
তৃধার উন্মুক্ত স্তনে মুখ ঘষছিল অরণ্য। আলতো করে তার বাম কাঁধ একহাতে চেপে ধরে তৃধার ডান স্তনবৃন্ত দুই ঠোঁটে চেপে ধরে জিভ নাড়াচ্ছিল কখন আস্তে-আস্তে, কখন বা দ্রুত। তৃধা মুখ দিয়ে ভালোলাগার অস্ফুট আওয়াজ তুলছিল, তবে শীৎকার নয়।
দুজনেই সম্পূর্ণ নিরাভরণ। পোশাকআশাকগুলি ছড়িয়ে পড়ে আছে ঘরের এদিক-ওদিক। গায়ের উপর থেকে হালকা উইন্ডাচিটার খসে পড়েছে প্রায়। ওদের দেখে মনে হচ্ছিল যেন এই প্রথম ওরা দু’জনে সঙ্গম করছে। ঘরের মধ্যে হালকা সবুজ নাইটল্যাম্প জ্বলছিল। অরণ্য অন্ধকারে সঙ্গম করতে পারে না। আলো না থাকলে তার মনে হয় সে যেন অন্ধকারের কোন অবয়বের সঙ্গে সঙ্গম করছে। তার পছন্দ চড়া আলোয় সঙ্গম। কলেজলাইফে যখন পর্নোগ্রাফি দেখত, তখন থেকেই তার মাথার মধ্যে গেঁথে গিয়েছিল, যদি কখন এমন সব মারকাটারি মেয়েদের সঙ্গে বিছানায় ঝড় তোলার সৌভাগ্য হয়, তাহলে সে ঘরের মধ্যে হাজার-হাজার আলো জ্বেলে রাখবে। তাহলে তার সক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গিনীর প্রতিক্রিয়াও সে দেখতে পাবে, উপভোগ করতে পারবে।
দুজনেই সম্পূর্ণ নিরাভরণ। পোশাকআশাকগুলি ছড়িয়ে পড়ে আছে ঘরের এদিক-ওদিক। গায়ের উপর থেকে হালকা উইন্ডাচিটার খসে পড়েছে প্রায়। ওদের দেখে মনে হচ্ছিল যেন এই প্রথম ওরা দু’জনে সঙ্গম করছে। ঘরের মধ্যে হালকা সবুজ নাইটল্যাম্প জ্বলছিল। অরণ্য অন্ধকারে সঙ্গম করতে পারে না। আলো না থাকলে তার মনে হয় সে যেন অন্ধকারের কোন অবয়বের সঙ্গে সঙ্গম করছে। তার পছন্দ চড়া আলোয় সঙ্গম। কলেজলাইফে যখন পর্নোগ্রাফি দেখত, তখন থেকেই তার মাথার মধ্যে গেঁথে গিয়েছিল, যদি কখন এমন সব মারকাটারি মেয়েদের সঙ্গে বিছানায় ঝড় তোলার সৌভাগ্য হয়, তাহলে সে ঘরের মধ্যে হাজার-হাজার আলো জ্বেলে রাখবে। তাহলে তার সক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গিনীর প্রতিক্রিয়াও সে দেখতে পাবে, উপভোগ করতে পারবে।
অরণ্য মনে করে যারা অন্ধকারে সঙ্গম করে, তারা আসলে কাওয়ার্ড। তারা সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনীর ভালো লাগা, না-লাগার ব্যাপারটা নিয়ে আশঙ্কায় ভোগে। মিলনের আনন্দ যদি পার্টনারের চোখে-মুখে ফুটে না ওঠে, তাহলে সেই সঙ্গম অর্থহীন! বাই, গে, নরমাল—সঙ্গম যে সম্পর্কেই হোক না কেন, আলো থাকাটা মাস্ট তার কাছে। এই জীবনে সে তো কমজনের সঙ্গে সঙ্গম করেনি, কিন্তু চেষ্টা করেছে যাতে অন্ধকারের পরিবর্তে আলোর মধ্যে সঙ্গম করা যায়। ক্লাস এইটে পড়ার সময় বন্ধুর ভাইয়ের সঙ্গে প্রথম সঙ্গমের অভিজ্ঞতা দিয়ে শুরু হয়েছিল, তারপর ছেলে-মেয়ে ক্রমান্বয়ে এসেছে তার জীবনে। এখন তৃধা আছে, কিন্তু তৃধা বিবাহিত, ফলে তার সঙ্গে স্থায়ী সম্পর্কে যাবে না অরণ্য। সেটা সম্ভবও নয়। ইচ্ছে হলে বিয়ে করবে, না হলে করবে না। ব্যাচেলর থাকা একদিক দিয়ে ভালো, তাতে পার্টনারের বিশ্বাস অর্জন করা যায়। অনেকে অবশ্য বিবাহিত পুরুষদের পছন্দ করে, তারা অভিজ্ঞ বলে। কিন্তু তাদের অনেকের চেয়ে অরণ্যের অভিজ্ঞতা যে কম নয়, এটা তার সঙ্গে যে একবার বিছানা শেয়ার করেছে, সেই-ই বলবে। তৃধাকে আর ক’দিন এভাবে ভোগ করতে পারবে তাতে সন্দেহ আছে।
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১১০: অন্ধকারে, চুপিসারে

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৯৩: মা সারদার সঙ্গে সরলাদেবীর কাশীভ্রমণ
সন্দেহটা আগে হয় নি, কিন্তু এখন হচ্ছে। নিচে আর্যর সঙ্গে ডিনারটেবিলে বসার সময়ও এই নিয়ে সে কিছু ভাবছিল না। বরং আর্য যদি রাজি থাকতো তাহলে আজ তার সঙ্গে সঙ্গম করার ইচ্ছে ছিল অরণ্যর। যদিও কথাবার্তা ক্রমে সিরিয়াস হয়ে উঠেছিল এবং তার মাথার মধ্যে ঘুরছিল অনিলের সেই রক্তে মাখা শেষ পরিণতির ছবিটি। আর্যর সঙ্গে কথাবার্তা ডিনারের পরেও যেটুকু এগিয়েছে রুমে ফিরতে ফিরতে, তাতে মনে হয়েছে, তাদের গ্রুপের মধ্যেই কেউ এ-কাজটা করেছে। সে কে তা অরণ্য জানে না, কিন্তু এইটুকু উপলব্ধি করেছে, সকলেই আড়চোখে সকলকে দেখছে। সকলেই তারা ভাবছে, আমি নয়, অপরজন অপরাধী! ভাবতেই মেজাজটা তেতো হয়ে গিয়েছিল তার। এমনিতেই অনিলের মৃত্যুর পর সপ্তাহ পার হয়ে গেছে, কিন্তু সে সঙ্গমহীন জীবন কাটিয়েছে, বা বলা ভালো, কাটাতে বাধ্য হয়েছে। তৃধার দিক থেকেও যখন সাড়া মেলেনি বা অনীহা প্রকাশ পেয়েছে, তখন সেই চিরকেলে প্রথাতেই নিজেকে শান্ত করেছে অরণ্য। আজকেও যে তার খুব মুড হচ্ছিল তা নয়, পোশাকের তলায় পুরুষাঙ্গ শান্তই ছিল, এমনকি ঘরে ঢুকে হালকা রাতপোশাকে তৃধাকে জেগেও সামান্য পরিবর্তন হলেও গোপন অঙ্গ ফণা তুলবে, এমন কোন আভাস-ইঙ্গিত-ইশারা ছিল না। বরং অন্যান্য দিনের মতো আর একটি নিরামিষ রাত কাটাতে হবে বলে সে প্রস্তুত হচ্ছিল। ঠিক তখনই তৃধা ফ্যাকাশে মুখে বলল, “অরণ্য, উই আর ইন ডেঞ্জার!”
আরও পড়ুন:

গীতা: সম্ভবামি যুগে যুগে, পর্ব-২১: কর্ম যখন প্রবল-আকার

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-১০৯: আধুনিক যুগে দাবানলের ফলে বনদহনের সঙ্গে খাণ্ডব বনদহনের সাদৃশ্য আছে কী?
“মানে?” অরণ্য অবাক হয়ে গিয়েছিল। এখানে আসার পর প্রথমদিকের দু’-একদিন ছাড়া সেই যে বিপত্তি আর খারাপ খবর পেতে শুরু করেছে তারা, সে-সবের যেন আর শেষ নেই, চলছে তো চলছেই। আবার কী হল? সে অবাক হয়ে গিয়েছিল এই জন্যই যে, যখন তৃধা নিচে ডিনারে যাবে না বলায় সে তার জন্য রুমসার্ভিস দিতে ফোন করেছিল, তখনও তৃধা স্বাভাবিকই ছিল। তার সামনে প্রায় উলঙ্গ হয়ে স্নানঘরে ঢুকে গিয়েছিল। যদিও এমনটা তৃধা অনেকবারই করেছে, হালকা সিডিউস করার জন্যই করেছে, তবে আসল সময়ে তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে, মুড চলে গিয়েছে বলে। সেই কারণেই তৃধার নগ্ন রূপ অরণ্যের মনে সেই মুহূর্তে কোন কামনা-বাসনা জাগিয়ে তোলেনি। ডিনার থেকে ফিরেও যে জাগিয়ে তুলবে এমন আশা ছিল না অরণ্যের মনে। কারণ, এখানে এসে বিশ্রী ব্যাপারে আটকা পড়ায় তার আর তৃধার কারুরই মনমেজাজ ভালো নেই, ভালো থাকার কথাও নয়। বিপদ আর খারাপ খবর শোনবার জন্যই যেন এবারের ট্রিপটা প্রস্তুত হয়ে ছিল। তৃধার বলা কথায় তারই আভাস পেয়ে অরণ্য অবাক হয়ে তাকিয়েছিল। “আবারও কেউ খুন-টুন হল না কি?” জিজ্ঞাসা করেছিল সে।
আরও পড়ুন:

ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব-৫৫: রবীন্দ্রনাথ, মণিপুরী নৃত্য ও ত্রিপুরা

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৫৩: আলাস্কার দক্ষিণে রয়েছে সেই মনোরম গ্লেন হাইওয়ে
তৃধা বিরক্ত হয়ে বলল, “বুলসিটের মতো কথা বলো না তো! ডেঞ্জার মানেই খুন—কে বলল তোমায়?”
অরণ্য বলল, “এবারের ট্রিপএ এখানে আসার পরেই যা চলছে! অন্তর্ধান, খুন, আবারও খুন, বাইকচুরি, ম্যানেজারকে কালাদেও না-কি এক বুলসিটের আক্রমণ—এ-যেন চলতেই আছে। আবারও একটা খুন হলে অবাক হব না!”
“সেটা হতেই পারে। তবে একটা নয়, দু’টো হবে একসঙ্গে।” বিরক্তি ও দুর্ভাবনা মেশানো গলায় বলল তৃধা।
“মানে? কে কে? কার কার কথা বলতে চাইছ তুমি?”
“আমার আর তোমার কথা বলতে চাইছি সোনা!” অরণ্যকে আবারও অবাক করে দিয়ে বলল তৃধা।
“কী সব ভাট বকছো?” বিরক্তি মেশানো গলায় বলল অরণ্য।
“ভাট বকছি না। সত্যি কথাই বলছি। তুমি জানো তীর্থংকর ফোন করেছিল?”
“সে আর নতুন কী? রোজই করে। আর তারপরেই তুমি সতী হয়ে যাও। এমন জানলে অন্য কাউকে নিয়ে আসতাম। ডগিস্টাইলটা অনেকদিন চেখে দেখা হয় নি। তোমার তো আবার পছন্দ নয় ওটা!” মজা করে পরিবেশটাকে হালকা করে দিতে চাইল অরণ্য।
“ডার্টি মাইন্ড। তুমি কবে সিরিয়াস হবে?” বিরক্তি নিয়ে বলল তৃধা।
“তোমার সামনে সতী সাজতে পারবো না ডার্লিং। আর সিরিয়াস হতে হতে আমরা রামগড়ুরের ছানা হয়ে যাব একদিন। দেখো!”
“অরণ্য, তীর্থ ফোন করেছিল রোজ যেমন করে, তেমনই, সেটা ঠিক। কিন্তু ফোনে আজ সে বলেছে, তার জাহাজ দু’দিন আগেই ফিরবে। আর তারপর সে আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে এখানে আসছে!”
“মানে? তুমি তাকে বলনি যে, একটা বাজে ব্যাপারে তুমি ফেঁসে গিয়েছ? এখন পুলিশ পারমিশন না দিলে তুমি ফিরবে কী করে? আর তাছাড়া তুমি তো আমাদের সঙ্গে এসেছ বলনি। তুমি তোমাদের মেয়েদের গ্রুপে শর্ট ট্রিপ এনজয় করার জন্য এখানে এসেছ বলেছিলে, তাই না? তাহলে?”
“সে-জন্যই তো তোমায় বললাম যে, বিপদ যখন আসে, তখন একা আসে না। এখানে তো আমাদের এতদিন স্টে করার কথা ছিল না। কিন্তু উটোকো নানা ঝামেলা-বিপদ মাথায় এসে পড়ায় আটকে গেলাম। কিন্তু আটকে গেলাম তো গেলামই। দু’সপ্তাহ হতে চলল, আরও কতকাল যে এখানে পচে মরতে হবে কে জানে ! এদিকে তীর্থ জানে, মেয়েদের গ্রুপে এসেছি এবং এখানে রিসর্টে একটা খুন হওয়ায় পুলিশ আটকে দিয়েছে। ব্যস্ এইটুকুই। এখন সে বলছে, কলকাতায় ফিরে ল’ইয়ারকে সঙ্গে করে এখানে আসবে। তার এক বন্ধু হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করে, তাকে নিয়ে। তাহলে তো সব জেনে যাবে!”
“ওহ্ মাই গড! কী বলছ কী তুমি? তীর্থ কি পাগল হয়ে গেল? এখানে ল’ইয়ার আনার কী দরকার? আমাদের চেনাজানা ল’ইয়ার নেই? কী ভেবেছে ও?”
“অরণ্য, অরণ্য, তুমি বোঝবার চেষ্টা করো! তীর্থ ভেবেছে আমরা মহিলা গ্রুপের মেম্বারেরা যারা এসেছি, তারা মেয়ে বলেই অসহায়ের মতো পুলিশের জোরজুলুম মেনে নিয়ে এখানে পড়ে আছি। সে এই কারণে ল’ইয়ার এনে আমাদের এখান থেকে কলকাতায় ফেরার ব্যবস্থা করবার জন্যই আসছে। আমাকে ভালোবাসে বলে নয়। তাছাড়া…!” বলে কথাটা শেষ না করেই চুপ করে গেল তৃধা। তার চোখমুখ চিন্তামগ্ন।
“তাছাড়া?” অধৈর্য্য হয়ে জিজ্ঞাসা করে অরণ্য।
তৃধা অরণ্যের দিকে তাকালো। তারপর বলল, “ও বোধহয় কিছু সন্দেহ করছে! কিংবা কেউ হয়তো ওকে ইনফর্ম করেছে তোমার সঙ্গে এখানে আসার ব্যাপারটা!”
“রাবিশ ! এখানে আসার ব্যাপারটা কে তীর্থকে জানাবে। গামবাট সেক্স ম্যানিয়াক একটা! কলকাতায় ফিরে ক’দিন তোমার কাছে থাকে? ওই তো ওদের ক্লাবে গিয়ে মেয়ে নিয়ে ফূর্তিফার্তা করে। আমি জানি না ভেবেছ? তোমাকে তো বলেছি, আমি ডায়ামণ্ডহারবারের এক রিসর্টে ফূর্তি মারতে গিয়েছিলাম, তার ঠিক পাশের রিসর্টেই ওকে আমি ঢুকতে দেখেছি অন্য মেয়ের সঙ্গে। বাপস্, বুবস্-এর কী ভল্যুম!”
অরণ্য বলল, “এবারের ট্রিপএ এখানে আসার পরেই যা চলছে! অন্তর্ধান, খুন, আবারও খুন, বাইকচুরি, ম্যানেজারকে কালাদেও না-কি এক বুলসিটের আক্রমণ—এ-যেন চলতেই আছে। আবারও একটা খুন হলে অবাক হব না!”
“সেটা হতেই পারে। তবে একটা নয়, দু’টো হবে একসঙ্গে।” বিরক্তি ও দুর্ভাবনা মেশানো গলায় বলল তৃধা।
“মানে? কে কে? কার কার কথা বলতে চাইছ তুমি?”
“আমার আর তোমার কথা বলতে চাইছি সোনা!” অরণ্যকে আবারও অবাক করে দিয়ে বলল তৃধা।
“কী সব ভাট বকছো?” বিরক্তি মেশানো গলায় বলল অরণ্য।
“ভাট বকছি না। সত্যি কথাই বলছি। তুমি জানো তীর্থংকর ফোন করেছিল?”
“সে আর নতুন কী? রোজই করে। আর তারপরেই তুমি সতী হয়ে যাও। এমন জানলে অন্য কাউকে নিয়ে আসতাম। ডগিস্টাইলটা অনেকদিন চেখে দেখা হয় নি। তোমার তো আবার পছন্দ নয় ওটা!” মজা করে পরিবেশটাকে হালকা করে দিতে চাইল অরণ্য।
“ডার্টি মাইন্ড। তুমি কবে সিরিয়াস হবে?” বিরক্তি নিয়ে বলল তৃধা।
“তোমার সামনে সতী সাজতে পারবো না ডার্লিং। আর সিরিয়াস হতে হতে আমরা রামগড়ুরের ছানা হয়ে যাব একদিন। দেখো!”
“অরণ্য, তীর্থ ফোন করেছিল রোজ যেমন করে, তেমনই, সেটা ঠিক। কিন্তু ফোনে আজ সে বলেছে, তার জাহাজ দু’দিন আগেই ফিরবে। আর তারপর সে আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে এখানে আসছে!”
“মানে? তুমি তাকে বলনি যে, একটা বাজে ব্যাপারে তুমি ফেঁসে গিয়েছ? এখন পুলিশ পারমিশন না দিলে তুমি ফিরবে কী করে? আর তাছাড়া তুমি তো আমাদের সঙ্গে এসেছ বলনি। তুমি তোমাদের মেয়েদের গ্রুপে শর্ট ট্রিপ এনজয় করার জন্য এখানে এসেছ বলেছিলে, তাই না? তাহলে?”
“সে-জন্যই তো তোমায় বললাম যে, বিপদ যখন আসে, তখন একা আসে না। এখানে তো আমাদের এতদিন স্টে করার কথা ছিল না। কিন্তু উটোকো নানা ঝামেলা-বিপদ মাথায় এসে পড়ায় আটকে গেলাম। কিন্তু আটকে গেলাম তো গেলামই। দু’সপ্তাহ হতে চলল, আরও কতকাল যে এখানে পচে মরতে হবে কে জানে ! এদিকে তীর্থ জানে, মেয়েদের গ্রুপে এসেছি এবং এখানে রিসর্টে একটা খুন হওয়ায় পুলিশ আটকে দিয়েছে। ব্যস্ এইটুকুই। এখন সে বলছে, কলকাতায় ফিরে ল’ইয়ারকে সঙ্গে করে এখানে আসবে। তার এক বন্ধু হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করে, তাকে নিয়ে। তাহলে তো সব জেনে যাবে!”
“ওহ্ মাই গড! কী বলছ কী তুমি? তীর্থ কি পাগল হয়ে গেল? এখানে ল’ইয়ার আনার কী দরকার? আমাদের চেনাজানা ল’ইয়ার নেই? কী ভেবেছে ও?”
“অরণ্য, অরণ্য, তুমি বোঝবার চেষ্টা করো! তীর্থ ভেবেছে আমরা মহিলা গ্রুপের মেম্বারেরা যারা এসেছি, তারা মেয়ে বলেই অসহায়ের মতো পুলিশের জোরজুলুম মেনে নিয়ে এখানে পড়ে আছি। সে এই কারণে ল’ইয়ার এনে আমাদের এখান থেকে কলকাতায় ফেরার ব্যবস্থা করবার জন্যই আসছে। আমাকে ভালোবাসে বলে নয়। তাছাড়া…!” বলে কথাটা শেষ না করেই চুপ করে গেল তৃধা। তার চোখমুখ চিন্তামগ্ন।
“তাছাড়া?” অধৈর্য্য হয়ে জিজ্ঞাসা করে অরণ্য।
তৃধা অরণ্যের দিকে তাকালো। তারপর বলল, “ও বোধহয় কিছু সন্দেহ করছে! কিংবা কেউ হয়তো ওকে ইনফর্ম করেছে তোমার সঙ্গে এখানে আসার ব্যাপারটা!”
“রাবিশ ! এখানে আসার ব্যাপারটা কে তীর্থকে জানাবে। গামবাট সেক্স ম্যানিয়াক একটা! কলকাতায় ফিরে ক’দিন তোমার কাছে থাকে? ওই তো ওদের ক্লাবে গিয়ে মেয়ে নিয়ে ফূর্তিফার্তা করে। আমি জানি না ভেবেছ? তোমাকে তো বলেছি, আমি ডায়ামণ্ডহারবারের এক রিসর্টে ফূর্তি মারতে গিয়েছিলাম, তার ঠিক পাশের রিসর্টেই ওকে আমি ঢুকতে দেখেছি অন্য মেয়ের সঙ্গে। বাপস্, বুবস্-এর কী ভল্যুম!”
আরও পড়ুন:

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৯৫: ঝোপ টিকরা

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬৯: সে এক স্বপ্নের ‘চাওয়া পাওয়া’
তৃধা বলল, “কে জানাবে তা জানি না। কিন্তু ওর কথা শুনে মনে হল, ও কিছু জানে। খালি জিজ্ঞাসা করছিল, তুমি আবার তোমার কলেজফ্রেণ্ডদের সঙ্গে মস্তি করতে যাওনি তো? আমাকে সত্যি কথা বল… এটসেট্রা, এটসেট্রা!”
“এটা শুনে মুষড়ে পড়ার কিছু নেই। অনেকেই ক্যাজুয়ালি এ-সব বলে। তোমাকে চোখে হারাচ্ছে, আর কিছু নয়।”
“না অরণ্য, এতটা হাল্কাভাবে নিও না ব্যাপারটা। আগে কখন এমন করে বলেনি ও। তোমার কথা ফস্ করে জিজ্ঞাসা করল, তার পরেই। তোমাকে ফোন করে কেন সাহায্য চাই নি ? তুমি কলকাতায় আছ কি-না, কেমন আছো এইসব। তোমার ব্যাপারেই জিজ্ঞাসা করছিল বেশি। এর আগে কিন্তু আলাদা করে তোমার ব্যাপারে এত কনসার্ন হয়ে উঠতে কখন দেখিনি ওকে !”
“বাই-সেক্সুয়াল না-কি তীর্থ?”
“সবাই তোমার মতো না-কি?”
“না দেখ, কে যে কার মতো, সেটা যে-যার সঙ্গে শুচ্ছে সে-ই জানে। কত ম্যারেড লোককেই তো দেখলাম, আমার সঙ্গে সেক্স করতে চায়। মিথ্যে বলব না, তাদের মধ্যে যেগুলি আমার টেস্টের সঙ্গে মেলে, তাদেরকে ফিরিয়ে দিইনি। তোমার বরও যদি চায়… ফেরাবো না। কথা বলতে পারো!”
“অসভ্যতা করো না অরণ্য। আবারও বলছি, বি সিরিয়াস। তীর্থর হাত থেকে কীভাবে বাঁচবো সে-কথাই ভাবো। আমাদের এখন বিপদের পর বিপদ!”
অরণ্য শান্ত স্বরে বলল, “তীর্থ কিন্তু আমাদের বাঁচার পথ দেখিয়েই দিয়েছে। চিন্তা করো না!”
“তীর্থ পথে দেখিয়ে দিয়েছে? কী পথ?” সন্দিহান গলায় জিজ্ঞাসা করে তৃধা।
“ওই যে, আমার ব্যাপারে প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছে, ওটাই তো পথ। আমার ল’ইয়ার তো এর আগেই আমাকে আস্ক করেছিল যে, উনি ব্যবস্থা করবেন কি-না। এতদিন ধরে আমাদের এখানে আটকে রাখাটাই তো বে-আইনি। আমরা সকলেই অপরাধী নই, আর হলে তুমি সে-মর্মে চার্জশিট দাখিল করে কোর্ট থেকে অর্ডার আনো। আমাদের হাজতে রাখো ! কিন্তু তা না করে এতদিন রিসর্টে নজরবন্দি করে রাখার কী মানে ? যাই হোক, চিন্তা করো না, আমি কাল সকালেই ল’ইয়ারকে ফোন করে ব্যবস্থা করছি। তীর্থ দু’দিন পরে কলকাতায় নামছে। তার আগেই আমরা যাতে কোর্টের অর্ডার পেয়ে যাই, সে চেষ্টা করতে বলব ল’ইয়ারকে। আমি এক্ষুনি মেসেজ করে রাখছি। উনিও যাতে মেন্টালি প্রিপেয়ার্ড থাকেন।”
“সত্যি বলছ? তাহলে আমরা তীর্থ এখানে আসার আগেই কলকাতায় ফিরে যেতে পারবো?” অরণ্যের হাত চেপে ধরে আকুল গলায় প্রশ্ন করে তৃধা।
“সেটা বলব, যদি আজ রাতে করতে দাও। আমার খুব ইচ্ছে করছে… আর ডগিস্টাইলটাও চাইছে মন!” অরণ্য আদুরে গলায় বলে মিটিমিটি করে হাসে।
“নাহ্! ওটা আমার পছন্দ নয়। তবে মিশনারি ওর সিক্সটি নাইন হলে আপত্তি নেই আমার !”
“বেশ, তাই হোক !” সবেগে তৃধার দিকে এগিয়ে যায় অরণ্য, “আবার কবে সুযোগ পাব কে জানে, আজ রাতে তোমাকে একেবারে তৃপ্তির শিখরে পৌঁছে দেবো। প্রমিস।”
“আলো নেভাও!”
“তুমি তো জানো অন্ধকারে আমার মুড আসে না। অন্তত নাইটল্যাম্পটা জ্বলুক।”
“মাথার উপর বিপদ আর তুমি…” মাথা নেড়ে সায় দিয়েও তৃধা বলে। তার মনের খচখচ ব্যাপারটা যাচ্ছে না কিছুতেই।
অরণ্য সেটা বুঝতে পেরে আশ্লেষে তাকে জড়িয়ে বলে, “বিপদ আসুক নব নব, আঘাত পেয়ে অটল রব… এই রকম কী একটা গান ছিল না কার…? এসো বেবি, এখন শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আঘাত পেতে প্রস্তুত থাকো!”—চলবে।
“এটা শুনে মুষড়ে পড়ার কিছু নেই। অনেকেই ক্যাজুয়ালি এ-সব বলে। তোমাকে চোখে হারাচ্ছে, আর কিছু নয়।”
“না অরণ্য, এতটা হাল্কাভাবে নিও না ব্যাপারটা। আগে কখন এমন করে বলেনি ও। তোমার কথা ফস্ করে জিজ্ঞাসা করল, তার পরেই। তোমাকে ফোন করে কেন সাহায্য চাই নি ? তুমি কলকাতায় আছ কি-না, কেমন আছো এইসব। তোমার ব্যাপারেই জিজ্ঞাসা করছিল বেশি। এর আগে কিন্তু আলাদা করে তোমার ব্যাপারে এত কনসার্ন হয়ে উঠতে কখন দেখিনি ওকে !”
“বাই-সেক্সুয়াল না-কি তীর্থ?”
“সবাই তোমার মতো না-কি?”
“না দেখ, কে যে কার মতো, সেটা যে-যার সঙ্গে শুচ্ছে সে-ই জানে। কত ম্যারেড লোককেই তো দেখলাম, আমার সঙ্গে সেক্স করতে চায়। মিথ্যে বলব না, তাদের মধ্যে যেগুলি আমার টেস্টের সঙ্গে মেলে, তাদেরকে ফিরিয়ে দিইনি। তোমার বরও যদি চায়… ফেরাবো না। কথা বলতে পারো!”
“অসভ্যতা করো না অরণ্য। আবারও বলছি, বি সিরিয়াস। তীর্থর হাত থেকে কীভাবে বাঁচবো সে-কথাই ভাবো। আমাদের এখন বিপদের পর বিপদ!”
অরণ্য শান্ত স্বরে বলল, “তীর্থ কিন্তু আমাদের বাঁচার পথ দেখিয়েই দিয়েছে। চিন্তা করো না!”
“তীর্থ পথে দেখিয়ে দিয়েছে? কী পথ?” সন্দিহান গলায় জিজ্ঞাসা করে তৃধা।
“ওই যে, আমার ব্যাপারে প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছে, ওটাই তো পথ। আমার ল’ইয়ার তো এর আগেই আমাকে আস্ক করেছিল যে, উনি ব্যবস্থা করবেন কি-না। এতদিন ধরে আমাদের এখানে আটকে রাখাটাই তো বে-আইনি। আমরা সকলেই অপরাধী নই, আর হলে তুমি সে-মর্মে চার্জশিট দাখিল করে কোর্ট থেকে অর্ডার আনো। আমাদের হাজতে রাখো ! কিন্তু তা না করে এতদিন রিসর্টে নজরবন্দি করে রাখার কী মানে ? যাই হোক, চিন্তা করো না, আমি কাল সকালেই ল’ইয়ারকে ফোন করে ব্যবস্থা করছি। তীর্থ দু’দিন পরে কলকাতায় নামছে। তার আগেই আমরা যাতে কোর্টের অর্ডার পেয়ে যাই, সে চেষ্টা করতে বলব ল’ইয়ারকে। আমি এক্ষুনি মেসেজ করে রাখছি। উনিও যাতে মেন্টালি প্রিপেয়ার্ড থাকেন।”
“সত্যি বলছ? তাহলে আমরা তীর্থ এখানে আসার আগেই কলকাতায় ফিরে যেতে পারবো?” অরণ্যের হাত চেপে ধরে আকুল গলায় প্রশ্ন করে তৃধা।
“সেটা বলব, যদি আজ রাতে করতে দাও। আমার খুব ইচ্ছে করছে… আর ডগিস্টাইলটাও চাইছে মন!” অরণ্য আদুরে গলায় বলে মিটিমিটি করে হাসে।
“নাহ্! ওটা আমার পছন্দ নয়। তবে মিশনারি ওর সিক্সটি নাইন হলে আপত্তি নেই আমার !”
“বেশ, তাই হোক !” সবেগে তৃধার দিকে এগিয়ে যায় অরণ্য, “আবার কবে সুযোগ পাব কে জানে, আজ রাতে তোমাকে একেবারে তৃপ্তির শিখরে পৌঁছে দেবো। প্রমিস।”
“আলো নেভাও!”
“তুমি তো জানো অন্ধকারে আমার মুড আসে না। অন্তত নাইটল্যাম্পটা জ্বলুক।”
“মাথার উপর বিপদ আর তুমি…” মাথা নেড়ে সায় দিয়েও তৃধা বলে। তার মনের খচখচ ব্যাপারটা যাচ্ছে না কিছুতেই।
অরণ্য সেটা বুঝতে পেরে আশ্লেষে তাকে জড়িয়ে বলে, “বিপদ আসুক নব নব, আঘাত পেয়ে অটল রব… এই রকম কী একটা গান ছিল না কার…? এসো বেবি, এখন শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আঘাত পেতে প্রস্তুত থাকো!”—চলবে।
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel): পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।