শরৎ মহারাজ শ্রীমাকে সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করতেই মা সারদা বলেন, ‘এসেছ বাবা শরৎ। তোমার জন্যই নিমপাতা পাড়ছি, তুমি খাওয়ার সময় প্রথমপাতে তেতো নিমবেগুন খেতে ভালবাস, জানি’। শ্রীমা সকলকে এবার বললেন, ‘জল খেয়ে সবাই একটু জিরিয়ে নিয়ে স্নান কোরো’।
আলোকের ঝর্ণাধারায়
পর্ব-৪৫: কথার কথা মা নয়—সত্য জননী
সেই যুগে শিক্ষিত মেয়েদেরও অবিবাহিত জীবনযাপন কল্পনাতীত ছিল। মা সারদা মানসিক দিক থেকে সময়ের চাইতে অনেক এগিয়ে ছিলেন। তাই তিনি শুধু উপদেশ দিয়ে নয়, নিজেও দৃঢ়ভাবে তা কার্যে পরিণত করেছেন। সন্ন্যাসিনী গৌরীপুরী মাতার পালিতা কন্যা দুর্গাকে সকলের অমত সত্ত্বেও তিনি ইংরাজি শিখতে পাঠান।
পর্ব-৪৪: সারদা মায়ের মানসিক দৃঢ়তা
শ্রীমার মানসিক দৃঢ়তা তৎকালীন সমাজের প্রেক্ষিতে কতখানি ছিল, তা এই একটি উদাহরণে তুলে ধরা যায়। লোকমান্য তিলক ও রানাডে মহারাষ্ট্রের এক খ্রিষ্টান মিশনারিদের সভায় গিয়েছিলেন। সেখানে সকলের জন্যই ‘চা’ পরিবেশন করা হয়। আর তাই নিয়ে সমাজে কথা উঠল।
পর্ব-৪৩: শ্রীমার বড় ভাইজিরা—নালু ও মাকু
কোনও পল্লীতে কাজের খোঁজে গেলে গৃহস্তরা আতঙ্কে দরজা বন্ধ করে দেয়। এক মুসলমান কয়েকটি কলা এনে মাকে বললে, ‘এগুলি ঠাকুরের জন্য এনেছি, নেবেন কি’? শ্রীমা হাত পেতে বললেন, ‘ঠাকুরের জন্য এনেছ, নেব বৈ কি’।
পর্ব-৪২: শ্রীমার ভাইপো খুদি
শ্রীমার সেজভাই বরদাপ্রসাদের স্ত্রী ইন্দুমতীর কথা থেকে জানা যায় যে, তার বড়ছেলে খুদিরামকে মা সারদা খুদির বদলে ‘ফুদি’ ডাকতেন। সে ফল খেতে খুব ভালোবাসত। তার জন্য শ্রীমা কলকাতা থেকে কখনও বা পার্সেল করে ফল পাঠাতেন।
পর্ব-৪১: মা সারদার অন্তরঙ্গ সেবক শরৎ মহারাজ
যোগানন্দ স্বামী যখন শ্রীমার দেখাশোনা করতেন, কৃষ্ণলাল তখন তাঁর সহকারী ছিলেন। এই স্বামী ধীরানন্দের শুদ্ধা ভক্তির উচ্চ ভাব সম্পর্কে শ্রীমা, স্বামীজি, রাখাল মহারাজ সকলেই বলেছেন। মঠে আগত ভক্তবৃন্দের কল্যাণে তিনি বাবুরাম মহারাজের অনুগামী ছিলেন।
পর্ব-৪০: মা সারদার নিজবাটি
শ্রীমার চিঠি পেয়ে শরৎ মহারাজ যোগীনমা, গোলাপমা ও ভূমানন্দকে সঙ্গে নিয়ে জয়রামবাটি আসেন। প্রায় দু’ মাস এখানে তিনি থাকেন। শরৎ মহারাজ শ্রীমাকে গ্রাম্যজীবনের এই টানাপোড়েনে উৎকণ্ঠিত থাকার বদলে উদাসীন দেখেন।
পর্ব-৩৯: ইন্দুমতী ও সুরবালা
ইন্দুমতী দেবী জানান, শ্রীমা ডুমুরের ডালনা, আমরুল শাক, গিমে শাক, এসব খেতে ভালোবাসতেন। শ্রীমার ছোট ভাই অভয় যখন দেহরক্ষা করে, তাঁর স্ত্রী সুরবালা তখন গর্ভবতী। তিনি সেসময় নিজের বাপের বাড়িতে ছিলেন। শৈশবে মাতৃহারা সুরবালা তাঁর দিদিমা ও মাসিমার কোলে বড় হয়েছিলেন।
পর্ব-৩৮: অভিভাবিকা মা সারদা
বড়ভাই প্রসন্নকুমারের দুই মেয়ে নলিনী ও সুশীলা। রামপ্রিয়া প্রসন্নের স্ত্রী। তখন সারদাজননী জীবিত, যখন শিশুকন্যা নলিনীর জন্ম হয়। সারদা মা পিতৃগৃহে এলে রামপ্রিয়া শিশুকোলে নিয়ে তাঁকে প্রণাম করেন। শ্রীমা রামপ্রিয়াকে জিজ্ঞাসা করেন যে, এই কি প্রসন্নের মেয়ে নলিনী।
পর্ব-৩৭: শ্যামাসুন্দরী দেবীর লোকান্তর গমন
মা সারদার ছোটকাকা নীলমাধব ছিলেন অকৃতদার। বৃদ্ধ বয়সে তিনি তাঁর আদরের সারুর কাছেই থাকতে চাইতেন। শ্রীমাও তাঁকে নিজের কাছে রেখে স্বয়ং পরিচর্যা করতেন। সেই সময়ে আম, ম্যাঙ্গোষ্টিন প্রভৃতি ফলাদি অসময়ে বেশি দাম দিয়ে কেনা হত।
পর্ব-৩৬: সারদা মায়ের ছোটকাকা ও পুত্রপ্রতিম স্বামীজির জীবনাবসান
এই সময় পায়ের একটি ফোঁড়া নিয়ে মা ভীষণ কষ্ট পাচ্ছিলেন। ফোঁড়া পেকে গেলেও তিনি কাউকে ছুঁতে দিতেন না। একবার মন্দির দর্শনে গিয়ে অতি ভিড় দেখে পায়ে চোট লাগার ভয়ে মা চিৎকার করে ওঠেন।
পর্ব-৩৫: মা সারদার ভ্রাতৃবিয়োগ
দুর্গাপুজো উপলক্ষে শ্রীমা মঠে এসেছেন। ঠাকুরঘরের সামনের দেয়ালে টাঙানো ছিল যোগীন মহারাজের একটি তৈলচিত্র। মা কাছে গিয়ে সেই চিত্রটি অনেকক্ষণ ধরে দেখতে লাগলেন। তিনি ঠাকুরঘরে গিয়ে ঠাকুরকে প্রণাম করেই চলে এলেন।
পর্ব-৩৪: মা সারদার সন্তানসম শিষ্যের দেহরক্ষা
সেকালের এক বিধবা মহিলার পক্ষে একাধারে বিদেশিনী ও খ্রিস্টান মেয়েকে স্বীকার করা এক কথায় কল্পনাতীত ছিল। তাই স্বামিজির মনে প্রচ্ছন্ন কৌতুহল ছিল, শ্রীমা তাঁকে কীভাবে নেন দেখার।
পর্ব-৩৩: সারদা মায়ের দার্শনিক দৃষ্টি
শ্রীমা বলেছেন, ‘আমার চিরকালই গঙ্গাবাই’। তাই গঙ্গাতীরে তাঁর জন্য নতুন বাড়ি ‘উদ্বোধন’ তৈরি হয়। ঠাকুরের তিরোভাবের পর তাঁর সন্ন্যাসী সন্তানেরা যখন অসহায় ও দিশাহারা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তখন শ্রীমাই ঠাকুরের সন্ন্যাসী ও গৃহী ভক্তদের সঙ্ঘবদ্ধ করে রক্ষা করেছেন।
পর্ব-৩২: সরকারবাড়ির ছেলেদের সঙ্গে শ্রীমার বুড়ি-বুড়ি খেলা
কৃষ্ণভামিনী দেবীর সনির্বন্ধ অনুরোধে শ্রীমাও তাঁর সঙ্গে কৈলোয়ারে যান। তাঁদের সঙ্গে গিয়েছিলেন কৃষ্ণভামিনী দেবীর মা, গোলাপমা, স্বামী যোগানন্দ, সারদানন্দ, ত্রিগুণাতীতানন্দ, যোগীন মহারাজের বাবা নবীনচন্দ্র চৌধুরী প্রমুখ।