বাপ্পা সাহা।
মাটির মেঝে ও টিনের চাল দেওয়া বাঁশের ঘর। বাবা রাজমিস্ত্রি। সংসারে অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। বাড়িতে ছিল না বিদ্যুৎ। দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটেই স্কুলে যাতায়াত। অষ্টম শ্রেণিতে জুটেছিল একটা পুরনো সাইকেল। এ রকমই এক দরিদ্র পরিবার থেকে এ বার ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (ইউপিএসসি) আইএসএস পরীক্ষায় গোটা দেশে দ্বিতীয় হয়েছেন আলিপুরদুয়ারের কৃতী ছাত্র বাপ্পা সাহা। গোটা আলিপুরদুয়ারবাসী বাপ্পার এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত। পাড়ার ছেলের সাফল্যে খুশি প্রতিবেশীরাও।
বাপ্পার আলিপুরদুয়ার শহর শহর সংলগ্ন দক্ষিণ মাঝেরডাবরিতে। পরিবারে বাবা গোপাল সাহা, মা লক্ষ্মী সাহা এবং দিদি বর্ণালি সাহা রয়েছেন। এলাকায় বাপ্পা বরাবরই মেধাবী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। ছোটবেলায় দুর্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। গোবিন্দ হাই স্কুলে ভর্তি হন পঞ্চম শ্রেণিতে। মাধ্যমিকে ৯১ শতাংশ নম্বর পান। ২০১৬ সালে ৯৪.৬ শতাংশ নম্বর পান উচ্চমাধ্যমিকে পরীক্ষায়। এর পরে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি-তে ভর্তি হন। স্নাতকে তিনি গোল্ড মেডেল পান। মাত্র ২৩ বছর বয়সেই এই সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। বাংলা মাধ্যমেই পড়াশোনা বাপ্পার।
আরও পড়ুন:
কুয়াশার জন্য বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে উত্তুরে হাওয়া, তবুও এই সপ্তাহের মধ্যেই আরও পারদপতন, কী জানাল হাওয়া দফতর?
অনন্ত এক পথ পরিক্রমা, পর্ব-১: অমৃতের সন্ধানে…
গত ১৯ ডিসেম্বর দিল্লির ইউপিএসসি ভবনে অনুষ্ঠিত হয় ইন্টারভিউ। গত বুধবার তারই ফল প্রকাশিত হয়েছে। তাতেই দেখা যায় ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসস্টিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বাপ্পা।
বাপ্পার কথায়, “স্নাতকে ভর্তি হয়ে স্ট্যাটিস্টিক্স বিষয়ের কথা আমি জানতে পারি। অঙ্ক আমার অন্যতম প্রিয় বিষয়। তাই স্নাতকোত্তরে এগ্রিকালচার স্ট্যাটিস্টিকস নিয়ে পড়াশোনা করি। দিল্লির এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটে ভর্তি হই। সেখানে পরবর্তী সময়ে সিনিয়রদের থেকে আইএসএস পরীক্ষার বিষয়টি জানতে পারি। আত্র পর প্রস্তুতি শুরু করি।”
বাপ্পার কথায়, “স্নাতকে ভর্তি হয়ে স্ট্যাটিস্টিক্স বিষয়ের কথা আমি জানতে পারি। অঙ্ক আমার অন্যতম প্রিয় বিষয়। তাই স্নাতকোত্তরে এগ্রিকালচার স্ট্যাটিস্টিকস নিয়ে পড়াশোনা করি। দিল্লির এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটে ভর্তি হই। সেখানে পরবর্তী সময়ে সিনিয়রদের থেকে আইএসএস পরীক্ষার বিষয়টি জানতে পারি। আত্র পর প্রস্তুতি শুরু করি।”
৫০-এর পরেও ঝকঝকে স্বাস্থ্যজ্জ্বল ত্বক চাই? এর জন্য কী কী করবেন?
ডায়াবিটিস বাসা বেঁধেছে শরীরে? কী কী লক্ষণ দেখলেই রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে? জেনে নিন খুঁটিনাটি
তিনি এও জানান, “বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাই তিনি ছোটবেলা থেকে আমাকে বেশি বই কিনে দিতে পারেননি। আমার শিক্ষকেরা আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। কেউ কেউ বিনামূল্যে টিউশন পড়িয়েছেন। বই কিনে দিয়েছেন। বিএসসি করার সময়ই আমি একটি স্কলারশিপ পাই। সেটা দিয়েই স্নাতকোত্তরের পড়াশোনার পাশাপাশি আইএসএস-এর জন্য প্রস্তুতি নিই।”
বাপ্পার মা লক্ষ্মী জানান, “এখন দু’টি পাকা ঘর করেছি। তাও জমি বন্ধক রেখে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে। ও বড় হয়েছে বেড়ার ঘরেই। বহু দিন শুধু ডাল-ভাতই খেতে পেয়েছে। হেঁটেই স্কুলে যাতায়াত করত। ওকে টিফিনের জন্য টাকাও আমরা দিতে পারিনি। এত প্রতিবন্ধকতার পরেও ও মন দিয়ে পড়াশোনা করেছে।” বাবা গোপাল সাহার কথায়, “ছেলে অনেক কষ্ট করেছে। ওর সাফল্য আমরা খুবই আনন্দিত।” গোবিন্দ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজীব দাস বলেন, “বাপ্পা দেখিয়ে দিয়েছেন মেধা ও পরিশ্রমের কাছে অর্থ কোনও বাধা নয়।”
বাপ্পার মা লক্ষ্মী জানান, “এখন দু’টি পাকা ঘর করেছি। তাও জমি বন্ধক রেখে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে। ও বড় হয়েছে বেড়ার ঘরেই। বহু দিন শুধু ডাল-ভাতই খেতে পেয়েছে। হেঁটেই স্কুলে যাতায়াত করত। ওকে টিফিনের জন্য টাকাও আমরা দিতে পারিনি। এত প্রতিবন্ধকতার পরেও ও মন দিয়ে পড়াশোনা করেছে।” বাবা গোপাল সাহার কথায়, “ছেলে অনেক কষ্ট করেছে। ওর সাফল্য আমরা খুবই আনন্দিত।” গোবিন্দ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজীব দাস বলেন, “বাপ্পা দেখিয়ে দিয়েছেন মেধা ও পরিশ্রমের কাছে অর্থ কোনও বাধা নয়।”