
পিশাচপাহাড় রিসর্ট থেকে তদন্ত এবং ‘পুছ্তাছ্’ শেষ করে শাক্য এবং সুদীপ্ত যখন ফিরল, তখন মালাকার মুখ হাঁ করে চেয়ারে বসে সুখনিদ্রা দিচ্ছেন। শাক্যরা যে এসেছে, সেটা টের না পাওয়ায় অনেকক্ষণ সামনের টেবিলের উপরে ঠিক হিন্দি ফিল্মে দুষ্টু পুলিশ অফিসারেরা যেমনভাবে শুয়ে থাকেন, সেই ভাবে শুয়ে নাক ডাকাছিলেন। সুদীপ্ত বারদুই গলা খাঁকারি দিল। এমনিতে সে এই ব্যাপারটায় অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে, কিন্তু শাক্যর সামনে বড়সাহেব এমনভাবে ঘুমালে যে থানার মানমর্যাদা বলতে কিছু আর অবশিষ্ট থাকে না, সে-কথা সম্বন্ধে সে ভালোমতোই ওয়াকিবহাল। সেই জন্যই চেষ্টা করছিল যাতে বড়বাবু জেগে ওঠেন এবং শাক্যদার কাছে খারাপ ইমপ্রেশন না ক্রিয়েট হয়।
শাক্য অবশ্য বেশ মজা পাচ্ছিল সুদীপ্তর প্রচেষ্টা দেখে। সে নিজে থানায় সেকেণ্ড অফিসার থাকাকালীন এইরকম ঘটনার সঙ্গে ভালো মতোই পরিচিত। ফলে সে সুদীপ্তকে নিরস্ত করে বলল, “বড়বাবুর নাসারন্ধ্রে ত্রুটি আছে, শ্বাসযন্ত্রের গতিও স্বাভাবিক নয়। শুনেছি, এইরকম ত্রুটি থাকলেই মানুষ এ ভাবে বিকট গর্জন করে নাক ডাকতে পারে। যাই হোক, ঘুমাতে দাও। আমার মা বলতেন, ঘুমন্ত মানুষকে জাগাতে নেই। আর আমি বলি, রণে-বনে-জলে-জঙ্গলে যেখানেই তোমার ঘুম পাবে, ঘুমিয়ে নিও, কিন্তু তারপর নিজের কাজে তোমার বেস্টটাও দিও। আশা করি মালাকারবাবু কাল আমাদের কথা শুনে নিজেদের বেস্টটাই দেবেন। আজ ছেড়ে দাও।”
“কিন্তু রিপোর্ট না পেলে তো কাল সকালে একেবারে দক্ষযজ্ঞ বাঁধিয়ে দেবেন !” সংশয় গলায় নিয়ে সুদীপ্ত বলল, “তখন আমাকেই দোষ দেবেন, ওঁকে ডেকে তুলিনি বলে!”
“ওসব কিছুই করবেন না। তুমি যে থানায় এসেছিলে তদন্ত শেহ হওয়ার পর এবং অনেক চেষ্টা করেছো যাতে বড়বাবুর ঘুম ভাঙে, কিন্তু আফিম বা চরস খেয়ে যে ঘুম দেয়, তাঁর ঘুম এত সহজে ভাঙে না। চল। রাত তো প্রায় ভোর হয়ে এল। তোমার কোয়াটার্সে যাই এবং দু’জনে দু’কাপ কড়া কফি নিয়ে গেমপ্ল্যান ঠিক করি।”
“গেমপ্ল্যান ?” অবাক গলায় সুদীপ্ত জিজ্ঞাসা করল।
“হ্যাঁ, গেমপ্ল্যান। জানোই তো আগে থেকে প্ল্যানিং না-থাকলে সম্পর্ক, তা সে পারিবারিক হোক বা ব্যবসায়িক, বেশিদিন টেকে না। চলো, আর হাঁ করে দাঁড়িয়ে থেকে লাভ নেই।”
শাক্য অবশ্য বেশ মজা পাচ্ছিল সুদীপ্তর প্রচেষ্টা দেখে। সে নিজে থানায় সেকেণ্ড অফিসার থাকাকালীন এইরকম ঘটনার সঙ্গে ভালো মতোই পরিচিত। ফলে সে সুদীপ্তকে নিরস্ত করে বলল, “বড়বাবুর নাসারন্ধ্রে ত্রুটি আছে, শ্বাসযন্ত্রের গতিও স্বাভাবিক নয়। শুনেছি, এইরকম ত্রুটি থাকলেই মানুষ এ ভাবে বিকট গর্জন করে নাক ডাকতে পারে। যাই হোক, ঘুমাতে দাও। আমার মা বলতেন, ঘুমন্ত মানুষকে জাগাতে নেই। আর আমি বলি, রণে-বনে-জলে-জঙ্গলে যেখানেই তোমার ঘুম পাবে, ঘুমিয়ে নিও, কিন্তু তারপর নিজের কাজে তোমার বেস্টটাও দিও। আশা করি মালাকারবাবু কাল আমাদের কথা শুনে নিজেদের বেস্টটাই দেবেন। আজ ছেড়ে দাও।”
“কিন্তু রিপোর্ট না পেলে তো কাল সকালে একেবারে দক্ষযজ্ঞ বাঁধিয়ে দেবেন !” সংশয় গলায় নিয়ে সুদীপ্ত বলল, “তখন আমাকেই দোষ দেবেন, ওঁকে ডেকে তুলিনি বলে!”
“ওসব কিছুই করবেন না। তুমি যে থানায় এসেছিলে তদন্ত শেহ হওয়ার পর এবং অনেক চেষ্টা করেছো যাতে বড়বাবুর ঘুম ভাঙে, কিন্তু আফিম বা চরস খেয়ে যে ঘুম দেয়, তাঁর ঘুম এত সহজে ভাঙে না। চল। রাত তো প্রায় ভোর হয়ে এল। তোমার কোয়াটার্সে যাই এবং দু’জনে দু’কাপ কড়া কফি নিয়ে গেমপ্ল্যান ঠিক করি।”
“গেমপ্ল্যান ?” অবাক গলায় সুদীপ্ত জিজ্ঞাসা করল।
“হ্যাঁ, গেমপ্ল্যান। জানোই তো আগে থেকে প্ল্যানিং না-থাকলে সম্পর্ক, তা সে পারিবারিক হোক বা ব্যবসায়িক, বেশিদিন টেকে না। চলো, আর হাঁ করে দাঁড়িয়ে থেকে লাভ নেই।”
অগত্যা সুদীপ্ত শাক্যকে নিয়ে বেরিয়ে এলো। বেরিয়ে আসার সময় এক কনস্টেবল্কে বলে এল, “বড়সাহেবের ঘুম ভাঙলে বোলো, আমরা এসেছিলাম। কিন্তু উনি সামান্য বিশ্রাম নিচ্ছেন বলে আর ডাকলাম না। কাল সকালে এসে রিপোর্ট লিখবো।”
“ঠিক হ্যায় সাহাব!” কনস্টেবল কাঁচা সুরে এবং স্বরে অভিবাদন জানালো। সে-যে অনাবশ্যকভাবে কেন মাঝে-মাঝে হিন্দি ভাষায় তার দখল প্রমাণ করতে চায় কে জানে ?
কোয়াটার্সে যাওয়ার পথে শাক্য বলেছিল, “আজ রাতে আর ঘুম আসবে না বলেই মনে হয়!”
সুদীপ্ত বলেছিল, “কেন দাদা? একটু না-হয় বেলা পর্যন্ত গড়িয়ে নেবো।”
“ব্রো, এখন আমাদের আর বেলা করে ঘুমিয়ে নেওয়ার সময় নেই। যত দেরি করবো, তত বেপরোয়া হয়ে উঠছে হিংস্র খুনির দল।”
“খুনির দল বলছেন কেন? একা একজন খুনিও তো হতে পারে!”
“মনে হয় না। একা একজনের পক্ষে একইসময়ে এতগুলি জায়গায় এতরকম ঘটনা ঘটানো অসম্ভব, সে সুপারম্যান হলেও অসম্ভব। অতএব এই ঘটনাগুলির সঙ্গে একের বেশি লোক জড়িত, সে-বিষয়ে এখন আমি নিঃসন্দেহ!”
বলতে-বলতে থানা থেকে বেরিয়ে সুদীওতর কোয়াটার্সের দিকে যাচ্ছিল। জীবন এসে দাঁড়ালেন। বললেন, “কোথাও যেতে হবে স্যার? আমি কিন্তু রেডি!”
আসবার সময় জীবনবাবুই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। মানুষটি সাংঘাতিক রকমের কম কথা বলে। শাক্য তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “কী জীবনবাবু? আজ আপনার খুব পরিশ্রম হয়ে যাচ্ছে, তাই তো? কিন্তু কী করবেন বলুন, সবই ওই যাকে বলে গ্রহের ফের। তা-না-হলে খন আমি-আপনি-সুদীপ্তস্যার সকলেই সুখে বিশ্রাম নিতাম।”
জীবন আলতো স্বরে বলল, “নাহ্ স্যার। আমার আর পরিশ্রম কী? আমি তো কেবল গাড়ি চালিয়ে যাই। আপনারা তো মাথা ঘামানোর আসল কাজটি করেন স্যার। তদন্ত করেন। আসল পরিশ্রম তো আপনাদের। আমার চেয়েও আপনাদের পরিশ্রম অনেক বেশি। তা আপনারা পারলে আমি পারবো না? কিচ্ছু হয় নি স্যার। এই থানায় এতকাল চাকরি করছি, অর্ধেক জীবন বিশ্রাম নিয়েই কেটে গেল, ক’দিন না-হয় একটু না-ঘুমিয়ে দৌড়ঝাঁপ করলাম!”
“ঠিক হ্যায় সাহাব!” কনস্টেবল কাঁচা সুরে এবং স্বরে অভিবাদন জানালো। সে-যে অনাবশ্যকভাবে কেন মাঝে-মাঝে হিন্দি ভাষায় তার দখল প্রমাণ করতে চায় কে জানে ?
কোয়াটার্সে যাওয়ার পথে শাক্য বলেছিল, “আজ রাতে আর ঘুম আসবে না বলেই মনে হয়!”
সুদীপ্ত বলেছিল, “কেন দাদা? একটু না-হয় বেলা পর্যন্ত গড়িয়ে নেবো।”
“ব্রো, এখন আমাদের আর বেলা করে ঘুমিয়ে নেওয়ার সময় নেই। যত দেরি করবো, তত বেপরোয়া হয়ে উঠছে হিংস্র খুনির দল।”
“খুনির দল বলছেন কেন? একা একজন খুনিও তো হতে পারে!”
“মনে হয় না। একা একজনের পক্ষে একইসময়ে এতগুলি জায়গায় এতরকম ঘটনা ঘটানো অসম্ভব, সে সুপারম্যান হলেও অসম্ভব। অতএব এই ঘটনাগুলির সঙ্গে একের বেশি লোক জড়িত, সে-বিষয়ে এখন আমি নিঃসন্দেহ!”
বলতে-বলতে থানা থেকে বেরিয়ে সুদীওতর কোয়াটার্সের দিকে যাচ্ছিল। জীবন এসে দাঁড়ালেন। বললেন, “কোথাও যেতে হবে স্যার? আমি কিন্তু রেডি!”
আসবার সময় জীবনবাবুই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। মানুষটি সাংঘাতিক রকমের কম কথা বলে। শাক্য তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “কী জীবনবাবু? আজ আপনার খুব পরিশ্রম হয়ে যাচ্ছে, তাই তো? কিন্তু কী করবেন বলুন, সবই ওই যাকে বলে গ্রহের ফের। তা-না-হলে খন আমি-আপনি-সুদীপ্তস্যার সকলেই সুখে বিশ্রাম নিতাম।”
জীবন আলতো স্বরে বলল, “নাহ্ স্যার। আমার আর পরিশ্রম কী? আমি তো কেবল গাড়ি চালিয়ে যাই। আপনারা তো মাথা ঘামানোর আসল কাজটি করেন স্যার। তদন্ত করেন। আসল পরিশ্রম তো আপনাদের। আমার চেয়েও আপনাদের পরিশ্রম অনেক বেশি। তা আপনারা পারলে আমি পারবো না? কিচ্ছু হয় নি স্যার। এই থানায় এতকাল চাকরি করছি, অর্ধেক জীবন বিশ্রাম নিয়েই কেটে গেল, ক’দিন না-হয় একটু না-ঘুমিয়ে দৌড়ঝাঁপ করলাম!”
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১১৪: বন্দি, জেগে আছো?

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-১৭: একাকিত্বের অন্ধকূপ/২: অন্ধকারের উৎস হতে
জীবনের মার্জিত এবং বুদ্ধিদীপ্ত উত্তর শুনে শাক্য চমৎকৃত হল। আজকাল গুছিয়ে কথা বলার লোক কমে আসছে। সকলের কথাবার্তাই কেমন ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে, অনুভূতিগুলিও। মানুষ অবশ্য চিরকালই সৌন্দর্যের প্রতি নিষ্ঠুর। সকলেই যে-যার মতো সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে চায়। কেউ সৌন্দর্যকে সৌন্দর্যের মতন করে উপলব্ধি করতে চায় না। মানুষের অনুভূতিগুলি আদতে বড় স্বার্থপর। যে-যার নিজের মতো করে সৌন্দর্যকে গড়ে তুলতে চায় বলেই এত হানাহানি, এত হিংসা, এত কাটাকাটি। নিপাট ভদ্রলোকের মতো শান্তশিষ্ট গোবেচারা পিশাচপাহাড় যে এইরকম অশান্ত হয়ে উঠল, সেও তো কিছু মানুষের জন্যই। লোভী, হিংস্র, পরস্বাপহারক কিছু মানুষ। রক্তের হোরিখেলায় মেতে উঠে তাদের নিজেদের ভিতর লুকিয়ে থাকা অসভ্য, আদিম পশুস্বভাবকেই প্রকাশ করে ফেলছে বারবার। জীবন বাবু সে-সবের মধ্যে আশ্চর্য ব্যতিক্রম বলতেই হবে।
শাক্য বলল, “কাল একটু অন্যত্র যাওয়ার কথা ছিল জীবন। কিন্তু পিশাচপাহাড় রিসর্টের ঘটনা একটু বাধার সৃষ্টি করেছে। আজ ভোরেই, আলোটা যখন মোটামুটিভাবে ফুটে উঠবে, আবার সেখানে যেতে হবে। যদিও পুলিশ পোস্টিং করে দিয়েছেন সুদীপ্তবাবু, তবুও সাবধানের মার নেই। তবে পরশু খুব ভোরেই বেরুতে হবে আমাদের। কাল ভালো করে রেস্ট নিয়ে রাখুন। কে জানে কালাদেওর সাঙ্গপাঙ্গরা আবার কোন খেলা খেলে!”
“হুঁ!” বলে চুপ করে গেলেন জীবনবাবু। তবে তিনি যে তার পরেও বাড়ি ফিরে যান নি, নিজের কর্তব্যবোধে অচল-অটল, তা বোঝা গেল এখনও বাড়ি যাননি দেখে।
সুদীপ্ত বলল, “বাড়ি যাননি আপনি? বলেছিলাম তো ভিতরে যাওয়ার আগে, আপনি স্বচ্ছন্দে বাড়ি চলে যান। আজ আর কোথাও বেরুবো না। বেরুলে অন্য গাড়ি-অন্য ড্রাইভার তো আছেনই। আপনি যান। রেস্ট নিন!”
জীবন চলে গেলেন। যাওয়ার সময় বলে গেলেন, “যদি কোন দরকার পড়ে তো স্যার ফোন করে দেবেন আমায়। কোন দ্বিধা করবেন না। আমি অলটাইম আছি আপনাদের সেবা করার জন্য!”
সুদীপ্ত সেদিকে তাকিয়ে বলল, “খুব কর্তব্যনিষ্ঠ এবং অনেস্ট মানুষ। এত ঝড়ঝাপটা গিয়েছে জীবনে, কিন্তু ওঁর মুখের হাসি, কর্তব্যবোধ আজ অবধি কেউ ম্লান করতে পারেনি।”
“এইরকম কিছু-কিছু মানুষ আজও আছেন বলেই কিন্তু পৃথিবীটা মাঝে-মধ্যেই আমাদের এত সুন্দর লাগে”, বলল শাক্য।
শাক্য বলল, “কাল একটু অন্যত্র যাওয়ার কথা ছিল জীবন। কিন্তু পিশাচপাহাড় রিসর্টের ঘটনা একটু বাধার সৃষ্টি করেছে। আজ ভোরেই, আলোটা যখন মোটামুটিভাবে ফুটে উঠবে, আবার সেখানে যেতে হবে। যদিও পুলিশ পোস্টিং করে দিয়েছেন সুদীপ্তবাবু, তবুও সাবধানের মার নেই। তবে পরশু খুব ভোরেই বেরুতে হবে আমাদের। কাল ভালো করে রেস্ট নিয়ে রাখুন। কে জানে কালাদেওর সাঙ্গপাঙ্গরা আবার কোন খেলা খেলে!”
“হুঁ!” বলে চুপ করে গেলেন জীবনবাবু। তবে তিনি যে তার পরেও বাড়ি ফিরে যান নি, নিজের কর্তব্যবোধে অচল-অটল, তা বোঝা গেল এখনও বাড়ি যাননি দেখে।
সুদীপ্ত বলল, “বাড়ি যাননি আপনি? বলেছিলাম তো ভিতরে যাওয়ার আগে, আপনি স্বচ্ছন্দে বাড়ি চলে যান। আজ আর কোথাও বেরুবো না। বেরুলে অন্য গাড়ি-অন্য ড্রাইভার তো আছেনই। আপনি যান। রেস্ট নিন!”
জীবন চলে গেলেন। যাওয়ার সময় বলে গেলেন, “যদি কোন দরকার পড়ে তো স্যার ফোন করে দেবেন আমায়। কোন দ্বিধা করবেন না। আমি অলটাইম আছি আপনাদের সেবা করার জন্য!”
সুদীপ্ত সেদিকে তাকিয়ে বলল, “খুব কর্তব্যনিষ্ঠ এবং অনেস্ট মানুষ। এত ঝড়ঝাপটা গিয়েছে জীবনে, কিন্তু ওঁর মুখের হাসি, কর্তব্যবোধ আজ অবধি কেউ ম্লান করতে পারেনি।”
“এইরকম কিছু-কিছু মানুষ আজও আছেন বলেই কিন্তু পৃথিবীটা মাঝে-মধ্যেই আমাদের এত সুন্দর লাগে”, বলল শাক্য।
আরও পড়ুন:

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৭৮: রক্তে ভেজা মাটিতে গড়ে ওঠে সত্যিকার প্রাপ্তি

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-১১৪: জীবনের নশ্বরতা ও আত্মানুসন্ধান বিষয়ে রামের উপলব্ধি যেন এক চিরন্তন সত্যের উন্মোচন
কোয়াটার্সে ঢুকে প্রথমেই শাক্য একটু স্নান করে ফ্রেশ হয়ে নিতে চাইল। সেইমতো দুজনেই পরপর স্নান সেরে দু’কাপ কড়া কফি নিয়ে সুদীপ্তর কোয়াটার্সের বারান্দায় এসে বসল। আকাশ ক্রমে ফর্সা হচ্ছে। চাল ধোওয়া সরের মতো শেষ রাতের আলোয় ভাসছে চরাচর। সুদীপ্ত একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। নর্থ বেঙ্গলে থাকা একজনের কথা মনে পড়ে গেল তার। সে বড় এই অপাপবিদ্ধ ভোরের সময় পছন্দ করতো। কতকাল সরাসরি দেখা হয় না। ছুটিই পাচ্ছে না। এই কালাদেও-কাণ্ডের রহস্যভেদ আদৌ হলে সে এক মাসের ছুটি চাইবে, তাতে যদি দিন কুড়ি পাওয়া যায়!
শাক্য চুপ করে কিছু ভাবছিল। সুদীপ্ত সে-দিকে তাকিয়ে বলল, “শাক্যদা, আপনি বলছিলেন কীসব গেমপ্ল্যানের কথা!”
শাক্য সামান্য চমকে তাকাল সুদীপ্তর দিকে। তারপর বলল, “সুদীপ্ত, প্রথমত কাল যত দেরিই হোক, আমরা মানে আমি আর তুমি সামান্য কয়েকজন তোমার বিশ্বস্ত পুলিশ নিয়ে ডিএমের কাছে যাবো। লালবাজার থেকে বলে দেওয়া হয়েছে, যখনই আমরা যাবো, আমাদের সাহায্য করতে। অতএব আশা করি অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে সমস্যা হবে না। আমাদের প্রথমেই ওই মিটিংটা করে ফেলতে হবে, কারণ, আমি মনে করছি এই জটিল রহস্যভেদের একটা জট ওই পিশাচপাহাড়ের গুহা। এতকাল আমরা যে কেন সেখানে সরাসরি ছানবিন্ করার কথা ভাবিনি, কে জানে!”
“কিন্তু শাক্যদা, আপনি নিশ্চয়ই ভুলে যাননি যে, পিশাচপাহাড়ের ওই গুহাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মানুষদের যে সেন্টিমেন্ট, তাতে আঘাত লাগলে ওরা কিন্তু ছেড়ে কথা বলবে না। একটা রায়ট বেঁধে যাবে!”
“আমি জানি সুদীপ্ত। সেইজন্যই ডিএমের সঙ্গে কথা বলে একটা ব্যবস্থা নেবো। দেখো, ডিএম যদি কোন মিটিং ডাকেন, নির্বাচিত কিছু ব্লকের বিডিও, এলআরও, আর গ্রাম-পঞ্চায়েত প্রধান এবং তাঁদের চ্যালাচামুণ্ডাই থাকবেন সেই মিটিং-এ, তাহলে প্রাথমিক স্তরে কিছুটা হলেও ঝামেলা করার লোক কমবে। দু’দিনের মিটিং-এর নামে ওঁদের আটকে রাখাটাই ডিএমের কাজ হবে। সেইসময় আমাদের যা-যা ছান্বিন্ করার করে ফেলতে হবে। আর এর জন্য একজনকে আমার দরকার!”
“কাকে?”
“উল্লাস মাহাতোকে!”
“মানে? ম্যাসাজ নেবেন না-কি? সকালে?”
শাক্য চুপ করে কিছু ভাবছিল। সুদীপ্ত সে-দিকে তাকিয়ে বলল, “শাক্যদা, আপনি বলছিলেন কীসব গেমপ্ল্যানের কথা!”
শাক্য সামান্য চমকে তাকাল সুদীপ্তর দিকে। তারপর বলল, “সুদীপ্ত, প্রথমত কাল যত দেরিই হোক, আমরা মানে আমি আর তুমি সামান্য কয়েকজন তোমার বিশ্বস্ত পুলিশ নিয়ে ডিএমের কাছে যাবো। লালবাজার থেকে বলে দেওয়া হয়েছে, যখনই আমরা যাবো, আমাদের সাহায্য করতে। অতএব আশা করি অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে সমস্যা হবে না। আমাদের প্রথমেই ওই মিটিংটা করে ফেলতে হবে, কারণ, আমি মনে করছি এই জটিল রহস্যভেদের একটা জট ওই পিশাচপাহাড়ের গুহা। এতকাল আমরা যে কেন সেখানে সরাসরি ছানবিন্ করার কথা ভাবিনি, কে জানে!”
“কিন্তু শাক্যদা, আপনি নিশ্চয়ই ভুলে যাননি যে, পিশাচপাহাড়ের ওই গুহাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মানুষদের যে সেন্টিমেন্ট, তাতে আঘাত লাগলে ওরা কিন্তু ছেড়ে কথা বলবে না। একটা রায়ট বেঁধে যাবে!”
“আমি জানি সুদীপ্ত। সেইজন্যই ডিএমের সঙ্গে কথা বলে একটা ব্যবস্থা নেবো। দেখো, ডিএম যদি কোন মিটিং ডাকেন, নির্বাচিত কিছু ব্লকের বিডিও, এলআরও, আর গ্রাম-পঞ্চায়েত প্রধান এবং তাঁদের চ্যালাচামুণ্ডাই থাকবেন সেই মিটিং-এ, তাহলে প্রাথমিক স্তরে কিছুটা হলেও ঝামেলা করার লোক কমবে। দু’দিনের মিটিং-এর নামে ওঁদের আটকে রাখাটাই ডিএমের কাজ হবে। সেইসময় আমাদের যা-যা ছান্বিন্ করার করে ফেলতে হবে। আর এর জন্য একজনকে আমার দরকার!”
“কাকে?”
“উল্লাস মাহাতোকে!”
“মানে? ম্যাসাজ নেবেন না-কি? সকালে?”
আরও পড়ুন:

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৯৮: মা সারদার জন্মতিথিতে তাঁর অপূর্ব অমানবীয় রূপ ফুটে উঠল

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৫৭: আলাস্কায় এমন অপরূপ দৃশ্যও দেখা যায়, যেখানে পাহাড়-সমুদ্র-হিমবাহ একসঙ্গে বিরাজমান
“উল্লাস ম্যাসাজ ভালোই করে। ম্যাসাজ নিতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু এবারে উল্লাসকে ডাকবো কারণ, সে হল তথ্যের খনি। আর যে গ্রামে কালাদেওর গুহা, উল্লাআস সেই গ্রামেরই ছেলে। সে-যদি সেই সময় গ্রামে থেকে আমাদের অপারেশন চলার সময়কার খবরাখবর বাইরে থেকে আদানপ্রদান করে, তাহলে আমাদের অপারেশন সাকসেসফুল হতেও পারে!”
“বুঝলাম। তা ওকে কখন চাই ?”
“যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। কাল সদরে যাওয়ার আগেই !”
“বেশ!”
“আর একটা কাজ করতে হবে। পিশাচপাহাড়ে স্টে করা ট্যুরিস্টদের সকলের উপর থেকে নজরবন্দির ব্যাপারটা কোর্টের নোটিশ এনে তুলে নিতে হবে। সকলে কাল থেকে মুক্ত স্বাধীনভাবে ঘুরে-বেড়াতে পারবে। আর সেটা হলে তাদের উপর আমাদের নজর রাখতে খুব সুবিধা হবে। একেই ছোট শহর। তার উপর কোথায়ই বা যাবেন? আমি চাইছি মুক্তির আনন্দে আততায়ী একটা ভুল করুক। তারপর আমরা দেখে নেবো!”
“ওরা যদি জেনে যায় যে, আসলে ওরা এখনও নজরবন্দিই আছে, তবে প্রচ্ছন্নভাবে। তাহলে কী হবে ?”
“কিচ্ছু হবে না। ওরা নিজেদের পিঠ বাঁচাতে চেষ্টা করবে, তারপর নিজেদের জালে নিজেরাই জড়িয়ে পড়বে। তখন রাঘববোয়ালদের ধরতে সুবিধা হবে। ছোট মাছের টোপ দেখিয়ে তবেই না বড় মাছকে ধরা যায় ! সেটাই চাইছি আমি !”
“আর কোন গেমপ্ল্যান?”
“পিশাচপাহাড় রিসর্টে আসা সমস্ত ট্যুরিস্টদের কে-কী-কেন আমার চাই। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। কলকাতার পার্টি সব। আমি ওখান থেকে যা জোগাড় করবার করছি। তুমি কেবল এইখানে বেড়াতে আসার পর কে কী করেছে, কোথায় কোথায় গেছে, কার কার সঙ্গে মিশেছে সেগুলি জোগাড় করে দেবে। আর এখানে যাঁরা আছেন, তাঁদের ব্যাপারে তুমি যতটা পারো ইনফো জোগাড় করে দেবে। এগুলি কিন্তু দ্রুত চাই। আমার মনে হচ্ছে, যত তাড়াতাড়ি আমরা এই তথ্যগুলি জড়ো করতে পারব, তত তাড়াতাড়ি আমরা সমাধানের রাস্তা খুঁজে পাবো!”
“ঠিক আছে। আমি কালকেই ব্যবস্থা করছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের কাছে খবরগুলি যাতে এসে পৌঁছোয়, তা দেখছি!”
“বুঝলাম। তা ওকে কখন চাই ?”
“যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। কাল সদরে যাওয়ার আগেই !”
“বেশ!”
“আর একটা কাজ করতে হবে। পিশাচপাহাড়ে স্টে করা ট্যুরিস্টদের সকলের উপর থেকে নজরবন্দির ব্যাপারটা কোর্টের নোটিশ এনে তুলে নিতে হবে। সকলে কাল থেকে মুক্ত স্বাধীনভাবে ঘুরে-বেড়াতে পারবে। আর সেটা হলে তাদের উপর আমাদের নজর রাখতে খুব সুবিধা হবে। একেই ছোট শহর। তার উপর কোথায়ই বা যাবেন? আমি চাইছি মুক্তির আনন্দে আততায়ী একটা ভুল করুক। তারপর আমরা দেখে নেবো!”
“ওরা যদি জেনে যায় যে, আসলে ওরা এখনও নজরবন্দিই আছে, তবে প্রচ্ছন্নভাবে। তাহলে কী হবে ?”
“কিচ্ছু হবে না। ওরা নিজেদের পিঠ বাঁচাতে চেষ্টা করবে, তারপর নিজেদের জালে নিজেরাই জড়িয়ে পড়বে। তখন রাঘববোয়ালদের ধরতে সুবিধা হবে। ছোট মাছের টোপ দেখিয়ে তবেই না বড় মাছকে ধরা যায় ! সেটাই চাইছি আমি !”
“আর কোন গেমপ্ল্যান?”
“পিশাচপাহাড় রিসর্টে আসা সমস্ত ট্যুরিস্টদের কে-কী-কেন আমার চাই। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। কলকাতার পার্টি সব। আমি ওখান থেকে যা জোগাড় করবার করছি। তুমি কেবল এইখানে বেড়াতে আসার পর কে কী করেছে, কোথায় কোথায় গেছে, কার কার সঙ্গে মিশেছে সেগুলি জোগাড় করে দেবে। আর এখানে যাঁরা আছেন, তাঁদের ব্যাপারে তুমি যতটা পারো ইনফো জোগাড় করে দেবে। এগুলি কিন্তু দ্রুত চাই। আমার মনে হচ্ছে, যত তাড়াতাড়ি আমরা এই তথ্যগুলি জড়ো করতে পারব, তত তাড়াতাড়ি আমরা সমাধানের রাস্তা খুঁজে পাবো!”
“ঠিক আছে। আমি কালকেই ব্যবস্থা করছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের কাছে খবরগুলি যাতে এসে পৌঁছোয়, তা দেখছি!”
আরও পড়ুন:

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৯৭: পাতি সরালি

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-১১৬: শান্তিনিকেতনে কবির প্রথম জন্মোৎসব
“হ্যাঁ। ব্রো, মনে রাখবে, আমরা কোন সাদাসিধে, নিরীহ, ভুল করে অপরাধ করে ফেলা আততায়ীদের সঙ্গে মোকাবিলা করতে বসিনি। আততায়ীরা অত্যন্ত ধূর্ত এবং নিষ্ঠুর। তবে আমি নিশ্চিত একদল দুষ্কৃতকারীদের পরিচালনা যিনি করছেন, তিনি একজনই। এই রহস্যের আসল মেঘনাদ!”
“কোন দিক্ থেকে মনে হল?”
“কার্যকলাপের শৃঙ্খলা দেখে। আততায়ী হোক, কিংবা স্বয়ং কালাদেও, এত পরিকল্পনা করে, এত নিখুঁতভাবে খুনগুলি করে তা চালিয়ে দিচ্ছে কালাদেও নামক এক অপদেবতার মিথের উপর, তা যথেষ্ট বুদ্ধিমান এবং করিতকর্মা সূক্ষ্মবুদ্ধি মাথা ছাড়া সম্ভব নয়। আমাদের ওই রহস্যময় মেঘনাদ অবধি পৌঁছাতে হবে ব্রো। না-হলে কেবল চুনোপুঁটি নিয়ে পড়ে থাকলে বড় মাথাটি পালাতে পারে!”
“এসপিকে বলে যদি পিশাচপাহাড়ের চারিদিক সিল করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে কেমন হয়? সেক্ষেত্রে ওয়ান-ওয়ে ট্র্যাফিকের মতো ব্যবস্থা করতে হবে। মানে আমি বলতে চাইছি যে, পিশাচপাহাড়ের চৌহদ্দীকে কেউ ঢুকতে পারবে, কিন্তু বেরুতে হবে আমাদের ইচ্ছায়!”
“এতে করে আততায়ীদের আরও সাবধান করে দেওয়া হবে সুদীপ্ত। দুটি রাজ্যের সীমান্ত সিল করে দেওয়া যায়, নিয়ন্ত্রণ করা যায়, কিন্তু তার আভ্যন্তরীন কার্যকলাপকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করবে কী করে? তাছাড়া আমরা যেখানে পিশাচপাহাড় রিসর্টের ট্যুরিস্টিদের উপর থেকে যাওয়া-থাকা নিয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছি কিংবা শিথিল করছি, সেক্ষেত্রে অন্যরকম নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দিলে কিন্তু অকারণ হৈ-চৈকে আহ্বান করা হবে। আমাদের আসল উদ্দেশ্য সফল হবে না!”
“বুঝলাম!”
ওরা যখন এই কথাগুলি বলছে, তখন সত্যব্রতকে গুম করে নিয়ে যাচ্ছে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতিকারীদের ক’জন। ওরা সে-খবর যখন পাবে, তখন একদিন গড়িয়ে গিয়েছে। ওদের পিশাচপাহাড় অভিযানের পরের দিন শাক্য এবং সুদীপ্তকে খবর দেবেন মালাকার যে, হেলথসেন্টারের ডাক্তারবাবু তথা সত্যব্রতবাবুকে কারা যেন মিথ্যে কথা বলে তুলে নিয়ে গেছে, তারপর দু’দিন কেটে গেলেও তিনি ঘরে ফেরেননি!” —চলবে।
“কোন দিক্ থেকে মনে হল?”
“কার্যকলাপের শৃঙ্খলা দেখে। আততায়ী হোক, কিংবা স্বয়ং কালাদেও, এত পরিকল্পনা করে, এত নিখুঁতভাবে খুনগুলি করে তা চালিয়ে দিচ্ছে কালাদেও নামক এক অপদেবতার মিথের উপর, তা যথেষ্ট বুদ্ধিমান এবং করিতকর্মা সূক্ষ্মবুদ্ধি মাথা ছাড়া সম্ভব নয়। আমাদের ওই রহস্যময় মেঘনাদ অবধি পৌঁছাতে হবে ব্রো। না-হলে কেবল চুনোপুঁটি নিয়ে পড়ে থাকলে বড় মাথাটি পালাতে পারে!”
“এসপিকে বলে যদি পিশাচপাহাড়ের চারিদিক সিল করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে কেমন হয়? সেক্ষেত্রে ওয়ান-ওয়ে ট্র্যাফিকের মতো ব্যবস্থা করতে হবে। মানে আমি বলতে চাইছি যে, পিশাচপাহাড়ের চৌহদ্দীকে কেউ ঢুকতে পারবে, কিন্তু বেরুতে হবে আমাদের ইচ্ছায়!”
“এতে করে আততায়ীদের আরও সাবধান করে দেওয়া হবে সুদীপ্ত। দুটি রাজ্যের সীমান্ত সিল করে দেওয়া যায়, নিয়ন্ত্রণ করা যায়, কিন্তু তার আভ্যন্তরীন কার্যকলাপকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করবে কী করে? তাছাড়া আমরা যেখানে পিশাচপাহাড় রিসর্টের ট্যুরিস্টিদের উপর থেকে যাওয়া-থাকা নিয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছি কিংবা শিথিল করছি, সেক্ষেত্রে অন্যরকম নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দিলে কিন্তু অকারণ হৈ-চৈকে আহ্বান করা হবে। আমাদের আসল উদ্দেশ্য সফল হবে না!”
“বুঝলাম!”
ওরা যখন এই কথাগুলি বলছে, তখন সত্যব্রতকে গুম করে নিয়ে যাচ্ছে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতিকারীদের ক’জন। ওরা সে-খবর যখন পাবে, তখন একদিন গড়িয়ে গিয়েছে। ওদের পিশাচপাহাড় অভিযানের পরের দিন শাক্য এবং সুদীপ্তকে খবর দেবেন মালাকার যে, হেলথসেন্টারের ডাক্তারবাবু তথা সত্যব্রতবাবুকে কারা যেন মিথ্যে কথা বলে তুলে নিয়ে গেছে, তারপর দু’দিন কেটে গেলেও তিনি ঘরে ফেরেননি!” —চলবে।
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel): পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।