শনিবার ২৩ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

ডালিয়া নামটি সবার কাছে খুবই পরিচিত। ডালিয়া আসলে ভাঙা গম। বিভিন্ন দেশে ভুট্টা, জব, রাগি ইত্যাদি শস্যের মতো এটিও ব্যবহার করা হয়। গম থেকে তৈরি ডালিয়া ভারতে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়। ছোট থেকে বড় প্রায় প্রত্যেকেই ডালিয়া খেতে পছন্দ করেন। এই বিশেষ পদটি স্বাস্থ্যের পক্ষেও খুবই উপকারী।

খাবার নিয়ে একাধিক গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা ডালিয়াকে সুপারফুড হিসেবে উল্লেখ করেছেন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শরীরকে সুস্থ এবং রোগমুক্ত রাখতে ডালিয়ার কোনও বিকল্প হয় না। এটা যেমন চটজলদি রান্নাও করা যায়, তেমনি ফাইবারে ভরপুর হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাকে দূরে রাখে। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। এছাড়াও একাধিক পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই খাবার আমাদের ভিতর থেকে শক্তিশালী করে তোলে।
 

ডালিয়ার পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম ডালিয়া থেকে ৩৫৭ কিলোক্যালরি শক্তি, ৭.১ গ্রাম প্রোটিন, ১১.৯ গ্রাম ফাইবার এবং ১.৫ গ্রাম ফ্যাট পাওয়া যায়।
 

কেন খাবেন ডালিয়া?

 

কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সবার আগে যেটা জরুরি, সেটা হল খাদ্য তালিকায় ফাইবার জাতীয় খাবার বেশি করে রাখতে হবে। আর এই ডালিয়া ফাইবারের একটা গুরুত্বপূর্ণ উৎস। ব্রেকফাস্ট বা লাঞ্চে যদি ডালিয়া খাওয়া যায়, তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে সহজেই উপকার পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: ঘি খেতে ভালোবাসেন? ঘিয়ের এই ১০টি গুণ জানতেন?

ডায়েট ফটাফট: ডায়াবিটিসে ভুগছেন? সুস্থ থাকতে কী কী ফল খাবেন, আর কোনগুলি এড়িয়ে চলবেন?

পর্দার আড়ালে, পর্ব-৩০: সত্যজিৎ ও সুচিত্রা জুটির সেই ছবি তৈরি হলে তা মাইলস্টোন হয়ে উঠতে পারতো

 

পেটের রোগের প্রকোপ কমে

ডালিয়াতে উপস্থিত ফাইবার শরীরে প্রবেশ করে হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে বদহজম বা গ্যাসের সমস্যাতে থেকে সহজেই উপকার পাওয়া যায়। শরীর থাকে সুস্থ।
 

হজম ক্ষমতা বাড়ায়

বাঙালি মাত্রেই খাদ্য রসিক। হরেক রকমের খাবার খেতে গিয়ে খুব সহজেই আমাদের পেটের বিভিন্ন সমস্যা শুরু হয়। বাচ্চা থেকে বুড়ো সবারই একই অবস্থা। তাই পেটের সমস্যা দূর করতে নিয়মিত ডালিয়া খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। এই খাবার পাচক রসের ক্ষরণ বাড়ায়। বদহজম ও গ্যাস অম্বলের সমস্যা কমিয়ে দেয়। এক কথায় বলা যায়, আমাদের হজম ক্ষমতাকে অনেক বেশি উন্নত করে।

আরও পড়ুন:

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-১১: কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দু’ একটি ছবি তুলতে না তুলতেই হাত অসাড় হয়ে যাচ্ছিল

বৈষম্যের বিরোধ-জবানি, পর্ব-১৪: সমাজে নারীর বন্ধ্যাত্ব এবং পিতৃতান্ত্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থা

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫৭: কবির লেখা, লেখার গল্প

ইডেনে কেকেআর জিততেই ‘ঝুমে জো পাঠান’! গ্যালারিতেই নাচলেন শাহরুখ

 

ওজন কমায়

কিছুতেই যদি দ্রুত ওজন কমাতে চান তাহলে ব্রেকফাস্টে ডালিয়া রাখুন। দেখা গিয়েছে, ডালিয়াতে উপস্থিত ফাইবার আমাদের পেটকে অনেকক্ষণ ভরিয়ে রাখে। ফলে বারবার খাওয়ার প্রবণতা অনেকটা কমে যায়। ফলস্বরূপ তাড়াতাড়ি ওজন কমে। তাই রোজ সকালে ডালিয়া খেলে শরীরে যেমন ক্যালরির অভাব দূর হবে, তেমনি সহজে ওজনও কমতেও সাহায্য করে।
 

এনার্জির ঘাটতি মেটায়

আপনি যদি রোজ ব্রেকফাস্টে ডালিয়া খান, তাহলে একটা পার্থক্য আপনার নিশ্চয় চোখে পড়বে যে আপনার এনার্জি লেভেল আগের থেকে অনেক বেড়ে গিয়েছে। আগের মতো আর অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন না। ডালিয়া আপনার কর্মক্ষমতা এতটাই বাড়ি বাড়িয়ে দেবে যে, যতই গরম বাড়ুক, ঘাম হোক, আপনি খুব সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন না।
 

পেশিকে মজবুত করে

ডালিয়াতে প্রোটিনের পরিমাণ খুব বেশি থাকে। তাই আপনি যদি সহজে শক্তিশালী পেশি বা মাসল বানাতে চান তাহলে ডালিয়ার থেকে ভালো খাবার আর কিছু হতে পারে না। পাশাপাশি শিশুদেরও ডালিয়া খাওয়া প্রয়োজন। কারণ, ডালিয়া মাংস পেশির গঠনে ভীষণভাবে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন:

ভবিষ্যবাণী: ঘুমানোর ধরন দেখে জেনে নিন আপনার সঙ্গী কেমন মনের মানুষ, কী বলছে জ্যোতিষশাস্ত্র

খাই খাই: হারিয়ে যাওয়া পদ: গরমে পাতে থাকুক স্বাস্থ্যকর চিংড়ি দিয়ে শিমদানার ডাল

‘মহিলা সম্মান সঞ্চয় শংসাপত্র’ প্রকল্প শুরু এক লক্ষ ডাকঘরে! কারা পারবেন আমানত করতে?

 

সস্তায় পুষ্টির ঘাটতি মেটান

ডালিয়া পুষ্টিতে ভরপুর একটি জনপ্রিয় খাবার। তাই পুষ্টির অভাব আছে এরকম ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ডালিয়া খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। দামও কম। তাই যাঁদের বাজেট কম অথচ পুষ্টির ঘাটতি প্রচুর, তাঁদের ক্ষেত্রে ডালিয়া খুবই উপকারী একটা খাবার।
 

হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়

ডালিয়াতে এমন কিছু উপকারী উপাদান আছে যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। নিয়ন্ত্রণে রাখে রক্তচাপ। ফলে হার্টের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর বা ঝুঁকির সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। যাঁদের হার্টের সমস্যা আছে বা হার্ট দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা ডালিয়া রাখা অত্যন্ত জরুরি।
 

ডায়াবেটিসের সমস্যায়

ডালিয়ার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম। তাই ডালিয়া খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় না। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ফলস্বরূপ হটাৎ করে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কোনও আশঙ্কাই নেই। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা নিশ্চিন্তে ডালিয়া খেতে পারেন। কারণ, ডায়াবেটিস রোগীদের ডালিয়া কোনও ক্ষতি করে না, উল্টে ভালোই করে।
 

ক্যানসার প্রতিরোধে

ডালিয়ায় উপস্থিত ফাইবার ব্রেস্ট ক্যানসারের আশঙ্কা কমায়। তাই ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা ক্ষেত্র বিশেষে মহিলাদের ডালিয়া খাবার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content