শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী পার্থ ঘোষ

গল্পদাদুর আসর—কেন জানি না মনে মনে ওই তখনও পর্যন্ত অদেখা অথচ ভীষণ চেনা স্নেহলস্বরটিকে কক্ষনও ‘দাদু’ বলে মানা যায়নি সে সবদিনে। বরং মামু বা কাকুমণি বললেই যেন ঠিকঠাক সম্পর্কটি জমে। তা জমাট ছিল বইকি সেই কন্ঠের আদুরে আপ্যায়নটুকু! তাঁর গভীরতর বোধদীপ্ত আবৃত্তি-পাঠের স্বাদ তেমনটা না জেনেও সেই আমাদের তড়বড়ানো ছেলেবেলা চুপটি করে বসত অমন জমজমা স্বরের বাচনভঙ্গির পাশে।

একদা সর্দিবসা ক্ষ্যান্তবুড়িহেন খনা গলায় রবীন্দ্রকবিতা ‘হারিয়ে যাওয়া’ আবৃত্তি করে তাঁর আশ্চর্য উদার প্রশংসা পেয়েছিলাম ভেবে আজও যুগপৎ লজ্জিত এবং আপ্লুত হই। আবার তারই মধ্যে টুক করে বলে দিয়েছিলেন, ‘আকাশ জুড়ে উঠল কেঁদে’ বলার পর ‘হারিয়ে গেছি আমি’-তে কেমন করে আলতো কান্না আর হতাশার আভাস মিলিয়ে দিতে হবে, সঙ্গেই মনে রাখতে হবে ততখানি আনতে হবে এই আভাস যাতে কবিতা কখনও ‘নাটক’ না হয়ে ওঠে।

পরবর্তী সময়ে একটু একটু করে শুনতে-চিনতে-জানতে শিখেছি তাঁর অনন্যস্বর, ভাবনাকুসুমগুলি। কত না বোঝা কবিতা বেজেছে মনের ভিতরে গিয়ে অনায়াস বোধগম্য হয়ে তাঁর স্বরে।

আক্ষরিক অর্থেই সহধর্মিণী শ্রদ্ধেয়া গৌরী ঘোষ এবং তিনি আমাদের সেই সেদিনের গল্পদাদু চির আদরণীয় শ্রদ্ধেয় পার্থ ঘোষ আজ থেকে ফের যুগলবন্দিতে মগ্ন হতে পারবেন জেনে এই বড়বেলার হয়তো স্বস্তি হল, কিন্তু চির নাছোড় ছোটবেলার দিন গুমরে উঠছে এই বিচ্ছেদে—

রোববারের যে ছুটি হয় না কোনও!

Skip to content