একদিকে এঁড়ে গরুর মতো আটকে থাকলে সেটা তদন্তকে বিপথেই চালিত করতে পারে। সত্যব্রত অবশ্য এই জাতীয় তদন্তের সঙ্গে পরিচিত নন, তিনি নিজের মতো করে নিজের খটকা দূর করতে চেয়েছেন এবং ‘কে?’—এই প্রশ্নকে খুঁজতে-খুঁজতেই পৌঁছে গেছেন তাঁর সম্ভাব্য সাসপেক্টসের কাছে।
সত্যব্রত বললেন, “দেখুন আপনাদের আমি একটা ধারণার কথা স্পষ্ট জানাতে চাই যে, আমার সুদৃঢ় বিশ্বাস, নকল বুধনের কথাটা আগে অপরাধীদের পরিকল্পনার মধ্যে ছিল না। বেদেদের মিনি সার্কাস দেখার পরেই এবং ছেলেদুটির মধ্যে চেহারাগত সাদৃশ্য দেখতে পেয়েই এই পরিকল্পনাটি কোন-কারণে তারা এক্সিকিউট করে। এখন দেখা যাচ্ছে, বুধন আমার হেলথ্‌ সেন্টার থেকে উধাও হয়ে যাওয়ার পরে-পরেই বেদের দলটিও তল্পিতল্পা গুটিয়ে পলাশতলি ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। যতদূর সম্ভব অপরাধীদের দলের পরামর্শেই তারা পার্শ্ববর্তী রাজ্যে চলে গিয়েছে। এখন, আমি যখন ভাবছি, কীভাবে জানা যায় যে, উভয় চেহারার মধ্যে সাদৃশ্য ছিল, তখনই মির্যা কেলটি ঘটে।

পলাশতলীর পাশের গ্রাম শালডুংরির একজন গোবিন্দকে জানায় যে, সে প্রথমদিকে মিনি-সার্কাস দেখেছিল। তখনও ওই বিশেষ খেলাটি দেখানো হত, তবে সেই সময় যে খেলা দেখাত, তার মুখে কোন রংদার মুখোশ-টুখোশ জাতীয় কিছু থাকত না! খবরটা পেয়েই আমি আশায় বুক বাঁধি। আমি গোবিন্দকে নিয়ে যাই লোকটির কাছে। সাধারণ চাষাভুষো মানুষ। বৌ-বাচ্চা নিয়ে মিনি-সার্কাস দেখতে গিয়েছিল। যদিও পঁচিশ টাকা অনেক টাকা তার কাছে, তাও ওই টাকা দিয়ে টিকিট কেটে তারা চারজন সার্কাস দেখেছে। সে নিজে এর আগে শহরে বড় সার্কাস দেখলেও বৌ আর বাচ্চা দু’টি আগে কখন দেখেনি, ফলে তাদের আগ্রহ ছিল বেশি। আর ছেলেদের কখন গর্ভ হয়—সে-কথা শোনেনি বলে ওই বিশেষ ছেলেটিকে দেখার গভীর আগ্রহ ছিল তার। অতএব খুঁটিয়েই দেখেছে। যদি তার ছবি দেখানো হয়, তবে সে চিনতে পারবে জানাতে আমি আসল বুধনের ছবি দেখাই। ছবি দেখেই লোকটি চেঁচিয়ে ওঠে, ‘হ্যাঁ, এই তো সেই ছেলেটি, যে খেলা দেখাচ্ছিল !’ আমি বুঝে যাই, সাধারণভাবে দুজনের চেহারার এই সাদৃশ্য চোখে পড়েছিল বলেই হয়ত অপরাধীদের দলের কেউ কিংবা মূল পাণ্ডার মাথায় ঐ বিশেষ পরিকল্পনাটির উদয় হয়। খুব রিস্কি হয়ে ছিল ব্যাপারটা। কিন্তু এমনভাবে গোটা ঘটনা সাজানো হল যে, কারুর মনে কোন সন্দেহ হল না। এক্ষেত্রে অপরাধীদের সাহায্য করেছিল, আরও একটি বিষয়…!”
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৯১: নুনিয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-১০১: খামখেয়ালির গিরীন্দ্রনাথ

‘কী?’ দুজনেই প্রায় একইসঙ্গে প্রশ্নটা করল সত্যব্রতকে। এই মানুষটির প্রতি তাদের শ্রদ্ধা ও ভক্তি ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

সত্যব্রত বললেন, “আপনারা ভালো করে ভেবে দেখলেই ধরতে পারবেন। যতদূর প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছিলাম, তা হল, বুধন হঠাৎ করে লজ্জায় দিনের আলোয় বেরুনো বন্ধ করে দেয়। রাতের বেলাতেই সে বেরুত। খাওয়াদাওয়া করত, কিন্তু দিনের আলোয় তার শরীরের পরিবর্তনের কারণে সে এত লজ্জা পেত যে, কেউ কখন এসে পড়বে এবং তার এই অবস্থা দেখে হাসাহাসি করবে, এই ভয়ে সে না-কি দিনের বেলা নিজের ঘরে জানালা এঁটে বসে থাকত। বেরুত একেবারে সন্ধ্যার পর…।”
“হ্যাঁ, কিন্তু তাহলেও তো তার ধরা পড়ে যাওয়ার কথা। প্রথমত রাতের বেলায় বুধনের নিজের বাবা-মা তাকে দেখছে, তাঁরা নিজের সন্তান আসল না নকল তা চিনতে নিশ্চয়ই ভুল করবেন না। দ্বিতীয়ত, বুধনের গলার আওয়াজ, চেহারায় যতই সাদৃশ্য থাক, সেটা নিশ্চয়ই এক হবে না! হওয়াটা অসম্ভব, অন্তত নিরানব্বই শতাংশ ক্ষেত্রে। তাহলে?” প্রশ্নটা করল সুদীপ্ত।

শাক্য কিছু বলল না। সে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সত্যব্রতর দিকে।
সত্যব্রত বললেন, “দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর আগে দিই। সুদীপ্তবাবু হয়ত ভুলে গেছেন যে, বুধনের বাবা-মা দুজনেই জানিয়েছিলেন, বুধনের এই পরিবর্তনের পর হ্যাঁ-হুঁ ছাড়া সে প্রায় কোন কথাই বলত না। দিনের বেলাতেও না, রাতের বেলাতেও না। তাঁরা তো ভেবেছিলেন, নিশ্চয়ই কোন অপদেবতার বাতাস লেগেছে। তাতেই ছেলের এই অবস্থা। এ বার আসি প্রথমটার ক্ষেত্রে। বুধনের বাবা চিরকাল সন্ধ্যে থেকে নেশা করে ঘরে ফেরেন। ফলে রাতের বেলা নেশার ঘোরে নকল বুধনকে ধরে ফেলা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। এ বার আসি মায়ের কথায়। এতা আপনারা না-ও জানতে পারেন, কিন্তু আমি জানি, যেহেতু এই ঘটনার আগেই বুধনের মা আমার কাছে এসেছিলেন যে, তাঁকে সন্ধে হলেই কোন ভূতে ধরে, কারণ তিনি কিছু দেখতেই পান না ভালো করে। বুঝতেই পারছেন, এটি হল অ্যাকিউরেট ন্যাকটোলোপিয়া, অর্থাৎ আমরা বাংলায় সাধারণভাবে যাকে রাতকানা রোগ বলি। হ্যাঁ, বুধনের মা সেই রোগেই আক্রান্ত। নেহাৎ অভ্যাসবশত ওই অবস্থায় তিনি ছেলে স্বামীকে খেতে দিতেন, নিজে খেতেন। জানতেই পারেন নি কোনদিন, যাকে নিজের ছেলে বলে খাবার বেড়ে দিচ্ছেন, সে-আসলে অপরাধীদের একজন সহযোগী। একজন মা ও একজন বাবাকে ঠকানোর মতো গর্হিত অপরাধ করছে।”
আরও পড়ুন:

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-১২: ক্যাথরিন ম্যান্সফিল্ড ও মিডলটন মারে, এক ভালোবাসাহীন বিবাহ

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৪৫: ঠাকুরবাড়ির মেয়েরা এবং চলচ্চিত্র

চার্চের ডক্টর না-কি মেডিসিন দিলেই ঠিক হয়ে যাবে! আর গলা অবধি চাদর টেনে বুধন প্রায় সবসময়েই শুয়ে থাকত। তার উপর নুনিয়া স্বীকার করেছে যে, সবসময় সেই-ই বেশি বকবক করে, সেই দিনগুলিতেও করত। আর বুধনদাদা আগেও যেমন হাসিমুখ করে শুনত, সেই ক’দিনও শুনেছে। তবে মুখে হাসি ছিল না!”
“ধরা পড়ার ভয়ে নিশ্চয়ই?” সুদীপ্ত প্রশ্ন করল।
“তা তো বটেই। কোন মানুষের হাসি মুখের শেপটাকে আলাদা করে দেয়। যতই চেহারায় বাইরের আলগা সাদৃশ্য থাক, একমাত্র হাসিই দুটি মানুষের বাহ্যিক সাদৃশ্য সত্ত্বেও তাদের আলাদা করে দেয়। সেই কারণেই নকল বুধন আর যাই করুক, ভুলেও হাসত না। সম্ভবত, তার নিয়োগকর্তা তাকে এই ব্যাপারে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছিল।” সত্যব্রতর হয়ে শাক্যই বুঝিয়ে দিল।
সত্যব্রত বললেন, “হ্যাঁ, তা তো দিয়েছিলই। আটঘাট বেঁধে নেমেছিল তারা। অবশ্য নেমেছিল কেন বলছি, হয়ত এখনও আটঘাট বাঁধছে তারা। যতই দেরি হচ্ছে, হয়তো তারাও বেদের দলটির মতো তল্পিতল্পা গুটিয়ে অন্য রাজ্যে শটকান দেবে!”
শাক্য বললেন, “যেই রাজ্যেই যাক্‌, ওদের ট্রেস করে পাকড়াও করতে আমি আজকেই উদ্যোগ নিচ্ছি। আমি আপনার এখান থেকে ফিরেই লালবাজারে কথা বলব। আমাদের উপযুক্ত কাগজপত্র দিন-দুয়েকের মধ্যে পেয়ে যাবো আশা করি, তখন সদর থেকে ফোর্সের ব্যবস্থা করে এই সুদীপ্তবাবুকে পাঠাবো নকল বুধনসহ গোটা দলটিকেই যাতে পাকড়াও করে আনতে পারেন!”
সুদীপ্ত থ্রিল অনুভব করছিল। তার সার্ভিস লাইফে এখন পর্যন্ত ভিন রাজ্যে তদন্তের জন্য তাকে যেতে হয়নি। এ বার যদি সেই সুযোগ হয়, তাহলে তো ভালোই।
আরও পড়ুন:

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৭৬: সুন্দরবনের পাখি—কুরচি বক

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৩৩: হৃদয়পুরের লক্ষ্যপূরণ ‘কঙ্কাবতীর ঘাট’

সত্যব্রত বললেন, “আপনি আছেন সেটাই ভরসা। লালবাজারের লোক হওয়ায় ওখান থেকে কাগজপত্র বার করে আনতে অসুবিধে হবে না। তবে কারুর পৌষমাস, কারুর সর্বনাশ। আপনি আসায় সুদীপ্তবাবুদের সুবিধা হল, আর অপরাধীদের হল অসুবিধা। অপরাধচক্রের লোকজন ভেবেছিল, এত দূরে রিমোট অঞ্চলে অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে চলা মানুষ, কালাদেওর কাণ্ড ভেবে মেনে নেবে। রাজধানীর পুলিশকর্তাদের মনোযোগ আকৃষ্ট হবে-এমনটি তারা সম্ভবত ভাবেনি। সেজন্য এতদিন তারা নিশ্চিন্ত ছিল। কিন্তু পাভেলবাবুর উপর ওই আক্রমণ, আপনার উপর নজরদারি করার মতো হঠকারিতা করায় তাদের অনেককিছুই ধরা পড়ে যাচ্ছে। তা না হলে ওই জঙ্গলে যে দুষ্কৃতিদের আখড়া, তা কে জানত?”
“আমার তো মনে হয়, আরও অনেককিছু জানা আমাদের বাকি আছে। আমি লালবাজারে জানিয়েছি। সেখান থেকে বড়কর্তার ফোন এতক্ষণে নিশ্চয়ই এসে গিয়েছে ডি.এমের কাছে। বেশিদিন তো আর ওখানে পুলিশ পেট্রোলিং করা সম্ভব নয়। কাল-পরশুর মধ্যে যদি জঙ্গলটা একেবারে নাকাচেকিং-এর ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে খুবই ভালো হয়! আশা করি, প্রশাসন উদ্যোগ নেবে!” শাক্য বলল।
সুদীপ্ত বলল, ‘আমি যতদুর শুনতে পাচ্ছি, আর্মির সাহায্য নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। আসলে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ডেন বলে সন্দেহ করছেন কেউ-কেউ। সেক্ষেত্রে জঙ্গলে ছানবিন করতে ঢোকার সময় আক্রমণ হতে পারে। কে বলতে পারে, ওরা মাটির নীচে মাইন পুঁতে রাখেনি?” —চলবে।
আরও পড়ুন:

গীতা: সম্ভবামি যুগে যুগে, পর্ব-১৪: আমি তাইতে কি ভয় মানি!

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৪৬: আলাস্কার আকাশে অহরহ ব্যক্তিগত বিমান ওঠানামা করে

সত্যব্রত বললেন, “আপনি আছেন সেটাই ভরসা। লালবাজারের লোক হওয়ায় ওখান থেকে কাগজপত্র বার করে আনতে অসুবিধে হবে না। তবে কারুর পৌষমাস, কারুর সর্বনাশ। আপনি আসায় সুদীপ্তবাবুদের সুবিধা হল, আর অপরাধীদের হল অসুবিধা। অপরাধচক্রের লোকজন ভেবেছিল, এত দূরে রিমোট অঞ্চলে অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে চলা মানুষ, কালাদেওর কাণ্ড ভেবে মেনে নেবে। রাজধানীর পুলিশকর্তাদের মনোযোগ আকৃষ্ট হবে-এমনটি তারা সম্ভবত ভাবেনি। সেজন্য এতদিন তারা নিশ্চিন্ত ছিল। কিন্তু পাভেলবাবুর উপর ওই আক্রমণ, আপনার উপর নজরদারি করার মতো হঠকারিতা করায় তাদের অনেককিছুই ধরা পড়ে যাচ্ছে। তা না হলে ওই জঙ্গলে যে দুষ্কৃতিদের আখড়া, তা কে জানত?”
“আমার তো মনে হয়, আরও অনেককিছু জানা আমাদের বাকি আছে। আমি লালবাজারে জানিয়েছি। সেখান থেকে বড়কর্তার ফোন এতক্ষণে নিশ্চয়ই এসে গিয়েছে ডি.এমের কাছে। বেশিদিন তো আর ওখানে পুলিশ পেট্রোলিং করা সম্ভব নয়। কাল-পরশুর মধ্যে যদি জঙ্গলটা একেবারে নাকাচেকিং-এর ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে খুবই ভালো হয়! আশা করি, প্রশাসন উদ্যোগ নেবে!” শাক্য বলল।
সুদীপ্ত বলল, ‘আমি যতদুর শুনতে পাচ্ছি, আর্মির সাহায্য নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। আসলে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ডেন বলে সন্দেহ করছেন কেউ-কেউ। সেক্ষেত্রে জঙ্গলে ছানবিন করতে ঢোকার সময় আক্রমণ হতে পারে। কে বলতে পারে, ওরা মাটির নীচে মাইন পুঁতে রাখেনি?” —চলবে।
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel): পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।

Skip to content