শুক্রবার ৮ নভেম্বর, ২০২৪


অলঙ্করণ : সৌমি দাসমণ্ডল।

শাক্য অপেক্ষা করছিল সত্যব্রতর উত্তরের জন্য। সত্যব্রতর অনুমান বা সংবাদ যে সঠিক হবে, এমন কোনও মানে নেই। সত্যব্রত একজন ডাক্তার, তাদের মতো পুলিশ নয়। ফলে তদন্ত করা তাঁর আওতার মধ্যে পড়ে না, এ ব্যাপারে তাঁর অভিজ্ঞতাও নেই। তা সত্ত্বেও নিজের কৌতূহল এবং কিছুটা গিল্টি-ফিলিং-এর কারণে তিনি নিজের উদ্যোগেই কিছু তত্ত্বতালাশ করেছেন, তার ভিত্ততেই এখন তিনি যেন রিপোর্ট পেশ করছেন। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনও আসেনি। যদি শাক্য দেখে, সত্যব্রতর কথার কিছুমাত্র ভিত্তি আছে, তাহলে এ ব্যাপারে আরও পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসন্ধান করবে পুলিশ ডিপার্টমেন্ট। কিন্তু জানা দরকার। এ কেসে নানা ঘটনা এমন জট পাকিয়ে আছে যে, নানা জনের কথা, অনুমান-প্রমাণ দিয়েই সে-জট খুলতে হবে। একা পুলিশের পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। ফলে তার কাছে অন্তত সত্যব্রতর অনুমান-প্রমাণের গুরুত্ব রয়েছে।

সুদীপ্ত বসে ছিল। তার মুখচোখ ভাবলেশহীন। দেখে বোঝার উপায় নেই, সত্যব্রতর কথাকে সে আদৌ গুরুত্ব দিচ্ছে কি না। তবে শাক্য জানে, এই মুহূর্তে সে পকেটে থাকা স্পাই ক্যামেরা অন করে দিয়েছে, যাতে এই সাক্ষাৎকারের সবকিছুর ভিডিও রেকর্ডিং থাকে। নাহ্‌, তারা ভাবছে না, ডাক্তার অপরাধী কিংবা অপরাধীদেরই কেউ, পুলিশকে মিসলিড করার জন্য যিনি মনগড়া গপ্পো ফেঁদে বসেছেন। তা হলে, নিজে থেকে যেচে বাঘের গুহায় গলা বাড়িয়ে দিতেন না। তার পরেও যে তাঁর কথোপকথন রেকর্ডিং রাখা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে, তার কারণ দু’টি। প্রথমত, যে-ভাবে নির্বিচার হত্যালীলায় মেতেছে আততায়ী, সেক্ষেত্রে ডাক্তারের উপরেও যদি অ্যাটাক হয় এবং তিনি মারা পড়েন, তাহলে যাতে তাঁর এই কথাবার্তার রেকর্ডিং কোর্টে এভিডেন্স হিসেবে প্রোডিউস করা যায়। তাছাড়া, অনেক সময়েই গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী কোর্টের চাপ সামলাতে না পেরে কিংবা অন্য কোন কারণে ভয় পেয়ে বিরূপ হয়ে বসে। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের কথাবার্তার ক্লিপিংস কোর্টে ভ্যালুয়েবল এভিডেন্স হিসাবে দাখিল করা যেতে পারে। শাক্যই সুদীপ্তকে নির্দেশ দিয়েছিল, ডায়েরিতে নোট না করে যাবতীয় কথোপকথন রেকর্ড করতে। তবে সরাসরি নয়। অনেকসময়েই সাক্ষীরা ও-সব দেখলে ভয় পেয়ে যান। উল্টোপাল্টা বলতে থাকেন কিংবা চেপে যান আসলে যা-বলতে চেয়েছিলেন। এই কারণেই গোপন ক্যামেরার ব্যবস্থা।
সত্যব্রত অনেকক্ষণ ধরে কথা বলছিলেন। তাঁর গলা শুকিয়ে গিয়েছিল। সামনে রাখা গ্লাস থেকে জল খেয়ে গলা ভিজিয়ে নিয়ে বললেন, “দেখুন, নকল হোক বা আসল, বুধন মাহাতো নাম নিয়ে যে এই হেলথ সেন্টারে ভর্তি হয়েছিল, সে-যে সেন্টার থেকে পালিয়ে গিয়েছিল, এটা তো সত্যি! ঘটনাটা আমাকে লজ্জায় ফেলেছিল। আমি যদিও থানায় সব ঘটনা জানিয়ে ডায়েরি করেছিলাম, তাও নিজেকে নিজেই ক্ষমা করতে পারি নি। যদিও আমি তখন জানতাম না, এই বুধন মাহাতো নকল, তবুও একটা বিরল কেস স্ট্যাডি করতে না-পারার দুঃখও আমাকে পেড়ে ফেলেছিল। আপনারা জানেন কি-না জানি না, আমরা ডাক্তারেরা সকলেই আশায় আশায় থাকি যে, কোন বিরল রোগ নিয়ে কোন পেশেন্ট এসে পড়বেন এবং আমরা সেই রোগের চিকিৎসা করার চ্যালেঞ্জ নেবো। তাছাড়া এ-জাতীয় রোগের ব্যাপারে হাতেকলমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ পেলে ইন্টারন্যাশানাল মেডিক্যাল জার্নালে তা নিয়ে পেপার লেখার আকাঙ্ক্ষাটিও যে আমাদের মনের মধ্যে থাকে না, এমন নয়। আমারও ছিল। সে-কারণেই বুধন মাহাতো হেলথ-সেন্টারে আসার পর আমি মনে মনে খুশি হয়েছিলাম যে এই বিরল রোগের চিকিৎসা করার সুযোগ পাবো, তার চেয়েও বেশি এক্সপেরিমেন্ট করার সুযোগ পাবো বলে। কিন্তু বুধন পালিয়ে যাওয়াতে আমার সেই সুযোগ মাঠে মারা যায়। ফলে ভিতরে ভিতরে একটা জিদও চেপে গিয়েছিল। আমি রথীনবাবুর সঙ্গে দেখা করি, যিনি বুধন মাহাতোকে নিয়ে এসেছিলেন এখানে ভর্তি করানোর জন্য। তার স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। কাছ থেকে দীর্ঘদিন বুধনকে দেখেছেন। তিনিও যে প্রতারিত হবেন, তা বুঝতে পারি নি। অবশ্য হতেই পারে যে, কাকতালীয়ভাবে আসল-নকল দুই বুধনের একটা আলগা সাদৃশ্য ছিল চেহারায়। হয়তো সে-কারণেই, তার উপর এমন অভাবনীয়, আপাতভাবে সমাজের চোখে লজ্জাজনক রোগ হওয়ার ফলে সকলে রুগীর চেয়েও রোগের দিকেই বেশি নজর দিয়েছিল। না হলে হয়তো নকল বুধন ধরা পড়ে যেত।”
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৮৬: ‘অরণ্যবার্তা’র অফিসে

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৯: হারিয়ে যাওয়ার ‘জীবন তৃষ্ণা’

শাক্য বলল, “রথীনবাবুর কথা না-হয় বুঝলুম, তিনি তো আর নিয়মিত তাঁর ছাত্রকে দেখেন নি, অনেকদিন পরে হয়তো দেখেছেন, ফলে প্রতারিত হতেই পারেন। কিন্তু আসল বুধন মাহাতোর বাবা-মা—তাঁরা কী করে প্রতারিত হলেন ? তাঁরা তো অনেক ঘনিষ্ঠভাবে তাঁদের ছেলেকে, আই মিন নকল বুধন মাহাতোকে দেখেছিলেন!”

সত্যব্রত মৃদু হাসলেন। তারপর বললেন, “এ-প্রশ্নটা আমার মনেও জেগেছিল। আমি তার উত্তরও পেয়ে গিয়েছি। আমার আগের বক্তব্যের মধ্যে তার ক্ল্যু ছিল। ভালো করে ভেবে দেখুন, নকল বুধন দিনের বেলায় তার নিজের ছোট্ট প্রায়ান্ধকার ঘরে বসে থাকত। বাইরে বেরুতে চাইত না, এমনকি মা-বাবার সামনেও না। সন্ধ্যের পর বেরুত। এই জন্যই তাদের পক্ষে বুধন যে নকল, তা ধরা সম্ভব হয়নি!”
“মানে?” সুদীপ্ত প্রশ্ন করল। শাক্যও তাকাল ডাক্তারের দিকে জিজ্ঞাসু ভঙ্গিতে।
সত্যব্রত বললেন, “সন্ধ্যের পরে মারুতি মাহাতো থাকত নেশার জগতে। হাঁড়িয়া খেয়ে পড়ে থাকত, সেই অবস্থায় তার পক্ষে বুধন আসল না নকল তা বোঝা সম্ভব ছিল না!”
“আর বুধনের মা?”
“উনি নেকটালোপিয়ার পেশেন্ট!”
“সেটা আবার কী?” সুদীপ্ত প্রশ্ন করল।
আরও পড়ুন:

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৮৫: সাফল্য কি বংশগত উত্তরাধিকার? না কি ব্যক্তিগত কৃতিত্বের প্রমাণ?

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৬৮: লক্ষ্মীস্বরূপিনী মা সারদা

“বাংলায় যাকে রাতকানা রোগ বলে। বুধনের মায়ের এই রোগটা আছে। ফলে তাঁর পক্ষে রাতের বেলায় কুপীর আলোয় কে আসল বুধন, কে নকল—তা ঠাওর করা অসম্ভব। কারণ, রাতে তিনি তো এককথায় অন্ধ। ফলে নকল বুধনের সুবিধা হয়েছিল। যদিও আমার মনে হয়, যারা তাকে নিয়োগ করেছিল এই কাজে, বুদ্ধিটা তাদেরই। অনেক আটঘাট বেঁধেই তারা নকল ছেলেটিকে নিয়োগ করেছিল। আর একজনের কথাও এই প্রসঙ্গে এসে পড়ে, সে নুনিয়া। সে মাঝেমধ্যে আসত বুধনের কাছে। সে-ও কিন্তু প্রথমদিকে সন্দেহ করে নি। তাছাড়া আমি নুনিয়ার সঙ্গে কথা বলে যা জেনেছি, যদিও-বা নুনিয়া বিকেলের দিকে কখনও আসত এবং বুধনের ঘরে বসেই কথাবার্তা বলত, কিন্তু বুধন না-কি লজ্জায় সর্বাঙ্গ ঢাকাচাপা দিয়ে বসত। মুখখানিও যে বিশেষ দেখতে পেত নুনিয়া তা-ও নয়। সম্ভবত নুনিয়ার কাছে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়েই নকল বুধন এমন কাণ্ড করত। তবে তাতেও শেষরক্ষা হয় নি। ওই কথাবার্তা বলার সূত্রেই নুনিয়ার সন্দেহ হয় যে, এ আসল বুধন নয়। আসল বুধনের সঙ্গে নুনিয়ার হৃদ্যতা ছিল। ফলে অনেক কথাবার্তা, গল্পগুজব হত, যা দুজনের অজানা থাকার কথা নয়। কিন্তু নুনিয়া আমায় বলেছে, এই ধরণের কিছু কথা ওঠার পরে বুধনের প্রতিক্রিয়া বা অজ্ঞতা দেখেই তার সন্দেহ হয় যে, ছেলেটি আর যেই হোক বুধন নয়। তবে তখনও সে জানত না যে আসল বুধন ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছে। তবে হেলথ-সেন্টারে সে গিয়েছিল, নকল বুধনকে দেখতেই। কারণ, তখন তার সন্দেহ পাকা হয়ে গিয়েছিল যে, এ আর যেই হোক, বুধন মাহাতো কিছুতেই নয়। হেলথ-সেন্টারে ভর্তি হয়ে সে কী করে সেটা দেখার জন্যই নুনিয়া সেখানে যায় এবং নকল বুধন তাকে দেখে ফেলে। তখন নকল ছেলেটিও বুঝে গেছে যে, বুধনের মা-বাবাকে ফাঁকি দিতে পারলেও, নুনিয়াকে ফাঁকি দিতে পারে নি সে। ফলে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া তার আর কোন উপায় ছিল না। তার নিয়োগকর্তাদের থেকেও সে নির্দেশ পেয়ে থাকতে পারে যে এহেন অবস্থায় সে যেন যে-ভাবেই হোক পালিয়ে যায়। সেই কাজটিই সে করেছে।”
আরও পড়ুন:

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-৮: জোসেফ কনরাড ও জেসি কনরাড—আমি রূপে তোমায় ভোলাব না…/৩

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৭০: সুন্দরবনের পাখি: লাল কাঁক

সুদীপ্ত বলল, “কিন্তু হেলথ্‌-সেন্টারে ভর্তির পর কেউ তো তার সঙ্গে যোগাযোগ করে নি, তাহলে সে নির্দেশ পেল কীভাবে?”
শাক্য বলল, “সুদীপ্ত, আপনি ভুল করছেন। ডাক্তারবাবু একবারও বলেননি যে, হেলথ্‌-সেন্টারে আসার পরে নকল বুধনের কাছে নির্দেশ এসেছিল। এমন কি হতে পারে না, এখানে আসার আগেই তার কাছে নির্দেশ এসেছিল। যারা তাকে নিয়োগ করেছিল, তারা তাকে চোখের আড়ালে রেখে দিয়েছিল, ভাবলেন কী করে? এ ধরণের অপরাধীরা কিন্তু কাউকেই বিশ্বাস করে না। আর এক্ষেত্রে যদি ছেলেটি তাদের গ্যাং-এর স্থায়ী মেম্বার না হয়ে চুক্তিভিত্তিক ভাড়াটে লোক হয়, তা-হলে তো আর কথাই নেই। ফলে তাকে চোখে-চোখে রাখবেই তারা। যদি ডাক্তারবাবু না জেনে থাকেন, তাহলে আমাদের যেটা জানতে হবে, সেটা হল, নকল বুধনকে হেলথ্‌-সেন্টারে নিয়ে আসার আগে বাইরের কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল কি না! তাছাড়া নুনিয়া ছাড়া আর কেউ সেই সময় বুধনের খোঁজখবর নিতে আসত কি-না। ডাক্তারবাবু কি এটা জেনেছেন?”
সত্যব্রত মাথা নাড়লেন, “না, আমি এ-দিক থেকে ভাবিনি। এখন মনে হচ্ছে, এই প্রশ্নটা আগে মাথায় এলে সে-খবরও জোগাড় করতে চেষ্টা করতাম!” তাঁর গলায় আপসোসের সুর।
শাক্য বলল, “এতে আপনার আপসোস করার কিছু নেই। আমরা বিষয়টা জেনে নেবো। কী সুদীপ্ত, আপনি পারবেন না?”
সুদীপ্ত মাথা নাড়ল। “কেন পারব না স্যার। আমি কালকের মধ্যেই বিষয়টা জানবার চেষ্টা করছি। আশা করি উত্তর পেয়ে যাবো।”
শাক্য সত্যব্রতকে বলল, “আপনার বক্তব্য আমাকে মুগ্ধ করল ডক্টর। যুক্তি দিয়ে আপনি ঘটনাক্রমকে যেভাবে বিশ্লেষণ করলেন, তা আমাদের পুলিশি তদন্তেও অনেকে করতে পারে না। আপনি আমাদের অনেক কাজ সহজ করে দিলেন। যে-কথাগুলি আমাদের জানা উচিত ছিল, সেগুলি আপনিই জেনে আমাদের হাতে তুলে দিলেন, এ এক বিশাল পাওয়া। এর জন্য আপনার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। নকল বুধন মাহাতোকে কেন আসল বুধনের বাবা-মা চিনতে পারলেন না, সে-ব্যাপারে আপনার যুক্তিও একেবারে অকাট্য। এখন একটাই প্রশ্ন, নকল বুধন মাহাতো আসলে কে? তাকে কীভাবেই বা আপনি পেলেন?”
আরও পড়ুন:

ত্রিপুরা: আজ কাল পরশুর গল্প, পর্ব ৩৩: বীরচন্দ্রের রাজকার্যে বাংলা

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯৭: কী করে গল্প লিখতে হয়, ছোটদের শিখিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ

সত্যব্রত বললেন, “সেটা কাকতালীয় বলতে পারেন। যখন আমি এই ব্যাপারে অনুসন্ধান শুরু করি ব্যক্তিগতভাবে, তখনও জানতাম না আমি এই সত্যের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারবো। কিন্তু আসল বুধনের লাশের অংশটুকু পাওয়ার পর আমি যখন বুঝতে পারলাম, অন্য কেউ আসল বুধনের জায়গায় প্রক্সি দিয়েছে, তখন আমার মনে দু’টি প্রশ্ন জেগে উঠেছিল, কেন এবং কে? সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য আমি চেষ্টা শুরু করি। কিন্তু প্রথমেই স্বীকার করে নিচ্ছি যে, যে বা যারাই এই কাজটি ঘটিয়ে থাকুক, কেন তারা এই কাজ করেছে, সেটা আমি অনেক অনুসন্ধান করেও সঠিকভাবে বলতে পারব না। আগে যা বলেছি, তা যে আমার নিছক অনুমান, সে-কথা কিন্তু আবারও বলছি। তবে আশার কথা, কে এই নকল বুধন সেজে বিরাট বড় ধোঁকার টাঁটি দিয়েছিল, তার পরিচয় আশা করি আমি সঠিক ধরতে পেরেছি। তবে যদি বলেন, তাকে দেখিয়ে দিতে পারব কি-না, তাহলে বলব, না, পারব না। কারণ, কে এই কাজটি করেছে, তা খুঁজে পেলেও, কালপ্রিটকে হাতেনাতে ধরতে পারা সম্ভব হয় নি আমার পক্ষে। সেটা বোধহয় সম্ভবও ছিল না আমার পক্ষে। কেন বলছি তা আমার কথা শুনলেই বুঝতে পারবেন। তবে আমার কাছে তার হদিশ পেয়ে যদি আপনারা আপনাদের ফোর্সকে কাজে লাগিয়ে তাকে পাকড়াও করতে পারেন, তাহলে হয়তো বুধন হত্যা রহস্যের কিছু কিনারা করা সম্ভব। আর হয়তো একইসঙ্গে কালাদেও-বিভীষিকার উপরেও কিছুটা আলোকপাত করা সম্ভব হবে।”

শাক্য বলল, “সেই জন্যই তো আমরা আপনার কথা শুনবো বলে এখানে এসেছি। আপনি নির্দ্বিধায় বলুন কী জানতে পেরেছেন নকল বুধনের ব্যাপারে। তারপর কীভাবে পুলিশ-ফোর্সকে কাজে লাগিয়ে বাকিটুকু করতে হয়, আমরা দেখছি!”

সত্যব্রত বললেন, “বেশ। তবে শুনুন…”
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel): পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।

Skip to content