সোমবার ৩১ মার্চ, ২০২৫


ছবি: সংগৃহীত।

এতো গেল সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের গল্প আর আমাদের কথা। এ বার বলি সারা দিনের কথা আর সারা রাজ্যের কথা। গ্রীষ্মকাল এখানে যেমন আনন্দের সময় মজা করার সময়, ঠিক তেমন ভাবে সবচেয়ে বেশি কাজ করার সময়ও এই গ্রীষ্মকালটুকুই। গোটা রাজ্যে তখন বেশ একটা সাজো সাজো রব। সক্কলে ব্যস্ত। কেউ ঘুরতে ব্যস্ত তো কেউ কাজে ব্যস্ত। বাড়িতে শখের বাগানে কেউ তখন ফুল গাছ লাগাচ্ছে, কেউ আবার ছিপ নিয়ে যাচ্ছে মাছ ধরতে। আবার কেউবা বেরিয়ে পড়েছে নিজের সাধের ছোট্ট নৌকো বা উড়ানটা নিয়ে; হয় অবসর যাপনের উদ্যেশ্যে আর না হয় অ্যাডভেঞ্চারের উদ্যেশ্যে।
উড়ানের কথা যখন উঠল তখন বলে রাখি, যে এখানে লোক জনের কাছে একটা ছোট নিজস্ব বিমান থাকা খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। যেহেতু রাস্তাঘাট এখনও অনেক জায়গাতেই ভালো ভাবে তৈরি হয়নি সেহেতু অনেক ক্ষেত্রেই ওই বিমানই ভরসা কোথাও যাওয়ার জন্য। সে সব গল্পে পরে আসছি।
আরও পড়ুন:

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৫১: রোজই দেখি আলাস্কা পর্বতশৃঙ্গের বাঁ দিকের চূড়া থেকে সূর্য উঠতে

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৯o: মা সারদার কথায় ‘ঈশ্বর হলেন বালকস্বভাব’

এখান একটা মজার গল্প বলি। ফেয়ারব্যাঙ্কসে অধ্যাপনার চাকরি নেওয়ার পরে সেটা আমার প্রথম গ্রীষ্মকাল। বাড়ি গিয়ে সদ্য বিয়ে করে এসেছি। স্ত্রী তখন এসে পৌঁছয়নি অভিবাসন (ইমিগ্রেশন) পদ্ধতিতে কিছু কাজ কর্মের জন্য। শহরের এদিক-ওদিক আমি ঘুরে বেড়াচ্ছি। একদিন ইন্টারনেটে দেখলাম শহরের প্রান্তে বিমানবন্দরের দিকে যাওয়ার রাস্তায় একটা সুন্দর পিজা খাওয়ার রেস্তরাঁ আছে। তারা নাকি কাঠের উনুনে পিজা তৈরি করে। এর জন্য নাকি তাতে একটা অদ্ভুত কিন্তু সুন্দর পোড়া গন্ধ বেরোয়, যা কিনা সাধারণ পিজার থেকে একটু আলাদা।
আরও পড়ুন:

উপন্যাস: আকাশ এখনও মেঘলা, পর্ব-৯: আকাশ এখনও মেঘলা

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-১০৭: সুভদ্রাপুত্র অভিমন্যু ও দ্রৌপদীর পঞ্চ পুত্র, কে বা কারা রইলেন পাদপ্রদীপের আলোয়?

আমি ভোজন এবং ভ্রমণ—এই দুয়ের ব্যাপারেই একটু রসিক। কাজেই যেতেই হবে তাদের পিজা খাওয়ার জন্য। বিকেল হতে না হতেই বেরিয়ে পড়েছি রেস্তরাঁর সন্ধানে। সেখানে গিয়ে দেখি অদ্ভুত ব্যাপার। রেস্তরাঁর পাশেই গাড়ি আর ছোট ছোট বিমানগুলো সব পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে। যেমন ছোটছোট দোকানের সামনে সারিসারি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়, ঠিক তেমন গাড়ির সঙ্গে বিমানগুলো ও দাঁড়িয়ে আছে। আবার একটা সাইন বোর্ডে বড় বড় করে লেখা আছে ‘প্লিজ ডু নট পার্ক ইওর কার ইন ফ্রন্ট অফ এয়ারপ্লেনস’। অর্থাৎ ‘দয়া করে আপনার গাড়িটি বিমানের সামনে রাখবেননা’।
আরও পড়ুন:

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৯৩: সাত-সহেলি

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১০৭: লুকাবো বলি, লুকাবো কোথায়?

কি অদ্ভুত ব্যাপার। বহু ছোট বড় শহরে ঘুরতে গিয়েছি, কিন্তু এমনটা কোথাও দেখিনি। আমার বেশ মজা লাগল। তারপর একটু হেঁটে সামনের দিকে গিয়ে দেখি পিজার রেস্তরাঁর পাশের রাস্তাটা সোজা গিয়ে উঠছে উড়ানের রানওয়েতে। মানে উড়ানগুলো ওই খান দিয়ে আস্তে আস্তে গিয়ে সোজা রানওয়েতে গিয়ে ওঠে। আর তারপর উড়ে যায় যেখানে যাওয়ার দরকার সেখানে বা হয়তো অজানার উদ্দেশ্যে। বেশ কয়েকটা রানওয়ে আছে সেখানে যেমন সাধারণ বিমান বন্দরে থাকে। কিন্তু এই রানওয়েগুলো তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র ছোট এবং হালকা বিমান ওড়ানোর জন্য।
আরও পড়ুন:

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৪৮: সকালবেলাই হাঁটতে হবে?

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৭০: বিচারক

একদম আমার দিকের রানওয়ের পাশেও রয়েছে একটা বড় হ্যাঙ্গার (গাড়ির যেমন গ্যারেজ, তেমন বিমান রাখার জায়গাকে বলে হ্যাঙ্গার)। সেখানেও থরে থরে দাঁড়িয়ে রেয়েছে ছোট ছোট নিজস্ব বিমান। হয়তো যাদের বাড়ি এখন থেকে একটু দূরে তারা এখানেই রেখে দেয় নিজেদের বিমান। সাধারণ রাস্তা দিয়ে তো আর বিমান নিয়ে আসা যায় না। আবার একটু ভালো করে লক্ষ্য করে দেখলাম যে খোলা রানওয়েগুলোকে পেরিয়ে আরও সামনের দিকে মাইল দুয়েক চলে গেলে গিয়ে পর্ব আমাদের পরিচিত ফেয়ারব্যাঙ্কস বিমানবন্দরের রানওয়েতে যেখানে আমরা সবসময় ওঠা নামা করি। বুঝলাম যে এই রেস্তরাঁটা বিমানবন্দর এলাকারই পিছন দিকে। মানে সামনের দিকটা সাধারণ বাণিজ্যিক বিমান ওঠানামার জন্য আর পেছন দিকটা নিজস্ব বিমান ওঠানামার জন্য ব্যবহৃত হয়।
* রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা (Mysterious Alaska) : ড. অর্ঘ্যকুসুম দাস (Arghya Kusum Das) অধ্যাপক ও গবেষক, কম্পিউটার সায়েন্স, ইউনিভার্সিটি অব আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কস।

গল্প ও উপন্যাস পাঠানোর নিয়ম

‘সময় আপডেটস’ -এর এই বিভাগে যাঁরা গল্প ও উপন্যাস পাঠাতে চান তাঁরা ছোটদের ও বড়দের আলাদা আলাদা গল্প পাঠাতে পারেন। বুঝতে সুবিধার জন্য ইমেলের ‘সাবজেক্ট’-এ বিভাগের উল্লেখ করবেন। ছোটদের গল্পের জন্য ১০০০ শব্দ ও বড়দের গল্পের জন্য ১০০০-১৫০০ শব্দের মধ্যে পাঠাতে হবে ইউনিকোড ফরম্যাটে। সঙ্গে ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর দিতে ভুলবেন না। গল্প বা উপন্যাস নির্বাচিত হলে যোগাযোগ করা হবে। ইমেল: samayupdatesin.writeus@gmail.com


Skip to content