বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


অলঙ্করণ : সৌমি দাসমণ্ডল।

পূষণ আন্দাজ বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ ‘অরণ্যবার্তা’র অফিসের সামনে এসে অপেক্ষা করছিল। রিমিতাও তার সঙ্গে আছে। মালাকারবাবুকে ফোন করে অনুমতি নিয়েই তারা এসেছে। মালাকার বলেছেন, স্থানীয় অঞ্চলে তারা ঘুরতেই পারে। তাতে পুলিশের আপত্তি নেই। কিন্তু স্টেশন লিভ করার ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আছে। তাও হয়তো ক’দিন পরে তুলে নেওয়া হবে। শুনে তারা যে স্বস্তি পেয়েছে বলাই বাহুল্য। প্রাইভেট অফিসে পরিস্থিতির কথা বলে আর এক সপ্তাহ ছুটি মঞ্জুর করানো গিয়েছে। কিন্তু আরও বেশি দেরি হলে কাজটা যাবে দুজনেরই। মাথার মধ্যে একটা দুশ্চিন্তা সবসময়েই ঘুরপাক খাচ্ছে। হয়তো আর-একটা চাকরি জোগাড় হয়ে যাবে দুজনেরই, কিন্তু সেটা যতদিন না হচ্ছে, ততদিনের টেনশন কীভাবে নেবে তারা?

আজ রোদের তাত খুব বেশি। রিমিতার পরনে সাদা কুর্তি, চোখে সানগ্লাস। পূষণ নিজে পরে আছে সাদা শার্ট আর গ্রে-কালারের লিনেন ট্রাউজার। তার চোখেও রোদচশমা। তারা দাঁড়িয়ে আছে ‘অরণ্যবার্তা’র অফিসের উল্টোদিকে একটি গাছের ছায়ায়। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করে এই অফিসে তারা এসেছে। রিসর্টে ‘অরণ্যবার্তা’র কপি ছিল। তাতে যোগাযোগের জন্য একটি নাম্বারও দেওয়া আছে। কিন্তু সেই নাম্বারে ফোন করলেও সেই কল কেউ রিসিভ করেননি। রিপ্লাইও দেননি কেউ। কিন্তু পূষণের জিদ চেপে গিয়েছিল, যেভাবেই হোক ভবানীপ্রসাদ রায়ের রহস্য সে ভেদ করবেই।

পূষণ ভেবেছিল, হোক-না স্থানীয় কাগজ, কিন্তু যেহেতু এই অঞ্চলে সার্কুলেশন ভালই, অন্তত ‘অরণ্যবার্তা’র যে-ক’টি সংখ্যা সে দেখেছে, তাতে লেখা আছে, সার্কুলেশন বাইশ হাজার, অতএব সে ভেবেছিল, এত যাদের সার্কুলেশন, তাদের অফিসটা নিশ্চয়ই বড় রাস্তার ধারে কোথাও হবে। অবশ্য এ-সমস্ত ব্যাপারে তার অভিজ্ঞতা একবারেই নেই, সে নিজেও সে-কথা স্বীকার করবে। সে অনুমান মাত্র করেছিল। কিন্তু বাস্তবে তার অনুমান মেলেনি। ‘অরণ্যবার্তা’র অফিস বড় রাস্তায় তো নয়ই, গলিরাস্তাতেও নয়। গলির গলি তস্য গলির মধ্যে একখানা ভাঙাচোরা দোতলা বাড়ি, তারই একতলায় ‘মা দুর্গা সহায় প্রেস’ এবং তারই লাগোয়া একখানি ঘরে ‘অরণ্যবার্তা’র অফিস। বাইরে সাইনবোর্ড ঝুলছে। তার অবস্থাও জরাজীর্ণ। একতলার ঘরগুলি অর্থাৎ প্রেস ও কাগজের অফিস বন্ধ থাকলেও দোতলার টানা বারান্দায় মলিন একখানা শাড়ি, মেয়েদের কিছু পোশাক, ছেলেদের শার্ট, প্যান্ট ইত্যাদি ঝুলছিল।
তবে দোতলায় ওঠবার কোন সিঁড়ি সামনের দিকে খুঁজে পায়নি পূষণ। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর একজন বৃদ্ধ দোতলা থেকে উঁকি মেরে খুব তিরিক্ষে মেজাজ নিয়ে বললেন, “কে আপনারা? ষাঁড়ের মতো চেঁচাচ্ছেন কেন? কী চাই?”
তাকে ষাঁড় বলা? পূষণ হতভম্ব হয়ে গেল। ষাঁড় কখনও এত সুন্দর দেখতে হয়। রিমিতা হেসে ফেলেছিল।
বৃদ্ধ তাতে আরও রেগে গিয়ে বললেন, “হাসছেন কেন মা জননী ? আমি কি হাসির কথা কিছু বলেছি?”
রিমিতা কোনরকমে আত্মসংবরণ করে বলল, “আরে না না। আমি হাসছি অন্য কারণে!”
বৃদ্ধ ভ্রূ কুঞ্চিত করে বললেন, “কী কারণ?”

রিমিতা বানিয়ে বলল, “আমরা অনেকক্ষণ ধরে ডাকাডাকি করে ভেবেছিলাম, এখানে কেউ থাকে না, আমাদের ভুল ঠিকানা দিয়েছে। হয়তো ‘অরণ্যবার্তা’র এটা পুরানো অফিস। আমরা চলে যাব ভাবছি, এই সময়েই আপনি এসে পরায় আমরা চমকে গিয়েছিলাম। যে বাড়িকে ভেবেছি কেউ থাকে না, সে-বাড়িতে আপনাকে দেখতে পাব ভাবিনি তো, সেই কথা ভেবে নিজের বোকামিতে নিজেই হাসছিলাম!”

বৃদ্ধ লোকটি তাতে একটু থমকে গেলেন। তাঁর মনে হল না যে দোতলায় যেখানে শাড়ি-জামা ঝুলছে, সেখানে কেউ থাকে না, এ-কথা ভাবাটা কেবল মূর্খের পরিচয় নয়, পাগলের লক্ষণ। কিন্তু তাঁর মাথায় সম্ভবত ও-কথা এল না। তিনি বললেন, “থাকবে না কেন? আমরা তো থাকি। এ-বাড়ি তো আমারই। নীচের তলা ভাড়া দেওয়া। তাও আজ কয়েকমাস হল ভাড়া পাই না। এ-মাসে না পেলে ওই প্রেস আর কাগজের গুষ্টির শ্রাদ্ধ করব। একেবারে টান মেরে সব কিছুকে বড় রাস্তায় ফেলে দিয়ে আসব! আমাকে তো চেনে না, আমিও দীনেন সাধু। আমার টাকা হজম করবে এত সাধ্যি কারুর হয়নি এখনও!” বলে ফোঁস ফোঁস করে রাগ প্রকাশ করলেন।

পূষণ নমস্কার করে বলল, “আমাকে মাফ করবেন সাধু বাবু। আসলে আমরা কলকাতা থেকে এসেছি। লোকাল কাগজগুলির উপরে একটা ফিচার লিখব বলে। তা ‘অরণ্যবার্তা’র কপি দেখলাম হোটেলের লবিতে, দেখেই চলে এসেছি। আমরা ভেবেছিলাম বড় রাস্তার উপরে হবে, কিন্তু এতটা ভিতরে তা তো জানতাম না। তার উপর এসে দেখি কেউ কোথাও নেই। সাড়ে দশটা বেজে গেছে, এখনও কাগজের অফিসের ঝাঁপ খুলল না, সে-জন্যই গলাটা একটু চড়ে গেছে আর কী!”
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৮৫: সত্যব্রতর অনুমান

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৬৯: সুন্দরবনের পাখি—পানকৌড়ি

সাধু বাবু গলাটা সামান্য নরম করে কিন্তু ঝাঁঝ মিশিয়ে বললেন, “ভারি তো ওই কাগজ! তার উপরে আবার কী লিখবেন? ও কাগজ চলে না-কি? পুশ-সেল করে যা একটু হয়, বাকি কাগজ ডাঁই হয়ে পড়ে থাকে, পরে কিলো দরে বিক্রি করে দেয়। এদিকে চারদিকে রটিয়ে বেড়ায়, তাদের না-কি এত বিক্রি, অত বিক্রি! আরে তোদের যদি অতই বিক্রি হবে, তাহলে এখানে এই রকম একটা অফিস নিয়ে পড়ে আছিস কেন? যা না, ভালো জায়গায় বেশ বড়-সড় অফিস বানা না! হ্যঁ! সে না-কি বানাচ্ছে আর! বাড়িভাড়ার টাকা মেটাতে পারে না, সে কি-না বানাবে ঝাঁ চকচকে অফিস! কুঁজোরও সাধ জাগে চিৎ হয়ে শোবার, গামোছারও শখ হয় ধোপাবাড়ি যাওয়ার!”
“তাহলে আজ কি অফিস খুলবে না? রোজ কাগজ বার করেন কী করে এনারা?” পূষণ জিজ্ঞাসা করল।
“রোজ কাগজ বার হলে তবে তো? এ-কাগজ তো সাপ্তাহিক। দেখেন নি ভালো করে, ভেবেছেন রোজ বেরোয়। তাহলে তো কবেই ঝাঁপ বন্ধ করে দিতে হতো। হপ্তায় হপ্তায় বেরোয় সেটাই রক্ষে!”
“তবে কী হবে? ওনারা কেউ কী আসবেন না?”
“অপেক্ষা করুন। সাপ্তাহিক কাগজ হলেও রোজ এসে বসে থাকে। কী যে খুটুর-খুটুর করে। কয়েকজন আসে-যায়, তারা শুনি খবর জোগাড় করে। তা মিথ্যে বলব না, আমাকেও ফ্রিতে দেয় একখানা কাগজ, বাড়িওয়ালাকে না দিয়ে যাবে কোথায়? তা সে কাগজে স্থানীয় খবরাখবর থাকে। পড়তেও মজা লাগে। কার ঘরের হাঁস-মুরগি চুরি হয়েছে, কার গাছের লাউ, কোথায় কার বাইক দুর্ঘটনা হয়েছে—এইসব ফলাও করে বেরোয়!”
“কালাদেওর কথা বেরোয় না?” রিমিতা ভালোমানুষের মতো মুখ করে প্রশ্ন করল।
আরও পড়ুন:

বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি: বাংলা বুকের ভিতরে

পর্দার আড়ালে, পর্ব-৬২: সত্যজিৎ রায় রুপটান শিল্পীকে বলেছিলেন, উত্তমকুমারের কোনও মেকআপ করার

তার প্রশ্ন শুনে বৃদ্ধ কিন্তু থমকে গেলেন। বললেন, “ওই নাম মুখে আনবেন না মা জননী! অদৃশ্য থেকে তিনি চারদিকে ঘুরে বেড়ান তো। কোথায় কে তাঁর নাম করছে, কোথায় কে তাঁর নামে কী বলছে, সব শুনতে পান। যদি দেখা দেন তাহলে রক্ত না নিয়ে ছাড়েন না। যা সব হচ্ছে বছরখানেক ধরে। সপরিবারে কোনরকমে আছি। ভয়ে সিঁটিয়ে থাকি। সন্ধ্যের পরে আর দরকার পড়লেও বেরোই না। দোতলায় ওঠার সিঁড়ি দরজা একেবারে বন্ধ করে দিই টাইট করে। কলকাতায় থাকেন তো। এ-সব আপনারা কেমন করে জানবেন?”
“হ্যাঁ, সেই জন্যই তো এসেছিলাম। এখানকার নতুন কিছু যদি থাকে, তা নিয়ে বেশ লেখা যাবে!” মিথ্যে বলল পূষণ।
“স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করবেন। অনেককিছু জানতে পারবেন। আর যদি পিশাচপাহাড়ে কালাদেওর যে পুরোহিত আছেন, তাঁর কাছে যান, আরও অনেক কিছু জানতে পারবেন!”
“আচ্ছা, ধন্যবাদ। এখন কাগজের অফিসের লোকজন এলেই বাঁচি। প্রেসটাও তো বন্ধ!”
“কাগজের লোক আর প্রেস আলাদা-আলাদা জনের বলে ভাবলেন না-কি? তা নয় কিন্তু। একই লোক। যে এই অরেস চালায়, সেই সুধাবিন্দু সাঁতরা, সে নিজেই প্রেস-মালিক, আবার কাগজেরও মালিক। প্রেস খুললে কাগজের অফিসও খুলবে, আর কাগজের অফিস খুললে প্রেসও খুলবে। ও-প্রেসে তো আর কেবল কাগজ ছাপা হয় না। বিয়ের নেমতন্নের কার্ড থেকে হ্যান্ডবিল, লিফলেট—সব ছাপা হয়। ওই কাজ করেই তো যা-হোক্‌ কিছু আয় হয়। নাহলে কবে ও কাগজ বন্ধ হয়ে যেত। প্রেসের মেশিন বিকিয়ে যেত।”
রিমিতা বলল, “মেশিন মানে ? এখন তো কম্পিউটারে কম্পোজ হয়। এখানে হয় না?”
“কম্পিউটার কিনবে তার পয়সা কোথায়? পুরানো মেশিনে হরফ সাজিয়ে কম্পোজ হয়। সেকেলে মেশিন দেখেননি?”
আরও পড়ুন:

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-৮: জোসেফ কনরাড ও জেসি কনরাড—আমি রূপে তোমায় ভোলাব না…/৩

মুভি রিভিউ: মামুটির মাল্টিস্টারার ছবি ‘সিবিআই ৫: দ্য ব্রেন’ গতানুগতিক থ্রিলার

রিমিতা ও পূষণ পরস্পর পরস্পরের মুখের দিকে তাকাল। এ-ব্যাপারে তাদের যে একেবারেই অভিজ্ঞতা নেই, কী করে বলে? তারা একসঙ্গে ঘাড় নাড়ল এমন করে, যার অর্থ হ্যাঁ-ও হতে পারে, না-ও হতে পারে।
“তাহলে বুঝুন! সেই মেশিন! যাই হোক, অনেক দেরি হয়ে গেল আমার কথা বলতে বলতে। পুজোয় বসেছিলাম। আপনাদের হাঁকডাক শুনে না-বেরিয়ে এসে পারলাম না। খামোকা দেরি করে দিলেন। এত কথা বলেন না আপনারা? কলকাতার মানুষগুলিই এই, কথা আর কথা! কথার ফুলঝুরি ছুটছে যেন মুখে। এই আমাকে দেখুন। এত কম কথা বলি যে, লোকে ভাবে দীনেন সাধু বোবা! তা বলুন তো, বেশি কথা বলতে যাবই বা কেন ? কথার জন্য ট্যাক্স লাগে না বলে ? যাক, আর হাঁকডাক না করে অপেক্ষা করুন। বারোটার দিকে হয়তো চলে আসবে। নাহলে দুটো-আড়াইটে !” বলে আর প্রত্যুত্তরের অপেক্ষা করলেন না, দ্রুত সরে পড়লেন স্বল্পভাষী দীনেন সাধু।

পূষণ রিমিতার দিকে তাকিয়ে বলল, “একটা স্পেসিমেন মাইরি! চিড়িয়াখানায় রাখার মতো পিস একখানা। বারোটায় আসতে পারে, নাহলে দুটো-আড়াইটে! যেন বারোটার পরেই দুটো বাজে! সামান্য ভদ্রতাটুকু নেই। মফস্‌সলের মানুষ তো অন্য রকম হয় বলেই জানি।”

“আমার মনে হল, পাছে আমরা ওনার দোতলায় গিয়ে বসবো বলি, সেই ভয়েই পালিয়ে গেলেন। বসলেই তো ভদ্রতা করে চা-বিস্কিট দিতে হত। কাপড়জামার যা অবস্থা, তাতে খুব একটা স্বচ্ছল নয় বলেই মালুম হচ্ছে। এ-অবস্থায় ওনার এমন রিঅ্যাকশান আনএক্সপেক্টেড নয়। ছাড়ো। আমরা বরং ওই গাছতলায় গিয়ে অপেক্ষা করি।”বলে রিমিতা উল্টদিকের একটা ঝাঁকড়া গাছ দেখাল। কী গাছ দুজনের কেউই জানে না। তারা অত গাছ বিশারদ নয়। তবে শাল কিংবা পলাশ গাছ চেনে, এ-গাছটা তার কোনটাই নয়। তবে বেশ ঝাঁকড়া গাছ, নিচে মনোরম ছায়া আছে।
আরও পড়ুন:

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৮১: তথাকথিত পরিচয়হীন প্রতিভার মূল্যায়ন কী শুধুই সাফল্যের নিরিখে সম্ভব?

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯৭: কী করে গল্প লিখতে হয়, ছোটদের শিখিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ

সেই গাছের তলায় দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে পূষণের পা ব্যথা হয়ে গেল। বারবার সে মোবাইলে সময় দেখছে। রিমিতাও মোবাইল ঘাঁটছিল। নাহলে সময় কাটাবে কী করে ?
পূষণ একবার বলেছিল, “চল এদিক-ওদিক ঘুরে আবার আসব না হয়।”
রিমিতা বলল, “তাতে তোমারই সমস্যা বাড়বে। ধর যদি মালিক-সম্পাদক যিনিই হোন না এলেন, তারপর বেশিক্ষণ থাকলেন না, চলে গেলেন, তখন? আমাদের আজকের এত কষ্ট তো মাঠে মারা যাবে!”
পূষণ স্বীকার করল এদিকটা সে ভাবেনি। তবে সে বলল, “শুনলে না, সাধু বাবু কী বললেন! প্রেসে কাগজ ছাড়াও আরও অনেক কিছু ছাপানো হয়। সেটাই সাঁতরাবাবুর মূল পেশা। কাগজ বার করা বোধহয় নেশা। অনেকে আছে না, দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার জোগাড়, লোকে কেনে না এমন কাগজ, তা-ও কাগজ বার করা চাই-ই চাই! সেই রকম আর কী!”
রিমিতা রাজি হল না। মাথা নাড়ল। “নাহ্‌, যাই হোক্‌, আমার মন সায় দিচ্ছে না। এখানেই ওয়েট করি।”
“কিন্তু খিদে পেলে?” পূষণ নিষ্পাপ মুখ করে প্রশ্ন করল।
“নিজের হাত-পা চিবিয়ে খাও। ব্যাগে এনার্জি বার আছে সেটা খাবে। খেতে এসেছ না-কি?”
“আমার এনার্জি বার অন্য,” ইয়ার্কি করল পূষণ, “যদি দাও অনন্তকাল অপেক্ষা করতে পারি সম্পাদক না মালিক কে জানে, সেই লোকটির জন্য। দেবে?”
রিমিতা এত জোরে চিমটি কাটল পূষণের হাতে যে সে “আউচ্‌” বলে চেঁচিয়ে উঠল।
তখনই একটি বাইক এসে দাঁড়াল ‘অরণ্যবার্তা’র অফিসের সামনে। —চলবে।
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel): পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।

Skip to content