অলঙ্করণ : সৌমি দাসমণ্ডল।
রাত অনেক হয়েছে। প্রায় সাড়ে দশটা বাজে। সুদূর মফস্সলের কথা ভাবলে রাত যে অনেক হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। ছোট্ট শহর প্রায় নিস্তব্ধ। রেলস্টেশন, পুলিশফাঁড়ি, মেন রোডের আশেপাশে স্ট্রিটলাইটগুলি জ্বলছে। আর জ্বলছে পিশাচপাহাড়ের মতো দু’একটি রিসর্ট, হোটেল ইত্যাদিতে। তবে কিছুকাল যাবৎ নানা অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটায় পুলিশ-প্রশাসনের কড়া নির্দেশ যে, রাত ন’টার মধ্যেই রিসর্ট-হোটেল ইত্যাদির মেইন গেট বন্ধ করে দিতে হবে। সেই মতোই আজকাল সব রিসর্ট ইত্যাদির মেইন গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রশাসনের নির্দেশ ছাড়াও নিজেদের ভয়ও আছে।
কালাদেও যে-ভাবে ক্রমশ গুহা ছেড়ে শহরময় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তাতে কখন কোনখানে যে তাঁর আবির্ভাব হয়, কে জানে? নতুন একটা ডেসটিনেশন ট্যুর স্পট হিসেবে অল্পদিনেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল পিশাচপাহাড়, কিন্তু কোণ শনির দৃষ্টি লাগল তার উপর কে জানে, এখন তো যারা ব্যবসা ফেঁদে বসেছিল, তারাই যাই-যাই করছে। পর্যটকদের আনাগোনাও কমে গেছে মাসখানেক হল। বিশেষ করে কলকাতা পার্টির সঙ্গে আসা একজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর পরে সকলেই ভয় পেয়ে গিয়েছে। ট্র্যাভেল ব্লগারেরা আজকাল তাদের পেজ থেকে পিশাচপাহাড়-সংক্রান্ত যাবতীয় ইনফো আপাতত হাইড করে রেখেছে। কে জানে, কোন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে হয়!
পিশাচপাহাড় রিসর্ট এই অঞ্চলে সবচেয়ে পুরানো রিসর্ট। সদরে বেশ কিছু হোটেল আছে, সেখান থেকে আগে লোকে গাড়ি ভাড়া করে এসে কিছু সময় কাটিয়ে যেত এখানে, বড়জোর হোটেলগুলির তরফে টেন্ট খাটিয়ে এক-আধ রাত থাকার ব্যবস্থা করা হত। কিন্তু পিশাচপাহাড় রিসর্ট এখানেই তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করার পরে অনেক পর্যটক গত দু’বছরে এখানে এসে কয়েকদিন কাটানোই পছন্দ করছিলেন। কাছাকাছি যে-রেলস্টেশন প্রায় অব্যবহৃতই পড়ে থাকত, আজকাল সেই স্টেশনেই অটো, টোটো থেকে বাস দাঁড়িয়ে থাকে শেষ লোকালের অপেক্ষা করে। তবে পিশাচপাহাড় অবধি কোনও টোটো বা অটো আসে না। বাস আসে। তবে যদি এই অঞ্চলটির জনপ্রিয়তা অদূর ভবিষ্যতে অক্ষুণ্ণ থাকে, তাহলে হয়ত টোটো ইত্যাদিও এখান পর্যন্ত আসবে। আর ট্যাক্সিসার্ভিস চালু হলে তো কথাই নেই।
কালাদেও যে-ভাবে ক্রমশ গুহা ছেড়ে শহরময় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তাতে কখন কোনখানে যে তাঁর আবির্ভাব হয়, কে জানে? নতুন একটা ডেসটিনেশন ট্যুর স্পট হিসেবে অল্পদিনেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল পিশাচপাহাড়, কিন্তু কোণ শনির দৃষ্টি লাগল তার উপর কে জানে, এখন তো যারা ব্যবসা ফেঁদে বসেছিল, তারাই যাই-যাই করছে। পর্যটকদের আনাগোনাও কমে গেছে মাসখানেক হল। বিশেষ করে কলকাতা পার্টির সঙ্গে আসা একজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর পরে সকলেই ভয় পেয়ে গিয়েছে। ট্র্যাভেল ব্লগারেরা আজকাল তাদের পেজ থেকে পিশাচপাহাড়-সংক্রান্ত যাবতীয় ইনফো আপাতত হাইড করে রেখেছে। কে জানে, কোন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে হয়!
পিশাচপাহাড় রিসর্ট এই অঞ্চলে সবচেয়ে পুরানো রিসর্ট। সদরে বেশ কিছু হোটেল আছে, সেখান থেকে আগে লোকে গাড়ি ভাড়া করে এসে কিছু সময় কাটিয়ে যেত এখানে, বড়জোর হোটেলগুলির তরফে টেন্ট খাটিয়ে এক-আধ রাত থাকার ব্যবস্থা করা হত। কিন্তু পিশাচপাহাড় রিসর্ট এখানেই তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করার পরে অনেক পর্যটক গত দু’বছরে এখানে এসে কয়েকদিন কাটানোই পছন্দ করছিলেন। কাছাকাছি যে-রেলস্টেশন প্রায় অব্যবহৃতই পড়ে থাকত, আজকাল সেই স্টেশনেই অটো, টোটো থেকে বাস দাঁড়িয়ে থাকে শেষ লোকালের অপেক্ষা করে। তবে পিশাচপাহাড় অবধি কোনও টোটো বা অটো আসে না। বাস আসে। তবে যদি এই অঞ্চলটির জনপ্রিয়তা অদূর ভবিষ্যতে অক্ষুণ্ণ থাকে, তাহলে হয়ত টোটো ইত্যাদিও এখান পর্যন্ত আসবে। আর ট্যাক্সিসার্ভিস চালু হলে তো কথাই নেই।
কাপাডিয়া রিসেপশনে বসে সেই কথাই ভাবছিলেন। যদি পিশাচপাহাড় নামের এই রিসর্টটি এখানে না চালু হত, তাহলে আজ এই জায়গার যে-রমরমা, তা স্বপ্নই থেকে যেত। কথাটা অহংকারের মতো শোনালেও, আশেপাশের অন্যান্য রিসর্ট-হোটেলগুলিও এতকাল এই কথা স্বীকার করে এসেছে। কিন্তু আজকাল পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, কতদিন আর তাঁরা সব রিসর্ট-হোটেল মালিকেরা পর্যটক টানতে পারবেন, তাতে সন্দেহ আছে! আজকাল বাকি হোটেল মালিকেরা পিশাচপাহাড় রিসর্টকে গালিগালাজ করছে। এই রিসর্টের বোলবোলাও দেখেই তাঁরা হাজির হয়েছিলেন ব্যবসা ফেঁদে বসার জন্য। বসেওছিলেন। কিন্তু এখন যা অবস্থা তাতে পাততাড়ি গোটাতে হবে অনেককেই। অথচ এই দু’বছরে এত টাকা তাঁরা সকলেই ঢেলেছেন এই ব্যবসায় যে, এখন ব্যবসা বন্ধ করে চলে যাওয়া মানে বিরাট অঙ্কের লোকসানের ধাক্কা সামলাতে হবে তাঁদের। এই নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির মিটিংয়ে একপ্রস্থ ধুন্ধুমার হয়ে গেছে। তবে কাপাডিয়া তাঁদের রিসর্টের কোন দোষ দেখেন না। যদি কালাদেও হঠাৎ কোনও কারণ ছাড়াই উপস্থিত হয়ে একে মারে-তাকে ধরে, তাহলে তাঁরা কী-ই বা করতে পারেন?
তবে বেগতিক দেখলে, কিংবা কয়েকবছর পরপর মন্দা দেখলে তাঁদেরও ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে। সামনের খোলা খাতায় বন্ধ পেন দিয়ে কাল্পনিক আঁকিবুঁকি করছিলেন কাপাডিয়া। এখান থেকেই ডাইনিং দেখা যাচ্ছে। ছোট্ট রিশেপশন আর কিছু ভিজিটরের ওয়েটিং সিটস্ ছাড়া এই রুমে কিছু নেই। রুম থেকে কয়েকধাপ সিঁড়ি ভেঙে উঠলেই ছিমছাম ডাইনিং রুম। সেখানে বারোটা টেবিল পাতা। প্রতিটি টেবিল ঘিরে চারটি করে চেয়ার। কখনও কোনও পার্টি চাইলে বাড়তি চেয়ার স্টোর থেকে এনে দেওয়া হয়। প্রতিটি টেবিল কাঠের, তবে চেয়ারগুলি কিন্তু বাঁশ ও বেত দিয়ে বানানো। কুশন আছে প্রতিটিতেই। অন্য সময় ডাইনিংপ্লেস রাত বাড়লে গমগম করত। কিন্তু কালাদেও-কাণ্ড এবং তা-আবার এই পিশাচপাহাড়েই ঘটায় যাঁরা পুলিশি ঝামেলায় আটকে গেছেন, তাঁরা ক্বচিৎ-কদাচিৎ ডাইনিং-এ এসে খাচ্ছেন। সকলকেই প্রায় রুম-সার্ভিস দিতে হচ্ছে। ব্যতিক্রম শেষে আসা পূষণ ও রিমিতা। ওঁরা দুজন দু’বেলাই ডাইনিং-এ এসে খান। এটা ভালো লাগে কাপাডিয়ার। নিজের যৌবন চলে গেছে তো কী হয়েছে, অন্যের যৌবনের এই প্রাণচাঞ্চল্য তাঁকে প্রাণিত করে। অন্যদের যৌবনের জলতরঙ্গ দেখলে তাঁর নিজের কত কথা মনে পড়ে যায়। হায়, সব যদি আবার নতুন করে শুরু করতে পারতাম ! গোপন আক্ষেপের সুর মনের মধ্যেই গুমরে মরে, মুখ ফুটে বেরোয় না।
তবে বেগতিক দেখলে, কিংবা কয়েকবছর পরপর মন্দা দেখলে তাঁদেরও ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে। সামনের খোলা খাতায় বন্ধ পেন দিয়ে কাল্পনিক আঁকিবুঁকি করছিলেন কাপাডিয়া। এখান থেকেই ডাইনিং দেখা যাচ্ছে। ছোট্ট রিশেপশন আর কিছু ভিজিটরের ওয়েটিং সিটস্ ছাড়া এই রুমে কিছু নেই। রুম থেকে কয়েকধাপ সিঁড়ি ভেঙে উঠলেই ছিমছাম ডাইনিং রুম। সেখানে বারোটা টেবিল পাতা। প্রতিটি টেবিল ঘিরে চারটি করে চেয়ার। কখনও কোনও পার্টি চাইলে বাড়তি চেয়ার স্টোর থেকে এনে দেওয়া হয়। প্রতিটি টেবিল কাঠের, তবে চেয়ারগুলি কিন্তু বাঁশ ও বেত দিয়ে বানানো। কুশন আছে প্রতিটিতেই। অন্য সময় ডাইনিংপ্লেস রাত বাড়লে গমগম করত। কিন্তু কালাদেও-কাণ্ড এবং তা-আবার এই পিশাচপাহাড়েই ঘটায় যাঁরা পুলিশি ঝামেলায় আটকে গেছেন, তাঁরা ক্বচিৎ-কদাচিৎ ডাইনিং-এ এসে খাচ্ছেন। সকলকেই প্রায় রুম-সার্ভিস দিতে হচ্ছে। ব্যতিক্রম শেষে আসা পূষণ ও রিমিতা। ওঁরা দুজন দু’বেলাই ডাইনিং-এ এসে খান। এটা ভালো লাগে কাপাডিয়ার। নিজের যৌবন চলে গেছে তো কী হয়েছে, অন্যের যৌবনের এই প্রাণচাঞ্চল্য তাঁকে প্রাণিত করে। অন্যদের যৌবনের জলতরঙ্গ দেখলে তাঁর নিজের কত কথা মনে পড়ে যায়। হায়, সব যদি আবার নতুন করে শুরু করতে পারতাম ! গোপন আক্ষেপের সুর মনের মধ্যেই গুমরে মরে, মুখ ফুটে বেরোয় না।
আরও পড়ুন:
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৯২: মিরাকল
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-১০২: দ্বারকানাথের বেলগাছিয়ার বাগানবাড়ি
অতিথিদের বলা হয়, সাড়ে ন’টা থেকে দশটার মধ্যে ডিনার সেরে নিতে। কিন্তু কলকাতার বাবুদের অভ্যাস স্বতন্ত্র। সাড়ে দশটা না বাজলে তাঁরা খেতেও আসবেন না, রুম সার্ভিস দিলেও বকাঝকা করবেন যে, তাঁরা যখন খাবেন, তখন খাবার সব ঠাণ্ডা হয়ে যাবে! কী আর করবেন কাপাডিয়া? তাঁকে দু’দিকই বজায় রাখতে হয়। অতিথিরা খেয়ে গেলেই তো আর শেষ হল না সব! কর্মচারীরা খাবে। তিনি নিজে অবশ্য আগেই, সাড়ে আটটার মধ্যে ডিনার সেরে নেন। এ বারের কলকাতা থেকে আসা প্রথম পার্টির একজন ম্যাডাম অবশ্য সাড়ে আটটার সময় নীচে নেমে আসেন। মাঝে-মধ্যে রুমসার্ভিস নিলেও তাঁরই আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নেওয়ার অভ্যাস বলে জানিয়েছেন তিনি। আজকেও খেয়ে উপরে উঠে গিয়েছেন। এই দু-একদিন যে-টেবিলে বসে কাপাডিয়া খান, সেখানেই এসে বসেন, তাঁকে সঙ্গ দেন। কাপাডিয়া খুশি হয়ে বলেন, “কী কাণ্ড দেখুন ম্যাডাম। আপকে নসীব মে মুঝ য্যায়সে বুড্ঢা কম্পানি দেওয়ার জন্য মিলেছে, আর আমার নসীবে আপনার মতো ব্লুমড্ বিউটি!” শুনে তিনি হাসেন। কথাবার্তা টুকটাক হয়।
এই রিসর্টের বিজনেস নিয়ে, তাঁর বাড়ির খবর নিয়ে। তারপর একে-একে আসতে শুরু করেন দু’চারজন, ম্যাডাম চলে যান। কাপাডিয়াও উঠে পড়েন! উঠে এসে রিসেপশনে বসে প্রথমত ডাইনিং-এর দিকে লক্ষ্য রাখেন। কার কী পছন্দ, চাহিদা, সুবিধা-অসুবিধা-অভিযোগ সেগুলি নজর রাখেন, সম্ভব হলে প্রতিকার বা সাহায্য করেন। এই সঙ্গেই চলে সারাদিনের হিসেবনিকেশ, কম্পিউটারে সেগুলির এন্ট্রি। উইকলি মেইল করতে হয় ওপরওয়ালাকে। ফেলে রাখলে আর হিসেব মেলাতে পারবেন না। এখানেই শেষ নয়। পরের দিনের মেনু ঠিক করে রাখেন, সেই মতো বাজারে যাওয়া, কাউকে ফোনে নির্দিষ্ট মালপত্র পাঠিয়ে দিতে বলা, সমস্তই এই সময়েই সারেন তিনি। ভাঁড়ারের হিসেব নেন। তারপর শোয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধ খেয়ে শুতে যান। তবে শুতে যাওয়ার আগে রিসর্টের চৌহদ্দি নিজে ঘুরে দেখেন। এই রিসর্টে কোন স্থায়ী দারোয়ান নেই। আসলে আগে ছিল একজন, কিন্তু তার আবার রাতে ভূতের ভয়। কালাদেওর আক্রমণ শুরু হওয়ার মুখেই সে ছেড়ে দেয় ওই ভয়েই। তারপর আর কাউকে রাখেননি। রিসর্টের কর্মচারীদের কাউকে বলেন, গেট বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দেয় সে। নিজে কিন্তু চারিদিক ঘুরে দেখে নেন ঠিক আছে কি-না সব, তারপর নিজের রুমে চলে যান। তাঁর রুম একতলায়, পিছনদিকে।
এই রিসর্টের বিজনেস নিয়ে, তাঁর বাড়ির খবর নিয়ে। তারপর একে-একে আসতে শুরু করেন দু’চারজন, ম্যাডাম চলে যান। কাপাডিয়াও উঠে পড়েন! উঠে এসে রিসেপশনে বসে প্রথমত ডাইনিং-এর দিকে লক্ষ্য রাখেন। কার কী পছন্দ, চাহিদা, সুবিধা-অসুবিধা-অভিযোগ সেগুলি নজর রাখেন, সম্ভব হলে প্রতিকার বা সাহায্য করেন। এই সঙ্গেই চলে সারাদিনের হিসেবনিকেশ, কম্পিউটারে সেগুলির এন্ট্রি। উইকলি মেইল করতে হয় ওপরওয়ালাকে। ফেলে রাখলে আর হিসেব মেলাতে পারবেন না। এখানেই শেষ নয়। পরের দিনের মেনু ঠিক করে রাখেন, সেই মতো বাজারে যাওয়া, কাউকে ফোনে নির্দিষ্ট মালপত্র পাঠিয়ে দিতে বলা, সমস্তই এই সময়েই সারেন তিনি। ভাঁড়ারের হিসেব নেন। তারপর শোয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধ খেয়ে শুতে যান। তবে শুতে যাওয়ার আগে রিসর্টের চৌহদ্দি নিজে ঘুরে দেখেন। এই রিসর্টে কোন স্থায়ী দারোয়ান নেই। আসলে আগে ছিল একজন, কিন্তু তার আবার রাতে ভূতের ভয়। কালাদেওর আক্রমণ শুরু হওয়ার মুখেই সে ছেড়ে দেয় ওই ভয়েই। তারপর আর কাউকে রাখেননি। রিসর্টের কর্মচারীদের কাউকে বলেন, গেট বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দেয় সে। নিজে কিন্তু চারিদিক ঘুরে দেখে নেন ঠিক আছে কি-না সব, তারপর নিজের রুমে চলে যান। তাঁর রুম একতলায়, পিছনদিকে।
আরও পড়ুন:
সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৭৭: রাতচরা
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৭৪: শ্রীমার গৃহী ভক্তদের সন্ন্যাসদীক্ষা
আজ ডাইনিং-এ পূষণ-রিমিতা ছাড়াও অরণ্য আছে, আর আছে আর্য বলে ছেলেটি, যে ক-দিন মিসং থাকার পর হুট করে ফিরে এসেছে! খাবার-দাবার যা দেওয়ার সব সার্ভ করা হইয়ে গেছে, মায় ডেজার্ট পর্যন্ত। এ বার সে-সব শেষ করে কখন উঠবে ওরা, তার প্রতীক্ষা করা বসে-বসে। কিছুটা বিরক্তিতে ভ্রূ কুঁচকে যায় কাপডিয়ার। আজ একটা গুরুত্বপুর্ণ কাজ ছিল তাঁড়। ভেবেছিলেন, সব মিটে যাওয়ার পর করবেন। কিন্তু এরা যা করছে, তাতে কাজটা আজ আর হবে বলে মনে হয় না।
কর্মচারীরা হাত জড়ো করে দু’টি টেবিলের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে। যদি কিছু অর্ডার দেয় কাস্টমারেরা। তবে ডেজার্ট দেওয়ার পর খুব চ্যাঙড়া পার্টি ছাড়া কেউ আর নতুন করর মেইন কোর্স অর্ডার দেয় না। কালকের মেনু ঠিক করার দিকে মনোযোগ দিলেন তিনি। এমন সময় একজন কর্মচারী এসে বলল, “ম্যানেজারবাবু, এ দিকে এঁরা আর কিছু লাগবে না বলছেন। আমরা তবে একে-একে খেয়ে নিই?”
“হুঁ। নে। তবে একজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে বল। সে পরে খাবে। বাকিরা খেয়ে নে।” কাপাডিয়া আবার মেন্যু ঠিক করার দিকে মন দেন। সকালবেলা আলু কে পরাঠে না-কি মূলি-কে পরাঠে দেবেন, সেটাই ভাবতে থাকেন। কাল ভেবেছেন, পনির গ্রেট করে ছানার পায়েস বানাতে বলবেন ডেজার্টে। কলকাতাপার্টির মধ্যেই একজন সেদিন খেতে চেয়েছিলেন। কারুর কোন সাধ অপূর্ণ রাখতে নেই। কালকেই করতে বলবেন। রান্নার শেফ খেয়ে নিয়ে একবার আসে, কালকের লিস্টটা নিয়ে যায় রাতেই। অনেকসময় টুকটাক কিছু প্রস্তুতি রাতেই সেরে রাখতে হয়। সেগুলি করে সে শুতে যায় বারোটা-সাড়ে বারোটার দিকে। ততক্ষণে কাপাডিয়া চারদিকে টহল দিয়ে ঘুমের দেশে। তার আগে ফোনও করতে হয় বাড়িতে। স্ত্রীর সঙ্গে একবার কথা না হলে বড্ড রাগ করে। কী করবেন তিনি? একসঙ্গে থাকার উপায় নেই। উপায় থাকলে কবে এ-সব বন্ধ করে দিয়ে চলে যেতেন। কে আর সাধ করে এই পাণ্ডববর্জিত জায়গায় পড়ে থাকে? সকলেরই কিছু-কিছু লক্ষ্য থাকে, সেই লক্ষ্য পূরণ করতে হয়। নাহলে বাকিরা হেরে-যাওয়া মানুষ বলে দুয়ো দেবে। আর-যাই-হোক, এই দুয়ো মাথা পেতে নিতে কাপাডিয়া রাজি নয়।
কর্মচারীরা হাত জড়ো করে দু’টি টেবিলের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে। যদি কিছু অর্ডার দেয় কাস্টমারেরা। তবে ডেজার্ট দেওয়ার পর খুব চ্যাঙড়া পার্টি ছাড়া কেউ আর নতুন করর মেইন কোর্স অর্ডার দেয় না। কালকের মেনু ঠিক করার দিকে মনোযোগ দিলেন তিনি। এমন সময় একজন কর্মচারী এসে বলল, “ম্যানেজারবাবু, এ দিকে এঁরা আর কিছু লাগবে না বলছেন। আমরা তবে একে-একে খেয়ে নিই?”
“হুঁ। নে। তবে একজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে বল। সে পরে খাবে। বাকিরা খেয়ে নে।” কাপাডিয়া আবার মেন্যু ঠিক করার দিকে মন দেন। সকালবেলা আলু কে পরাঠে না-কি মূলি-কে পরাঠে দেবেন, সেটাই ভাবতে থাকেন। কাল ভেবেছেন, পনির গ্রেট করে ছানার পায়েস বানাতে বলবেন ডেজার্টে। কলকাতাপার্টির মধ্যেই একজন সেদিন খেতে চেয়েছিলেন। কারুর কোন সাধ অপূর্ণ রাখতে নেই। কালকেই করতে বলবেন। রান্নার শেফ খেয়ে নিয়ে একবার আসে, কালকের লিস্টটা নিয়ে যায় রাতেই। অনেকসময় টুকটাক কিছু প্রস্তুতি রাতেই সেরে রাখতে হয়। সেগুলি করে সে শুতে যায় বারোটা-সাড়ে বারোটার দিকে। ততক্ষণে কাপাডিয়া চারদিকে টহল দিয়ে ঘুমের দেশে। তার আগে ফোনও করতে হয় বাড়িতে। স্ত্রীর সঙ্গে একবার কথা না হলে বড্ড রাগ করে। কী করবেন তিনি? একসঙ্গে থাকার উপায় নেই। উপায় থাকলে কবে এ-সব বন্ধ করে দিয়ে চলে যেতেন। কে আর সাধ করে এই পাণ্ডববর্জিত জায়গায় পড়ে থাকে? সকলেরই কিছু-কিছু লক্ষ্য থাকে, সেই লক্ষ্য পূরণ করতে হয়। নাহলে বাকিরা হেরে-যাওয়া মানুষ বলে দুয়ো দেবে। আর-যাই-হোক, এই দুয়ো মাথা পেতে নিতে কাপাডিয়া রাজি নয়।
আরও পড়ুন:
গীতা: সম্ভবামি যুগে যুগে, পর্ব-১৪: আমি তাইতে কি ভয় মানি!
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৩৩: হৃদয়পুরের লক্ষ্যপূরণ ‘কঙ্কাবতীর ঘাট’
পূষণ ও রিমিতা চলে গেলেন, যাওয়ার আগে দু’জনেই তাঁর কাছে এসে ‘গুড নাইট’ জানিয়ে গেল। ভারি ভালো এরা দু’জন। এটিকেট জানে। অরণ্য আর আর্য অবশ্য খেয়েদেয়েই উঠে গেল। কাপাডিয়া ওদের দিকে নিশ্চুপে লক্ষ্য করছিলেন। কী-যে এত গুজুর-গুজুর ফুসুর-ফুসুর করছে, কে জানে? পূষণ ও রিমিতাও তো কথা বলছিল পরস্পর, কিন্তু সে-কথা অত রাখাঢাকা দিয়ে নয়। যাদের মনে ময়লা বেশি তারাই ফিসফিস করে সাধারণ কথাকেও সকলের কাছ থেকে গোপন রাখতে চায়।
শেফ ছেলেটি এসে কালকের মেন্যুর ফর্দ নিয়ে চলে গেল। কর্মচারীদের শেষজনও খাওয়া-দাওয়া শেষ করে চলে গেল তাদের জন্য নির্দিষ্ট ব্যারাকে। উঠে পড়লেন কাপাডিয়া। একটা ছয় ব্যাটারির টর্চ নিয়ে বেরিয়ে গেলেন রিসর্টের চারপাশ রোজকার মতন একবার ঢুঁ মেরে আসবেন বলে। কর্মচারীরা সে-সব দেখেও দেখল না। সারাদিনের পরিশ্রমের পরে তারা তখন বিশ্রামের জায়গায় যাওয়ার জন্য উদগ্রীব। ম্যানেজারবাবুর জন্য তখন ভাবতে কেউ আর রাজি নয়। সারাদিনই তো তাদের ওই ম্যানেজারবাবুর কথা ভাবতে ও শুনতে চলে যায়। রাতটুকু না-হয় নিজের জন্য থাক। একজন মেইন গেটের তালা লাগিয়ে চাবিটা রিসেপশনের রিং-এ ঝুলিয়ে দিয়ে চলে গেছে ইতিমধ্যেই। কাপাডিয়া চেক করতে বেরুনোর আগে অবশ্য সঙ্গে সেই বিশেষ জিনিসটা নিতে ভুললেন না। লেটেস্ট মডেলের একটি রিভলভার তিনি নিজের সুরক্ষার জন্য জোগাড় করেছিলেন অনেক কষ্টে। বিদেশি জিনিস। তাঁর নিজের নামে যদিও লাইসেন্স আছে, কিন্তু সেই লাইসেন্সে বিদেশী সব মডেলের রিভলভার এদেশে রাখার আইন নেই। অতএব এটা বলতে গেলে গোপনই রাখতে হয় তাঁকে। আত্মসুরক্ষার জন্য এইটুকু করার অধিকার সকলের থাকা উচিত বলে তাঁর ব্যক্তিগত মত। তবে রিসর্টের কেউ জিনিসটা জানে না। জানলে পুলিশের কানে উঠতে কতক্ষণ। সন্তর্পণে বেরুনোর সময় সেই জিনিসটাই পকেটে চালান করে দিলেন তিনি।
সামনের দিকে গিয়ে আগে মেইন গেটটা চেক করলেন কাপাডিয়া। তারপর ডানদিক দিয়ে এগোলেন, শেষ বসন্তের ফুলগুলির উপর টর্চের আলো পড়ায় তারা যেন আচমকা ঘুম ভেঙে বিরক্ত চোখে তাকাল তাঁর দিকে। আজ বাতাস বইছে না। কেমন গুমোট হয়ে আছে। এইসব অঞ্চলে দিনের বেলায় যেমন গরম হয়, অন্তত বছরের এই সময়টায় রাতের দিকে তেমন গরম থাকে না। কিন্তু ইদানীং আগের নিয়ম আর চলছে না। গ্লোবাল ওয়ার্মিং যে কীভাবে গোটা পৃথিবীটাকে গ্রাস করে নিচ্ছে, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। অদ্ভুত যে, কোথাও আজ কোন ঝিঁ-ঝিঁ পোকাও ডাকছে না। কোন-কোনদিন অবশ্য এমন হয়। অবাক না-হয়ে কাপডিয়া এগিয়ে গেলেন পিছন দিকে।
পিছনে বাইরে বেরুনোর ছোট গেটটা দিনের বেলায় সামান্য সময়ের জন্য খোলা হয়। তবে সন্ধ্যের আগেই সেটাই তালা পড়ে। অনিলবাবুসহ দু’দুটি মৃত্যুর দিন কেউ ওই গেটটার তালা ভুল করে খুলে রেখেছিল। কে জানে, তালা দেওয়া থাকলে হয়তো কালাদেও ওই পথে প্রবেশ করত না, মৃত্যুও ঘটত না। যদিও গেট খোলা থাকলে তবেই কালাদেও ঢুকতে পারবেন, এমন ভাবাটা বালখিল্য বলে মনে হয়।
শেফ ছেলেটি এসে কালকের মেন্যুর ফর্দ নিয়ে চলে গেল। কর্মচারীদের শেষজনও খাওয়া-দাওয়া শেষ করে চলে গেল তাদের জন্য নির্দিষ্ট ব্যারাকে। উঠে পড়লেন কাপাডিয়া। একটা ছয় ব্যাটারির টর্চ নিয়ে বেরিয়ে গেলেন রিসর্টের চারপাশ রোজকার মতন একবার ঢুঁ মেরে আসবেন বলে। কর্মচারীরা সে-সব দেখেও দেখল না। সারাদিনের পরিশ্রমের পরে তারা তখন বিশ্রামের জায়গায় যাওয়ার জন্য উদগ্রীব। ম্যানেজারবাবুর জন্য তখন ভাবতে কেউ আর রাজি নয়। সারাদিনই তো তাদের ওই ম্যানেজারবাবুর কথা ভাবতে ও শুনতে চলে যায়। রাতটুকু না-হয় নিজের জন্য থাক। একজন মেইন গেটের তালা লাগিয়ে চাবিটা রিসেপশনের রিং-এ ঝুলিয়ে দিয়ে চলে গেছে ইতিমধ্যেই। কাপাডিয়া চেক করতে বেরুনোর আগে অবশ্য সঙ্গে সেই বিশেষ জিনিসটা নিতে ভুললেন না। লেটেস্ট মডেলের একটি রিভলভার তিনি নিজের সুরক্ষার জন্য জোগাড় করেছিলেন অনেক কষ্টে। বিদেশি জিনিস। তাঁর নিজের নামে যদিও লাইসেন্স আছে, কিন্তু সেই লাইসেন্সে বিদেশী সব মডেলের রিভলভার এদেশে রাখার আইন নেই। অতএব এটা বলতে গেলে গোপনই রাখতে হয় তাঁকে। আত্মসুরক্ষার জন্য এইটুকু করার অধিকার সকলের থাকা উচিত বলে তাঁর ব্যক্তিগত মত। তবে রিসর্টের কেউ জিনিসটা জানে না। জানলে পুলিশের কানে উঠতে কতক্ষণ। সন্তর্পণে বেরুনোর সময় সেই জিনিসটাই পকেটে চালান করে দিলেন তিনি।
সামনের দিকে গিয়ে আগে মেইন গেটটা চেক করলেন কাপাডিয়া। তারপর ডানদিক দিয়ে এগোলেন, শেষ বসন্তের ফুলগুলির উপর টর্চের আলো পড়ায় তারা যেন আচমকা ঘুম ভেঙে বিরক্ত চোখে তাকাল তাঁর দিকে। আজ বাতাস বইছে না। কেমন গুমোট হয়ে আছে। এইসব অঞ্চলে দিনের বেলায় যেমন গরম হয়, অন্তত বছরের এই সময়টায় রাতের দিকে তেমন গরম থাকে না। কিন্তু ইদানীং আগের নিয়ম আর চলছে না। গ্লোবাল ওয়ার্মিং যে কীভাবে গোটা পৃথিবীটাকে গ্রাস করে নিচ্ছে, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। অদ্ভুত যে, কোথাও আজ কোন ঝিঁ-ঝিঁ পোকাও ডাকছে না। কোন-কোনদিন অবশ্য এমন হয়। অবাক না-হয়ে কাপডিয়া এগিয়ে গেলেন পিছন দিকে।
পিছনে বাইরে বেরুনোর ছোট গেটটা দিনের বেলায় সামান্য সময়ের জন্য খোলা হয়। তবে সন্ধ্যের আগেই সেটাই তালা পড়ে। অনিলবাবুসহ দু’দুটি মৃত্যুর দিন কেউ ওই গেটটার তালা ভুল করে খুলে রেখেছিল। কে জানে, তালা দেওয়া থাকলে হয়তো কালাদেও ওই পথে প্রবেশ করত না, মৃত্যুও ঘটত না। যদিও গেট খোলা থাকলে তবেই কালাদেও ঢুকতে পারবেন, এমন ভাবাটা বালখিল্য বলে মনে হয়।
আরও পড়ুন:
রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৪৬: আলাস্কার আকাশে অহরহ ব্যক্তিগত বিমান ওঠানামা করে
দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৪৫: ঠাকুরবাড়ির মেয়েরা এবং চলচ্চিত্র
পিছনদিকে গিয়ে ছোট গেটটা চেক করলেন কাপাডিয়া। নাহ্, বন্ধ আছে। মনে পড়ল, বিকেলে তিনি নিজেই গেটটা বন্ধ করেছেন। এরপর গেট খুলতে গেলে তাঁর অনুমতি দরকার হয়। আজ কেউ সেই অনুমতি চায়নি, তেমন কোন দরকার পড়েনি বলে। গেটটা চেক করে ঘুরে এগিয়ে যাবেন, এমন সময় কাছেই একটি নাগকেশরের ঝোপটা যেন দুলে উঠল বলে মনে হল। কেউ কি ওখানে দাঁড়িয়ে আছে? এত রাতে? একটু অবাক হয়েই এগিয়ে গেলেন কাপাডিয়া। টর্চের আলো ফেললেন ঝোপের উপর। নাহ্, কেউ নেই। বড় বড় গাছের ডালপালা নিয়ন লাইটগুলিকে আড়াল করায় অদ্ভুত আলো-আঁধারি পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এখানে। কেউ নেই দেখে নিশ্চিন্ত হয়ে ঘুরেছেন সবে, এমনসময় কালো অবয়ববিশিষ্ট কেউ এগিয়ে এসে তার কাঁধের উপর ধারালো নখ দিয়ে প্রবল আঘাত হানল। সহজাত রিফ্লেক্সে কী-ভেবে কাপাডিয়া সরে গিয়েছিলেন রক্ষে, তবে পুরোপুরি রক্ষা পেলেন না। তাঁর কাঁধের উপর সেই থাবা বা হাত তার ধারালো নখের চিহ্ন রেখে গেল। প্রবল আর্তনাদ করে উঠে কাপাডিয়া পড়ে যেতেই উপর থেকে কেউ চেঁচিয়ে উঠল, “কে, কে ওখানে?” বলে মোবাইলের আলো ফেলল সেদিকে। সে আলো ওতদূর না গেলেও বেশ বোঝা যাচ্ছিল, কেউ পড়ে আছে। আততায়ী ততক্ষণে বেগতিক বুঝে উধাও হয়ে গেছে। স্টাফরা তখনও শুয়ে পড়েনি। চিৎকার শুনে তারাও দৌড়ে আসছিল। কাপাডিয়া পড়ে রইলেন আচ্ছন্নের মতো। বোর্ডারদের রুমেও একে-একে আলো জ্বলে উঠছিল। সকলেই বোঝার চেষ্টা করছিল আর্তনাদের কারণ! সকলেই ভাবছিল, কালাদেও হানা দিল না-কি আবার?—চলবে।
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel): পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।