শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে

কাজললতার আওতাঘেরা একদা নীল ছেলেবেলাটি আমাদের “বকবক বকম্ বকম্” পায়রাগুলোর সঙ্গী হয়ে চিনেছিল একটা অন্যরকম স্বর— ঠিক ঠিক মতো নকলে কুলোয় না তাকে কারোরই,অথচ নকলনবিশির জন্য মরিয়া হয়ে উঠতে দ্যাখা মা-মাসি-কাকিমা থেকে গাছকোমরে দিদির দলে নিজেকেও কখন সাব্যস্ত করা হয়ে যেত যে! সে সময়টা আরো অনেক অনন্য সুরেলা স্বরে মনোরম হয়ে আসত পুজোবার্ষিকীর গন্ধ, নববর্ষের দিনেরা— তবু ওই একটি মাত্র বিশেষ নকল অযোগ্যতা পীড়ন করত খুব, মনে আছে। হুঁ, ‘গানে মোর কোন ইন্দ্রধনু’— বলে হংসপালকে তিরতিরোনো সে স্বপ্নের রাগের নাম, গীতশ্রী , যাঁকে প্রথম দৃশ্যমানতায় পাওয়া সুচিত্রা সেন নামের এক অমোঘ মোচড়ে!
কী আশ্চর্য আর আশ্চর্য এই অনুভব যে! কতদিন ধরে অবোধ মনের বালাই নিয়ে ভাবনা এসেছে ‘থই থই শাওন এল ঐ’, বা ‘চন্দনপালঙ্কে শুয়ে একা একা কী হবে’ গানগুলি বুঝি সবই উত্তমকুমারীয় অধিকার! সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় মায়ের থেকে মেয়েতে বর্তানো এক অনন্য উত্তরাধিকার আমাদের মেয়েবেলার। ‘রাই আমাদের করছে সিনান লজ্জা পাবে হায়’— বলে শিউরোনো সে সিঁদুর রাঙানো প্রথম কিশোরীবেলা চিরঋণী তাঁর কাছে। বড়ে গুলাম আলী খাঁ-র স্নেহধন্যা এই অতুল্য জহরতের উপযুক্ত নজরানা পাওয়া যায়নি দেশের নানাবিধ খেতাবের ‘রূপো’ কথায়, দেওয়া যায়নি দেশজোড়া স্বীকৃতির তাবিজকবচ। তাতে কী? যে গানে প্রজাপতি পাখায় পাখায় রঙ ছড়ায়, সে গানের চিরকিশোরী নবতিপর বয়সেও তাঁর রামধনুকে ছড়িয়ে দিয়ে গেলেন সবখানে সবখানে সবখানে।

Skip to content