রবিবার ১০ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

বঙ্গে বর্ষার ইনিংস শুরু গিয়েছে। কিন্তু সেই সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে রোগ-ব্যাধির প্রকোপও। এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জলবাহিত রোগ থেকে বাঁচবার উপায় কী?
 

ট্যাঙ্ক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন

প্রথমেই বাড়ির জলের ট্যাঙ্ক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বৃষ্টির জমা জল, পুকুর-নালার দূষিত জল থেকে আন্ত্রিক, ডায়েরিয়ার মতো রোগও ছরিয়ে পড়ে সমস্ত দিকে। এর ফলে পেট খারাপ, বমির সমস্যা দেখা যায় এই সব রোগ থেকে । ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। এর জন্য জলের ট্যাঙ্ক এর জল সত্যিই পরিশ্রুত কিনা, তা নিয়মিত ও নিরন্তর নজরদারি করা প্রয়োজন।

 

পরিশ্রুত জলপান করতে হবে

অনেক সময়ে গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়, বাড়ির সামনে নিকাশি ননর্দমা দিয়ে জল বয়ে যাচ্ছে। সেই নোংরা, অপরিষ্কার জলেই বাড়ির মেয়েরা গৃহস্থালির সমস্ত কাজ করছেন। দেখা যাচ্ছে তারা সেই নোংরা জলেই বাসন মাজছেন। জামা-কাপড় কাচছেন। বাড়ির ছোট ছেলে-মেয়েরা আবার সেই জলেই শৌচকর্ম সারছে। শহরাঞ্চলেও আবার দেখা যায় অনেকে নিকাশি নালার জলে বাসনপত্র ধুচ্ছেন। অনেক সময় পুকুর সংস্কার করা হয় না দিনের পর দিন। এক জায়গায় আবদ্ধ জলে ক্রমাগত জমা হচ্ছে পুকুরপাড়ের বর্জ্য পদার্থ। তার থেকেও ভীষন ভাবে রোগ ছড়াচ্ছে। কোনও আবাসনে জলের ট্যাঙ্ক দিনের পর দিন পরিষ্কার না হলে তার থেকেও সংক্রামক অসুখ ছরিয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন:

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৭০: পিতার সমালোচক রাম শুধুই মানুষ, তবু তিনি কেন পুরুষোত্তম?

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৫৩: মহীয়সী গৃহস্থনারী মা সারদা

 

কী ভাবে সাবধান থাকবেন?

প্রথমেই দেখতে হবে, প্রস্রাব ঠিক মতো হচ্ছে কি না। না হলে ওআরএস খেতে হবে। অনেক সময় ওআরএস খাবার পর আক্রান্তের বমি হতে পারে। কিন্তু, এক্ষেত্রে উদ্বেগের কিছু নেই। আক্রান্তকে আবার মুখ ধুইয়ে ওআরএস দিতে হবে। শরীরে সোডিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম বাইকার্বোনেট, পটাশিয়াম ক্লোরাইড ঢুকলে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন:

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৩০: নলিনী দাশ— গণ্ডালুর সৃজনশিল্পী

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৫৫: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা— আমুর ও গোশিঙা

 

চিকিৎসকদের পরামর্শ

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, পাঁচ বারের বেশি পাতলা মল হলে স্যালাইন দিতে হবে। মলের সঙ্গে রক্ত পড়লে তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ‘স্টুল কালচার’ করাতে হবে। এইরকম আক্রান্তের ক্ষেত্রে এই সময় খাওয়াদাওয়া ওপর বেশি নজর দিতে হবে। বেশি করে জল খেতে হবে এবং ভাজাভুজি, তেল মশলাদার খাবার খাদ্য তালিকা থেকে একদম বাদ দিতে হবে। রাস্তার দোকান থেকে কেনা খাবার, কাটা ফল, লস্যি-শরবত খাওয়া চলবে না। এই সময় কাঁচা শাকসব্জি খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে, কারণ কাঁচা শাকসব্জি থেকে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। এই সময়ে কোনও অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলে স্যালাড এড়িয়ে চলতে হবে। বরং, স্যালাড খেতে ইচ্ছা করলেবাড়িতে বানিয়ে খান।

আরও পড়ুন:

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-২: যতই দেখি তারে, ততই দহি…

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯৫: প্রথম ভারতীয় সিভিলিয়ান সত্যেন্দ্রনাথ ভেবেছিলেন পরীক্ষায় পাশই করবেন না

 

খাবারদাবার

বাইরে থেকে ফল কিনে এনে ,তা ভাল করে ধুয়ে নিয়ে খেতে হবে। তাছাড়া শাকসব্জি ভাল করে সিদ্ধ করে রান্না করতে হবে। এই সময় আক্রান্তকে সহজ পাচ্য খাবার খেতে হবে। শিশুরা আক্রান্ত হলে তাদের শরীরে পটাশিয়াম দ্রুত কমে যায়। তাই লেবুর রস, কলা, স্যুপ জাতীয় খাবার, পেঁপে দিতে হবে। ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে। এতে শরীরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ঢুকবে, সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। লেবু জাতীয় ফল, পেয়ারা বেশি করে খেতে হবে তাছাড়া প্রতিদিনের খাবারে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকলে ভালো। রেড মিটের বদলে মাছ, ডিম, মুরগির মাংস খাওয়া ভালো।


Skip to content