রবিবার ১০ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

ওজন যদি এক বার বাড়তে শুরু করে, তা হলে তাকে বশে আনতে রীতিমতো কষ্ট করতে হয়। মনে রাখতে হবে— ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য শুধু পরিমিত সুষম আহার বা শরীরচর্চাতেই কাজ হয় না। পুষ্টিবিদদের বক্তব্য, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণে খাওয়াও করা সমান জরুরি। পাশাপাশি পর্যাপ্ত জলপান এবং ঘুমও দরকার। আপনি যদি রোগা হওয়ার লড়াই শুরু করেন, তাহলে কিছু নিয়ম তো মানতেই হবে। আর সে সব নিয়ম মেনে চললে ফলও মিলতে পারে হাতেনাতে।
 

শরীরচর্চা করতেই হবে

ওজন ঝরাতে হলে শরীরচর্চাও জরুরি। রোজ দিন সকালে উঠে হাঁটাহাটি বা হালকা ব্যায়াম করতে হবে। এতে শরীর ভালো থাকবে। তবে যদি নির্মেদ এবং সুগঠিত শরীর পেতে চান, তা হলে একেবারে নিয়ম মেনে ঘড়ি ধরে শরীরচর্চা করতে হবে। সেই সঙ্গে ওজন নিয়েও শরীরচর্চা করা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন:

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-৭: জোসেফ কনরাড ও জেসি কনরাড—ভালোবাসিবে বলে ভালোবাসিনে/২

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৬০: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা— দুধি লতা ও পঞ্চরতি লতা

 

খাবার আগে জলপান

আমেরিকার ভার্জিনিয়া টেক-এর ডিপার্টমেন্ট অফ হিউম্যান নিউট্রিশন, ফুডস অ্যান্ড এক্সারসাইজ মানবদেহে পুষ্টি নিয়ে একটি গবেষণা করেছে। সেই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, খাবার আগে জলপান করলে ওজন খুব তাড়াতাড়ি কমে। একটানা ১২ সপ্তাহ ধরে যাঁরা জলপান করার পরে খাবার খেয়েছেন, গবেষণায় দেখা গিয়েছে, তাঁদের ওজন বেশ দ্রুতই কমেছে। পাশাপাশি ওই একই খাবার খেয়ে বাকিদের ওজন কমেনি। যাঁদের ওজন কমেনি, তাঁরা খাবার আগে জল খাননি।

আরও পড়ুন:

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৭৪: রাজা দশরথ, রাম, লক্ষ্মণ, সীতা সকলেই কি এক একটি জীবনবোধের প্রতীক?

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৫৩: রাজনীতিতে উন্নতির জন্য নিন্দা বা প্রশংসা ব্যক্তিগত পরিসরে করাই শ্রেয়, সভায় নয়

 

পর্যাপ্ত ঘুম

ওজন কমানোর সঙ্গে ঘুমের সরাসরই যোগ রয়েছে। পরিমিত খাওয়া, শরীর চর্চা, জল খাওয়ার পরেও যদি পর্যাপ্ত ঘুম না হয় তাহলে ওজন নাও কমতে পারে। আবার যদি ঠিক মতো ঘুম না হয়, তা হলে হজমেও সমস্যা হয়। আবার হরমোনের ভারসাম্যও বিগড়ে যায়। মনে রাখতে হবে, শরীর যদি বিশ্রাম না পায়, তাহলে বিভিন্ন অঙ্গের কর্মক্ষমতা কমে যাবে। আর হজমের অভাবে পেট ফোলা-সহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কমে যেতে পারে বিপাকহার। আর বিপাকহার ভালো না হলে ওজন ঝরাতে বেগ পেতে হবে।

আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৭৭: কথা কিছু কিছু

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৩৪: প্রতিমাদেবী— এক দুঃখবতীর কথা

 

সঠিক খাবার খেতে হবে

ফল, সব্জি, ডিম, মাংস, ওটস, কিনোয়া খেলে শরীর ভালো থাকে। সেই সঙ্গে এই সব খাবার আবার ওজন কমানোরও সহায়ক হিসেবে কাজ করে। জানলে ভালো, খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেটের থাকলে দ্রুত ওজন কমে। তবে সসেজ বা প্রক্রিয়াজাত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যাবে না। বর্জন করতে হবে বাজারচলতি ফলের রস বা পানীয়ও। কারণ, এই সব খাবারে নানা ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রায় চিনিও থাকে। যা ওজন কমানোর পথে বাধা হতে পারে।

আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯৬: স্রোতস্বিনী পদ্মায় লাফিয়ে কবির কটকি চটি-উদ্ধার

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৫০: কুষ্টি বিচার, না কি রক্ত বিচার! জরুরি কোনটা?

 

দিন শুরু হোক প্রোটিনে

ব্রেকফাস্টে প্রোটিন রাখতেই হবে। এ প্রসঙ্গে আমেরিকার ‘জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত গবেষণা বলছে, দিনের শুরুর খাবারে প্রোটিন জাতীয় খাবার থাকলে অনেক ক্ষণ পেট ভরা থাকে। এর ফলে টুকিটাকি খাবার ইচ্ছা অনেকটা কমে যায়। এতে দেখা গিয়েছে, কার্বোহাইড্রেটের পরিবর্তে প্রোটিন জাতীয় খাবারদাবার খেলে দীর্ঘ ক্ষণ আমাদের পেট ভরা থাকে। পুষ্টিবিদদের কথায়, সকালের খাবারে ডিম সেদ্ধ, পোচ বা প্রোটিন সমৃদ্ধ স্মুদিও রাখা যেতে পারে।

* সৌম্যকান্তি জানা। সুন্দরবনের ভূমিপুত্র। নিবাস কাকদ্বীপ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। পেশা শিক্ষকতা। নেশা লেখালেখি ও সংস্কৃতি চর্চা। জনবিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণের জন্য ‘দ্য সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল ২০১৬ সালে ‘আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড’ এবং শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞান লেখক হিসেবে বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ ২০১৭ সালে ‘অমলেশচন্দ্র তালুকদার স্মৃতি সম্মান’ প্রদান করে সম্মানিত করেছে।

Skip to content