পাঁচটি মেয়ে ছিল। তাদের পাঁচ জনের পাঁচ রকমের শক্তি ছিল। তৃপ্তির ছিল আগুন শক্তি, শান্তির ছিল জল শক্তি, পৃথার ছিল বাতাস শক্তি, শিখার ছিল বরফ শক্তি আর রেণুর ছিল পাথর শক্তি। প্রত্যেকের আঙুলের আংটির জন্য তারা এই শক্তি পেত। তৃপ্তির আংটির পাথরের রং ছিল লাল, শান্তির নীল, পৃথার হালকা ধূসর, শিখার সাদা আর রেণুর গাঢ় ধূসর রঙের ছিল। তাদের পরিচিত জন কেউ ছিল না।
একদিন তারা দেশভ্রমণ করতে বেরোল। প্রথমে যে দেশে গেল সে দেশে সবসময় যুদ্ধ চলে। সে দেশেই সব অভিযান হয়। তারা সে দেশে ঘুরতে ঘুরতে যেই দেশের জঙ্গলে ঢুকেছে, অমনি একটা সৈনিক হাজির হয়ে তলোয়ার তুলেছে। কিন্তু সে তলোয়ার ভালো করে চালিয়েছে কি চালায়নি, শিখা সজোরে ডান হাত ঘোরাল। আর মুহূর্তের মধ্যে বরফের বিশাল বিশাল গোলা দিয়ে তাকে ঘায়েল করল। সৈনিকটা পালাল। সবাই এগোতে লাগল। একটু যেতে একটা পুরোনো মন্দির পড়ল। তারা মন্দিরটায় ঢুকল। সেখানে খুব নিচু গভীর সুড়ঙ্গ ছিল। সেখানে সিঁড়ি নেই। তৃপ্তি বলল, ‘আমরা একটাই সিঁড়ি বানাব আর পার হব।’ রেণু কোথা থেকে একটা পাথর সিঁড়ি এনে দিল। সে সিঁড়ির ধাপগুলো পাঁচদিকে মুখ করে আছে। একদিকে ধাপগুলি আগুনে জ্বলজ্বল করছে, একদিকে ধাপগুলিতে পরিষ্কার জল বইছে, একদিকে ধাপগুলির ওপর বরফ ছড়ানো, একদিকে ধাপে নামলেই ভীষণ ঝড় আর শেষদিকে ঢালু পাথর। তারা সবাই নির্দিষ্ট দিকগুলিতে গেল। কিন্তু তৃপ্তি ছাড়া কেউ জানত না যে কী বিপদ ওদের জন্য অপেক্ষা করছে!
একদিন তারা দেশভ্রমণ করতে বেরোল। প্রথমে যে দেশে গেল সে দেশে সবসময় যুদ্ধ চলে। সে দেশেই সব অভিযান হয়। তারা সে দেশে ঘুরতে ঘুরতে যেই দেশের জঙ্গলে ঢুকেছে, অমনি একটা সৈনিক হাজির হয়ে তলোয়ার তুলেছে। কিন্তু সে তলোয়ার ভালো করে চালিয়েছে কি চালায়নি, শিখা সজোরে ডান হাত ঘোরাল। আর মুহূর্তের মধ্যে বরফের বিশাল বিশাল গোলা দিয়ে তাকে ঘায়েল করল। সৈনিকটা পালাল। সবাই এগোতে লাগল। একটু যেতে একটা পুরোনো মন্দির পড়ল। তারা মন্দিরটায় ঢুকল। সেখানে খুব নিচু গভীর সুড়ঙ্গ ছিল। সেখানে সিঁড়ি নেই। তৃপ্তি বলল, ‘আমরা একটাই সিঁড়ি বানাব আর পার হব।’ রেণু কোথা থেকে একটা পাথর সিঁড়ি এনে দিল। সে সিঁড়ির ধাপগুলো পাঁচদিকে মুখ করে আছে। একদিকে ধাপগুলি আগুনে জ্বলজ্বল করছে, একদিকে ধাপগুলিতে পরিষ্কার জল বইছে, একদিকে ধাপগুলির ওপর বরফ ছড়ানো, একদিকে ধাপে নামলেই ভীষণ ঝড় আর শেষদিকে ঢালু পাথর। তারা সবাই নির্দিষ্ট দিকগুলিতে গেল। কিন্তু তৃপ্তি ছাড়া কেউ জানত না যে কী বিপদ ওদের জন্য অপেক্ষা করছে!
তৃপ্তি জানত এ দেশে শুধু মেয়েরা থাকে। ছেলেরা থাকে অন্যদেশে। তাই সে চলতে লাগল মনে সাহস নিয়ে। হঠাৎ সে থমকে দাঁড়িয়ে গেল। দেখল একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার একহাতে হুক। সে চুপ করে এগোতে লাগল। কিছুদূর গিয়েই মেয়েটি তৃপ্তির মুখোমুখি হল। সে যেই না তৃপ্তিকে আঘাত করতে গেছে, তৃপ্তি ওর দিকে আগুন-ফুলকি ছুড়ে দিল। ও ভয় পেয়ে দৌড়ে পালাল। তৃপ্তি চুপিচুপি ওকে অনুসরণ করতে লাগল। চলতে চলতে সামনে পড়ল এক বিশাল রাজপ্রাসাদ। চূড়াটা সোনা দিয়ে মোড়া, তাতে হিরেমুক্তো ঝলমল করছে রোদে। তৃপ্তি পিছু ফিরে দেখল। মন্দিরটা বহুদূরে দাঁড়িয়ে আছে। সে নিজের আংটির জাদুতে নিজেকে একদম ছোট্ট করে নিল। তারপর সেই সভাতে ঢুকল। ঢুকেই প্রথমে রানিকে দেখতে পেল। তিনি গদির ওপর বসে আছেন। নীচে বসে আছে এক বাঘিনি। মাথায় বড় মুক্তো বসানো মুকুট, জরি বসানো ঝলমলে লাল গাউন, চকচকে গেরুয়া ক্যালাসিরিস, সোনালি হাতের হুক, সোনার চটি আর হাতে মণিমুক্তো বসানো এক রাজদণ্ড। যে মেয়েটার সঙ্গে তৃপ্তির দেখা হয়েছিল সে মেয়েটা পাগলের মতো দৌড়ে এসে তাঁর পায়ে পড়ল। রানি বললেন, ‘কী হল? ধরতে পারলে আগুনের মেয়েটাকে?’ মেয়েটা কেঁদে বলল, ‘না মহারানি, উলটে সেই আমাকে জব্দ করেছে।’
রানি বললেন, ‘যাও!’ রাগে তাঁর চোখ জ্বলছে। তিনি আদেশ দিলেন ‘মেয়েগুলোকে বার করো। বাঁধন খুলো না।’ এইবার তৃপ্তি দেখল যে, রাজসিংহাসন থেকে কিছুদূরে একটি লোহার দরজা। সে চুপিচুপি সেই লোহার দরজার কাছে এল। তারপর কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সুট করে ঢুকে পড়ল।
রানি বললেন, ‘যাও!’ রাগে তাঁর চোখ জ্বলছে। তিনি আদেশ দিলেন ‘মেয়েগুলোকে বার করো। বাঁধন খুলো না।’ এইবার তৃপ্তি দেখল যে, রাজসিংহাসন থেকে কিছুদূরে একটি লোহার দরজা। সে চুপিচুপি সেই লোহার দরজার কাছে এল। তারপর কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সুট করে ঢুকে পড়ল।
তৃপ্তি আস্তে আস্তে চলতে লাগল। কত খাঁচাতে কত বন্দি সেখানে। কোথাও বন্দি পুরুষ ছটফট করছে ; কোথাও মেয়েরা বুকে বাচ্চা নিয়ে কাঁদছে; কোথাও বন্দি মেয়ে ঘুমিয়ে আছে ইত্যাদি। তৃপ্তি হঠাৎ শান্তিকে দেখল একটি খাঁচায়। শান্তি চুপ করে বসে ঘরের দেওয়ালে ছবি আঁকছে। তৃপ্তি নিজেকে বড় করল। তারপর আস্তে আস্তে ডাকল, ‘শান্তি?’ শান্তি মুখ ফেরাল কিন্তু কথা বলল না। তৃপ্তি বুঝল ওকে বোবা করে দেওয়া হয়েছে। সে বলল, ‘বাকিরা কোথায়? তুই জানিস? আর কে তোকে বোবা করেছে?’ শান্তি কোনও কথা বলল না। শুধু তুলি দিয়ে দেওয়ালে লিখল, ‘রানি৷’ তৃপ্তি বল, ‘বাকিরা কোথায়?’ বলেই অবাক হয়ে দেখল ‘রানি’ কথাটা মিলিয়ে গেছে। তার জায়গায় শান্তি লিখল, ‘জানি না।’ সেই লেখাটাও মিলিয়ে গেল। আর শান্তি লিখল, ‘আমার হারটা খুলে নে৷’ তৃপ্তি দেখল শান্তির গলায় ঝুলছে একটা চুনি আর নীলার হার। সঙ্গে সঙ্গে সে হারটা খুলে ফেলল আর বাইরে ফেলে দিল। শান্তি বলে উঠল, ‘আমি জানি না কোথায় বাকিরা? তবে খোঁজার চেষ্টা করি। তৃপ্তি বল, ‘নিজেকে ছোট কর।’ শান্তি তাই করল। তৃপ্তিও তাই করল। তারপর তারা খাঁচার বাইরে চলে এল। একটু এগিয়ে পৃথার খাঁচায় পৃথাকে মুক্ত করল। তারপর রেণুকে মুক্ত করল। তারপর…।
তারপর তারা যেই না শিখার খাঁচার সামনে পৌঁছেছে, অমনি তারা থমকে গেল। খাঁচার সামনে অজ্ঞান হয়ে আছে একটি মেয়ে। মেয়েটার অর্ধেক দেহ বরফ হয়ে আছে। যে হাতে হুক ছিল, সে হাতটা অর্ধেক বরফ, হুকটা নেই। অন্য হাতটা কনুই পর্যন্ত বরফ। একটা পায়ের জুতো আধ ছেঁড়া। অন্য পাটা বরফ। হাতের হুক একদিকে দু-টুকরো হয়ে পড়ে আছে। আর মেয়েটা নিথর। খাঁচার গরাদ চূর্ণবিচূর্ণ, দেওয়াল ভাঙা। বাইরেটা দেখা যায়। একটা ইট খসে পড়ল। হঠাৎ শান্তি চেঁচিয়ে বলল, ‘একটা মই ঝুলছে—বরফের মই!’ পৃথা বল, ‘কই? ওমা সত্যিই তো! এই তৃপ্তি দ্যাখ, রেণু দ্যাখ।’ রেণু বলল, ‘নিজেকে ছোট করে মই দিয়ে ওঠ!’ তৃপ্তি বলল, ‘শান্তি যা, আমরা পিছু পিছু আসছি।’
তারপর তারা যেই না শিখার খাঁচার সামনে পৌঁছেছে, অমনি তারা থমকে গেল। খাঁচার সামনে অজ্ঞান হয়ে আছে একটি মেয়ে। মেয়েটার অর্ধেক দেহ বরফ হয়ে আছে। যে হাতে হুক ছিল, সে হাতটা অর্ধেক বরফ, হুকটা নেই। অন্য হাতটা কনুই পর্যন্ত বরফ। একটা পায়ের জুতো আধ ছেঁড়া। অন্য পাটা বরফ। হাতের হুক একদিকে দু-টুকরো হয়ে পড়ে আছে। আর মেয়েটা নিথর। খাঁচার গরাদ চূর্ণবিচূর্ণ, দেওয়াল ভাঙা। বাইরেটা দেখা যায়। একটা ইট খসে পড়ল। হঠাৎ শান্তি চেঁচিয়ে বলল, ‘একটা মই ঝুলছে—বরফের মই!’ পৃথা বল, ‘কই? ওমা সত্যিই তো! এই তৃপ্তি দ্যাখ, রেণু দ্যাখ।’ রেণু বলল, ‘নিজেকে ছোট করে মই দিয়ে ওঠ!’ তৃপ্তি বলল, ‘শান্তি যা, আমরা পিছু পিছু আসছি।’
ওরা মই বেয়ে চূড়ায় উঠল। হঠাত্ই পৃথা বলে উঠল, ‘ওই দ্যাখ, কে যেন দৌড়াচ্ছে!’ তৃপ্তি বলল, ‘ও তো শিখা। শিখা আমাদেরকে দেখে ভয় পেয়ে পালাচ্ছে।’ শান্তি বলল, ‘কিন্তু সে কেন এমন করবে?’ রেণু বলল, ‘ওকে অনুসরণ করি।’ রেণুর কথায় তারা ছুটল। ছুটতে ছুটতে তারা তুন্দ্রা অঞ্চলে পৌঁছল। সেখানে ভীষণ ঝড়। শিখা ছুটছে। রেণু চেঁচাল, ‘ধরা দাও, বন্ধু, ধরা দাও৷’ শিখার গলা দূর থেকে ভেসে এল, ‘নাহি দিব ধরা, ঘরে যাও ফিরিয়া, নহে তো শমন তোমার আসিতেছে।’ দূর থেকে বরফের গোলা ছুটে এল। তৃপ্তি আগুনের গোলা ফেরত পাঠাল। দূর থেকে আর্তনাদ ভেসে এল। তারপর আরও বরফের গোলা ছুটে এল। রেণু মুহূর্তে পাথর ছুড়ল। কিন্তু এবার শক্ত বরফ পাথর আটকাল। সেই বরফ লাগল তাদের গায়ে। তারা যতটা সম্ভব আটকানোর চেষ্টা করল। শিখা দৌড়ে পালাল। ঝড় আরও বাড়ল। তৃপ্তি চেঁচাল, ‘পৃথা, শান্তি, রেণু—তোরা কেউ একজন শিখাকে ধরার চেষ্টা কর!’
‘অসম্ভব! ঝড় যদি এভাবে বাড়তে থাকে তবে ওকে ধরা যাবে না!’ শান্তির উত্তর এল। পৃথা বলল, ‘একটা কিছু করতেই হবে। এ-ই রেণু-উ-উ-উ! কোথায় যাস?’ আর কোথায় যাস। রেণু দৌড় লাগিয়েছে। ‘ঝড়ের গতি কমেছে। আরও কমছে !’ তৃপ্তির গলা ভেসে এল। ধীরে ধীরে ঝড় কমতে কমতে শেষে শুধু হালকা হাওয়া বইতে লাগল। কিছুদূরে দেখা যাচ্ছে পাইন বন। বনটিতে ঝুলছে বরফের পুঁতি। চারজনে সেই বনটিতে ঢুকল। চলতে চলতে হঠাৎ তারা দেখে একটা গাছের ডালে বসে আছে শিখা। তার ধবধবে সাদা এলিয়ে দেওয়া চুল গাছের কোটর ছুঁয়ে ফেলেছে। শিখা একটা অদ্ভুত গম্ভীর সুরে বলল, ‘বরফ পরি তোমাদের বর দেবে। কী চাও তোমরা?’ শান্তি বলল, ‘তোমাকেই চাই। তুমি বরফ পরি নও, আমাদের বন্ধু শিখা।’ আবার সেই বজ্রকঠিন গলা ‘শিখা নেই, আমি বরফ পরি। আর আমি কারও হাতে ধরা দিই না। বর দিই।’
তৃপ্তি বলল, ‘ওকে সম্মোহিত করা হয়েছে। কিছু একটা করতে হবে।’ রেণু বলল, ‘ওর গলায় একটা হার ঝুলছে। সেটা খুলে নিলে কী হয় দেখব।’ পৃথা বলল, ‘বরফ পরি, তুমি তোমার হারটা দেবে? ওটা আমার পরার বড় ইচ্ছা৷’ বরফ পরি বলল, ‘বেশ৷’ বলে গলার হারটা খুলে নীচে ফেলে দিল। সঙ্গে সঙ্গে চারদিক থেকে ধোঁয়া উঠল। কিচ্ছু দেখা যায় না। কে যেন আর্তনাদ করল। মাটিতে ধুপ করে শব্দ হল। তারপর সব অন্ধকার।
‘অসম্ভব! ঝড় যদি এভাবে বাড়তে থাকে তবে ওকে ধরা যাবে না!’ শান্তির উত্তর এল। পৃথা বলল, ‘একটা কিছু করতেই হবে। এ-ই রেণু-উ-উ-উ! কোথায় যাস?’ আর কোথায় যাস। রেণু দৌড় লাগিয়েছে। ‘ঝড়ের গতি কমেছে। আরও কমছে !’ তৃপ্তির গলা ভেসে এল। ধীরে ধীরে ঝড় কমতে কমতে শেষে শুধু হালকা হাওয়া বইতে লাগল। কিছুদূরে দেখা যাচ্ছে পাইন বন। বনটিতে ঝুলছে বরফের পুঁতি। চারজনে সেই বনটিতে ঢুকল। চলতে চলতে হঠাৎ তারা দেখে একটা গাছের ডালে বসে আছে শিখা। তার ধবধবে সাদা এলিয়ে দেওয়া চুল গাছের কোটর ছুঁয়ে ফেলেছে। শিখা একটা অদ্ভুত গম্ভীর সুরে বলল, ‘বরফ পরি তোমাদের বর দেবে। কী চাও তোমরা?’ শান্তি বলল, ‘তোমাকেই চাই। তুমি বরফ পরি নও, আমাদের বন্ধু শিখা।’ আবার সেই বজ্রকঠিন গলা ‘শিখা নেই, আমি বরফ পরি। আর আমি কারও হাতে ধরা দিই না। বর দিই।’
তৃপ্তি বলল, ‘ওকে সম্মোহিত করা হয়েছে। কিছু একটা করতে হবে।’ রেণু বলল, ‘ওর গলায় একটা হার ঝুলছে। সেটা খুলে নিলে কী হয় দেখব।’ পৃথা বলল, ‘বরফ পরি, তুমি তোমার হারটা দেবে? ওটা আমার পরার বড় ইচ্ছা৷’ বরফ পরি বলল, ‘বেশ৷’ বলে গলার হারটা খুলে নীচে ফেলে দিল। সঙ্গে সঙ্গে চারদিক থেকে ধোঁয়া উঠল। কিচ্ছু দেখা যায় না। কে যেন আর্তনাদ করল। মাটিতে ধুপ করে শব্দ হল। তারপর সব অন্ধকার।
তৃপ্তি আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকাল। তার সারা গা ব্যথা। গায়ে কম্বল চাপা। সব ঝাপসা লাগছে। যখন সে বহু কষ্টে উঠল, তখন সে বুঝল সে নিজের শোওয়ার ঘরে বিছানায় শুয়ে আছে। পাশে কেউ নেই। ধীরে ধীরে সে উঠল। ঘরের একপাশে দুটি আলমারি। আর একপাশে ড্রেসিংটেবিল। তার মাথায় কাচের ফুলদানি, তাতে একটা লাল তরল। তৃপ্তির শক্তি ওই লাল তরল। তৃপ্তি উঠে সেই ফুলদানি নামাল। নামিয়ে কতকটা তরল গলায় ঢালল। তাতে তার শরীরে বল এল। সে যেই এসে আলমারি খুলেছে, সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে বেরিয়ে এল শিখা। না শিখা নয়। শিখার মতো দেখতে একজন৷ তৃপ্তির চোখের তারা লাল হয়ে গেল রাগে। সে গর্জন করে উঠল, ‘কে তুমি?’ মেয়েটা কোনও উত্তর দিল না, শুধু দু’বার তালি দিল। সঙ্গে সঙ্গে বজ্র-বিদ্যুৎ নেমে এসে তৃপ্তিকে চুম্বকের মতো টেনে বাইরে এল। তৃপ্তি পাগলের মতো ছটফট করতে লাগল। সে জোরে ঠেলল বিদ্যুৎকে আর বিদ্যুৎ লাল হয়ে চূর্ণ হয়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে তৃপ্তির দেহের ওপর বিদ্যুতের এক কণা লাগল। সে আর্তনাদ করে মাটিতে পড়ে গেল।
ঘুম ভাঙতেই শিখার গলা এল, ‘কী জানি বাবা, কীসের মাথামুণ্ডু স্বপ্ন দেখে হাঁইমাই করেছে!’ তারপর সেই মেয়েদের রানি বললেন, ‘সে বেঁচেই আছে! ভাগ্য ভালো।’ তৃপ্তি উঠে বসে দেখে সে একটা সাজানো ঘরে একটা পালঙ্কে শুয়ে আছে। শান্তি, পৃথা, শিখা আর রেণু দাঁড়িয়ে রয়েছে। সঙ্গে আছেন রানিমা, পাশে দুটি মেয়ে। শান্তি সব ঘটনা বলল। শুনে তৃপ্তি বলল, ‘আপনি সত্যিই দয়ালু৷’ রানি বললেন, ‘তোমার বন্ধুত্ব পাবার আশায় ছিলাম। তুমি কি আমাদের যুদ্ধে সাহায্য করবে? আমরা ও দেশে ছেলেদের সঙ্গে যুদ্ধ করছি। তৃপ্তি বল, ‘বেশ।’
তারপর যুদ্ধের দিন এগিয়ে এল। খুব যুদ্ধ হল। তৃপ্তি, শান্তি, পৃথা, শিখা আর রেণু অস্ত্র তৈরি করে দিল। সেসব অস্ত্রের জোরে শেষে মেয়েরাই জিতল। সব ছেলের মৃত্যু হল। শুধুমাত্র একজন ছাড়া। সে ছেলে পরে মেয়েদের শহরে এসে ত্রাস লাগিয়ে দিয়েছিল।
অলঙ্করণ: লেখিকা
অদ্রিজা সেন্ট মেরিজ কনভেন্ট স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী, সাঁতরাগাছির বাসিন্দা।
ঘুম ভাঙতেই শিখার গলা এল, ‘কী জানি বাবা, কীসের মাথামুণ্ডু স্বপ্ন দেখে হাঁইমাই করেছে!’ তারপর সেই মেয়েদের রানি বললেন, ‘সে বেঁচেই আছে! ভাগ্য ভালো।’ তৃপ্তি উঠে বসে দেখে সে একটা সাজানো ঘরে একটা পালঙ্কে শুয়ে আছে। শান্তি, পৃথা, শিখা আর রেণু দাঁড়িয়ে রয়েছে। সঙ্গে আছেন রানিমা, পাশে দুটি মেয়ে। শান্তি সব ঘটনা বলল। শুনে তৃপ্তি বলল, ‘আপনি সত্যিই দয়ালু৷’ রানি বললেন, ‘তোমার বন্ধুত্ব পাবার আশায় ছিলাম। তুমি কি আমাদের যুদ্ধে সাহায্য করবে? আমরা ও দেশে ছেলেদের সঙ্গে যুদ্ধ করছি। তৃপ্তি বল, ‘বেশ।’
তারপর যুদ্ধের দিন এগিয়ে এল। খুব যুদ্ধ হল। তৃপ্তি, শান্তি, পৃথা, শিখা আর রেণু অস্ত্র তৈরি করে দিল। সেসব অস্ত্রের জোরে শেষে মেয়েরাই জিতল। সব ছেলের মৃত্যু হল। শুধুমাত্র একজন ছাড়া। সে ছেলে পরে মেয়েদের শহরে এসে ত্রাস লাগিয়ে দিয়েছিল।
অলঙ্করণ: লেখিকা
অদ্রিজা সেন্ট মেরিজ কনভেন্ট স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী, সাঁতরাগাছির বাসিন্দা।
* গল্প (Short Story) – পাঁচ জাদুকর মেয়ে (Panch jadukar Meye-Magician girl) : অদ্রিজা মণ্ডল (Adrija-mondal) সেন্ট মেরিজ কনভেন্ট স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী, সাঁতরাগাছির বাসিন্দা।