বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


অলঙ্করণ : সৌমি দাসমণ্ডল।

মারুতি মাহাতো দাওয়ায় বসে চুটা খাচ্ছিল। আদুরি অল্প দূরে বসে বিড়ি টানছিল, সে চুটা পছন্দ করে না। প্রায় ঘণ্টাখানেক আগে তারা কাজ থেকে ফিরেছে। ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই মোড়লের লোক এসে বলে গেল যে, “ডাগ্তারবাবু সেই কখন থেকে তাদের সঙ্গে দেখা করবেন বলে বসে আছেন।”

ডাগতারবাবু! তাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে বসে আছেন? কী কথা? বুধনের লাশ পাওয়া ইস্তক আদুরি কেমন একটা হয়ে গিয়েছে। সকলে ভেবেছিল, ছেলের শোকে সে হয়তো পাগলই হয়ে যাবে। কিন্তু সপ্তাহখানেক যাওয়ার পরেই তাদের দু’জনকে আবার কাজে বেরোতে দেখে সকলে নিশ্চিন্ত হয়েছিল, আদুরি আর মারুতি মাহাতোর বুঝি শোকের সাগর শুকিয়েছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, পেটের জ্বালায় কাজে ফিরিতে বাধ্য হয়েছে বটে তারা, কিন্তু দু’জনের কেউই বুধনকে ভোলেনি। মা-বাবা কখনও তাঁদের সন্তানকে ভুলতে পারে? মোড়লের কাছে যখন কথাগুলি শুনছিলেন সত্যব্রত, তখন তাঁর এ-কথাই মনে হয়েছিল। একমাত্র সন্তান ছিল বুধন, আর মারুতি ও আদুরিকে তো তিনি দেখেছেন, এই বয়সে নতুন করে সন্তান জন্ম দেওয়া কার্যত অসম্ভব। ফলে সন্তান হারানোর স্মৃতি অনেক বেশি করে আঘাত হেনেছে তাদের উপরে।

হরিপদ গাড়ি লক করে এসেছে সঙ্গে। গোবিন্দ সরেনও আসতে চেয়েছিল, কিন্তু সত্যব্রত আমল দেননি। তিনি কোন যুদ্ধ করতে যাচ্ছেন না। অতএব লোকলস্কর জুটিয়ে ডমরু আর শিঙা ফুঁকে যুদ্ধ করার মতো লোকলস্করও তাঁর দরকার নেই। গোবিন্দ বরং হেলথ্ সেন্টারে থাকলে, অসময়ে কোন রুগী এসে পড়োলে তাঁর সুবিধাই হবে।
সত্যব্রত বসেছিলেন দাওয়ার এক ধারে পা ঝুলিয়ে। হরিপদ খানিকটা সেকেলে। যে-দাওয়ায় মালিক বসেছেন, সে-দাওয়ায় মরে গেলেও সে বসতে পারবে না। অতএব সামনের চাতালে উবু হয়ে বসে সে সত্যব্রতর জিজ্ঞাসাবাদ শুনছিল। মাঝে মধ্যে টুকটাক কথা বলছিল। মোড়ল নিজে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সত্যব্রত অনেক কষ্টে আটকেছেন তাঁকে। এত বেশি লোকের ভিড়ে মারুতি এবং তাঁর স্ত্রী মুখ খুলবেন না, ভয় পাবেন। অতএব এটা-ওটা বলে অযথা লোকের ভিড় আটকে দিয়েছেন তিনি।

মারুতি আর আদুরি তাঁকে দেখে হাত জোড় করে মাথা নিচু করে পেন্নাম করেছিল। মারুতি জিজ্ঞাসা করল তাঁকে, “হেই ডাগ্তারবাবু! তোমাকে গড় করি গো! কিন্তু আমাদের কী দোষ হইন্ছে বল ক্যানে! আমরা তো কুনো পাপ করি লাই!”

মারুতির মুখের দিকে তাকিয়ে ভারি মায়া হয় তাঁর। আহা! লোকটি সারাজীবন কিছুই পেল না। অথচ সর্বদা সিঁটিয়ে থাকে পাপের ভয়ে।
“কেন ? তোমরা পাপ করবে কেন? তোমরা কি তেমন কিছু করেছ?” সত্যব্রত জিজ্ঞাসা করে।

“করি লাই বলেই তো অবাক হচ্ছি ডাগতারবাবু! আমরা ছোটা আদমি আছি। হামাদের কোন ভুল ত্রুটি হলে সেটা ধরিয়ে দিলে ঠিক করে লিতে পারি। হামার ছেলেটো চল্যে গেল গো! পাপ তো আমরা লিশ্চয়ই করেছি! তা না হলে এমন ঘটনা ঘটবে কেন?”

সত্যব্রত গলা খাদে নামিয়ে বললেন, “মারুতি! তুমি এবং তোমার বউ কোন পাপ করোনি। যা ঘটেছে, তা হয়তো একটা দুর্ঘটনা, কিংবা আরোও কিছু। থানা থেকে নিশ্চয়ই একটা কারণ দেখিয়ে যাবে তোমাদের। তাছাড়া ডেথ সার্টিফিকেটটাও নিতে হবে তোমাদের। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পেলেই সেটা দিয়ে দেবেন ডক্টর। কোন সমস্যা হলে নিশ্চিন্তে আমার কাছে চলে এসো। আমি দেখব, যাতে কোন গণ্ডগোল না হয়।”

“আপ দেওতা হো ডাগতারবাবু!” মারুতি এবং আদুরি সমস্বরে বলে ওঠে প্রায়।

সত্যব্রত মাছি তাড়ানোর মতো হাত নেড়ে মুখ দিয়ে একটা শব্দ করলেন, তারপর বললেন, “আমরা কেউই তোমার দেওতা নই মারুতি। সামান্য সাধারণ মানুষ। দেওতা হলে তো বুধনকে বাঁচিয়ে তুলতে পারতাম। পেরেছি কি?” বলে ক্ষণকাল থামলেন তিনি। তারপর বললেন, “যাক্ গে। তোমরা অনেক পরিশ্রম করে ফিরেছ। তোমাদের বেশিক্ষণ সময় নষ্ট করবো না। কেবল বুধনের ব্যাপারে কয়েকটি কথা জিজ্ঞাসা করেই চলে যাবো।”

বুধনের কথা শুনে মারুতি ও আদুরির চোখ ছলছল করে উঠল। মারুতি মাহাতো ধরা গলায় বলল, “বলুন ক্যানে!”
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক,পর্ব-৫৮: যেখানে দেখিবে ছাই

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-১৫: যখন ‘ওরা থাকে ওধারে’

“আচ্ছা, বুধন ছেলে হয়েও যে প্রেগন্যান্ট আই মিন তার পেট হয়েছিল বলে তোমরা বিশ্বাস করতে?”

“কী বলব ডাগ্দারবাবু! কুখনো তো এমন শুনি লাই। আমরা দুজনে, মানে আমি আর আদুরী তো পেথম শুনে হেসেই খুন!”

“কথাটা কে তোমাদের বলেছিল? বুধন? না কি আর কেউ?”

“বুধন নয়! বুধন নয়!” যেন গোপন মন্ত্রের কথা বলছে এমনভাবে বলল মারুতি, “মঙ্গল মাহাতো বলছিলো বটে!”

“মঙ্গল মাহাতো! বাসের কন্ট্রাকটার যেই মঙ্গল, সে?”

“হ্যাঁ গো বাবু, সেই। আমাদের দূর সম্পর্কের ভাই হয় যে। সে না কি চার্চে গিয়ে শুনে এসেছিল যে, সকলে বলছে, ফাদারও বলেছেন, বুধনের পেট হইনছে !”

“ফাদার বলেছেন?” অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন সত্যব্রত।

“হ্যাঁ! সেইখান থেকেই তো সকলে ওর পিছনে লাগল আর ও চার্চের কাজঘরে যাওয়া বন্ধ করে দিল। আমি কম মেরেছি। আদুরি হামাকে আটকাতো, না হলে ছেলেটা আমার হাতেই মারা পড়ত!”

কাজঘর বলতে মারুতি নিশ্চয়ই চার্চের ওয়ার্কশপকে বুঝিয়েছে। সত্যব্রত একটু চিন্তা করে নিলেন, “আচ্ছা মারুতি, আমি শুনেছি ভুলাউলির মাঠ পেরিয়ে যে জঙ্গল, তার ভিতর দিয়ে শর্টকার্ট হবে বলে প্রথম প্রথম বুধন যেত। তারপরে কোন একটা কারণে সে ভয় পায় এবং বলে যে ওখানে কিছু আছে। এবং সে হয়তো আর ওয়ার্কশপেও যাবে না। কিন্তু যদি ধরে নিই জঙ্গলের রাস্তায় সে ভয়ঙ্কর কোন ভূত-প্রেত-পিশাচ কিংবা কালাদেওকে দেখেছিল, তাহলে জঙ্গলের রাস্তা সে ভবিষ্যতে না-ই ধরতে পারে। কিন্তু চার্চে যাওয়ার তো অন্য ভালো রাস্তা আছে। মেইন রোড। সেখান দিয়ে সে যতে পারত। কিন্তু তা-ই যদি হয়, সে কেন বলেছিল যে, চার্চের ওয়ার্কশপে হয়তো তার আর যাওয়া হবে না? জান কিছু এ-ব্যাপারে?”

“না ডাগ্দারবাবু। কিছু জানি না। অনেক জিগাইছি বুধনেরে, কিন্তু সে কিছু বলেনি! আমি তাকে জোর করে চার্চে ধরে নিয়ে গিয়েছিলাম, ফাদার কী বুঝিয়েছিলেন, তা অবশ্য আমি জানি না। কিন্তু তারপর থেকে আবার সে যাওয়া শুরু করেছিল। আমরাও আর কিছু জিগাইনি!”

সত্যব্রত অবাক হলেন। মারুতির কথাতে বার বার ঘুরে ফিরে আসছে চার্চ ও ফাদারের নাম। কী বলেছিলেন ফাদার যাতে বুধনের ভয় কেটে যা? আর এমন ভয় কেটে যায় যে, প্রায়শই সে একা-একা সেই জঙ্গলে গিয়ে বসে থাকত, যেখানে সে কিছুদিন আগে ভয়ের কিছু দেখেছিল এবং নিজেকে গুটিয়ে নিতে চেয়েছিল! ব্যাপারটা খুব সন্দেহজনক এবং সত্যব্রতর মনে হচ্ছে, এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে, বুধনের অসুস্থতা এবং পরিণতি সংক্রান্ত সত্য। তিনি মারুতিকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আচ্ছা, বুধন যখন আবার ওয়ার্কশপে যেতে শুরু করে, তারপর থেকে ওর মধ্যে কি কোনও পরিবর্তন দেখেছিলে? মানে ব্যবহারে কিংবা কথাবার্তায়?”
আরও পড়ুন:

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৩৯: ইন্দুমতী ও সুরবালা

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৪১: সুন্দরবনে বাঘে-মানুষে সংঘাত

“পরিবর্তন?” মারুতি ভাবতে শুরু করে, তারপর একসময় বলে, “ছেলেটো পুরাই বদলে গিয়েছিল ডাগদারবাবু! আগে যে সব কথা বলত এসে, সে কথা বলাই বন্ধ করে দিয়েছিল আমাদের সঙ্গে। বাইরে বেরোতে চাইত না। ওয়ার্কশপে যাওয়ার সময়টুকু ছাড়া আগে বন্ধুদের সঙ্গে মৌজমস্তি করত, সব বন্ধ করে দিয়েছিল। ইস্কুলে যেত না। যেতেই চাইত না। গায়ে হাত তুললে বলত, আমাকে মার আর কাটো, হোথাকে পাঠাতে পারবে না!”

“আর কিছু?”

“অন্ধকারে বসে থাকত। দিনের আলোয় বেরুতেই চাইত না। খিদে পেলে চিৎকার করে বাড়ি মাথায় করে দিত। আবার খাবার পেলে সব চুপ। মঙ্গল আসত মাঝেমধ্যে। ও চুপ করে শুনত। আর ওই নুনিয়া এসে গল্প বললে ও একেবারে চুপ। যে ছেলেটো আমার দিনের বেলা বেরোতেই চাইত না কোথাও, সেই কিন্তু রাতের বেলা মাঝেমধ্যে কোথাও বেরিয়ে যেত। একবার তো দু’দিন ফিরল না। পরের দিন ফিরে এসে যেন কিছুই হয় নি এমন মুখ করে ঘরে ঢুকে গেল। খাবার খেল। কিন্তু কোথায় ছিল, তা নিয়ে কতবার জিগাইলাম, কিছু বলল না!”

“ওর এই অসুস্থতার সময় মঙ্গল মাহাতো কেন আসত জিজ্ঞাসা করনি মঙ্গলকে?”

“না ডাগতারবাবু। ও তো বেরাদরির মধ্যেই একজন। ভাই হয়। আসত হয়তো ছেলেটোর এমন হালত দেখে। কী আর জিগাইব বলুন?”
“হ্যঁ! তা বটে!” মুখে বললেন বটে সত্যব্রত, কিন্তু মাথায় কুরে কুরে খেতে লাগল হরেক প্রশ্ন। নুনিয়া কেন আসত? মনের টান? ভালোবাসা? বন্ধুত্ব ? না কি আর কিছু? তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “নুনিয়া কেন আসত জিজ্ঞাসা করনি তাকে? কিংবা বুধনকে?”

“না! করিনি। নুনিয়া তো আসবেই। বুধন ওর দাদা ছিল। হামার বোন ছিল নুনিয়ার মা। ওর বাবা মারা যাওয়ার কয়েকবছর পরে নুনিয়া জন্মায়। হামার বোন চার্চে কাজ করত। সেখানকার কেউ…! যাই হোক, আমাদের সমাজে বাইরের লোকের জন্য পেট হলে কেউ মানে না। ওদেরও মেনে নেয়নি। ওরা অন্য জায়গায়, এই গাঁও থেকে একটু দূরে ফাদারের অনুগ্রহে আলাদা ঘর করে থাকত। তা বোন যখন মারা গেল, হামি নুনিয়াকে নিয়ে আসতে চেয়েছিলাম। মা-মরা মেয়ে। বাপের পাতা-ঠিকানা লাই। কিন্তু ফাদার বললেন, নুনিয়া চার্চে অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে থাকবে, পড়ালিখা করবে। আমিও তখন আর বাধা দেইনি। আমাদের অভাবের সংসার ডাগদারবাবু!
আরও পড়ুন:

ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-৩১: আমার মতে, তোর মতো কেউ নেই

ত্রিপুরার রাজ পরিবারে হোলি উৎসব

নিজেদের দু’বেলা দু’ মুঠো জোটে কি জোটে না। আর একটা পেট বাড়ালে নিজেরা খাব কী? সেই কারণেই তো নুনিইয়া চার্চে থাকল। কিন্তু দাদাকে খুব ভালোবাসত। আমার বোন ওকে বলেছিল, কোনদিন কিছু হলে আমাদের কাছে এসে যেন দাঁড়ায়, ভিখ মাগে, আমরা ওর আপন হই। সেই জন্যই আসত। তবে, শেষ দিকে আর আসত না। ওকে চার্চে আটোকে রাখা হয়েছিল বলে পরে শুনেছি। ছেলেটো মারা যাওয়ার দিন পনেরো আগে থেকে নুনিয়ার আসা ওরা বন্ধ করে দিয়েছিল একেবারে!”

“ওরা মানে কারা?”

“চার্চের লোকেরা। ওই বাচ্চাদের দেখভাল যারা করে, তারা হয়তো। আমি তো চার্চে যাইনি। মদ খাই তো! আমার চার্চে ঢোকা বারণ করে দিয়েছিল ওরা। ভাবতাম রবিবার ওদের প্রার্থনার দিন। সেই দিন গেলে দেখা হবে নুনিয়ার সঙ্গে, কথা হবে। সেই লোভে আগে কেবল রবিবার যেতাম। ওই দিন চার্চে সবাই ঢুকতে পেত। কেকের টুকরো মিলত প্রার্থনার পরে। আমরা দুই জন মিলে, কখনও আমি একা আসতাম। তাও সবার পিছনে বসতাম। কিন্তু আমাকে দেখলেই কুকুর-বেড়ালের মতো তাড়াতো ওরা। নুনিয়ার সঙ্গে আমাকে বা মারুতিকে কথা বলতে দিত না কেউ।”

“আচ্ছা মারুতি, সাইকেল হেমব্রম নামের কাউকে চেনো?”

“সাইকেল? ও হাড়বজ্জাত, হারামি আছে ডাগতারবাবু! নানা গন্ধা কাম কাজ করে। আমাকেও ডেকেছিল। মাঝেমাঝে কিছু মাল যেখানে বলবে সেখানে দিয়ে আসতে হবে। ভালো টাকা মিলবে। কিন্তু আমি রাজি হইনি। আমাদের পাড়ার কয়েকজনের সগে ওর পাল্লায় পড়ে জেলে খেটেছিল। ওর ওপর অনেকের খুব ক্ষার। এ গাঁয়ে এলে ওকে পিটিয়ে মেরে ফেলবে বলে আসে না। তবে বুধনের সঙ্গে খুব হেসে-হেসে কথা বলত। অনেকে দেখেছে। এই নিয়ে আমি বুধনকে জিগাতে সে কিছু বলতে চাইত না। আমি তাকে সাবধান করে দিয়েছিলাম, আর যেন ওই হারামির বাচ্চার সঙ্গে না মেশে !”

“সাইকেলকে আমি কাল চার্চে দেখেছি। সে ফাদারের খুব কাছের লোক। ফাদার তার সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন শুনলাম!”

“ফাদার তো আরো অনেকের সঙ্গেই বলেন। আমার সঙ্গেই কতবার বলেছেন। আমাকে ভালো হতে বলেছেন। নেশা ছাড়তে বলেছেন। বলুন ডাগদারবাবু, বেঁচে আছি তো কেবল ওই নেশার জোরেই? তা-ও ছেড়ে দিলে বাঁচবো কী ভাবে? সাইকেলের সঙ্গেও তেমন কোন কথা বলার জন্যই হয়তো ফাদার ওকে আলাদা কথা বলার সুযোগ দেন!”

“সেটা হলে তো খুব খুশি হব। আর না হলে…!” কথাটা সত্যব্রত শেষ করলেন না। একজন বাড়ির চৌহদ্দীর মধ্যে ঢুকে পড়ে তাঁদের এখানে দেখে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ল। তারপর মুখে ক্লিষ্ট হাসি হেসে তাঁর দিকে হাত জোড় করে নমস্কার করে বলল, “নমস্কার ডাগদার্সাব ! চিনতে পারছেন? আমি সাইকেল মাহাতো। মারুতি মাহাতোর আত্মীয়। শুনলাম আপনি এসেছেন, তাই ভাবলাম একবার দেখা করে আসি। গাঁও-ঘরে মেহমান খুব একটা আসে না কী না!”
—চলবে।
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel): পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।

Skip to content