অলঙ্করণ: সৌমি দাসমণ্ডল।
“আপনি তাহলে বলছেন, সবকটি ঘটনাই কালাদেওর কীর্তি। আই মিন অলৌকিক ঘটনা? তাহলে তো এই কেসফাইলটা ক্লজ করে দিতে হয়। সরকারের পুলিশ প্রসাশনের দায়িত্বও অনেক কমে যায়। ঘটনা যা ঘটে, তার অর্ধেক যদি অলৌকিকের নামে চালিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে আমাদেরই সুবিধা, কি বলেন?”
কথাটা যাঁকে জিজ্ঞাসা করল শাক্য, সেই থানার অফিসার-ইন-চার্জ অভিষেক মালাকার তখন দরদর করে ঘামছিলেন। লালবাজার থেকে যে গোয়েন্দা পাঠানো হবে, ঘুণাক্ষরেও কেউ তাঁকে জানায়নি। আগে জানলে ভালো রকম এক্সিউজ তৈরি করে রাখতে পারতেন তিনি। সুদীপ্তর দিকে আড়চোখে তাকালেন। রাগ হচ্ছিল তাঁর। কোন কম্মের নয়। যদি এই অফিসার আসার আগেই কেসগুলি ব্রিফ করে সলভ্ করে ফেলতে পারত, তাহলে আজ এমন বেকায়দায় পড়তে হত না তাঁকে। শাক্য সিংহ নামের তরুণ গোয়েন্দার নাম তিনি শুনেছেন। মাত্র কয়েকবছর আগেই পুলিশ বিভাগে যোগ দিয়ে অতি অল্প সময়ে বেশ কয়েকটি কেস সলভ করে নাম করেছেন। সেই জন্যই অতি অল্প সময়ে এমন অল্প বয়স সত্ত্বেও লালবাজারের প্রভুদের নজরে পড়েছেন আর তাঁরাও তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দিয়েছেন উচ্চাসনে। তা না হলে আজ এত বছর সফলতার সঙ্গে কাজ করার পর অভিষেক মালাকারকে কেউ মুখের উপর হম্বিতম্বি করতে পারে ? কলিযুগ ! ঘোর কলি!
কথাটা যাঁকে জিজ্ঞাসা করল শাক্য, সেই থানার অফিসার-ইন-চার্জ অভিষেক মালাকার তখন দরদর করে ঘামছিলেন। লালবাজার থেকে যে গোয়েন্দা পাঠানো হবে, ঘুণাক্ষরেও কেউ তাঁকে জানায়নি। আগে জানলে ভালো রকম এক্সিউজ তৈরি করে রাখতে পারতেন তিনি। সুদীপ্তর দিকে আড়চোখে তাকালেন। রাগ হচ্ছিল তাঁর। কোন কম্মের নয়। যদি এই অফিসার আসার আগেই কেসগুলি ব্রিফ করে সলভ্ করে ফেলতে পারত, তাহলে আজ এমন বেকায়দায় পড়তে হত না তাঁকে। শাক্য সিংহ নামের তরুণ গোয়েন্দার নাম তিনি শুনেছেন। মাত্র কয়েকবছর আগেই পুলিশ বিভাগে যোগ দিয়ে অতি অল্প সময়ে বেশ কয়েকটি কেস সলভ করে নাম করেছেন। সেই জন্যই অতি অল্প সময়ে এমন অল্প বয়স সত্ত্বেও লালবাজারের প্রভুদের নজরে পড়েছেন আর তাঁরাও তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দিয়েছেন উচ্চাসনে। তা না হলে আজ এত বছর সফলতার সঙ্গে কাজ করার পর অভিষেক মালাকারকে কেউ মুখের উপর হম্বিতম্বি করতে পারে ? কলিযুগ ! ঘোর কলি!
কোথায় পুরানা মোকামের জঙ্গলে বাইক উদ্ধারের ঘটনায় ব্যস্ত ছিলেন, তারই মধ্যে আবার রিসর্টে দু’-দুটো খুন! আর এখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জবাবদিহি করতে হচ্ছে তাঁকে। সুদীপ্ত মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে। তার মুখ দেখে মনের অবস্থা বোঝার উপায় নেই। দেখে মনে মনে আরও চটে গেলেন অভিষেক! অভিশাপ দিয়ে বললেন, দাঁড়া, তোর টার্ম আসুক, তোকে কেমন বলির পাঁঠা করি বসে বসে দেখ!
শাক্য বিরক্ত হচ্ছিল। এই অফিসার সম্পর্কে সে খোঁজখবর নিয়েছে, একেবারে নিষ্কর্মা। বসে বসে ছাইভস্ম কবিতাচর্চা করেন। আর কোথাও কোন ঘটনা ঘটলে সেকেন্ড অফিসারকেই পাঠিয়ে দেন বেশিরভাগ সময়। কোন কেস হাতে এলে অকুস্থলে দায়সারা ছানবিন করে একটা রিপোর্ট কোনমতে দেন। অধিকাংশ কেসই সলভ হয় সুদীপ্ত নামক চৌকস এবং কর্মপটু সেকেন্ড অফিসারটির গুণে। সেই কারণেই অভিষেক যখন বলল, “আজ্ঞে স্যার, এই যা ঘটছে, তা কি আটকানো আমাদের কাজ? এ তো প্রভু কালাদেওর লীলা! আমরা পুলিশ। মানুষ কিছু করলে আমরা ধরতে পারি, কিন্তু ভূতে কিংবা দেবতায় কিছু করলে আমরা তার কী করতে পারি?” তখন শাক্য না জ্বলে উঠে পারেনি। পাভেলকে সে আগেই পাঠিয়ে দিয়েছিল এখানে। তার মনে হয়েছিল, পাভেল এখানে আগে এলে এবং ছদ্মপরিচয়ে এলে, তার তদন্ত করতে সুবিধা হবে। কারণ, অনেকসময় পুলিশ জানলে লোকেরা সতর্ক হয়ে যায়, শেষে পুলিশকে সত্য কথা বলে বিপদে পড়বো না কি? এমনটি ভাবে লোকে। ভাবনাটা ভুলও নয় অনেকক্ষেত্রে। তদন্তের প্রয়োজনে আপাত সাক্ষীদাতাকে কিংবা অকুস্থলে ছিল এমন কাউকে নানা সময় ডেকে তথ্য মিলিয়ে নেওয়া হয়, নতুন তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এতে সাক্ষী বিরক্ত হতেই পারে কিংবা ভয়ও পেতে পারে। অনেকসময় পুলিশ যে নিজেদের পিঠ বাঁচাতে নিরীহ সাক্ষীকেই অপরাধী প্রমাণ করে ছাড়ে, সে তো আর মিথ্যে নয়?
শাক্য বিরক্ত হচ্ছিল। এই অফিসার সম্পর্কে সে খোঁজখবর নিয়েছে, একেবারে নিষ্কর্মা। বসে বসে ছাইভস্ম কবিতাচর্চা করেন। আর কোথাও কোন ঘটনা ঘটলে সেকেন্ড অফিসারকেই পাঠিয়ে দেন বেশিরভাগ সময়। কোন কেস হাতে এলে অকুস্থলে দায়সারা ছানবিন করে একটা রিপোর্ট কোনমতে দেন। অধিকাংশ কেসই সলভ হয় সুদীপ্ত নামক চৌকস এবং কর্মপটু সেকেন্ড অফিসারটির গুণে। সেই কারণেই অভিষেক যখন বলল, “আজ্ঞে স্যার, এই যা ঘটছে, তা কি আটকানো আমাদের কাজ? এ তো প্রভু কালাদেওর লীলা! আমরা পুলিশ। মানুষ কিছু করলে আমরা ধরতে পারি, কিন্তু ভূতে কিংবা দেবতায় কিছু করলে আমরা তার কী করতে পারি?” তখন শাক্য না জ্বলে উঠে পারেনি। পাভেলকে সে আগেই পাঠিয়ে দিয়েছিল এখানে। তার মনে হয়েছিল, পাভেল এখানে আগে এলে এবং ছদ্মপরিচয়ে এলে, তার তদন্ত করতে সুবিধা হবে। কারণ, অনেকসময় পুলিশ জানলে লোকেরা সতর্ক হয়ে যায়, শেষে পুলিশকে সত্য কথা বলে বিপদে পড়বো না কি? এমনটি ভাবে লোকে। ভাবনাটা ভুলও নয় অনেকক্ষেত্রে। তদন্তের প্রয়োজনে আপাত সাক্ষীদাতাকে কিংবা অকুস্থলে ছিল এমন কাউকে নানা সময় ডেকে তথ্য মিলিয়ে নেওয়া হয়, নতুন তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এতে সাক্ষী বিরক্ত হতেই পারে কিংবা ভয়ও পেতে পারে। অনেকসময় পুলিশ যে নিজেদের পিঠ বাঁচাতে নিরীহ সাক্ষীকেই অপরাধী প্রমাণ করে ছাড়ে, সে তো আর মিথ্যে নয়?
আরও পড়ুন:
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৩৬: ছবিঘর অন্ধকার
রহস্য উপন্যাস: হ্যালো বাবু!, ঘোমটা, পর্ব-১: বাবুর জীবনসঙ্গী বলতে কেবল একটি কাকাতুয়া
শাক্য একবার কড়া চোখে অভিষেকের দিকে তাকিয়ে বলল, “আপনি চুপ করে থেকে যে পুলিশ-বিভাগের সময় নষ্ট করছেন, তা নিশ্চয়ই জানেন?”
অভিষেক ঢোঁক গিলে বললেন, “হ্যাঁ স্যার, জানি! আসলে এই কেসটা তো একটু আলাদা স্যার, সেই জন্যই বলছিলাম অমন কথা। আর আমি একা নই, এখানকার লোকাল পাবলিকদেরকেও জিজ্ঞাসা করবেন, তারাও মনে করে এই সব ঘটনা কালাদেওর কীর্তি!”
“আপনাকে লোকাল লোকদের কথার উপর ভিত্তি করে তদন্ত করতে বলা হলেও, কোন সিদ্ধান্তে আসতে বলা হয় নি অফিসার ! আর আপনি সেটা জানেন। যে-কোন পুলিশই জানে। পালন করে কি না সে আলাদা কথা !”
“আজ্ঞে। আমি আসলে আমাদের সেকেণ্ড অফিসার সুদীপ্তের উপর নির্ভর করেছিলাম স্যার। এখন তার খেসারৎ দিতে হচ্ছে। জিজ্ঞাসা করুন ওকে!” এমনভাবে আক্ষেপ করলেন অভিষেক, যেন সুদীপ্তই তাঁর জীবনের যাবতীয় দুঃখকষ্ট ইত্যাদির জন্য দায়ী।
অভিষেক ঢোঁক গিলে বললেন, “হ্যাঁ স্যার, জানি! আসলে এই কেসটা তো একটু আলাদা স্যার, সেই জন্যই বলছিলাম অমন কথা। আর আমি একা নই, এখানকার লোকাল পাবলিকদেরকেও জিজ্ঞাসা করবেন, তারাও মনে করে এই সব ঘটনা কালাদেওর কীর্তি!”
“আপনাকে লোকাল লোকদের কথার উপর ভিত্তি করে তদন্ত করতে বলা হলেও, কোন সিদ্ধান্তে আসতে বলা হয় নি অফিসার ! আর আপনি সেটা জানেন। যে-কোন পুলিশই জানে। পালন করে কি না সে আলাদা কথা !”
“আজ্ঞে। আমি আসলে আমাদের সেকেণ্ড অফিসার সুদীপ্তের উপর নির্ভর করেছিলাম স্যার। এখন তার খেসারৎ দিতে হচ্ছে। জিজ্ঞাসা করুন ওকে!” এমনভাবে আক্ষেপ করলেন অভিষেক, যেন সুদীপ্তই তাঁর জীবনের যাবতীয় দুঃখকষ্ট ইত্যাদির জন্য দায়ী।
অভিষেকের মুখে নিজের নাম শুনে সুদীপ্ত নড়েচড়ে বসল এতক্ষণে। শাক্য সিংহ নামের লোকটি, কতই বা বয়স হবে, তার চেয়ে বছর পাঁচ-ছয়ের বড় হবে হয়তো, তাকে জরিপ করছে শ্যেনচক্ষু দিয়ে। কী ভাবছে কে জানে ? ও.সি-র কথায় বিশ্বাস করলে তার নিজের কপালে দুঃখ আছে। দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলল সুদীপ্ত।
শাক্য বলল, “সুদীপ্ত কী করেছেন না-করেছেন তার হিসেব আমি পরে বুঝে নেবো। আগে আপনি আপনার হিসেব দিন। আচ্ছা, এতক্ষণ আপনি কোথায় ছিলেন ?”
“কেন স্যার! বললাম যে, পরশু ঘটে যাওয়া বিচ্ছিরি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নিরুদ্দিষ্ট বাইকটা পাওয়া গিয়েছে মোকামার জঙ্গলে—এই খবর পেয়ে আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে দৌড়াই। এই সুদীপ্তকেও সঙ্গে করে নিয়ে যাই। অল্প বয়স। এই বয়সটাই তো শেখার, কী বলুন স্যার?” বলে একটু অন্তরঙ্গ হওয়ার চেষ্টা করলেন অভিষেক। কিন্তু শাক্য সিংহের চিঁড়ে ভিজল না।
শাক্য বলল, “অবান্তর প্রশ্ন করবেন না! আপনি ওই পুরানা মোকামের জঙ্গলে ইনভেস্টিগেট করার সময় আপনার কাছে ফোন যায়নি কোন?”
“আজ্ঞে স্যার, গিয়েছিল তো ফোন। থানা থেকে ফোন করে জানিয়েছিল, আপনি এসেছেন। পুছতাচ করছেন কী সব ! সে জন্যই তো ছুটে চলে এলাম স্যার। অলিম্পিকে সুযোগ পেলে… ”
কথা থামিয়ে দিল শাক্য, বলল, “আর কোন ফোন যায় নি আপনার ফোনে?”
“আজ্ঞে এসেছিল ফোন। পিশাচ পাহাড় রিসর্টের ম্যানেজার কাপাডিয়া ফোণ করেছিল স্যার। সেখানে না কি দু’-দুটো লাশ পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে একজন ওই রিসর্টেই কাজ করত, আর একজন ট্যুরিস্ট পার্টি। আপনি এসেছেন, আপনার সঙ্গে আলাপ করে-কথা বলে আমি সেখানে যাব!”
শাক্য বলল, “সুদীপ্ত কী করেছেন না-করেছেন তার হিসেব আমি পরে বুঝে নেবো। আগে আপনি আপনার হিসেব দিন। আচ্ছা, এতক্ষণ আপনি কোথায় ছিলেন ?”
“কেন স্যার! বললাম যে, পরশু ঘটে যাওয়া বিচ্ছিরি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নিরুদ্দিষ্ট বাইকটা পাওয়া গিয়েছে মোকামার জঙ্গলে—এই খবর পেয়ে আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে দৌড়াই। এই সুদীপ্তকেও সঙ্গে করে নিয়ে যাই। অল্প বয়স। এই বয়সটাই তো শেখার, কী বলুন স্যার?” বলে একটু অন্তরঙ্গ হওয়ার চেষ্টা করলেন অভিষেক। কিন্তু শাক্য সিংহের চিঁড়ে ভিজল না।
শাক্য বলল, “অবান্তর প্রশ্ন করবেন না! আপনি ওই পুরানা মোকামের জঙ্গলে ইনভেস্টিগেট করার সময় আপনার কাছে ফোন যায়নি কোন?”
“আজ্ঞে স্যার, গিয়েছিল তো ফোন। থানা থেকে ফোন করে জানিয়েছিল, আপনি এসেছেন। পুছতাচ করছেন কী সব ! সে জন্যই তো ছুটে চলে এলাম স্যার। অলিম্পিকে সুযোগ পেলে… ”
কথা থামিয়ে দিল শাক্য, বলল, “আর কোন ফোন যায় নি আপনার ফোনে?”
“আজ্ঞে এসেছিল ফোন। পিশাচ পাহাড় রিসর্টের ম্যানেজার কাপাডিয়া ফোণ করেছিল স্যার। সেখানে না কি দু’-দুটো লাশ পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে একজন ওই রিসর্টেই কাজ করত, আর একজন ট্যুরিস্ট পার্টি। আপনি এসেছেন, আপনার সঙ্গে আলাপ করে-কথা বলে আমি সেখানে যাব!”
আরও পড়ুন:
কলকাতার পথ-হেঁশেল, পর্ব-১১: আমার নাম, তোমার নাম— তুং নাম, তুং নাম!
ইতিহাস কথা কও, পর্ব-১৫: দেবদেউল কথা ও গোসানিমারি কামতেশ্বরী মন্দির
“আপনি সেখানে যেতে যেতে যদি অপরাধী ঠাণ্ডা মাথায় সব তথ্য-প্রমাণ লোপাট করে দেয়, তখন কি আপনি সত্যের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারবেন?”
“আজ্ঞে স্যার! কী বলছেন? আমি তো আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্যই প্রথম এলাম!”
“সেটাই তো আপনি ভুল করেছেন! যেখানে অপরাধ ঘটেছে, সেখান থেকে খবর পেয়েও আপনার তদন্তে দেরি করে যাওয়ার কোনও জাস্টিফিকেশন হয় না! আমি এখানে বসে থাকলেও কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু যেখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, সেখানে আগে না গিয়ে এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে লেম এক্সিউজ দিচ্ছেন?”
“আজ্ঞে স্যার! কী বলছেন? আমি তো আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্যই প্রথম এলাম!”
“সেটাই তো আপনি ভুল করেছেন! যেখানে অপরাধ ঘটেছে, সেখান থেকে খবর পেয়েও আপনার তদন্তে দেরি করে যাওয়ার কোনও জাস্টিফিকেশন হয় না! আমি এখানে বসে থাকলেও কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু যেখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, সেখানে আগে না গিয়ে এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে লেম এক্সিউজ দিচ্ছেন?”
অভিষেক বুঝতে পারলেন, ভুল যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। ছুটল বাণ কিএ যতনে নিবার? তিনি তাড়াহুড় করে টুপিটা মাথায় এঁটে বললেন, “আজ্ঞে, এই তো এক্ষুনি যাচ্ছি স্যার! ফিরে এসে আপনাকে রিপোর্ট দেবো স্যার!”
“দিতেই হবে। কারণ, ওই কেসের ইনভেস্টিগেশন অফিসার আমি। কিন্তু এখন এই মুহূর্তে আপনি কোথাও যাবেন না। থানা সামলান। আমি সুদীপ্তবাবুকে নিয়ে যাচ্ছি।”
“আজ্ঞে স্যার !” অভিষেক যেন নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছেন না। লালবাজারের পুলিশের সঙ্গে তদন্তে তিনি যাবেন না, যাবে সুদীপ্ত ?
“কথাটা বুঝতে পেরেছেন ?”
“আজ্ঞে হ্যাঁ স্যার !”
“তাহলে আসুন সুদীপ্ত, পিশাচ পাহাড় রিসর্টে যাওয়া যাক !”
সুদীপ্ত বলল, “স্যার! আমি আমাদের স্যারের মুখে পিশাচ পাহাড় রিসর্টের কথা শুনে সেখানে রামদাসকে পাঠিয়ে দিয়েছি। সে আপাতত সেখানে আছে এবং স্পটে কেউ যাতে না যায়, সেটা দেখছে। আমি তাকে এমনতাই নির্দেশ দিয়ে পাঠিয়েছিলাম। সে আমাকে সেখানে পৌঁছে কল করে সব জানিয়েছে। চিন্তা করবেন না। আমরা যাওয়ার আগে কেউ সেখানে যাবে না। ইন ফ্যাক্ট আমি কিন্তু সেখানেই যেতে চেয়েছিলাম। আমাকে সেখানে নামিয়ে দিলে এতক্ষনে বেশ কয়েকজনের এজেহার নিয়ে নিতে পারতাম হয়তো!”
“দিতেই হবে। কারণ, ওই কেসের ইনভেস্টিগেশন অফিসার আমি। কিন্তু এখন এই মুহূর্তে আপনি কোথাও যাবেন না। থানা সামলান। আমি সুদীপ্তবাবুকে নিয়ে যাচ্ছি।”
“আজ্ঞে স্যার !” অভিষেক যেন নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছেন না। লালবাজারের পুলিশের সঙ্গে তদন্তে তিনি যাবেন না, যাবে সুদীপ্ত ?
“কথাটা বুঝতে পেরেছেন ?”
“আজ্ঞে হ্যাঁ স্যার !”
“তাহলে আসুন সুদীপ্ত, পিশাচ পাহাড় রিসর্টে যাওয়া যাক !”
সুদীপ্ত বলল, “স্যার! আমি আমাদের স্যারের মুখে পিশাচ পাহাড় রিসর্টের কথা শুনে সেখানে রামদাসকে পাঠিয়ে দিয়েছি। সে আপাতত সেখানে আছে এবং স্পটে কেউ যাতে না যায়, সেটা দেখছে। আমি তাকে এমনতাই নির্দেশ দিয়ে পাঠিয়েছিলাম। সে আমাকে সেখানে পৌঁছে কল করে সব জানিয়েছে। চিন্তা করবেন না। আমরা যাওয়ার আগে কেউ সেখানে যাবে না। ইন ফ্যাক্ট আমি কিন্তু সেখানেই যেতে চেয়েছিলাম। আমাকে সেখানে নামিয়ে দিলে এতক্ষনে বেশ কয়েকজনের এজেহার নিয়ে নিতে পারতাম হয়তো!”
আরও পড়ুন:
অমর শিল্পী তুমি, পর্ব-১২: ওই স্মৃতি ভুলতে কি আর পারি…
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-১৭: মা সারদার ভগবতী সাধনা
“বাঃ! আপনি দেখছি সব কাজ গুছিয়ে করেন?”
“আমাকে ‘আপনি’ করে বলবেন না স্যার। আমি বয়সে এবং পদমর্যাদাতেও আপনার অনেক নীচে।”
“তুমি বলার জন্য পদমর্যাদা দরকার হয় না সুদীপ্ত, অন্তরঙ্গতা দরকার হয়। সেই জায়গায় গেলে অবশ্যই আমি আপনাকে ‘তুমি’ করেই বলবো! এখন যাওয়া যাক। যেতে যেতে আমরা এই বিষয়ে কথা বলব। এখানে তো অভিষেকবাবু রইলেন, তিনি নিশ্চয়ই থানার ব্যাপারটা সামলে নিতে পারবেন। কী বলছেন, পারবেন না?” শেষ প্রশ্নটা অভিষেক মালাকারকে করল শাক্য।
অভিষেক আরক্তিম মুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কোনরকমে কাষ্ঠ হাসি হেসে বললেন, “আজ্ঞে স্যার, কেন পারব না? এই করে করেই তো জীবন কেটে গেল, মাথার চুল পাকা হয়ে গেল! কপাল! সবই আমার কপাল!”
শাক্য বলল, “ঠিক আছে, আপনি সামলান। আমি আর সুদীপ্তবাবু ঘটনাস্থলে যাই। সুদীপ্তবাবু আর আমি দুজনেই শিক্ষা নিয়ে আসি। অল্প বয়স কী না!” বলে গটগট করে বেরিয়ে এল। পিছু পিছু সুদীপ্ত।
অভিষেক একটা কাঁচা খিস্তি দিলেন মনে মনে, তারপর কালাদেওকে স্মরণ করে এই বুরবাক্দের যথোচিত শাস্তিবিধানের প্রার্থনা করলেন। মেজাজটাই খিঁচড়ে গেছে তাঁর। এখন কবিতাও আসবে না! সারা দিনটাই নষ্ট! —চলবে।
“আমাকে ‘আপনি’ করে বলবেন না স্যার। আমি বয়সে এবং পদমর্যাদাতেও আপনার অনেক নীচে।”
“তুমি বলার জন্য পদমর্যাদা দরকার হয় না সুদীপ্ত, অন্তরঙ্গতা দরকার হয়। সেই জায়গায় গেলে অবশ্যই আমি আপনাকে ‘তুমি’ করেই বলবো! এখন যাওয়া যাক। যেতে যেতে আমরা এই বিষয়ে কথা বলব। এখানে তো অভিষেকবাবু রইলেন, তিনি নিশ্চয়ই থানার ব্যাপারটা সামলে নিতে পারবেন। কী বলছেন, পারবেন না?” শেষ প্রশ্নটা অভিষেক মালাকারকে করল শাক্য।
অভিষেক আরক্তিম মুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কোনরকমে কাষ্ঠ হাসি হেসে বললেন, “আজ্ঞে স্যার, কেন পারব না? এই করে করেই তো জীবন কেটে গেল, মাথার চুল পাকা হয়ে গেল! কপাল! সবই আমার কপাল!”
শাক্য বলল, “ঠিক আছে, আপনি সামলান। আমি আর সুদীপ্তবাবু ঘটনাস্থলে যাই। সুদীপ্তবাবু আর আমি দুজনেই শিক্ষা নিয়ে আসি। অল্প বয়স কী না!” বলে গটগট করে বেরিয়ে এল। পিছু পিছু সুদীপ্ত।
অভিষেক একটা কাঁচা খিস্তি দিলেন মনে মনে, তারপর কালাদেওকে স্মরণ করে এই বুরবাক্দের যথোচিত শাস্তিবিধানের প্রার্থনা করলেন। মেজাজটাই খিঁচড়ে গেছে তাঁর। এখন কবিতাও আসবে না! সারা দিনটাই নষ্ট! —চলবে।
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel): পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।