অলঙ্করণ: সৌমি দাসমণ্ডল।
ভবানীবাবুর কথায় পূষণ অবিশ্বাসের ভঙ্গীতে হেসে ওঠায় এবং কালাদেওকে মিথ্যা মিথ বলায় ঈশ্বরীপ্রসাদ রাগে চটিতং হয়ে গিয়েছিল। ভবানীবাবু কিন্তু রাগলেন না। মৃদু হেসে বললেন, “জানি, আপনারা শহুরে মানুষ। আমাদের এই রকম পাণ্ডববর্জিত অঞ্চলে প্রচলিত সমস্ত কথাকে, গাথাকে, মিথকে কিংবা কিংবদন্তিকে মিথ্যা বলে মনে হবে। কিন্তু কী জানেন, আলোর দেশে যা কল্পনাই করা যায় না, অন্ধকারের দেশে তা-ই কখনও কখনও সত্য হয়ে ওঠে। মর্মান্তিক সত্য। কালাদেওর উদ্দেশ্যে স্থানীয় কিছু মানুষের বছর বছর নীরব আত্নদানের মধ্যে কোনও মিথ্যা নেই!”
পূষণ অবাক হয়ে বলল, “এ তো একপ্রকার নরবলিই। কেবল ফর্মটা আলাদা। রূপকথার গল্পে ছোটবেলা পড়েছি, পাহাড়ের মাথায় থাকে এক রাক্ষস। তাকে সন্তুষ্ট করার জন্য প্রতি মাসে একজনকে পাঠাতে হতো। শেষে ছদ্মবেশী রাজপুত্র গিয়ে তাকে হত্যা করে গ্রামের মানুষদের জীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনে। কিন্তু সে তো গপ্পো ! রিয়্যালিটি নয়! তাছাড়া সরকার কী করছে? তিনি কি জানেন না, এখানে কী ঘটছে?”
“সরকারের ভারি বয়েই গিয়েছে, আমাদের খোঁজ রাখতে। ভোটের আগে নানা কারণে তারা কল্পতরু হয়ে আসে। আবার ভোট ফুরালেই তাদের দেখা মেলা ভার। দেখুন পূষণবাবু, এখানকার মানুষ দু’বেলা ভালো করে খেতে পায় না সত্যি কথা, কিন্তু অকারণে মিথ্যা বলতেও তারা পারে না। চেষ্টা করলেই ধরা পড়ে যাবে। জানেনই তো অনভ্যাসের ফোঁটা কপালে চড়চড় করে?”
পূষণ সায় দিল কথায়, “সে তো অবশ্যই!”
পূষণ অবাক হয়ে বলল, “এ তো একপ্রকার নরবলিই। কেবল ফর্মটা আলাদা। রূপকথার গল্পে ছোটবেলা পড়েছি, পাহাড়ের মাথায় থাকে এক রাক্ষস। তাকে সন্তুষ্ট করার জন্য প্রতি মাসে একজনকে পাঠাতে হতো। শেষে ছদ্মবেশী রাজপুত্র গিয়ে তাকে হত্যা করে গ্রামের মানুষদের জীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনে। কিন্তু সে তো গপ্পো ! রিয়্যালিটি নয়! তাছাড়া সরকার কী করছে? তিনি কি জানেন না, এখানে কী ঘটছে?”
“সরকারের ভারি বয়েই গিয়েছে, আমাদের খোঁজ রাখতে। ভোটের আগে নানা কারণে তারা কল্পতরু হয়ে আসে। আবার ভোট ফুরালেই তাদের দেখা মেলা ভার। দেখুন পূষণবাবু, এখানকার মানুষ দু’বেলা ভালো করে খেতে পায় না সত্যি কথা, কিন্তু অকারণে মিথ্যা বলতেও তারা পারে না। চেষ্টা করলেই ধরা পড়ে যাবে। জানেনই তো অনভ্যাসের ফোঁটা কপালে চড়চড় করে?”
পূষণ সায় দিল কথায়, “সে তো অবশ্যই!”
ভবানীবাবু বললেন, “তবে জানবেন, মানুষের সমাজে যে মিথগুলি খুঁজে পাওয়া যায়, তার অধিকাংশই আজকের দিনে অবিশ্বাস্য বলে মনে হলেও সম্পূর্ণ মিথ্যা নয়। কোনও না কোনও চোখে দেখা কিংবা অভিজ্ঞতায় পাওয়া ঘটনার বীজ লুকিয়ে থাকে ওইসব মিথ-কিংবদন্তির আড়ালে। আসলে মূল ঘটনার চারপাশে নানা মানুষের, নানা সময়ের পলি জমতে থাকে বলেই আসলটা হারিয়ে যায়। তবে এই যেমন এখন সন্ধ্যে নেমে গিয়েছে, কিন্তু দিনের আলোর রেশ এখনও রয়ে গিয়েছে, সে তেমনই। মূল যা, তা কখনও সম্পূর্ণ হারিয়ে যায় না, আবার অবিশুদ্ধও হয় না।”
“কিন্তু আপনি বললেন, কালাদেওকে বছরে একবার ভেট দিলেই সম্বৎসর নিশ্চিন্ত থাকা যায়। তাহলে এবারে কি সেই ভেট দেওয়া হয়নি? তা না হলে কালাদেও এখানে এভাবে রাস্তার মাঝখানে মানুষ-শিকার করছেন, এটা কেন?”
ভবানীবাবু জবাব দেওয়ার আগেই আর-একজন বলে উঠল, “কালাদেও কুন কারণে রাগ করল্যে সময় না হলেও বাইরে বেরোন বট্যে। আর তারপর কী হয়, তা তো নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছেন বাবু।”
পূষণ ঘুরে তাকিয়ে দেখল, তাদের কথাবার্তার মাঝখানে কখন ঈশ্বরীপ্রসাদ এসে দাঁড়িয়েছে।
ভবানীবাবু বললেন, “ঈশ্বরী। ভালো আছো? বাবা কেমন আছেন?”
পূষণ বুঝতে পারল, ঈশ্বরীর সঙ্গে ভবানীবাবুর পরিচয় আছে। এমনকি তার বাবাকেও তিনি চেনেন। চিনতেই পারেন। হয়তো উক্ত গ্রামদেবতার মন্দির স্থানীয়দের মধ্যে খুব জনপ্রিয়। জাগ্রত।
“কিন্তু আপনি বললেন, কালাদেওকে বছরে একবার ভেট দিলেই সম্বৎসর নিশ্চিন্ত থাকা যায়। তাহলে এবারে কি সেই ভেট দেওয়া হয়নি? তা না হলে কালাদেও এখানে এভাবে রাস্তার মাঝখানে মানুষ-শিকার করছেন, এটা কেন?”
ভবানীবাবু জবাব দেওয়ার আগেই আর-একজন বলে উঠল, “কালাদেও কুন কারণে রাগ করল্যে সময় না হলেও বাইরে বেরোন বট্যে। আর তারপর কী হয়, তা তো নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছেন বাবু।”
পূষণ ঘুরে তাকিয়ে দেখল, তাদের কথাবার্তার মাঝখানে কখন ঈশ্বরীপ্রসাদ এসে দাঁড়িয়েছে।
ভবানীবাবু বললেন, “ঈশ্বরী। ভালো আছো? বাবা কেমন আছেন?”
পূষণ বুঝতে পারল, ঈশ্বরীর সঙ্গে ভবানীবাবুর পরিচয় আছে। এমনকি তার বাবাকেও তিনি চেনেন। চিনতেই পারেন। হয়তো উক্ত গ্রামদেবতার মন্দির স্থানীয়দের মধ্যে খুব জনপ্রিয়। জাগ্রত।
আরও পড়ুন:
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৬: দুয়ারে অপচ্ছায়া
চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১২: বাইগা রিসর্ট ও বস্তি
মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৩: আর্ষ মহাকাব্যদ্বয়ের আদি প্রচারমাধ্যম
ঈশ্বরীপ্রসাদ বলল, “বাবা ভালোই আছে মাস্টারজি। আপনি কেমন আছেন?”
“এই ঈশ্বরের আশীর্বাদে চলে যাচ্ছে। তা কোথা থেকে আসছো? দেখ তো রাস্তার মাঝে হঠাৎ কী সব কাণ্ড! এখন কী যে হবে!” ভবানীবাবুকে খুব চিন্তিত মনে হল।
“আমি গেনছিলাম স্টেশনে মাস্টারবাবু। বাবার হাঁপানির ওষুধ আনতে। ওই যে স্টেশনের পাশের সুখদেওর দুকান আছে না, সেখান থেকে। ওরা কলকাতা থেকে আনিয়ে দেয়।”
“হ্যাঁ, বিলাস মেডিক্যাল স্টোর। তা এখন কী হবে বল তো? এ তো পুলিশকে জানাতে হবে এখন।”
“পুলিশ কিছু করবে বলে আপনার মনে হয় মাস্টারজি? এই তো ছয় মাস আগে যাকে কালাদেও টেনে নিয়ে গেল দল থিক্যে, পরের দিন লাশ মিলল, পুলিশ কিছু করেছে? আমাদের উচিত তাড়াতাড়ি পাশ কাটিয়ে এখান থেকে চলে যাওয়া। আর যে মরেছে, তার কাপুড়চুপুড় দেখ্যে মনে লাগছে, লুকটা বাইরের কেউ হবেক। কী দরকার আমাদের মাথা ঘামিয়ে?”
“বাঃ, ঈশ্বরীপ্রসাদ, বাঃ! তুমি যা বলছ সেটা করতে পারলে ভালোই লাগত বুঝতে পারছি তোমাদের। কিন্তু আমি তা হতে দিতে পারি না। পুলিশ আগে আসবে, তারপর যদি তারা মনে করে আমাদের যেতে দেবে, তাহলে আমরাও যাবো। তার আগে নয়!” পূষণ কড়া গলায় বলল।
“এই ঈশ্বরের আশীর্বাদে চলে যাচ্ছে। তা কোথা থেকে আসছো? দেখ তো রাস্তার মাঝে হঠাৎ কী সব কাণ্ড! এখন কী যে হবে!” ভবানীবাবুকে খুব চিন্তিত মনে হল।
“আমি গেনছিলাম স্টেশনে মাস্টারবাবু। বাবার হাঁপানির ওষুধ আনতে। ওই যে স্টেশনের পাশের সুখদেওর দুকান আছে না, সেখান থেকে। ওরা কলকাতা থেকে আনিয়ে দেয়।”
“হ্যাঁ, বিলাস মেডিক্যাল স্টোর। তা এখন কী হবে বল তো? এ তো পুলিশকে জানাতে হবে এখন।”
“পুলিশ কিছু করবে বলে আপনার মনে হয় মাস্টারজি? এই তো ছয় মাস আগে যাকে কালাদেও টেনে নিয়ে গেল দল থিক্যে, পরের দিন লাশ মিলল, পুলিশ কিছু করেছে? আমাদের উচিত তাড়াতাড়ি পাশ কাটিয়ে এখান থেকে চলে যাওয়া। আর যে মরেছে, তার কাপুড়চুপুড় দেখ্যে মনে লাগছে, লুকটা বাইরের কেউ হবেক। কী দরকার আমাদের মাথা ঘামিয়ে?”
“বাঃ, ঈশ্বরীপ্রসাদ, বাঃ! তুমি যা বলছ সেটা করতে পারলে ভালোই লাগত বুঝতে পারছি তোমাদের। কিন্তু আমি তা হতে দিতে পারি না। পুলিশ আগে আসবে, তারপর যদি তারা মনে করে আমাদের যেতে দেবে, তাহলে আমরাও যাবো। তার আগে নয়!” পূষণ কড়া গলায় বলল।
আরও পড়ুন:
মহাভারতের আখ্যানমালা, পর্ব-৫৮: দেবতাদের আশীর্বাদে আর অর্ব্বাবসুর প্রার্থনায় যবক্রীত বেদজ্ঞান লাভ করলেন
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫৫: নৌকো উল্টে সত্যেন্দ্রনাথের আইসিএস পড়তে যাওয়া বানচাল হতে বসেছিল
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-১২: ঘাম কমাতে পাউডার ব্যবহার করেন?
ঈশ্বরীপ্রসাদ দাঁতমুখ খিঁচিয়ে বলে উঠল, “আপনার কী মাথাটো খারাপ হইঞ্চে বাবুজি? ইখানে সাঁঝ হয়্যে গিইঞ্চে। জঙ্গলের আড়ালে কোথায় কালাদেও বসে আছেন কে জানে! রাতটো হলে, আবার যখন তিনি বের্যে আসবেন, তখন কার কপালে কী লেখা আছে বুলতে পারবেন? এমনিতেই কালাদেওর মুখের শিকার আমাদের জন্য তিনি খেতে লারছেন। আমাদের বাসটো যদি চল্যে না আসত, তাহলে কালাদেও এত রাগ করতেন না। কিন্তু আমরা তাঁর খাবারের সময় তাঁকে বিরক্ত করেছি। এ কী ভালো কাজ করেছি আমরা?”
ভবানীবাবু বললেন, “ঈশ্বরীপ্রসাদ, শান্ত হও। এই বাবু কলকাতা থেকে আজই আসছেন। ইনি আমাদের অতিথি। এঁর সঙ্গে অমন ভাবে কথা বলো না। আর বাবু কী করে জানবেন, এখানে পুলিশের অপেক্ষায় থাকলে আমাদের কী সুবিধা-অসুবিধা হতে পারে?”
ঈশ্বরীপ্রসাদ ভবানীবাবুর কথা শুনে চুপ করে গেল বটে, তবে সন্ধ্যার অন্ধকারে তার আবছা মুখভঙ্গি দেখে পূষণের মনে হল, সে রেগে আছে খুব।
ভবানীবাবু বললেন, “আসলে পূষণবাবু। পুলিশে খবর দেওয়া যে আমাদের কর্তব্য, তা আমরা মানি। তবে একইসঙ্গে এখান থেকে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়াটাও যে দরকার, তাকেও আমি অস্বীকার করি না।”
“কিন্তু কেন? পুলিশ এলে আমাদের হয়তো কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তারপর নিশ্চয়ই ছেড়ে দেবে। কারণ, আমাদের মধ্যে কারুর পক্ষেই এমন কাজ করা সম্ভব নয়। তাহলে কিসের ভয় পাচ্ছি আমরা?”
ভবানীবাবু বললেন, “ঈশ্বরীপ্রসাদ, শান্ত হও। এই বাবু কলকাতা থেকে আজই আসছেন। ইনি আমাদের অতিথি। এঁর সঙ্গে অমন ভাবে কথা বলো না। আর বাবু কী করে জানবেন, এখানে পুলিশের অপেক্ষায় থাকলে আমাদের কী সুবিধা-অসুবিধা হতে পারে?”
ঈশ্বরীপ্রসাদ ভবানীবাবুর কথা শুনে চুপ করে গেল বটে, তবে সন্ধ্যার অন্ধকারে তার আবছা মুখভঙ্গি দেখে পূষণের মনে হল, সে রেগে আছে খুব।
ভবানীবাবু বললেন, “আসলে পূষণবাবু। পুলিশে খবর দেওয়া যে আমাদের কর্তব্য, তা আমরা মানি। তবে একইসঙ্গে এখান থেকে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়াটাও যে দরকার, তাকেও আমি অস্বীকার করি না।”
“কিন্তু কেন? পুলিশ এলে আমাদের হয়তো কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তারপর নিশ্চয়ই ছেড়ে দেবে। কারণ, আমাদের মধ্যে কারুর পক্ষেই এমন কাজ করা সম্ভব নয়। তাহলে কিসের ভয় পাচ্ছি আমরা?”
আরও পড়ুন:
স্বাদে-গন্ধে: একঘেয়ে কাতলা? স্বাদবদল করুন ‘কমলা কাতলা’ রেসিপিতে! রইল সহজ রেসিপি
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৩: ‘তিসরি মঞ্জিল’ ছিল পঞ্চমের প্রথম অগ্নিপরীক্ষা
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-২৮: পূর্ণ অপূর্ণ-র মাঝে পথ দেখায় ‘দেবত্র’
“দেখুন। যারা বাসে উঠেছে, তাদের সকলেই তো আর এক জায়গায় থাকে না, আর বাসরাস্তার ধারেও থাকে না। বলতে গেলে, বেশিরভাগ যাত্রীর বাড়িই যেখানে সে নামবে, সেখান থেকে আরও হয়ত এক-দুই-তিন কিলোমিটার। যত দেরি হবে, রাত বাড়বে, ততই তাদের বাড়ি ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এদের কাউকে হয়তো আবার কাল ভোরেই কোন না কোন বাস ধরে কাজের জায়গায় যেতে হবে। এ আপনাদের কলকাতা নয় যে অঢেল বাস আছে। এখানে হাতে গোণা কয়েকটি বাস রোজ যাতায়াত করে। সেখানে কোন গণ্ডগোল হওয়া মানে…!”
পূষণ বুঝতে পারছিল, ভবানীবাবু যা বলছেন, তা সঠিক। কিন্তু পুলিশ এলে তাদেরকেই যদি অনুরোধ করা হয়, যাত্রীদের নিজের নিজের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য, তাহলে তারা তা ফেলতে পারবে না। কারণ, নাগরিক সুরক্ষা তাদের দেখবার কথা। কিন্তু ভবানীবাবু এ-কথা শুনে বললেন, “পুলিশ যে কখন আসবে, তা আপনি নিশ্চয় করে বলতে পারবেন? দেখলেন, হয়ত আজ তারা এলোই না, কাল সকালে এল। আর যদি আজ এসেও পড়ে, তাহলেও তারা বাসযাত্রীদের কাউকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে না। বড়জোর বাসটাকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে সেখানেই বসিয়ে রাখবে যাত্রীদের। আর পরের বাসে যে যাবে, তারও উপায় নেই। এই বাসটাই আজকে এই রুটের লাস্ট বাস। যে কারণে ঈশ্বরীরা চলে যেতে চাইছে।”
পূষণ বলল, “তাও আমি থানাকে না জানিয়ে চলে যেতে চাই না। আমি বাইরের লোক, ট্যুরিস্ট। আমাকে নিয়েই না পরে টানাহেঁচড়া হয়। আপনি আমাকে নাম্বার দিন থানার, আমি অন্তত ইনফর্ম করি, তারপর দেখি, তাঁরা কী বলেন!”
ভবানীবাবু মোবাইল বের করে সেখান থেকে কনট্যাক্ট লিস্ট থেকে পূষণকে থানার নম্বর দিলেন। পূষণ রিং করেছে সবে, এমন সময় কেউ একজন চেঁচিয়ে উঠল, “আরে? কে রে ওখানে? নুনিয়া না কি?” —চলবে
পূষণ বুঝতে পারছিল, ভবানীবাবু যা বলছেন, তা সঠিক। কিন্তু পুলিশ এলে তাদেরকেই যদি অনুরোধ করা হয়, যাত্রীদের নিজের নিজের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য, তাহলে তারা তা ফেলতে পারবে না। কারণ, নাগরিক সুরক্ষা তাদের দেখবার কথা। কিন্তু ভবানীবাবু এ-কথা শুনে বললেন, “পুলিশ যে কখন আসবে, তা আপনি নিশ্চয় করে বলতে পারবেন? দেখলেন, হয়ত আজ তারা এলোই না, কাল সকালে এল। আর যদি আজ এসেও পড়ে, তাহলেও তারা বাসযাত্রীদের কাউকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে না। বড়জোর বাসটাকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে সেখানেই বসিয়ে রাখবে যাত্রীদের। আর পরের বাসে যে যাবে, তারও উপায় নেই। এই বাসটাই আজকে এই রুটের লাস্ট বাস। যে কারণে ঈশ্বরীরা চলে যেতে চাইছে।”
পূষণ বলল, “তাও আমি থানাকে না জানিয়ে চলে যেতে চাই না। আমি বাইরের লোক, ট্যুরিস্ট। আমাকে নিয়েই না পরে টানাহেঁচড়া হয়। আপনি আমাকে নাম্বার দিন থানার, আমি অন্তত ইনফর্ম করি, তারপর দেখি, তাঁরা কী বলেন!”
ভবানীবাবু মোবাইল বের করে সেখান থেকে কনট্যাক্ট লিস্ট থেকে পূষণকে থানার নম্বর দিলেন। পূষণ রিং করেছে সবে, এমন সময় কেউ একজন চেঁচিয়ে উঠল, “আরে? কে রে ওখানে? নুনিয়া না কি?” —চলবে
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel) – পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।