
ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।
অমৃত স্যারের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা দূর্ভাগ্যবশত ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার সময় রজতের উপস্থিত থাকা এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করেছিল যার জন্য সে দুলালকে চাকরি পেতে সাহায্য করেছে। দুলালের বা অমৃত স্যারের পরিবারের সারা জীবনের দায়িত্ব তো সে নিতে পারে না। এই দুনিয়ায় বেঁচে থাকার জন্য প্রতিমুহূর্তের যে লড়াই সেটা তো একেবারেই ব্যক্তিগত। নিজের নিজের লড়াইটা কেউ কারো জন্য লড়ে দিতে পারে না। অথচ পরে দুলাল যখন জানতে পারল যে মালিকানা বদল হয়ে গিয়েছে, আর রজত সেটা সম্ভবত আগে থেকে জানতো এবং সেই কারণেই সে চাকরি থেকে ইস্তাফা দিয়েছিল। সে আগের মালিকদের কোনও কারখানায় গিয়ে আবার নতুন করে চাকরি শুরু করেছে সে খবরটা দুলাল জানতে পারেনি হয়ত-বা জানতে চায়ওনি, কিন্তু তার মনের ভিতরে বদ্ধমূল ধারণা হয়ে গেছে যে মালিকপক্ষের লোকেদের কখনো বিশ্বাস করতে নেই।
নতুন মালিকপক্ষ নানা ধরনের কড়াকড়ি শুরু করল। প্রতিদিন নতুন নতুন ঝামেলা। এসবের মধ্যে মাথা দেবে না একেবারে নিশ্চিত করে ফেলেছিল দুলাল। কিন্তু এড়িয়ে থাকতে পারল না। নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও ওয়েলেস্লি মিলের শ্রমিকপক্ষের প্রতিবাদী মুখ হয়ে ওঠে উঠল দুলাল সেন।
এতদিন শ্রমিক ইউনিয়ন ছিল। সেই ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ করতেন স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা। তারা একইসঙ্গে অনেকগুলো কারখানার সমস্যায় জর্জরিত। ফলে একটা কারখানার সমস্যা নিয়ে মাথা দেবার সময় তাদের নেই। ঠিক এরকম একটা অবস্থায় দুলালের ওপর নির্দ্বিধায় নিজেদের ভবিষ্যৎ সঁপে দিল জুটমিলের হাজার হাজার শ্রমিক। রাজনৈতিক দলেরা দুলাল সেনকে গুরুত্ব দিতে শুরু করল। নতুন মালিকপক্ষ জুট মজদুর ইউনিয়নের নেতা দুলাল সেনকে শ্রমিকদের প্রতিভূ বলে মেনে নিলেন।
এতদিন শ্রমিক ইউনিয়ন ছিল। সেই ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ করতেন স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা। তারা একইসঙ্গে অনেকগুলো কারখানার সমস্যায় জর্জরিত। ফলে একটা কারখানার সমস্যা নিয়ে মাথা দেবার সময় তাদের নেই। ঠিক এরকম একটা অবস্থায় দুলালের ওপর নির্দ্বিধায় নিজেদের ভবিষ্যৎ সঁপে দিল জুটমিলের হাজার হাজার শ্রমিক। রাজনৈতিক দলেরা দুলাল সেনকে গুরুত্ব দিতে শুরু করল। নতুন মালিকপক্ষ জুট মজদুর ইউনিয়নের নেতা দুলাল সেনকে শ্রমিকদের প্রতিভূ বলে মেনে নিলেন।
আরও পড়ুন:

উপন্যাস: আকাশ এখনও মেঘলা, পর্ব-৯: আকাশ এখনও মেঘলা

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১০৭: লুকাবো বলি, লুকাবো কোথায়?
রবিবার দুপুরবেলাটা ফাদার স্যামুয়েল এর নিজস্ব বিশ্রামের সময়। এই একটা দিন ফাদার তার মোবাইল খুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় উঁকি দেন। তবে ফাদারের ভালোলাগার বিষয়ে খুব সীমিত গান আর ক্রিকেট। ফাদার নিয়মিত গান শোনেন। পুরনো বাংলা গান হিন্দি গান আর এই সময়ের বিশেষ কিছু ভালো লাগা গান। বিশেষ বিশেষ কিছু শিল্পীর। রবিবার দুপুরবেলায় বারান্দার আরাম কেদারায় বসে কানে হেডফোন গুঁজে ফাদার স্যামুয়েল অনেকের মতোই তাঁর মোবাইল ফোনে আধুনিক সমাজমাধ্যমের গানবাজনার পোস্ট দেখেন। সেদিন দু-দুটো পোস্ট দেখে কিছুটা অবাক হলেন ভীষণ হাসিও পেল।
আরও পড়ুন:

এই দেশ এই মাটি, ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব-৫৪: রবীন্দ্রনাথের ‘মুকুট’ ত্রিপুরার ইতিহাসাশ্রিত গল্প

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬৯: সে এক স্বপ্নের ‘চাওয়া পাওয়া’
এখনকার গানবাজনার ‘তামঝাম’ অনেক। শব্দটা হিন্দিতে খুব ব্যবহার হয়, ভুল না হলে এটা পারস্য থেকে আসা শব্দ এখন বাংলাতে এর স্বচ্ছন্দ প্রবেশ ঘটেছে আক্ষরিক অর্থ হল ফ্রিল মানে পোশাকের ওপর লেসের কুঁচি সৌন্দর্য আড়ম্বর বাড়ানোর জন্য যা পোশাকের উপর লাগানো হয়, না থাকলেও প্রয়োজন মেটে। গানেও তেমনি এখন অনেক বাজনদার লাগে। অনেক বড় বড় ঢাউস স্পিকার লাগে স্টেজের ঠিক নিচে একটা বড় টেবিলে নানা রঙের নানা নব লাগানো একটা মিক্সার লাগে। এ সব না থাকলে লোকে আসবে না। কিন্তু এই নানা আয়োজনের একটা খরচা আছে সেটা বাঁচাতে–অনুষ্ঠানের একটু ভেরিয়েশনের পরিকল্পনা করা হল।
আরও পড়ুন:

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৯৩: সাত-সহেলি

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-১০৬: ভারতীয় পারিবারিক জীবনে স্নেহময় জ্যেষ্ঠর ভূমিকায় রামচন্দ্র কতটা আকর্ষণীয়?
এখনকার শিল্পীদের ভাঁড়ারে স্বকীয় গান কম। পরিচিতি বলতে পুরনো দিনের শিল্পীদের কালজয়ী গানের মিউজিক ও মিক্সারে ঝমাঝম পুনঃপরিবেশনা। তাই এখন অনুষ্ঠানে গান কম গল্প বেশী। অনেক আগে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের এক গানের অনুষ্ঠানের কথা মনে পড়ে ফাদার স্যামুয়েলের। কলামন্দিরে কোনও একটা চ্যারিটি অনুষ্ঠান, দুটি অর্ধে দুজন কিংবদন্তী শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আর মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। দুই শিল্পীই তাঁদের পারিশ্রমিক অনেক কম করেছেন। তবুও দুজনেই প্রায় সওয়া এক ঘণ্টা করে টানা গান গাইলেন।
আরও পড়ুন:

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৪৮: সকালবেলাই হাঁটতে হবে?

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৯o: মা সারদার কথায় ‘ঈশ্বর হলেন বালকস্বভাব’
মানবেন্দ্র তবু দু-একটি মজার কথা বললেন, হেমন্তবাবুর মুখে গান ছাড়া আর একটিও শব্দ নেই। সেই হাতা গোটানো বাংলা শার্ট আর ধুতি। সামনের স্ট্যান্ডে হারমোনিয়াম। আলোর চকমকি নেই, হ্যালো হ্যালো করে দিকবিদিক হেলিয়ে দেওয়া সাউন্ড ব্যালেন্স নেই। অগণিত মিউজিসিয়ান নেই, যেটা আছে সেটা সেই ব্যারিটোন কণ্ঠস্বরে নিখুঁত নিটোল সুরের আবেদন। —চলবে।
* জিৎ সত্রাগ্নি (Jeet Satragni) বাংলা শিল্প-সংস্কৃতি জগতে এক পরিচিত নাম। দূরদর্শন সংবাদপাঠক, ভাষ্যকার, কাহিনিকার, টেলিভিশন ধারাবাহিক, টেলিছবি ও ফিচার ফিল্মের চিত্রনাট্যকার, নাট্যকার। জিৎ রেডিয়ো নাটক এবং মঞ্চনাটক লিখেছেন। ‘বুমেরাং’ চলচ্চিত্রের কাহিনিকার। উপন্যাস লেখার আগে জিৎ রেডিয়ো নাটক এবং মঞ্চনাটক লিখেছেন। প্রকাশিত হয়েছে ‘জিৎ সত্রাগ্নি’র নাট্য সংকলন’, উপন্যাস ‘পূর্বা আসছে’ ও ‘বসুন্ধরা এবং…(১ম খণ্ড)’। এখন লিখছেন বসুন্ধরা এবং…এর ৩য় খণ্ড।