ছবি: প্রতীকী। ছবি: সংগৃহীত।
মিত্রসম্প্ৰাপ্তি
বায়স লঘুপতনকের আচরণে খুবই প্রসন্ন হয়েছিলেন মন্থরক। সে যেমন করে মূষিক হিরণ্যককে আশ্বস্ত করে আরও বললে, এছাড়া পরদেশে বাস করতে হচ্ছে বলে দুঃখ করবারও কোনও কারণ নেই। ধৈর্যবান মননশীল মানুষজনের কাছে বিদেশই বা কি আর স্বদেশই বা কি? তিনি তো যে দেশেই থাকেন সে দেশকেই আপন বাহুবলে নিজের অধীন করে নেন।যেমন সিংহ যে বনেই যায় সেখানেই নিজ দাঁত, নখ আর লেজকে অস্ত্র করে হাতিকে পর্যন্ত হত্যা করে তার রক্তলেখায় নিজের পিপাসা নিবারণ করে।
পরদেশে আগত ব্যক্তি দরিদ্র হলেও তিনি যদি বুদ্ধিমান হন তাহলে তাকে কোনও প্রকার কষ্টসহ্য করতে হয় না। সমর্থ শক্তিশালী লোকেদের পক্ষে কোনও কাজই কঠিন নয়। ব্যবসায়ীদের জন্যে যেমন কোনও স্থানই দূরদেশ নয়, রোজগারের জন্য সকল দেশেই তারা গমন করেন। তেমনই বিদ্বান্ পুরুষদের জন্য বিদেশ বলে কোনও দেশ হয় না। সবই তাঁদের কাছে স্বদেশ। যেমন যে মানুষজন ভালো কথা বলতে পারেন তাঁদের কেউ শত্রু হন না। তাই হে লঘুপতনক! আপনি তো জ্ঞানের ভান্ডার। আপনি সাধারণ মানুষদের মতো নন, আপনি বুদ্ধিমান ব্যক্তি। যে মানুষ উত্সাহগুণে পরিপূর্ণ, কোনও কাজই ফেলে রাখেন না। যিনি কাজ করতে জানেন এবং সমস্ত দুষ্ট স্বভাবগুলোকে দূরে সরিয়ে রাখেন; যিনি অন্যের উপকারকে মনে রাখেন তথা বন্ধুত্বের বিষয়েও যিনি স্থিরসম্পর্কবজায় রাখেন সেই রকম পুরুষের আশ্রমেই শ্রীলক্ষ্মী থাকেন।
সৌভাগ্যলক্ষ্মী স্বয়ং বাসস্থানরূপে এইরকম স্থিতধী পুরুষকে খুঁজে নেন।এছাড়া কেউ যদি কোনও ধন লাভও করেন, কিন্তু সে ধনের ভোগ যদি তাঁর ভাগ্যে লেখা না থাকে, তবে সেই অযাচিত ধনও তাঁরই কর্মফল বশে নষ্ট হয়ে যায়। মনে করুন না যে সেই ধনসম্পদগুলো ওই ক’দিনের জন্যেই আপনার ভোগ্য ছিল মাত্র। আপনা আপনিই যে সম্পদ কাছে আসে ভাগ্যই আবার তাকে ছিনিয়ে নেয়। সত্যি বলতে ধন-সম্পদ অর্জন করেও মানুষ তা ভোগ করতে পারে না। যেমন মূর্খ সোমিলক এক বড় জঙ্গলে পৌঁছে অর্জন করা তার সব ধন-সম্পদ হারিয়ে বসলেন—
অর্থস্যোপার্জনং কৃত্বা নৈব ভোগং সমশ্নুতে।
অরণ্যং মহদাসাদ্য মূঢ় সোমিলকো যথা।। (মিত্রসম্প্রাপ্তি, ১২৭)
হিরণ্যক জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কথমেতৎ’। সেই ব্যাপারটা ঠিক কিরকম?
মন্থরক তখন বলতে শুরু করল—
সৌভাগ্যলক্ষ্মী স্বয়ং বাসস্থানরূপে এইরকম স্থিতধী পুরুষকে খুঁজে নেন।এছাড়া কেউ যদি কোনও ধন লাভও করেন, কিন্তু সে ধনের ভোগ যদি তাঁর ভাগ্যে লেখা না থাকে, তবে সেই অযাচিত ধনও তাঁরই কর্মফল বশে নষ্ট হয়ে যায়। মনে করুন না যে সেই ধনসম্পদগুলো ওই ক’দিনের জন্যেই আপনার ভোগ্য ছিল মাত্র। আপনা আপনিই যে সম্পদ কাছে আসে ভাগ্যই আবার তাকে ছিনিয়ে নেয়। সত্যি বলতে ধন-সম্পদ অর্জন করেও মানুষ তা ভোগ করতে পারে না। যেমন মূর্খ সোমিলক এক বড় জঙ্গলে পৌঁছে অর্জন করা তার সব ধন-সম্পদ হারিয়ে বসলেন—
অরণ্যং মহদাসাদ্য মূঢ় সোমিলকো যথা।। (মিত্রসম্প্রাপ্তি, ১২৭)
হিরণ্যক জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কথমেতৎ’। সেই ব্যাপারটা ঠিক কিরকম?
মন্থরক তখন বলতে শুরু করল—
৫: দুর্ভাগা সোমিলকের কাহিনি
আরও পড়ুন:
সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৭৯: সুন্দরবনের পাখি: টুনটুনি
পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৬৭: সুখে-দুঃখে যাঁরা মিত্রতা বজায় রাখেন, তেমন সজ্জন পুরুষদের সঙ্গেই মিত্রতা করা উচিত
কোনও এক দেশে সোমিলক নামে এক তাঁতি বাস করতো। বিভিন্ন প্রকারের তাঁতের কাপড় বুনতে সে খুবই পারদর্শী ছিল। রাজপোষাকের উপযোগী অসাধারণ সব কাপড় বুনতো সে। কিন্তু অনেক রকমের বস্ত্র বুননের কৌশল তার জানা থাকলেও খাওয়া-পরার অতিরিক্ত কিছু মাত্র ধনসম্পদ তার ছিল না। বরং যে সমস্ত তাঁতিদের তেমন কিছু কৌশল রপ্ত ছিলো না বা যারা খুব একটা ভালো কাপড় বুনতেও পারতো না তাদের কিন্তু ধন-সম্পত্তির অন্ত ছিল না। মোটা কাপড় বুনলেও সেই সব সাধারণ তাঁতিদের সম্পত্তি ছিল ঈর্শা করার মতো। এইসব দেখে অত্যন্ত মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে সেই সোমিলক একদিন তার স্ত্রীকে বলল, প্রিয়ে! প্রচুর ধনসম্পদ আর তাল তাল সোনার মালিক এই সব সাধারণ তাঁতিদের একবার দেখো। আমার মনে হয় এখানে থাকাটা আমার উপযুক্ত নয়। এখানে থেকে আমার লক্ষ্মীলাভের কোনও সম্পর্কই নেই। সেই জন্য ধন-সম্পদ রোজগারের জন্য অন্যত্র কোথাও চলে যাওয়াটাই মনে হয় সমীচীন হবে।
আরও পড়ুন:
ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব ৪২: রবীন্দ্রনাথকে ‘ভারত ভাস্কর’ উপাধি দিয়েছিলেন রাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-১০৪: আশ্রমের আনন্দময় পিকনিক
স্ত্রী বলল, ওহে প্রিয়তম! এই সব ফালতু কথা। এখান থেকে অন্যত্র কোথাও চলে গেলে ধনলাভ হবে এইসব যারা বলে তারা ঠিক বলে না। ধন যদি মিলবার হয় তবে এইখানে নিজের জায়গাতেই মিলবে, না হলে অন্যত্র কোথাও গিয়েও মিলবে না। পণ্ডিতেরা বলেন, যে পাখী আকাশে ওড়ে তাকেও কিন্তু খাবার সংগ্রহ করবার জন্য এই পৃথিবীপৃষ্ঠে অবতরণ করতে হয়। এ সবই আসলে তার পূর্বজন্মের কর্মফল। কারণ পূর্বজন্মে যে মানুষ কাউকে কিছু দান করেনি, তারই এ জন্মে কিছুই লাভ হয় না।
আসল কথাটা হল, যা হওয়ার নয়, তা কখনই হবে না; আর যেটা হওয়ার সেটা বিনা চেষ্টাতেই হয়। ফলে যে জিনিষ ভাগ্যে থাকে না, তা হাতের মুঠোতে এলেও নষ্ট হয়ে যায়। যদি ভাবো যে পূর্বজন্মে বিদ্যমান হাজার হাজার মানুষের হাজার হাজার সুকর্ম বা দুষ্কর্মে ফল পরজন্মে প্রাণীর কাছে কিভাবে আসে তাহলে বলতে হয়, একটি বাছুর হাজার গরুর পালের মধ্যেই নিজের মাকে খুঁজে পেয়ে যায়, ঠিক তেমনই ভাবে পূর্বজন্মকৃত কর্মও তার কর্তাকে অনুসরণ করে, তাকে ঠিক খুঁজে নেয়। সেই কর্মফল এমনভাবে প্রাণীর সঙ্গে ওতোঃপ্রোতো ভাবে জড়িয়ে থাকে যে সে যখন ঘুমায় তার কর্মফলও তার সঙ্গে তখন ঘুমিয়ে থাকে, সে যখন চলে কর্মফলও তখন তার সচল হয়। কর্মফল এমনই ভাবে জীবের আত্মার মধ্যে আত্মস্থ হয়ে থাকে। ছায়া যেমন রৌদ্রের নিত্য সহচর! রৌদ্রছায়া যেমন পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে মিলে থাকে, তেমনইভাবে পূর্বজন্মে করা সুকর্ম বা দুষ্কর্ম আর তার কর্তা একে অপরের সঙ্গে আবদ্ধ থাকে। তাই আমার মনে হয় এখানেই নিজের ব্যবসায়ে মন দাও।
আসল কথাটা হল, যা হওয়ার নয়, তা কখনই হবে না; আর যেটা হওয়ার সেটা বিনা চেষ্টাতেই হয়। ফলে যে জিনিষ ভাগ্যে থাকে না, তা হাতের মুঠোতে এলেও নষ্ট হয়ে যায়। যদি ভাবো যে পূর্বজন্মে বিদ্যমান হাজার হাজার মানুষের হাজার হাজার সুকর্ম বা দুষ্কর্মে ফল পরজন্মে প্রাণীর কাছে কিভাবে আসে তাহলে বলতে হয়, একটি বাছুর হাজার গরুর পালের মধ্যেই নিজের মাকে খুঁজে পেয়ে যায়, ঠিক তেমনই ভাবে পূর্বজন্মকৃত কর্মও তার কর্তাকে অনুসরণ করে, তাকে ঠিক খুঁজে নেয়। সেই কর্মফল এমনভাবে প্রাণীর সঙ্গে ওতোঃপ্রোতো ভাবে জড়িয়ে থাকে যে সে যখন ঘুমায় তার কর্মফলও তার সঙ্গে তখন ঘুমিয়ে থাকে, সে যখন চলে কর্মফলও তখন তার সচল হয়। কর্মফল এমনই ভাবে জীবের আত্মার মধ্যে আত্মস্থ হয়ে থাকে। ছায়া যেমন রৌদ্রের নিত্য সহচর! রৌদ্রছায়া যেমন পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে মিলে থাকে, তেমনইভাবে পূর্বজন্মে করা সুকর্ম বা দুষ্কর্ম আর তার কর্তা একে অপরের সঙ্গে আবদ্ধ থাকে। তাই আমার মনে হয় এখানেই নিজের ব্যবসায়ে মন দাও।
আরও পড়ুন:
গল্পবৃক্ষ, পর্ব-১১: কাঁটার মুকুট
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৯: হারিয়ে যাওয়ার ‘জীবন তৃষ্ণা’
স্ত্রীর কথা শুনে সেই তাঁতি তখন বলল, হে প্রিয়ে! এ কথাটা কিন্তু তুমি কিন্তু ঠিক বলোনি। চেষ্টা না করলে কর্মও কিন্তু সঠিক ফলদান করে না। ঠিক যেমন এক হাতে তালি বাজে না, তেমনই উদ্যম বা প্রচেষ্টা ছাড়া কর্মও ফল প্রদান করে না। দৃষ্টান্তরূপে বলা যায় যে পূর্বজন্মে করা সুকর্মের ফলে যদি ভোজনও মেলে, তাতেও যদি হাতের প্রচেষ্টা না থাকে তো সেই খাবার কিন্তু মুখ পর্যন্ত পৌঁছয় না। সিংহের মতো উদ্যোমী এবং পরাক্রমী পুরুষদেরই লক্ষ্মী প্রাপ্তি ঘটে। যারা কাপুরুষ তারাই শুধু দৈবের দোহাই দিয়ে ভাগ্যের হাতে নিজেকে সঁপে দেয়। আমার ভাগ্যে ধন নেই, এইসব বলে তারাই কাঁদুনি গায়, কিন্তু সে ধন অর্জনের চেষ্টাটুকুও করে না। তাই ভাগ্য-টাগ্য সব ছেড়ে নিজের ক্ষমতা অনুসারের দৃঢ়ভাবে প্রচেষ্টা করতে হবে আর চেষ্টা করেও যদি কার্যসিদ্ধি না হয় তাহলে নিজের চেষ্টায় কোথায় দোষ ছিল তারই পুনর্মূল্যায়ন করা উচিত।
উপরের কাহিনীগুলি পড়ে একটা কথা নিশ্চয় অনুমান করাই যাচ্ছে যে পঞ্চতন্ত্রকার এখানে মূলত দেখাতে চেয়েছেন যে প্রাচীন ভারতীয় সমাজ জীবনে এই দৈব এবং পুরুষার্থের দ্বন্দ্বটি মানুষের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং মানসিক জগতে ঠিক কতোখানি প্রভাব ফেলেছিলো। চিরকালই সমাজে দু’ই শ্রেণির মানুষ থাকেন, যাদের মধ্যে একশ্রেণির লোকেরা ভরসা করেন দৈব মানে ভাগ্যেরউপর এবং অপর একশ্রেণির মানুষ যারা সেই দৈব বা ভাগ্যকে মানে না; তারা নিজের মতো করে ভাগ্যকে রচনা করেন।
উপরের কাহিনীগুলি পড়ে একটা কথা নিশ্চয় অনুমান করাই যাচ্ছে যে পঞ্চতন্ত্রকার এখানে মূলত দেখাতে চেয়েছেন যে প্রাচীন ভারতীয় সমাজ জীবনে এই দৈব এবং পুরুষার্থের দ্বন্দ্বটি মানুষের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং মানসিক জগতে ঠিক কতোখানি প্রভাব ফেলেছিলো। চিরকালই সমাজে দু’ই শ্রেণির মানুষ থাকেন, যাদের মধ্যে একশ্রেণির লোকেরা ভরসা করেন দৈব মানে ভাগ্যেরউপর এবং অপর একশ্রেণির মানুষ যারা সেই দৈব বা ভাগ্যকে মানে না; তারা নিজের মতো করে ভাগ্যকে রচনা করেন।
আরও পড়ুন:
মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৯৪: দশরথপুত্র ভরত, এক ব্যতিক্রমী চরিত্র, বর্তমানের নিরিখে এক বিরলতম প্রজাতি
মুলো খেতে আপত্তি নেই, তা হলে তার পাতার কী দোষ করল? এই শাকের কত পুষ্টিগুণ জানেন?
আগের কয়েকটি গল্পেপঞ্চতন্ত্রকার দৈব বা ভাগ্য নিয়ে যে সব বড় বড় কথাবার্তা বললেন সেগুলো আসলে দৈবজ্ঞ মতে বিশ্বাসীজনসম্প্রদায়ের প্রাথমিক অভিমত, যা সুপ্রচীনকাল থেকে শুরু করে আজের দিনেও ভারতীয় জনমানসে দেখতে পাওয়া যায়। এই গল্পের তাঁতি সোমিলক এর বিপরীত ঘরানার মানুষ, যাঁরা প্রকৃত অর্থেও ভাগ্যে বিশ্বাসী নন। যাঁরা প্রচেষ্টায় বিশ্বাসী। তাঁদের মতে ভাগ্যকে মানুষ তৈরি করে নিজেদের একান্ত প্রচেষ্টায়; তাঁরা দৈবের ঘাড়ে সব কিছু দোষ চাপিয়ে নিজেরা নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থাকতে রাজি নয়। তাঁরা কঠোর পরিশ্রম এবং প্রচেষ্টায় বিশ্বাসী। এইরকম মানসিকতা সম্পন্ন মানুষজনের অভিমতই এখন শুনতে পাওয়া যাবে তাঁতি সোমিলকের কথায়।
স্ত্রীকে বুঝিয়ে সে বলল, হে প্রিয়ে! চেষ্টা করলে তবে কার্যসিদ্ধি হয়, মনে মনে শুধু ভাবলাম আর কার্যসিদ্ধি হয়ে গেল এমনটা বাস্তবে হয় না। গভীর জঙ্গলে অসংখ্য হরিণ চরে বেড়ালেও সিংহ যদি ঘুমিয়ে থাকে তাহলে নিজে নিজে কিন্তু তারা সিংহের মুখে প্রবেশ করে না। সিংহকেও প্রচেষ্টা করতে হয় শিকার পাওয়ার জন্য। চেষ্টাই এই জগতের সবকিছু সিদ্ধির মূল। শুধু ইচ্ছা থাকলেই এই জগতে কিছু লাভ করা যায় না, তার জন্যে চেষ্টা করতে হয়। একমাত্র কাপুরুষরাই চেষ্টা না করে বলে ‘যা হওয়ার তাই হবে’।—চলবে।
স্ত্রীকে বুঝিয়ে সে বলল, হে প্রিয়ে! চেষ্টা করলে তবে কার্যসিদ্ধি হয়, মনে মনে শুধু ভাবলাম আর কার্যসিদ্ধি হয়ে গেল এমনটা বাস্তবে হয় না। গভীর জঙ্গলে অসংখ্য হরিণ চরে বেড়ালেও সিংহ যদি ঘুমিয়ে থাকে তাহলে নিজে নিজে কিন্তু তারা সিংহের মুখে প্রবেশ করে না। সিংহকেও প্রচেষ্টা করতে হয় শিকার পাওয়ার জন্য। চেষ্টাই এই জগতের সবকিছু সিদ্ধির মূল। শুধু ইচ্ছা থাকলেই এই জগতে কিছু লাভ করা যায় না, তার জন্যে চেষ্টা করতে হয়। একমাত্র কাপুরুষরাই চেষ্টা না করে বলে ‘যা হওয়ার তাই হবে’।—চলবে।
* পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি (Panchatantra politics diplomacy): ড. অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় (Anindya Bandyopadhyay) সংস্কৃতের অধ্যাপক, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়।/strong>