শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

ডাবের জল ভালোবাসেন না, এমন মানুষকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। চিকিৎসকেরা গ্রীষ্মকালে পিপাসা মেটাতে ডাবের জল খাওয়ারই পরামর্শ দেন। শরীরে জলশূন্যতার সমস্যায় অথবা পেটের গোলমালে ডাবের জল মহৌষধির মতো কাজ করে। পুষ্টিগুণে হোক বা স্বাদে, ডাবের জলের জুড়ি মেলা ভার। ডাবের জলে ক্যালোরির পরিমাণও বেশ কম। এক গ্লাস ডাবের জলে ক্যালোরির পরিমাণ মাত্র ৪৫। ডাবের জল সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক-সহ নানা খনিজে সমৃদ্ধ। কিন্তু তাই বলে কি, ডাবের জল সবার জন্যই ভালো? কোন কোন অসুখে ভুগলে ডাবের জল খাওয়া অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠতে পারে, তা জেনে রাখা জরুরি।
 

কোন কোন রোগ থাকলে ডাবের জল খাওয়া অস্বাস্থ্যকর হতে পারে?

 

ফুসফুসের রোগ থাকলে

অনেক সময় ফুসফুসে দীর্ঘ দিন ধরে সংক্রমণে ভুগলে তার থেকে সিস্ট হতে পারে। ফুসফুসের সংক্রমণেরই ঠিক মতো চিকিৎসা না হলে পরবর্তীকালে ফাইব্রোসিসে পরিণত হয়। ফুসফুসের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই সঙ্গে ওই ক্ষতিগ্রস্ত কোষ ধীরে ধীরে স্থূল ও কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে শ্বাসকার্যে বাধা তৈরি হয়। একে বলা হয়, ‘সিস্টিক ফাইব্রোসিস’। এ ক্ষেত্রে ডাবের জল স্বাস্থ্যকর না-ও হতে পারে।

আরও পড়ুন:

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৩৯: ভারতের বিপ্লবী মেয়েরা এবং অন্তরে রবীন্দ্রনাথ

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৬৬: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা—ছাগল ক্ষুরি ও ধানি ঘাস

 

ডায়াবিটিসে ডাব ভাল না খারাপ?

ডায়াবিটিসে ভুগলে ডাবের জল খাওয়া স্বাস্থ্যকর কি না, এ নিয়ে বিতর্ক আছে। চিকিৎসকের বক্তব্য, ডায়াবিটিসে সপ্তাহে এক দিন ডাবের জল পান করলে তেমন ক্ষতি হবে না। কিন্তু প্রতিদিন ডাবের জল খেলে চিন্তার কারণ আছে। সাধারণত, বাজারচলতি নরম পানীয় বা প্যাকেটজাত ফলের রসের থেকে ডাবের জলে শর্করার পরিমাণ বেশ কম। সে দিক থেকে বিচার করলে ডাবের জল অনেকটা নিরাপদই। তবে ডায়াবিটিসের রোগী কেমন ওষুধ খাচ্ছেন বা কতটা মাত্রায় ইনসুলিন নিচ্ছেন, তার উপরেই সবটা নির্ভর করবে।

আরও পড়ুন:

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৫৯: শাসক বেকায়দায় পড়লেই প্রতিপক্ষকে সন্ধির প্রতিশ্রুতি দেয়, যদিও রাজনীতিতে সে সব মানা হয় না

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৫২: পুলক রাখিতে নারি (কেল)

 

কিডনির অসুখে একদম নয়

ডাবের জলে পর্যাপ্ত মাত্রায় পটাশিয়াম থাকে। চিকিৎসকদের কথায়, যাঁদের কিডনির অসুখে ভুগছেন, তাঁদের নিয়মিত ডাবের জল খাওয়ায় সতর্ক হতে হবে। কারণ নিয়মিত খেলে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে ‘হাইপারক্যালিমিয়া’ হতে পারে। এর জেরে দেহে খনিজ উপাদানগুলির ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে।

আরও পড়ুন:

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-৮: জোসেফ কনরাড ও জেসি কনরাড—আমি রূপে তোমায় ভোলাব না…/৩

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৬৩: বেলুড়মঠে শ্রীমায়ের অভিনন্দন

 

অ্যালার্জি আছে কি?

অনেকের বিভিন্ন রকম খাবারে অ্যালার্জি থাকে। যদি অ্যালার্জির ধাত থাকে, তা হলে ডাবের জল এড়িয়ে যাওয়া ভালো। তা না হলে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা আরও বাড়তে পারে। চিকিৎসকদের বক্তব্য, কেউ যদি ‘ফুড অ্যালার্জি’তে ভোগেন বা কোনও রকম ওষুধ খান, তা হলে ডাবের জল খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৮২: খটকা

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯৭: কী করে গল্প লিখতে হয়, ছোটদের শিখিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ

 

রক্তচাপের সমস্যায়

ডাবের জল পর্যাপ্ত পরিমাণে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ। মনে রাখতে হবে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে মানে রক্তচাপও বাড়বে। আবার পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে রক্তচাপও কমবে। ফলে যাঁদের রক্তচাপের সমস্যা ভুগছেন, তাঁদের ডাবের জল না খাওয়াই উচিত। আর যদি খেতেই হয়, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।


Skip to content