![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2025/02/Pisach-Pahar_EP-103.jpg)
সুদীপ্ত বলল, “আপনি কি স্মোক করেন শাক্যদা?”
কিছুক্ষণ আগেই ঠিক হয়েছে, সুদীপ্ত শাক্যকে ‘স্যার, স্যার’ বলার পরিবর্তে ‘শাক্যদা’ বলে ডাকবে। সবার সামনে সে প্রোটোকল মেনটেইন করার জন্য ‘স্যার’ বলতেই পারে, কিন্তু অন্যত্র ঘাটে-বাটে-মাঠে ‘স্যার’ বলা চলবে না। বললেই শাস্তি। অন্যদিকে শাক্য সুদীপ্তকে ‘আপনি’র পরিবর্তে ‘তুমি’ করে বলবে, এটাও ঠিক হয়েছে। খাওয়াদাওয়ার পরে ওরা সুদীপ্তর ড্রইংরুমে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। উল্লাসের প্রশংসা করায় সুদীপ্ত বলেছে, “আমি সেইজন্যই ওকে সাজেস্ট করলাম শাক্যদা। ওর হাতে যেন জাদু আছে। মুহূর্তে এনার্জি গেইন করা যায়। আমি কতবার ওকে বলেছি যে, কলকাতায় কোনও ভালো স্পা-চেইনের সঙ্গে কনট্যাক্ট করতে। এখানে সদরে থেকেও কতটুকুই বা ইনকাম করে? কলকাতায় গেলে অনেক বেশি ইনকাম করতে পারবে। ওর হাত যা ভালো, ওকে বেশিদিন চেষ্টাও করতে হবে না। তা আমার কথা কানে তুললে তো!”
শাক্য বলল, “আসলে কী জানো, অনেকেই তার রুটস থেকে বেশিদূরে যেতে চায় না। নাড়ির টান বলতে পারো। তার জন্য যদি দু’-দশ লক্ষ টাকাও হাতছাড়া হয়, তা-ই সই।”
“ঠিক বলেছেন শাক্যদা। এখানে গ্রামের বাড়ির প্রতি ওর খুব টান। সেখানে মা-বাবা-ভাই-বোন-দাদা-বৌদি সকলে থাকেন। তাঁদের কাছে মাসে দু’বার না গেলে উল্লাসের ভাত হজম হয় না!”
“এটা যার মধ্যে আছে সুদীপ্ত, জানবে যে, সে মনের দিক থেকে খুব খাঁটি। অনেকে তো একটূ হাতযশ হলে আর নিজের শিকড়ের কাছে ফিরতেই চায় না!”
“হ্যাঁ, তা যা বলেছেন দাদা।”
“উল্লাস ভালো ম্যাসাজ করেছে বলেই যে ওকে আমার মনে থাকবে তা নয়, এই কেসে ও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র দিয়ে আমাদের সাহায্য করেছে বলেই ওকে আমি মনে রাখবো!”
“গুরুত্বপূর্ণ সূত্র?” সুদীপ্ত অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “উল্লাস দিয়েছে?”
“হ্যাঁ। ভাবতেও পারবে না ব্রো, সে কী খবর তুলে দিয়েছে না জেনেই!”
“যেমন?”
কিছুক্ষণ আগেই ঠিক হয়েছে, সুদীপ্ত শাক্যকে ‘স্যার, স্যার’ বলার পরিবর্তে ‘শাক্যদা’ বলে ডাকবে। সবার সামনে সে প্রোটোকল মেনটেইন করার জন্য ‘স্যার’ বলতেই পারে, কিন্তু অন্যত্র ঘাটে-বাটে-মাঠে ‘স্যার’ বলা চলবে না। বললেই শাস্তি। অন্যদিকে শাক্য সুদীপ্তকে ‘আপনি’র পরিবর্তে ‘তুমি’ করে বলবে, এটাও ঠিক হয়েছে। খাওয়াদাওয়ার পরে ওরা সুদীপ্তর ড্রইংরুমে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। উল্লাসের প্রশংসা করায় সুদীপ্ত বলেছে, “আমি সেইজন্যই ওকে সাজেস্ট করলাম শাক্যদা। ওর হাতে যেন জাদু আছে। মুহূর্তে এনার্জি গেইন করা যায়। আমি কতবার ওকে বলেছি যে, কলকাতায় কোনও ভালো স্পা-চেইনের সঙ্গে কনট্যাক্ট করতে। এখানে সদরে থেকেও কতটুকুই বা ইনকাম করে? কলকাতায় গেলে অনেক বেশি ইনকাম করতে পারবে। ওর হাত যা ভালো, ওকে বেশিদিন চেষ্টাও করতে হবে না। তা আমার কথা কানে তুললে তো!”
শাক্য বলল, “আসলে কী জানো, অনেকেই তার রুটস থেকে বেশিদূরে যেতে চায় না। নাড়ির টান বলতে পারো। তার জন্য যদি দু’-দশ লক্ষ টাকাও হাতছাড়া হয়, তা-ই সই।”
“ঠিক বলেছেন শাক্যদা। এখানে গ্রামের বাড়ির প্রতি ওর খুব টান। সেখানে মা-বাবা-ভাই-বোন-দাদা-বৌদি সকলে থাকেন। তাঁদের কাছে মাসে দু’বার না গেলে উল্লাসের ভাত হজম হয় না!”
“এটা যার মধ্যে আছে সুদীপ্ত, জানবে যে, সে মনের দিক থেকে খুব খাঁটি। অনেকে তো একটূ হাতযশ হলে আর নিজের শিকড়ের কাছে ফিরতেই চায় না!”
“হ্যাঁ, তা যা বলেছেন দাদা।”
“উল্লাস ভালো ম্যাসাজ করেছে বলেই যে ওকে আমার মনে থাকবে তা নয়, এই কেসে ও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র দিয়ে আমাদের সাহায্য করেছে বলেই ওকে আমি মনে রাখবো!”
“গুরুত্বপূর্ণ সূত্র?” সুদীপ্ত অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “উল্লাস দিয়েছে?”
“হ্যাঁ। ভাবতেও পারবে না ব্রো, সে কী খবর তুলে দিয়েছে না জেনেই!”
“যেমন?”
“আচ্ছা, দিনকতক আগে বাসরোডে যে লাশ পাওয়া গিয়েছিল, যাকে নিয়ে কালাদেও প্রকাশ্য আলোকে, তখন সন্ধ্যা নামছে, আমি রিপোর্টে যা পড়েছি তা-থেকেই বলছি, ভুরিভোজ করতে বসেছিল বলে কেউ-কেউ দেখেছে, তার পরিচয় জানা গিয়েছে?”
“না শাক্যদা। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, পিশাচপাহাড় রিসর্টের ট্যুরিস্টপার্টির অন্যতম মেম্বার, যে দু-দিন ধরে আনরিচেবল্ ছিল, সেই আর্যর মৃতদেহ। কারণ, সে যার নতুন বাইক নিয়ে গিয়েছিল, সেইরকম একটি বাইক পাওয়া গিয়েছিল রোডের ওপর। এখন তো আর্য ফিরে এসেছেন এবং জানাচ্ছেন যে, তাঁর নিয়ে যাওয়া বাইকটি চুরি হয়ে গিয়েছিল। আমরা অন্য আর-এক জায়গা থেকে আর্যর চুরি যাওয়া বাইকটি পেয়েছি। আপনি নিজেও সেখানে গিয়েছেন। অতএব ধরে নিতে হবে একই বাইক মৃতব্যক্তিরও ছিল। যদিও নাম্বারপ্লেট ছিল না বলে ধরে নেওয়া যায়, এ-ও কোথা থেকে চুরি করে আনা বাইক। পার্শ্ববর্তী রাজ্যের লাগোয়া সীমান্ত হওয়ার কারণে এখানে এই ব্যাপারটি হামেশাই ঘটে থাকে।”
“তা তো বুঝলাম। কিন্তু মৃত ব্যক্তির পরিচয় জানতে পারা গেল কি? আর্য তো নয়ই এখন আমরা জানি, কিন্তু তাহলে কে?”
“সেটা জানার জন্য সমস্ত থানায় মেইল করে দিয়েছি শাক্যদা। হোয়াটস্অ্যাপে যে অফিসিয়াল গ্রুপ আছে, সেখানেও জানানো হয়েছে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে দুটি। প্রথম হল, এখনও কোনও থানায় কেউ মিসিং ডায়েরি করেনি। দ্বিতীয় হল, যেহেতু কালাদেও ভিকটিমের মুণ্ডুটাই খেয়ে ফেলেছে বলতে গেলে, অন্তত এতটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছে যে, তা দিয়ে মৃত ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত করা খুব কঠিন।”
“একটু যদি কান পাততে ব্রো, তাহলে জানতে পারতে, পুলিশ যা জানবার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে, স্থানীয় মানুষদের কাছে তা কিন্তু অজানা নেই। আর যদি এমন কেউ মিসিং হয়, যার জন্য থানায় মিসিংডায়েরি করায় মুশকিল আছে, মানে ধরো দাগি কেউ, তাহলে তো কোনওদিন কোনও থানা তোমাকে জানাতে পারবে না যে, তার এলাকা থেকে কেউ মিসিং হয়েছে কি-না। স্থানীয় মানুষদের মধ্যে তোমাদের ইনফর্মার বেশ কম ছড়ানো বুঝতে পারছি। আমাদের এই প্রোফেশনে ইনফর্মার রাখা এবং তার সঙ্গে সেই সম্পর্ক বজায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। ভবিষ্যতে কথাটি মনে রেখো।”
“মানছি দাদা, সত্যিই আমাদের এই থানায় ইনফর্মার খুব কম এবং যারা আছে, তারাও তেমন এফেক্টিভ নয়। কিন্তু মৃত ব্যক্তির পরিচয় কে জানিয়েছে ? উল্লাস ?”
“সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু যে মারা গিয়েছে, তার পরিচয় জানলে তুমিও চমকে উঠবে।”
“কে?”
“গেণু মাহাতোকে চেনো?”
“গেণু! পিশাচপাহাড় গ্রামের সেই অ্যান্টিসোশ্যাল গেণু?” চমকে উঠে প্রশ্ন করল সুদীপ্ত।
“হ্যাঁ।”
“নাম শুনেছি। আমার সঙ্গে কোনদিন সরাসরি সাক্ষাৎ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তাছাড়া গেণু তো স্যারের ইনফর্মার ছিল বলেও শুনেছি। তবে দোহাই, এ-কথা স্যার আমাকে বলেননি, আমার নিজস্ব ইনফর্মার খবর দিয়েছিল!”
“মালাকারবাবুর নিজস্ব ইনফর্মার গেণু? অথচ তিনিই চিনতে পারলেন না? তিনি নিজেও তো গিয়েছিলেন ইনভেস্টগেট করতে?”
“হ্যাঁ গিয়েছিলেন। কিন্তু ওই যে বললাম, সেখানে এমনিতেই তখন অন্ধকার হয়ে গিয়েছে, তার উপর মাথাটাই আস্ত না থাকার কারণে চেনা সত্যিই মুশকিল ছিল ! সে-কারণেই হয়তো…!”
“আচ্ছা সুদীপ্ত, ধরো তুমি ইনভেস্টিগেশন করতে গিয়ে দেখলে অন্ধকার জায়গা, তার মধ্যে ডেডবডি পড়ে আছে। তুমি কী করবে? নিশ্চয়ই আলোর ব্যবস্থা করবে। মোবাইলের আলো দিয়ে নিশ্চয়ই তদন্ত চালাবেন না কোনও পুলিশ? আর ধর আলোর ব্যবস্থা করা গেল না, তাহলে কী করা যায়? ডেডবডিকে প্রাইমারি ইনভেস্টিগেশনের পরে মর্গে চালান করা হবে, সেখানে তার পরদিন সবার আগে যে কাজটি করতে হবে, আর-একবার গিয়ে ভালো করে ডেডবডিটি দেখা। মালাকার তা করেছিলেন?”
“না শাক্যদা। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, পিশাচপাহাড় রিসর্টের ট্যুরিস্টপার্টির অন্যতম মেম্বার, যে দু-দিন ধরে আনরিচেবল্ ছিল, সেই আর্যর মৃতদেহ। কারণ, সে যার নতুন বাইক নিয়ে গিয়েছিল, সেইরকম একটি বাইক পাওয়া গিয়েছিল রোডের ওপর। এখন তো আর্য ফিরে এসেছেন এবং জানাচ্ছেন যে, তাঁর নিয়ে যাওয়া বাইকটি চুরি হয়ে গিয়েছিল। আমরা অন্য আর-এক জায়গা থেকে আর্যর চুরি যাওয়া বাইকটি পেয়েছি। আপনি নিজেও সেখানে গিয়েছেন। অতএব ধরে নিতে হবে একই বাইক মৃতব্যক্তিরও ছিল। যদিও নাম্বারপ্লেট ছিল না বলে ধরে নেওয়া যায়, এ-ও কোথা থেকে চুরি করে আনা বাইক। পার্শ্ববর্তী রাজ্যের লাগোয়া সীমান্ত হওয়ার কারণে এখানে এই ব্যাপারটি হামেশাই ঘটে থাকে।”
“তা তো বুঝলাম। কিন্তু মৃত ব্যক্তির পরিচয় জানতে পারা গেল কি? আর্য তো নয়ই এখন আমরা জানি, কিন্তু তাহলে কে?”
“সেটা জানার জন্য সমস্ত থানায় মেইল করে দিয়েছি শাক্যদা। হোয়াটস্অ্যাপে যে অফিসিয়াল গ্রুপ আছে, সেখানেও জানানো হয়েছে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে দুটি। প্রথম হল, এখনও কোনও থানায় কেউ মিসিং ডায়েরি করেনি। দ্বিতীয় হল, যেহেতু কালাদেও ভিকটিমের মুণ্ডুটাই খেয়ে ফেলেছে বলতে গেলে, অন্তত এতটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছে যে, তা দিয়ে মৃত ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত করা খুব কঠিন।”
“একটু যদি কান পাততে ব্রো, তাহলে জানতে পারতে, পুলিশ যা জানবার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে, স্থানীয় মানুষদের কাছে তা কিন্তু অজানা নেই। আর যদি এমন কেউ মিসিং হয়, যার জন্য থানায় মিসিংডায়েরি করায় মুশকিল আছে, মানে ধরো দাগি কেউ, তাহলে তো কোনওদিন কোনও থানা তোমাকে জানাতে পারবে না যে, তার এলাকা থেকে কেউ মিসিং হয়েছে কি-না। স্থানীয় মানুষদের মধ্যে তোমাদের ইনফর্মার বেশ কম ছড়ানো বুঝতে পারছি। আমাদের এই প্রোফেশনে ইনফর্মার রাখা এবং তার সঙ্গে সেই সম্পর্ক বজায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। ভবিষ্যতে কথাটি মনে রেখো।”
“মানছি দাদা, সত্যিই আমাদের এই থানায় ইনফর্মার খুব কম এবং যারা আছে, তারাও তেমন এফেক্টিভ নয়। কিন্তু মৃত ব্যক্তির পরিচয় কে জানিয়েছে ? উল্লাস ?”
“সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু যে মারা গিয়েছে, তার পরিচয় জানলে তুমিও চমকে উঠবে।”
“কে?”
“গেণু মাহাতোকে চেনো?”
“গেণু! পিশাচপাহাড় গ্রামের সেই অ্যান্টিসোশ্যাল গেণু?” চমকে উঠে প্রশ্ন করল সুদীপ্ত।
“হ্যাঁ।”
“নাম শুনেছি। আমার সঙ্গে কোনদিন সরাসরি সাক্ষাৎ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তাছাড়া গেণু তো স্যারের ইনফর্মার ছিল বলেও শুনেছি। তবে দোহাই, এ-কথা স্যার আমাকে বলেননি, আমার নিজস্ব ইনফর্মার খবর দিয়েছিল!”
“মালাকারবাবুর নিজস্ব ইনফর্মার গেণু? অথচ তিনিই চিনতে পারলেন না? তিনি নিজেও তো গিয়েছিলেন ইনভেস্টগেট করতে?”
“হ্যাঁ গিয়েছিলেন। কিন্তু ওই যে বললাম, সেখানে এমনিতেই তখন অন্ধকার হয়ে গিয়েছে, তার উপর মাথাটাই আস্ত না থাকার কারণে চেনা সত্যিই মুশকিল ছিল ! সে-কারণেই হয়তো…!”
“আচ্ছা সুদীপ্ত, ধরো তুমি ইনভেস্টিগেশন করতে গিয়ে দেখলে অন্ধকার জায়গা, তার মধ্যে ডেডবডি পড়ে আছে। তুমি কী করবে? নিশ্চয়ই আলোর ব্যবস্থা করবে। মোবাইলের আলো দিয়ে নিশ্চয়ই তদন্ত চালাবেন না কোনও পুলিশ? আর ধর আলোর ব্যবস্থা করা গেল না, তাহলে কী করা যায়? ডেডবডিকে প্রাইমারি ইনভেস্টিগেশনের পরে মর্গে চালান করা হবে, সেখানে তার পরদিন সবার আগে যে কাজটি করতে হবে, আর-একবার গিয়ে ভালো করে ডেডবডিটি দেখা। মালাকার তা করেছিলেন?”
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2025/02/Pisach-Pahar_EP102.jpg)
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১০২: অন্ধকারে কে?
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2025/01/Panchatantra.jpg)
পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৭১: ধর্মকার্যের জন্য টাকা জোগাড় করা আর সাদা কাপড়ে ময়লা লাগিয়ে ধোয়া, দুই-ই সমান
সুদীপ্ত এ-কথার কোন জবাব দিল না। মাথা নত করল। তার আচরণেই স্পষ্ট, মালাকার সেটা করেননি।
শাক্য বলল, “এর থেকে দু’টি জিনিস অনুমান করা যায়। এক, মালাকার কেসটাকে কালাদেও অর্থাৎ অলৌকিক ব্যাপারস্যাপার ভেবে হাত তুলে নিয়েছেন প্রথম থেকেই, ফলে সঠিকভাবে ইনভেস্টিগেট করেননি। দুই, মালাকার বডি দেখেই চিনতে পেরেছিলেন, এটি কার মৃতদেহ। ফলে তা-নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য করেননি!”
সুদীপ্ত এবারেও কোন উত্তর দিতে পারল না। শাক্যদার যুক্তি যে অকাট্য তাতে তার কোন সন্দেহ নেই। তবে তার নিজের মনে হয়, মালাকার প্রথম কারণটির জন্যই এই কেস নিয়ে তেমন মনোযোগ দেননি। তিনি সমস্ত ঘটনাগুলিকেই কালাদেওর অলৌকিক কাণ্ডকারখানার অংশ বলে মনে করেছেন এবং এর এত তদন্ত করে কোনও লাভ হবে না, সেটাই মনে মনে বিশ্বাস করে নিয়েছেন। এ-কারণেই এই গা-ছাড়া মনোভাব। তা-না-হলে নিজের ইনফর্মারের এমন পরিণতি দেখে তিনি বিচলিত হবেন না, এটা হতে পারে না।
সুদীপ্ত কোনরকমে বলল, “উল্লাসও তো একই গ্রামের। গেণু সম্ভবত ওই গ্রামে বা আশেপাশের কোন গ্রামে থাকত!”
শাক্য বলল, “এর থেকে দু’টি জিনিস অনুমান করা যায়। এক, মালাকার কেসটাকে কালাদেও অর্থাৎ অলৌকিক ব্যাপারস্যাপার ভেবে হাত তুলে নিয়েছেন প্রথম থেকেই, ফলে সঠিকভাবে ইনভেস্টিগেট করেননি। দুই, মালাকার বডি দেখেই চিনতে পেরেছিলেন, এটি কার মৃতদেহ। ফলে তা-নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য করেননি!”
সুদীপ্ত এবারেও কোন উত্তর দিতে পারল না। শাক্যদার যুক্তি যে অকাট্য তাতে তার কোন সন্দেহ নেই। তবে তার নিজের মনে হয়, মালাকার প্রথম কারণটির জন্যই এই কেস নিয়ে তেমন মনোযোগ দেননি। তিনি সমস্ত ঘটনাগুলিকেই কালাদেওর অলৌকিক কাণ্ডকারখানার অংশ বলে মনে করেছেন এবং এর এত তদন্ত করে কোনও লাভ হবে না, সেটাই মনে মনে বিশ্বাস করে নিয়েছেন। এ-কারণেই এই গা-ছাড়া মনোভাব। তা-না-হলে নিজের ইনফর্মারের এমন পরিণতি দেখে তিনি বিচলিত হবেন না, এটা হতে পারে না।
সুদীপ্ত কোনরকমে বলল, “উল্লাসও তো একই গ্রামের। গেণু সম্ভবত ওই গ্রামে বা আশেপাশের কোন গ্রামে থাকত!”
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2025/02/valentines-day-2025.jpg)
ভাসাবে দোঁহারে
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2025/02/Akash-Mekhono-Meghla-EP-04.jpg)
উপন্যাস: আকাশ এখনও মেঘলা
শাক্য বলল, “গেণু কিন্তু লোক্যাল লোক নয়। সে অন্য কোন জায়গা থেকে এখানে এসে ঘাঁটি গেড়েছিল। তার পিছনে পলিটিক্যাল ব্যাকিং আছে। সেই জন্যই তার এত বাড়বাড়ন্ত। পাশের রাজ্য থেকে এলেও আমি অবাক হব না। যাই হোক, কাল আমাদের ডিএম এবং এসপি-র সঙ্গে দেখা করে অনেক সাহায্য চাইতে হবে। লালবাজার থেকে আমাদের ডিসিডিডি স্যার ফোন করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই ঘটনাগুলি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন। আগামীদিনে বিধানসভার অধিবেশনে বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে সরব হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। তার আগেই আমাদের কোনও-না-কোনও এফেক্টিভ স্টেপ নিতে হবে। নাহলে তোমার-আমার সকলের বিপদ বুঝেছ ব্রো। তার উপর ডিসিডিডি স্যারের নিজের ভাগ্নি এবং ভাগ্নি-জামাই এই কেসে না-চাইতেও জড়িয়ে গিয়েছে। যদিও তাঁরা নিছকই আই-উইটনেস। তাঁদের আটকে রাখতে পারবো না আমরা। কাল-পরশুর মধ্যেই তাঁদের যেতে দেওয়ার অর্ডার চলে আসবে বলেই মনে হচ্ছে।”
সুদীপ্ত বলল, “ওঁদের আটকে রাখার কোন মানে হয় না। পিশাচপাহাড় রিসর্টের খুনের ঘটনায় ওঁদের যোগ নিছকই কাকতালীয়।”
“হতে পারে। যাক্, কাল কিন্তু অ্যাজ আর্লি অ্যাজ পসিবল্ আমাদের সদরে ছুটতে হবে। কলকাতা থেকে ডিএম, এসপিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আমাকে মেসেজ করেছেন যে, যখনই যাব, তাঁরা জরুরি ভিত্তিতে দেখা করবেন। অতএব রেডি থেকো।”
“বুঝতেই পারছি, সামনের ক-দিন আমাদের অনেক কাজ!”
“হ্যাঁ। অনেককালের অনেক জমানো অপরাধ একজায়গায় একত্রিত হলে যা হয়! পিশাচপাহাড়ে কালাদেও নিজের ইচ্ছেয় ফিরে আসেনি সুদীপ্ত। যতটুকু জেনেছি, আমার মন বলছে, তাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আর তা করা হয়েছে, কারও-কারও ব্যক্তিগত ইন্টারেস্টের জন্য। কিন্তু তাদের এই ব্যক্তিগত ইন্টারেস্টের কার্যক্রম বেশিদিন চলতে দিলে পিশাচপাহাড়ে আইনের শাসন বলতে আর কিছু থাকবে না। একটা বড়সড় স্কুপ নিউজ অপেক্ষা করছে বলেই আমার বিশ্বাস। এখানে যে অপরাধচক্র আছে, সেটাকে ভাঙতেই হবে!”
সুদীপ্ত বলল, “ওঁদের আটকে রাখার কোন মানে হয় না। পিশাচপাহাড় রিসর্টের খুনের ঘটনায় ওঁদের যোগ নিছকই কাকতালীয়।”
“হতে পারে। যাক্, কাল কিন্তু অ্যাজ আর্লি অ্যাজ পসিবল্ আমাদের সদরে ছুটতে হবে। কলকাতা থেকে ডিএম, এসপিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আমাকে মেসেজ করেছেন যে, যখনই যাব, তাঁরা জরুরি ভিত্তিতে দেখা করবেন। অতএব রেডি থেকো।”
“বুঝতেই পারছি, সামনের ক-দিন আমাদের অনেক কাজ!”
“হ্যাঁ। অনেককালের অনেক জমানো অপরাধ একজায়গায় একত্রিত হলে যা হয়! পিশাচপাহাড়ে কালাদেও নিজের ইচ্ছেয় ফিরে আসেনি সুদীপ্ত। যতটুকু জেনেছি, আমার মন বলছে, তাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আর তা করা হয়েছে, কারও-কারও ব্যক্তিগত ইন্টারেস্টের জন্য। কিন্তু তাদের এই ব্যক্তিগত ইন্টারেস্টের কার্যক্রম বেশিদিন চলতে দিলে পিশাচপাহাড়ে আইনের শাসন বলতে আর কিছু থাকবে না। একটা বড়সড় স্কুপ নিউজ অপেক্ষা করছে বলেই আমার বিশ্বাস। এখানে যে অপরাধচক্র আছে, সেটাকে ভাঙতেই হবে!”
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2025/02/Sundarban_EP-86-C.jpg)
সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৮৭: সুন্দরবনের পাখি — ফিঙে
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2025/02/Uttam-Kumar_Joutuk-5.jpg)
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬৬: জীবন নিয়ে কৌতুক আর ‘যৌতুক’
সুদীপ্ত চিন্তিত মুখে পকেট থেকে সিগারেট বার করে হাতে নিয়েই থমকে গেল। সে ভুলে গিয়েছিল, তার অফিসিয়াল বস এবং সিনিয়ার একজন সামনে রয়েছে। তখনই সে লজ্জিত হয়ে শাক্য সিগারেট পান করে কি-না জিজ্ঞাসা করল।
সুদীপ্তর প্রশ্নের উত্তরে শাক্য বলল, “কলেজ-ইয়্যুনিভার্সিটি লাইফে অনেকের মতো আমাকেও ধরেছিল ওই নেশা, পরে ছেড়ে দিয়েছি। তবে তুমি খেলে খেতে পারো। প্যাসিভ স্মোকিং নিয়ে আমার অতটাও প্রেজুডিস নেই।”
সুদীপ্ত বলল, “না, আমিও রেগুলার খাই না। তবে খুব জটিল গণ্ডগোলের কেস হলে, মাথা কাজ করার জন্যব এক-আধটা…।”
“প্রসিড। আমি ততক্ষণে একটা কল করে নিই আমার দিদিকে। উনি আমার ওপরওয়ালা। অফিসের বসকে ভুজুংভাজাং দিয়ে বোঝানো যাবে, দিদিকে বোঝানো যাবে না। অঙ্কের শিক্ষক বলে মাথাটিও একেবারে যে-কোনও গোয়েন্দার চেয়ে বেশি খেলে !” বলে শাক্য ফোন হাতে একটু তফাতে গেল।
সুদীপ্ত সবে সিগারেট ধরিয়ে এক টান দিয়েছে, এমনসময় তার মোবাইল বেজে উঠল। সুদীপ্ত হাতে তুলে নিয়ে দেখল আননোন নাম্বার। সে ফোন ধরে বলল, “হ্যালো…!”
ওপার থেকে কেউ কিছু বলল।
“বলছি। আপনি কে বলছেন?”
সুদীপ্তর প্রশ্নের উত্তরে শাক্য বলল, “কলেজ-ইয়্যুনিভার্সিটি লাইফে অনেকের মতো আমাকেও ধরেছিল ওই নেশা, পরে ছেড়ে দিয়েছি। তবে তুমি খেলে খেতে পারো। প্যাসিভ স্মোকিং নিয়ে আমার অতটাও প্রেজুডিস নেই।”
সুদীপ্ত বলল, “না, আমিও রেগুলার খাই না। তবে খুব জটিল গণ্ডগোলের কেস হলে, মাথা কাজ করার জন্যব এক-আধটা…।”
“প্রসিড। আমি ততক্ষণে একটা কল করে নিই আমার দিদিকে। উনি আমার ওপরওয়ালা। অফিসের বসকে ভুজুংভাজাং দিয়ে বোঝানো যাবে, দিদিকে বোঝানো যাবে না। অঙ্কের শিক্ষক বলে মাথাটিও একেবারে যে-কোনও গোয়েন্দার চেয়ে বেশি খেলে !” বলে শাক্য ফোন হাতে একটু তফাতে গেল।
সুদীপ্ত সবে সিগারেট ধরিয়ে এক টান দিয়েছে, এমনসময় তার মোবাইল বেজে উঠল। সুদীপ্ত হাতে তুলে নিয়ে দেখল আননোন নাম্বার। সে ফোন ধরে বলল, “হ্যালো…!”
ওপার থেকে কেউ কিছু বলল।
“বলছি। আপনি কে বলছেন?”
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2025/02/Mahakavya_EP-1.jpg)
মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-১০১: অর্জুন প্রমাণ করলেন, রাজধর্ম পালনের ক্ষেত্রে মিথ্যাচারের কোনও স্থান নেই
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2025/02/Rabindranath-Tagore-Mrinalini-Devi.jpg)
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-১১১: মৃণালিনীর মৃত্যুর পর বিবাহ-প্রস্তাবের মুখোমুখি রবীন্দ্রনাথ
ওপারে যে-রয়েছে, সে কিছু বলল। শুনতে-শুনতে সুদীপ্তর মুখচোখের ভঙ্গি বদলে গেল। কিছুটা অসহায়তা, কিছুটা হতাশা, কিছুটা রাগ-ক্ষোভ মিলিয়ে আলাদা কিছু।
তারপরেই সে চেঁচিয়ে উঠল, “হোয়্যাট? মারা গিয়েছেন না-কি?”
শাক্য ঘাড় ঘোরাল। কার মারা যাওয়ার কথা বলছে সুদীপ্ত?
সুদীপ্তও শাক্যর দিকে তাকালো। তারপর স্পিকারে হাত চেপে উত্তেজিত গলায় বলল, “শাক্যদা! আবার কালাদেওর আক্রমণ। আবার সেই পিশাচপাহাড় রিসর্ট! আমাদের এক্ষুনি যেতে হবে!”
শাক্য ফোনে দিদিকে কিছু বলে ফোন কেটে দিল। তারপর সুদীপ্তর দিকে এগিয়ে এসে বলল, “কার উপরে হল আক্রমণ এবার? ট্যুরপার্টির কেউ?”
“গ্রহের ফের শাক্যদা। কোথায় ভেবেছিলাম, কাল সদরে গিয়ে এই কেসটা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য করণীয় কাজগুলি সেরে পরশুই আমরা ফিল্ডে নেমে পড়তে চেষ্টা করবো। তা এখন হবে কি-না জানি না। আগের কেসগুলি নিয়েই নাজেহাল। এখন আবার নতুন কেস এসে জুটলো। এই কালাদেও আমাদের পাগল না করে ছাড়বে না, দেখবেন!” —চলবে।
তারপরেই সে চেঁচিয়ে উঠল, “হোয়্যাট? মারা গিয়েছেন না-কি?”
শাক্য ঘাড় ঘোরাল। কার মারা যাওয়ার কথা বলছে সুদীপ্ত?
সুদীপ্তও শাক্যর দিকে তাকালো। তারপর স্পিকারে হাত চেপে উত্তেজিত গলায় বলল, “শাক্যদা! আবার কালাদেওর আক্রমণ। আবার সেই পিশাচপাহাড় রিসর্ট! আমাদের এক্ষুনি যেতে হবে!”
শাক্য ফোনে দিদিকে কিছু বলে ফোন কেটে দিল। তারপর সুদীপ্তর দিকে এগিয়ে এসে বলল, “কার উপরে হল আক্রমণ এবার? ট্যুরপার্টির কেউ?”
“গ্রহের ফের শাক্যদা। কোথায় ভেবেছিলাম, কাল সদরে গিয়ে এই কেসটা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য করণীয় কাজগুলি সেরে পরশুই আমরা ফিল্ডে নেমে পড়তে চেষ্টা করবো। তা এখন হবে কি-না জানি না। আগের কেসগুলি নিয়েই নাজেহাল। এখন আবার নতুন কেস এসে জুটলো। এই কালাদেও আমাদের পাগল না করে ছাড়বে না, দেখবেন!” —চলবে।
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel): পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।