পর্ব-৬১: বাথটাব/১৩

ওপ্রান্তে ডিসি ডিডি ভৈরব চক্রবর্তী সুপরিচিত কণ্ঠস্বর—
—শুনতে পাচ্ছো ধৃতিমান?
—হ্যাঁ স্যার পরিষ্কার !
—শ্রেয়ার কাছে আমি রেগুলার আপডেট পাই।

শ্রেয়া হঠাৎ জানতে চাইল
—স্যার এখন ওখানে কটা বাজে?
—এখন রাত আটটা। তোমাদের তো সাড়ে বারোটা তোমাদের মতো নিশাচরেরা ছাড়া আর কেউ জেগে নেই?
শ্রেয়া হেসে ফেলল—
—শ্রেয়া তোমার দুর্গাপুর ট্রিপ কেমন হল, কোন লিড পেলে?
—না স্যার! ডক্টর সুরজিৎ ব্যানার্জির সঙ্গে কৌশিকীর অ্যাফেয়ারটা নিয়ে ওর মা-বাবা কিছুই প্রায় জানতেন না। তার ফলে ওই ইউটিউবারের ভিডিয়ো ইনফরমেশনটা ওদের কাছে খুবই শকিং!
—তোমার কি মনে হয় যে ওই ভিডিয়ো দেখেই রনজয় ডক্টর ব্যানার্জিকে অ্যারেস্ট করতে চাইছে?

শ্রেয়া উত্তর না দিয়ে চুপ করেছিল কিন্তু ধৃতিমান উত্তর দিল।
—হ্যাঁ স্যার আমার সেটাই মনে হয়!
—আচ্ছা চ্যাম্প তোমার কি মনে হয় যে খুনটা ডক্টর ব্যানার্জি করেননি!
—এইরে স্যার এইসব চ্যাম্পট্যাম্প আর বলবেন না! আপনাদের ডিপার্টমেণ্টের অনেকে…
—আরে! লাইনে তো শ্রেয়া আছে! এমন সময় মেয়ের কাছে এলাম এই সময়টা কলকাতায় থাকাটা খুব জরুরি ছিল। এনিওয়েস তোমার কি মনে হয় সেটা বল।
—আমি খুব শিওর না হলেও সেটা হবার সম্ভাবনাই বেশি।

—আচ্ছা তুমি ঠিক কি ভাবছো? আই মিন এমন কিছু যেটা আমরা একেবারেই ভাবছি না!
—আমি একবার ওই ইউটিউবার ছেলেটার সঙ্গে কথা বলতে চাই! ও হঠাৎ এই ভিডিওটা করতে গেল কেন?
—ওকে অফিসে আনিয়ে কথা বলতে চাও!
—না স্যার একেবারেই না! আমি এই অ্যাঙ্গেলটা ওপেন করতেই চাই না!
—তুমি চাইছোএকা গিয়ে ইউটিউবার ছেলেটার সঙ্গে কথা বলবে?
– না ঠিক তানয়আমি আমার সঙ্গে শ্রেয়ারকেও চাইছি তবে প্লেনড্রেসে।
-বুঝেছি তার মানে তুমি চাইছ, শ্রেয়ার পুলিশ এন্টিটিটা সঙ্গে থাক। কিন্তু আন-অফিসিয়ালি।
—এক্সাটলি। আমার মনে হচ্ছে না যে সহজে প্রশ্ন করলেই ওসব উত্তর দিয়ে দেবে। তাই একটু ধমক একটু দাবড়ানি দেওয়াটা দরকার!
—শ্রেয়া
—স্যার!
—বুঝে গিয়েছ?
—স্যার!

—কাল সকালেই তোমাদের মিশন ইউটিউবানন্দ ।
ধৃতিমান বলে উঠল।
—হ্যাঁ স্যার। আপনি মেয়ের কাছে গিয়েছেন। এসব নিয়ে ভাববেন না আমরা সামলে নেব।
—আরে আমি পুলিশে চাকরি করি সেটা ভুলে গেলেও আমার টিনএজ নাতনি তো সেটা ভুলতে দেবে না। তাকে রেগুলার আমাদের ডিপার্টমেন্টের থ্রিলার শোনাতে হয়। রোজ তার স্টাডি শেষ হলে ডিনার করেই আমার কাছে এসে হাজির আমাকেও ওর মতো করে সেন্সর করে শোনাতে হয়!
—স্যার একটা কথা বলি।
—বলে ফেল।

—আপনি সন্ধেবেলা নাতনিকে কী শোনাবেন সারাদিনে সেটা লিখে ফেলুন এ’কদিনে যা লেখা হবে সামনের বইমেলায় সেটা হই হই করে বেস্টসেলার।
—জানো চ্যাম্প, আমি এমনি এমনি তোমায় এই নামটা দিইনি। তুমি সত্যানুসন্ধানী তুমি নাট্যকার, পরিচালক, আবার তুমিই চিত্রনাট্যকার সিনেমা এবং তথ্যচিত্রনির্মাতা! ব্যোমকেশ লিখতে পারলে শরদ্বিন্দুকে অজিত সাজতে হত না। আবার দেখো ফেলুদা সঙ্গে একজন সুপারহিট রহস্যকাহিনিকার থাকতেও লেখার স্বত্ব একজন সেরা লেখককে দিয়েছেন। কারণ হল গপ্পো-উপন্যাস হল রসগোল্লার মতো! খেতে যত আরাম বানাতে ততোধিক পরিশ্রম! পড়তে পড়তে আমারও মনে হয় এতো গপ্পো বলার মতোই সোজাসাপটা আর সেতো আমরা সক্কলে সর্বক্ষণ বলছি, কিন্তু আধপাতা নিজে লিখে সেটা পড়তে বসলেই আক্কেল গুড়ুম! আর রাত করবো না, তোমাদের কাল গুরুত্বপূর্ণ কাজ!
আনঅফিসিয়াল কিন্তু অফিসিয়াল তদন্ত খুব সাবধানে !
—ইয়েস স্যার।
—শ্রেয়া কী ঘুমিয়ে পড়লে।
—না স্যার শুনছি, বলুন।

—কাল আবার চটেমটে চড়ত্থাপড় চালিয়ে দিও না, বলা যায় না স্পাই ক্যামেরায় রেকর্ড করে হয়তো ভাইরাল করে দিল।
—থ্যাঙ্ক ইয়ু স্যার! এটা আমরা ভাবিনি। অডিয়ো বা ভিডিয়ো স্পাই রেকর্ডিংটা খেয়াল করতে হবে, গুড নাইট স্যার!
—গুড নাইট। অল দ্য বেস্ট! আর হ্যাঁ ডাঃ ব্যানার্জি অ্যারেস্ট হলে আমায় টেক্সট কর।—চলবে।