শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

বর্ষার শুরুতেই জ্বর-জারি, সর্দি-কাশির সমস্যা হতেই থাকে। ঝিরঝির বৃষ্টিতে না ভিজেও অনেক সময় ঠান্ডা লেগে যায়। কখনও বাতাসে প্রচণ্ড আর্দ্রতার জন্য ভীষণ ঘাম হচ্ছে, আবার কখনও বৃষ্টি পড়ছে। এই সব কারণে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলস্বরূপ হাজির হয় জ্বর, সর্দি, কাশির মতো শারীরিক সমস্যা। জ্বর, সর্দি কয়েকদিন পর কমে গেলেও কাশি খুব সহজে কমতে চায় না। তবে চিকিত্সকের কাছে যাওয়ার আগে ঘরোয়া উপায়ে এই সমস্যা কমানোর একটা চেষ্টা করা যেতে পারে। এমন কিছু ঘরোয়া উপায় আছে, যেগুলি করলে বা মেনে চললে সর্দি-কাশি, নাক থেকে জল পড়ার মতো সমস্যা এড়ানো যাবে।
 

রান্নাঘরের কোন কোন জিনিস উপশম দিতে পারে?

 

মধু-তুলসী

মধু হল সর্দি এবং কাশির জন্য একটি পরীক্ষিত ঘরোয়া প্রতিকার। এর মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকায় গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, তুলসি পাতায় মেন্থল নামক একটি যৌগ থাকে, যা কাশি দূর করতে সাহায্য করে। ছয় থেকে সাতটি তুলসী পাতার রসের সঙ্গে এক চা চামচ মধু গরম করে খেলে উপশম হবে। আবার মধু-তুলসী দিয়ে ভেষজ চাও খেতে পারেন। এছাড়া হালকা গরম জলে এক চা চামচ লেবুর রস এবং দু’ চা চামচ মধু মিশিয়ে প্রতিদিন দু’ বার খেলে উপকার মিলবে।
 

লবণ-জল

বুকের সর্দি ও কফ দূর করতে সবচেয়ে সহজ ঘরোয়া উপায় হল লবণ-জল। লবণ শ্বাসযন্ত্র থেকে কফ দূর করতে সাহায্য করে। এক গ্লাস উষ্ণজলের সঙ্গে এক চা চামচ লবণ মিশিয়ে দিনে দু’ থেকে তিনবার গার্গল করলে অনেকটা স্বস্তি পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন:

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৬৫: নদীর পাড়ে উঠছে ধোঁয়া, মনে হয় কিছু হয়েছে…

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৫১: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা—পশুর, ধুধুল ও হাবল

 

আদা

গলায় ব্যথা ও কাশি কমাতে আদা খুবই উপকারি। ছোট একটি আদার টুকরো মুখে রেখে দিলে কাশি কমে। আদা চা বা মধু এবং কালো মরিচের সঙ্গে আদার রস খাওয়া কাশি নিরাময়ের অন্যতম কার্যকরী প্রতিকার। তবে বেশি আদা চা পান করবেন না, এতে পাকস্থলীর সমস্যা ডেকে আনতে পারে।
 

হলুদ

হলুদে থাকা কারকুমিন নামক উপাদান বুক থেকে কফ, শ্লেষ্মা দূর করে বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট দ্রুত কমিয়ে দেয়। এক গ্লাস উষ্ণ গরম জলে এক চিমটে হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে প্রতিদিন কুলকুচি করতে পারেন। এ ছাড়া এক গ্লাস দুধে আধ চা চামচ হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। সম্ভব হলে এর সঙ্গে দু’ চা চামচ মধু এবং এক চিমটে গোল মরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে এই দুধ দিনে অন্তত একবার পান করলেও উপকার পাবেন।

আরও পড়ুন:

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৫: সুর হারানো হারানো সুর

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯০: সাহেবের বেশ না-পরে ফিরেছিলেন সাহেবের দেশ থেকে

 

পেঁয়াজ

একই পরিমাণের পেঁয়াজ ও লেবুর রস, মধু এবং জল একসঙ্গে মিশিয়ে ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে নিন। সামান্য উষ্ণ এই জল দিনে অন্তত তিন থেকে চারবার পান করুন। অনেকটা উপকার পাবেন।
 

ইউক্যালিপটাস

ইউক্যালিপটাস গাছ থেকে বিশেষ উপায়ে প্রস্তুত তেল নিয়মিত ব্যবহার করলে নিশ্বাস পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। নারিকেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল মিশিয়ে বুকে এবং গলায় মালিশ করতে পারেন। এক বাটি গরম জলে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল দিয়ে গরম জলের ভাপ ভাপ নিন। নিঃশ্বাস পরিষ্কার হবে। দূর হবে কাশিও।

আরও পড়ুন:

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-২৫: অরু দত্ত— এক অভিশপ্ত গান্ধর্বী

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৪৩: এক্সপায়ারি ডেটের ওষুধ খাবেন?

 

অবশ্যই মেনে চলুন

ব্রঙ্কাইটিস বা অ্যালার্জির কারণেও শুকনো কাশি হতে পারে। কারও কারও ঠান্ডা না লাগলেও কাশি শুরু হয়ে যায়। এই সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে জলপান করতে হবে। এসময় গরম লাগলেও হঠাৎ ঠান্ডা জল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এতে কাশির বেগ আরও বেড়ে যেতে পারে। যাঁদের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে, তাঁরা এই সময় সতর্ক থাকুন। কারণ এঁদের শুকনো কাশি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।


Skip to content