শনিবার ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫


অঞ্জন ল্যাপটপের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। জরুরি অফিসের কাজ করছিল সে। এখানে আসার পরে যেভাবে ফেঁসে গেল, তাতে তার খুব ক্ষতি হয়ে গেল। অনেকগুলি মিটিং, অ্যাসাইনমেন্ট ইত্যাদি ছিল, বেশকিছু ক্যানসেল করতে হয়েছে, বাকিগুলি নিজের অপারগতার কথা বলে অনলাইনে সারতে হয়েছে। এইমুহূর্তেও জরুরি ফাইলের কাজ করতে করতে সে তার পি.এ-র সঙ্গে জরুরি ডিসকাসশন করছিল। রিসর্টের কিচেন রাতে বন্ধ হওয়ার আগে সে বেশি করে ব্ল্যাক কফির অর্ডার দিয়েছিল। তারা ফ্ল্যাস্কভর্তি ব্ল্যাক কফি দিয়ে গিয়েছে। কফিমগে করে সি কফি ঢেলে মাঝেমধ্যে অল্প-অল্প করে চুমুক দিচ্ছিল সে। ঘরে এসি চলছিল মৃদুভাবে। অঞ্জনের পরনে একখানা টিজ্‌, আর বক্সার শর্টস। পাশেই একখানা র্যাচপার রাখা, যদি ঠান্ডা লাগে, গায়ে দেবে।

এইসব সময়ে তার মন চাইছিল, কোনও-একজন মেয়ের সান্নিধ্য। অঞ্জন কাজ করবে আর সে তার স্তনের নিবিড় স্পর্শ দিয়ে তার ভিতরের পৌরুষকে জাগিয়ে তুলবে। হ্যাঁ, মেয়েটিকে নগ্নিকা হতে হবে। কলকাতা হলে এমন মেয়ে চাইলেই পেত সে। তাদের সবাই সে কলগার্ল তা নয়, তবে সোস্যাইটি-গার্ল। ওয়ান-নাইট-স্ট্যাণ্ড রিলেশন যে সে কত করেছে, তার ইয়ত্তা নেই। খুব ভালোও বাসে সে ওই ধরণের সম্পর্ক। কোন দায় নেই, দায়িত্ব নেই, কেউ কাউকে আর-একদিন দেখা করো, শপিং-এ নিয়ে চলো, ব্যাগ ধরো, কী গিফট্‌ দাও বলবে না। দু’জনেরই একটাই চাহিদা—শরীর! তার বিনিময় হয়ে গেলেই খেল খতম, পয়সা হজন! উন্মেষার সঙ্গেও সেইরকম একটা প্ল্যান ছিল এককালে, কিন্তু তখন সে বোঝেনি, উন্মেষা খুব শক্তপোক্ত একজন মেয়ে। সে অন্যদের মতো নয় আর ওয়ান-নাইট-স্ট্যাণ্ড রিলেশন তো সে বিলিভই করে না! করলে, আজ এই মুহূর্তে রিসর্টের একই রুম শেয়ার করেও তারা ব্রহ্মচারী-ব্রহ্মচারিণীর জীবন কাটাত না!
মাঝে-মাঝে বিরক্ত লাগে অঞ্জনের। মনে হয়, বেড়াতে এসে একই রুমে পাশাপাশি বেডে শুয়ে-শুয়ে যদি বেড়ার উল্টোদিকের ভেড়া গুণে রাত কাটাতে হয়, তার চেয়ে বড় অপরাধ আর কিছুতে হয় না। এর চেয়ে যদি জোর খাটানো যেত, তাহলে হয়তো সাময়িক অশান্তি হত, কিন্তু উন্মেষার অ্যাটিটিউডটাকে ভাঙা যেত। রাতের পর রাত বেডে এপাশ-ওপাশ করেছে অঞ্জন। সেক্সলাইফে এত দীর্ঘ ফাস্টিং এর আগে কখন করে নি সে। এই জন্য আরও হাঁফিয়ে উঠছিল সে। এই বয়সেও পুরুষকে যদি আপনা হাত জগন্নাথ করতে হয়, তার চেয়ে খারাপ আর কিছুতে হয় না। আর কাউকে করতে হলেও অঞ্জন সাক্সেনাকে যে কখন এরকম করতে হবে, তা সে একেবারেই ভাবেনি। কিন্তু ওই যে, প্রেম! এর আগে যে-সব নারীরা তার জীবনে এসেছে, তাদের ভুলে যেতে এক দিনও লাগেনি তার। কিন্তু উন্মেষাকে যেদিন জোর খাটাতে গিয়ে প্রতিহত হয়েছিল, দেখেছিল গোপন এক আগুনঝরা মেয়ে আছে উন্মেষার বুকের ভিতর, সেদিন সে প্রথমে বিস্মিত হয়েছিল, প্রত্যাখ্যানের ক্রোষ, তাও আবার নিজের পি.এ-র কাছে, ক্রমশ বদলে গিয়েছিল আকর্ষণে, সেই আকর্ষণ এখন তীব্র ভালোবাসার রূপ নিয়েছে। অঞ্জন সাক্সেনা যেন মনে-মনে এমন নারীকেই চেয়েছিল, যে কেবল শয্যাসঙ্গিনী হবে না, হবে আ ভেরি ট্র্যু লাইফপার্টনার—ফ্রেন্ড, ফিলোসপফার অ্যান্ড গাইড। এ-কারণেই এত দূরে বেড়াতে এসে, এক রুমে থেকেও সে নিজেকে সংযত রেখেছে। যদিও সে জানে, কলকাতায় ফিরে গেলেই তাকে কাউকে ডাকতে হবে। কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী জেলা জুড়ে নামে-বেনামে ছড়িয়ে থাকা কোন ফ্ল্যাট কিংবা বাড়িতে এক-দু’রাতের উদ্দাম সেক্স না করলে সে হয়ত পাগল হয়ে যাবে এরপর।
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৯৭: ভাগ নুনিয়া, ভাগ

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-১০৫: রবীন্দ্রনাথ ভয় পেতেন মহর্ষিদেবকে

এতটাও বিরক্ত হত না হয়ত সে, কিন্তু এখানে এসে এমন সব কাণ্ড ঘটল, তারপরে অনিল ওইভাবে চলে গেল, পুলিশ তাদের সাসপেক্টস ভেবে রিসর্টবন্দি করে রাখল এই নজরবন্দি হয়ে থাকাটা আর প্রতিমুহূর্তে ভয়ে-ভয়ে থাকাটাই তার না-পসন্দ। কিন্তু থাকতে হচ্ছেই। পুলিশ কি কখন নিরপরাধকে অপরাধী ভেবে পাকড়াও করে না? যদি সে-রকমই করে তাকে? এইজন্যই সে চেয়েছিল, আগাম জামিনের আবেদন করতে! তাদের ফার্মের ল-ইয়ার আছেন, অন্য ভালো ল-ইয়ারও জানা আছে তার। তাঁরা তার আর উন্মেষার আগাম জামিন করিয়ে এখান থেকে নিয়ে যেতে যতদূর সম্ভব চেষ্টা করবেন।

একটু আগেই সে-সব নিয়ে একপ্রস্থ কথা বার্তা হয়ে গেছে তার আর উন্মেষার মধ্যে। শুনে কিন্তু উন্মেষা বাধা দিয়েছে। বলেছে, “এখন এইভাবে যদি এখান থেকে আমরা চলে যাওয়ার চেষ্টা করি, তাহলে পুলিশ ভাববে, আমি বা তুমি কেউ হয়ত অপরাধী ! তখন কেস আরও কমপ্লিকেটেড হয়ে যাবে। তার চেয়ে দেখা যাক্‌ না আরও কয়েকটা দিন। পুলিশ তো আর অনন্তকাল আমাদের এখানে আটকে রাখতে পারবে না, তারা বড়জোর দিনকয়েক আটকে রেখে তারপর যদি দেখে কেস সলভ্‌ করতে হিমসিম খাচ্ছে, তখন কিছু শর্তসাপেক্ষে সইসাবুদ করিয়ে নিয়ে তারপর ছাড়বে। হয়তো বলবে, কেসের প্রয়োজনে যখনই দরকার হবে, তখনই যেন আমরা তাদের সহযোগিতা করি। তখন তো তোমার উকিলেরা আছেনই। তার আগে বলটা পুলিশের কোর্টেই থাকতে দাও। একদম তাড়াহুড়ো করো না!”
“কিন্তু উন্মেষা, এই রিসর্টে বন্দি থাকতে থাকতে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি। সামনের লনে হাঁটতে গেলেও আমাদের পারমিশন নিতে হচ্ছে!”
আরও পড়ুন:

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৯৭: পাঞ্চালীকে আশীর্বাদ করে আলিঙ্গনাবদ্ধ করলেন গান্ধারী

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৭৯: বালিকাভাব মা সারদার

“হ্যাঁ, এই ব্যাপারটা আমার পক্ষেও খুব বিরক্তিকর। কিন্তু হাত-পা বাঁধা। তোমার যদি লালবাজারে কোন প্রভাবশালী কেউ থাকে, তাঁকে অন্তত এই ব্যাপারে বলতে পারো যে, অন্তত পিশাচপাহাড়ে ঘোরাফেরা করার জন্য যেন অনুমতি দেওয়া হয় আমাদের!”
“কেউ কেউ তো বিনা অনুমতিতেই ঘোরাফেরা শুরু করে দিয়েছে। তারা কিন্তু পুলিশকে থোড়াই কেয়ার করছে !”
“কাদের কথা বলছ? ওই পরে যে কাপল এল?” উন্মেষা জিজ্ঞাসা করল।
“হ্যাঁ! নয় তো কী!”
“আমারও চোখে পড়েছে। আমি সে-কথা ম্যানেজারবাবুকে জিজ্ঞাসাও করেছিলাম, তাতে বললেন, ওনারা না-কি থানায় বলেই পারমিশন নিয়েছেন। যদিও ভিতরের কথা অন্য। ওই মেয়েটির মামা লালবাজারের খুব বড় পোস্টে আছেন। তিনিই ওদের এই সুবিধা দেওয়ার জন্য নিশ্চয়ই পুলিশকে বলে দিয়েছেন। তার উপর ওদের ক্ষেত্রে আর একটা অ্যাডভান্টেজও আছে!”
“আবার কী?”
“ওরা আমাদের গ্রুপের কেউ নয়! তা যদি হত, তাহলে ওই মেয়েটির লালবাজারের মামা কী করতেন, সেটা জানার খুব আগ্রহ হয়!”
“তোমার আগ্রহ মেটাতে ওনার বয়েই গেছে। এই ক্যোরাপশনের জন্যই আজ সব সিস্টেম এইভাবে কোল্যাপস করছে!”
আরও পড়ুন:

ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব ৪৪: ত্রিপুরার মাণিক্য রাজাগণ সর্বদা সাহিত্য সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা করে গিয়েছেন

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৮১: সুন্দরবনের পাখি—বেনে বউ

উন্মেষা অঞ্জনের রাগ দেখে হেসে ফেলেছিল। বলেছিল, “নাও, ও-সব তুমি বা আমি কেউই বদলাতে পারবো না, সুতরাং ও-সব নিয়ে ভেবে উত্তেজিত হয়ে নিজেদের শরীর খারাপ করে লাভ নেই। তার চেয়ে এখানে থানায় গিয়ে ওসি-কে বললে, নিশ্চয়ই পারমিশন দেবেন উনি! আমরা তো আর পালিয়ে যাচ্ছি না! এ-তো আর কলকাতা নয়! আর তার উপর পালাবো কী করে? হেঁটে বা দৌড়ে তো আর পালানো যাবে না। গাড়িটারির ব্যবস্থা করতে গেলে ওনাদের কানে ঠিক খবর চলে যাবে। আর এই পিশাচপাহাড়ে ক’টা গাড়িই বা আছে?”
অঞ্জন মাথার চুল খিমচে ধরে নিজের বিরক্তি কন্ট্রোল করতে করতে বলল, “ওই দশ মাসের গর্ভ হওয়ার মতো পেটের ও.সির কাছে গিয়ে অনুমতি নিতে হবে ভাবলেই আমার কেমন যেন রাগ হচ্ছে? ওর চোখদু’টি দেখেছিলে? কেমন নির্বোধ লালসা মাখানো?”
“নাহ্! ওই লোকটি দেখবার মতো জিনিস নয় বলেই দেখিনি। আমার তো মনে হয় সেকেণ্ড অফিসার অনেক বুদ্ধিমান এবং হেল্পফুল। ওনাকে গিয়েই আগে অ্যাপ্রোচ করলে কেমন হয়?”
“বেশ, করবো তবে। কিন্তু বাইরে বেরুতে দিলেই বা কী? এখানে কি আর কোন শপিং মল কিংবা মাল্টিপ্লেক্স আছে, না-কি পাব, নাইটক্লাব এইসব? বাইরে বেরিয়ে তো সেই ন্যাড়া পাহাড়, বিরক্তিকর গাছপালা—এইসব দেখতে হবে। সে আরও বিরক্তিকর। লোকে এই সব জায়গায় দু’চারদিনের জন্য আসে মেয়েদের নিয়ে ফূর্তি করতে, পিনা-বিনা করতে, তারপর ব্যাক টু দ্য পাভেলিয়ন! সেখানে এক সপ্তাহ আমরা এখানে ভূতের মতো পড়ে আছি! হোপলেস!”
“কুল বেবি কুল! তুমি ড্রিংকস্‌ নিচ্ছ না কেন? তাহলে এ-সব বাজে চিন্তা তোমাকে অ্যাটাক্‌ করতে পারতো না!”
“হুস্‌ ! আমার এখন অনেক কাজ আছে। কতদিন আমরা কাজকর্ম থেকে দূরে আছি, মনে আছে তোমার?”
আরও পড়ুন:

শ্যাম বেনেগল সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে পারতেন

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৬৯: টাকা-পয়সা থাকলে চোর-ডাকাতকেও লোকে সম্মান দেখায়

“হ্যাঁ, তা আবার মনে নেই। বিক্রান্ত আগরওয়ালের সঙ্গে জরুরি মিটিং তো গতকালই ছিল। সেটাও মিস করলাম। উনি তাড়া দিয়েছেন। আর এক সপ্তাহ দেখবেন, তার মধ্যে যদি আমরা মুভ না করি, তাহলে অন্য কারুর সঙ্গে ডিলটা ফাইনাল করবেন!”
“খুব লোকসান হয়ে যাবে আমাদের! এই তোমাদের কথা শুনে এখানে এসেই এই বিপত্তি হল ! কেন যে প্রস্তাব দিতে গেলে মাথামোটা অনিলকে এই অদ্ভুত জায়গায় আসার জন্য?”
“আমি! আমি প্রস্তাব দিলাম? এখানে আসার ব্যাপারটা তো অনিলই ঠিক করল!” উন্মেষা অবাক এবং আহত গলায় বলল।
“আমার মনে আছে, অনিল কোথাও যাওয়ার প্ল্যান করছিল সেদিনের পার্টিতে। তুমিই বললে, চেনাজানা জায়গা ছেড়ে অফিবিট কোন জায়গায় গেলে দারুণ অ্যাডভেঞ্চার হবে! তারপর অনিল, তুমি, বাকিরাও মোবাইলে সার্চ করতে শুরু করে। তখন তুমিই সম্ভবত প্রথম এই অদ্ভুত জায়গার নামটা বার করে অনিলকে বললে, দেখ, দেখ, অনিল, কী অদ্ভুত একটা জায়গা! কলকাতা থেকে বেশি দূরেও নয়! আর সেটা দেখেই ওই লুচ্চাটা একেবারে লাফিয়ে উঠল। তোমাকে ইমপ্রেস করার জন্য কিছুক্ষণ ব্লগ পড়ে-টড়ে বলল, এখানেই আসবে ! ন্যাও বোঝো ঠ্যালা এখন! লাফড়াই লাফড়া!” অঞ্জন বিরক্তি প্রকাশ করে। ডিলটা ক্যানসেল হলে সত্যিই তার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

উন্মেষা আর ঘাঁটালো না তাকে। কেবল বলল, “আমার কী দোষ! আমি কেবল নামটা কী অদ্ভুত সেটা বলেছিলাম। আসতে তো চাপ দিইনি! যাই হোক, আমার মাথা ধরে আছে, আমি স্নানে গেলাম। মাকেও একবার ফোন করতে হবে!” বলে চলে গেল।

অঞ্জন বিরক্ত মুখে ঝুঁকে পড়ল ল্যাপটপের উপরে। ওয়াশরুম থেকে জলের আওয়াজ পাচ্ছিল সে। উন্মেষা স্নানপাগল যাকে বলে। শাওয়ারের নীচে দাঁড়ালে তার আর হুঁশ থাকে না। বিয়ের পর ওরা যে নুতন ফ্ল্যাটে যাবে, সেখানে ওর জন্য দারুণ একটা ওয়াশরুম বানাচ্ছে সে। পোর্সেলিনের সুদৃশ্য বাথটাব থেকে অত্যাধুনিক শাওয়ার, অনেক-অনেক ইনডোর প্ল্যান্টস দিয়ে ডেকোরেট করা—উন্মেষা দেখলেই চমকে যাবে। এখনও ওই ফ্ল্যাট বা তার ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন সম্পর্কে কিছুই জানে না সে। অঞ্জন ইচ্ছে করেই বলেনি, সারপ্রাইজ দেবে বলে। উন্মেষার জন্য সে সব করতে পারে, সব। চাই-কি নিজের প্রাণটাও দিয়ে দিতে পারে। কেবল উন্মেষা যদি আর একটু সহজ হতো। খুব চাপা। আর কেন জানি না তার মনে হয়, কেবল হ্যাজবেন্ডের চলে যাওয়া নয়, অন্য কোন দুঃখজনক কিংবা লজ্জাজনক অতীত আছে ওর জীবনে। কিন্তু সে-কথা এখনও সে অঞ্জনকে বলতে পারেনি। হয়তো ভাবছে, ও-সব শুনলে অঞ্জন যদি ওকে ছেড়ে চলে যায়! পাগল না-কি অঞ্জন? আজকের দিনে কোনকিছুই আর লজ্জাজনক নয়। তবে দুঃখজনক যদি কিছু থাকে, তার দাহ থেকে সে তো বাঁচাতে পারবে না আর, কিন্তু কমাতে পারবে। প্রেমিক যে সে দুঃখকে প্রতিহত করতে পারে না, প্রশান্তি দিতে পারে। সে সেইরকম প্রশান্তির ছায়া হয়ে, মেঘ হয়ে বৃষ্টি ঝরাতে চায় উন্মেষার জীবনে! পারবে তো? —চলবে।
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel): পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।

Skip to content