অলঙ্করণ: সৌমি দাসমণ্ডল।
আন্দাজ বেলা সাড়ে ছ’টা নাগাদ রথীনবাবু এবং মারুতি মাহাত ও তাঁর স্ত্রী অর্থাৎ বুধনের মা উদভ্রান্তের মতো এলেন হরিপদর গাড়িতে চেপেই। গোবিন্দও নামল। তার মুখ আষাঢ়ের মেঘের মতো থমথম করছে। সে সত্যব্রতর জিজ্ঞাসু দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে মাথা নীচু করে বলল, “স্যার, বুধন বাড়িতে ফিরে যায়নি।”
রথীনবাবু বললেন, “গোবিন্দ আমাকে যখন গিয়ে বলল, আমিও ভেবেছিলাম, বুধন হয়তো রাতের বেলা ঘুম ভেঙে চুপিচুপি বাড়ি ফিরে গিয়েছে। এসব রাস্তাঘাট সে ভালোই চেনে। বড়রাস্তা থেকে কোন গাড়িটাড়ি ধরে একটু এগিয়ে গিয়ে নেমে পড়লেই হল। বড়রাস্তা থেকেই একটা মোরাম রাস্তা তাদের গ্রামের দিকে চলে গিয়েছে। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, মারুতি বলছে, বুধনকে তারা এখানে রেখে যাওয়ার পর অনেক রাত অবধি স্বামী-স্ত্রীতে মিলে তারা কাল জেগেই বসেছিল। বুধন যদি মাঝরাতেও এসে থাকে, তাহলেও তাদের ডাকবে কিংবা শব্দ করবে। কিন্তু তেমন কিছুই হয়নি। তাহলে?”
রথীনবাবু বললেন, “গোবিন্দ আমাকে যখন গিয়ে বলল, আমিও ভেবেছিলাম, বুধন হয়তো রাতের বেলা ঘুম ভেঙে চুপিচুপি বাড়ি ফিরে গিয়েছে। এসব রাস্তাঘাট সে ভালোই চেনে। বড়রাস্তা থেকে কোন গাড়িটাড়ি ধরে একটু এগিয়ে গিয়ে নেমে পড়লেই হল। বড়রাস্তা থেকেই একটা মোরাম রাস্তা তাদের গ্রামের দিকে চলে গিয়েছে। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, মারুতি বলছে, বুধনকে তারা এখানে রেখে যাওয়ার পর অনেক রাত অবধি স্বামী-স্ত্রীতে মিলে তারা কাল জেগেই বসেছিল। বুধন যদি মাঝরাতেও এসে থাকে, তাহলেও তাদের ডাকবে কিংবা শব্দ করবে। কিন্তু তেমন কিছুই হয়নি। তাহলে?”
সত্যব্রত অসহায়ের মতো বলল, “আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না মাস্টারবাবু। রেশমা যা বলছে তাতে রাত একটা-দেড়টা অবধিও বুধন তার বেডেই ঘুমাচ্ছিল। তার মতো অসুস্থ একজন কোথায় যেতে পারে সেতাই তো ভেবে পাচ্ছি না! এখন পুলিশে খবর না দিয়ে উপায় নেই।”
“তার আগে আশেপাশের জঙ্গলটা আরএকটু ভালো করে খুঁজে দেখলে হয় না? হ্যাঁ জানি, গোবিন্দরা আগেই খুঁজেছে। নার্স দিদি দু’জনও ছিলেন। কিন্তু তখনও ভালো করে চারপাশ আলো হয়নি। হয়তো সে, জঙ্গলের পথ ধরে যেতে গিয়ে সেখানেই কোথাও পড়ে আছে!”
“হ্যাঁ সেতা হতে পারে”, সত্যব্রত স্বীকার করল। সেক্ষেত্রে আর-একবার ভালো করে না খুঁজে পুলিশে যাওয়া কাজের কথা নয়।
বুধনের মা আদুরি মাহাত কাঁদছিল। সেই অবস্থায় সে বলল, “ডাগ্দারসাব, আমাদের ওই একটাই ব্যাটা ছেইল্যা। বুধনকে খুঁজে পাওয়া যাবে তো?”
সত্যব্রত কিছু বলার আগেই মাস্টারবাবু বলে উঠলেন, “আঃ! ডাক্তারবাবু কী করে জানবেন? তোমার বুধন কাউকে কিছু না বলে হেলথ্ সেন্টার ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে অপরাধ করেছে। তাকে পাই। তারপর খুব বকা খাবে সে আমার কাছে। এখন তুমি শান্ত হয়ে বস এখানে। আমরা যাচ্ছি চারদিকে। দেখা যাক, ছেলেটি কোথাও আছে কি না!”
আদুরি বলল, “আমার বুধনকে পাওয়া যাচ্ছে না। আর আমি ইখানে বসে বসে দেইখবঁ? আমিও যাব।”
“তার আগে আশেপাশের জঙ্গলটা আরএকটু ভালো করে খুঁজে দেখলে হয় না? হ্যাঁ জানি, গোবিন্দরা আগেই খুঁজেছে। নার্স দিদি দু’জনও ছিলেন। কিন্তু তখনও ভালো করে চারপাশ আলো হয়নি। হয়তো সে, জঙ্গলের পথ ধরে যেতে গিয়ে সেখানেই কোথাও পড়ে আছে!”
“হ্যাঁ সেতা হতে পারে”, সত্যব্রত স্বীকার করল। সেক্ষেত্রে আর-একবার ভালো করে না খুঁজে পুলিশে যাওয়া কাজের কথা নয়।
বুধনের মা আদুরি মাহাত কাঁদছিল। সেই অবস্থায় সে বলল, “ডাগ্দারসাব, আমাদের ওই একটাই ব্যাটা ছেইল্যা। বুধনকে খুঁজে পাওয়া যাবে তো?”
সত্যব্রত কিছু বলার আগেই মাস্টারবাবু বলে উঠলেন, “আঃ! ডাক্তারবাবু কী করে জানবেন? তোমার বুধন কাউকে কিছু না বলে হেলথ্ সেন্টার ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে অপরাধ করেছে। তাকে পাই। তারপর খুব বকা খাবে সে আমার কাছে। এখন তুমি শান্ত হয়ে বস এখানে। আমরা যাচ্ছি চারদিকে। দেখা যাক, ছেলেটি কোথাও আছে কি না!”
আদুরি বলল, “আমার বুধনকে পাওয়া যাচ্ছে না। আর আমি ইখানে বসে বসে দেইখবঁ? আমিও যাব।”
আরও পড়ুন:
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১৯: কেস জন্ডিস
ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-৪: এ শুধু অলস মায়া?
সবাই মিলে সেন্টার ছেড়ে গেলে চলবে না। রেশমার যা অবস্থা, তাকে নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। শেফালিকাদি যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে বুঝিয়ে রেশমার সঙ্গে থাকতে বলে সত্যব্রত বেরিয়ে পড়ল তখনই। সঙ্গে মাস্টারবাবু, গোবিন্দ, হরিপদ, সেইসঙ্গে বুধনের মা-বাবা।
কিন্তু প্রশ্ন উঠল তারা যাবে কোথায়? রথীনবাবু বড় রাস্তার দিকে যেতে চাইছিলেন। কিন্তু সত্যব্রতের মন টানছিল পিচাশটিলার জঙ্গলের দিকে। নুনিয়াকে ওখানে ভোরবেলা দেখা গিয়েছে। এমন তো হতেই পারে বুধন ওইরকম শারীরিক অবস্থা নিয়ে বেশি দূর যেতে পারবে না বলে লুকিয়ে আছে ওই জঙ্গলে। নুনিয়া তাকে খাবার দিতে গিয়েছিল। কারণ, কাল সন্ধের পর থেকে বুধন যেহেতু ঘুমাচ্ছিল, ফলে তার খাওয়া জোটেনি অনেকক্ষণ। মাস্টারবাবু বলছিলেন, তার খাওয়ার পরিমাণ ইদানীং দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। নুনিয়া তাকে তার সংগ্রহ করা খাবারের ভাগ দিত। হয়ত আজও তেমনটাই হয়েছে। একটা জিনিসও মনে হচ্ছিল তার। বুধন কোন কারণে তার বেবি-বুম ডাক্তার হোক বা আর কেউ, দেখাতে দিতে রাজি ছিল না। অথচ যন্ত্রণাও পাচ্ছে। কিন্তু কেন?
কিন্তু প্রশ্ন উঠল তারা যাবে কোথায়? রথীনবাবু বড় রাস্তার দিকে যেতে চাইছিলেন। কিন্তু সত্যব্রতের মন টানছিল পিচাশটিলার জঙ্গলের দিকে। নুনিয়াকে ওখানে ভোরবেলা দেখা গিয়েছে। এমন তো হতেই পারে বুধন ওইরকম শারীরিক অবস্থা নিয়ে বেশি দূর যেতে পারবে না বলে লুকিয়ে আছে ওই জঙ্গলে। নুনিয়া তাকে খাবার দিতে গিয়েছিল। কারণ, কাল সন্ধের পর থেকে বুধন যেহেতু ঘুমাচ্ছিল, ফলে তার খাওয়া জোটেনি অনেকক্ষণ। মাস্টারবাবু বলছিলেন, তার খাওয়ার পরিমাণ ইদানীং দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। নুনিয়া তাকে তার সংগ্রহ করা খাবারের ভাগ দিত। হয়ত আজও তেমনটাই হয়েছে। একটা জিনিসও মনে হচ্ছিল তার। বুধন কোন কারণে তার বেবি-বুম ডাক্তার হোক বা আর কেউ, দেখাতে দিতে রাজি ছিল না। অথচ যন্ত্রণাও পাচ্ছে। কিন্তু কেন?
আরও পড়ুন:
ভৌতিক উপন্যাস: মিস মোহিনীর মায়া, পর্ব-৮: মাথার চুলটা পেছন থেকে এসে মুখটাকে ঢাকা দিয়ে দিয়েছে, মেয়েটি কি লাইনে ঝাঁপাতে চাইছে?
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৩৯: পথের প্রান্তে রয়ে গিয়েছে সে হাজার তারার ‘লক্ষহীরা’
সত্যব্রতর কথামতো শেষে অবশ্য আগে কাছের পিচাশটিলার জঙ্গলটা দেখে তারপর বড় রাস্তার দিকে যাওয়াই ঠিক হল। তবে মাস্টারবাবু একটু ক্ষুণ্ণ হলেন। তাঁর মতে বড় রাস্তা ধরে গেলেই বুধনকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল। শীতের শেষে বসন্তকালে প্রকৃতি আবার নতুন পাতার পোশাকে সেজে উঠেছে। শাল-সেগুনের গাছগুলোয় সবুজ পাতা ঝলমল করছে। জায়গায় জায়গায় কুসুম গাছের নতুন পাতা দেখে মনে হচ্ছে, জঙ্গল লাল ওড়নায় নিজেকে ঢাকা দিতে চায়। ঝকঝকে নীল আকাশ। রোদ উঠেছে বলে কুয়াশারা দ্রুত পাততাড়ি গুটিয়ে চলে যাচ্ছে। পাতার উপর সমস্ত রাত্রির শিশির সূর্যের আলোয় হীরের কুচির মতো জ্বলছে। ছোট ছোট ঝোপে নাম না জানা বুনো ফুল ফুটে আছে। এক জায়গায় কয়েকটা অমলতাস বা বাঁদরলাঠি ফুলের গাছে হলুদ ফুলের ঝালর দুলছে। মনে হচ্ছে যেন, জঙ্গল তাদের অভ্যর্থনা করার জন্য তোরণ সাজিয়ে রেখেছে। এমন সুন্দর সকাল কিন্তু কারওই দেখবার মতো মনের অবস্থা নেই।
জঙ্গলের মধ্যে একটা শুকিয়ে যাওয়া নালা। বর্ষাকালে অতিরিক্ত জল এই নালা বেয়ে জঙ্গলের মধ্যে একটা ডোবা মত আছে, সেখানে গিয়ে পড়ে। এখন অবশ্য নালা শুকনো। এই জঙ্গলে একসময় চিতা, হায়েনা এবং ভাল্লুকের দেখা মিললেও, এখন সামান্য কয়েকটা বাঘরোল, শিয়াল, সজারু, খরগোশ আর ক্বচিৎ কদাচিৎ দলমা রেঞ্জ থেকে ঢুকে পড়া হাতির পাল দেখা যায়। তবে সাপ আছে, বিশেষ করে শিয়রচাঁদা ও চন্দ্রবোড়া। ভারি খতরনাক। এক ছোবলেই ছবি করে দিতে পারে। ওরা সকলে সাবধানে এগোচ্ছিল। শুকনো পাতা পড়ে জঙ্গলের নীচে জমে আছে। সেখান থেকে অদ্ভুত জঙ্গুলে গন্ধ বেরুচ্ছে।
জঙ্গলের মধ্যে একটা শুকিয়ে যাওয়া নালা। বর্ষাকালে অতিরিক্ত জল এই নালা বেয়ে জঙ্গলের মধ্যে একটা ডোবা মত আছে, সেখানে গিয়ে পড়ে। এখন অবশ্য নালা শুকনো। এই জঙ্গলে একসময় চিতা, হায়েনা এবং ভাল্লুকের দেখা মিললেও, এখন সামান্য কয়েকটা বাঘরোল, শিয়াল, সজারু, খরগোশ আর ক্বচিৎ কদাচিৎ দলমা রেঞ্জ থেকে ঢুকে পড়া হাতির পাল দেখা যায়। তবে সাপ আছে, বিশেষ করে শিয়রচাঁদা ও চন্দ্রবোড়া। ভারি খতরনাক। এক ছোবলেই ছবি করে দিতে পারে। ওরা সকলে সাবধানে এগোচ্ছিল। শুকনো পাতা পড়ে জঙ্গলের নীচে জমে আছে। সেখান থেকে অদ্ভুত জঙ্গুলে গন্ধ বেরুচ্ছে।
আরও পড়ুন:
পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-১০: রাজার আশপাশে থাকা দুষ্ট লোকেদের অতিক্রম করে তাঁর কাছ পর্যন্ত পৌঁছনোর পথ খুবই দুর্গম
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-২৫: আমাদের নাকি রোজই চুল পড়ে!
এরই মধ্যে এক জায়গায় জঙ্গলের ভিতর থেকে জমে ওঠা পাতার উপর দিয়ে ভারি কিছু টেনে নিয়ে যাওয়ার দাগ দেখতে পেয়ে মারুতি মাহাত চেঁচিয়ে সত্যব্রতকে বলল, “বাবু, ইদিকে দেখ ক্যানে? কেউ কিছু টেনে লিয়ে গেছে। বুধনেরে লয় তো?” বলে মারুতি হাত বাড়িয়ে আঙুল দিয়ে যেখানে সে দাগটা দেখতে পেয়েছে, সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করল।
সত্যব্রত দেখল। পাতার স্তুপ সরে গিয়ে একটা যেন পথের রেখা তৈরি হয়েছে।
গোবিন্দ বলল, “এই দাগ ধরে এগিয়ে যাওয়াই ভালো।” তারপর ফিসফিস করে সত্যব্রতকে বলল, “আমি কিন্তু শুকিয়ে যাওয়া রক্তের ছিটেও দেখতে পাচ্ছি ! আর একটা মড়াপচা গন্ধও পাচ্ছি। কাছাকাছি কোথাও কোন জানোয়ার মরে পচে আছে।”
গোবিন্দ ঠিকই ধরেছিল, তবে তা কোন জানোয়ার ছিল না। রক্তের শুকিয়ে যাওয়া দাগ দেখে আর-একটু এগোতেই দেখা মিলল বুধনের। জঙ্গলের শুকিয়ে যাওয়া নালার পাশে পড়ে আছে তার দেহ। বুকের নীচ থেকে শরীরের বাকি অংশ অদৃশ্য। যেন কেউ একেবারে গিলে খেয়েছে। হাড়মাসও বাকি রাখেনি। সবচেয়ে বড় কথা, লাশ পরীক্ষা করে দেখা গেল, এটাই যদি বুধন হয়, তাহলে অন্তত সপ্তাহখানেক আগে তার মৃত্য হয়েছে। মৃতদেহের বেঁচে যাওয়া অংশ কেবল পচে উঠে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল না, তাতে পোকাও ধরেছিল। আজ ভোরে মৃত্যু হলে যা সম্ভব নয়। আদুরী আর মারুতি মাহাত—বুধনের মা-বাবা হাউহাউ করে কেঁদে উঠল। পুত্রশোক খুব বড় শোক। কিন্তু সত্যব্রত যখন বলল, এক সপ্তাহ আগেই বুধনের মৃত্যু হয়েছে, তখন যে প্রশ্নটা সকলকে হতবাক করে দিল, তাহলে এতদিন বুধন হিসাবে যে মারুতির ঘরে ফিরে এসেছিল সে কে? কী তার উদ্দেশ্য?—চলবে
সত্যব্রত দেখল। পাতার স্তুপ সরে গিয়ে একটা যেন পথের রেখা তৈরি হয়েছে।
গোবিন্দ বলল, “এই দাগ ধরে এগিয়ে যাওয়াই ভালো।” তারপর ফিসফিস করে সত্যব্রতকে বলল, “আমি কিন্তু শুকিয়ে যাওয়া রক্তের ছিটেও দেখতে পাচ্ছি ! আর একটা মড়াপচা গন্ধও পাচ্ছি। কাছাকাছি কোথাও কোন জানোয়ার মরে পচে আছে।”
গোবিন্দ ঠিকই ধরেছিল, তবে তা কোন জানোয়ার ছিল না। রক্তের শুকিয়ে যাওয়া দাগ দেখে আর-একটু এগোতেই দেখা মিলল বুধনের। জঙ্গলের শুকিয়ে যাওয়া নালার পাশে পড়ে আছে তার দেহ। বুকের নীচ থেকে শরীরের বাকি অংশ অদৃশ্য। যেন কেউ একেবারে গিলে খেয়েছে। হাড়মাসও বাকি রাখেনি। সবচেয়ে বড় কথা, লাশ পরীক্ষা করে দেখা গেল, এটাই যদি বুধন হয়, তাহলে অন্তত সপ্তাহখানেক আগে তার মৃত্য হয়েছে। মৃতদেহের বেঁচে যাওয়া অংশ কেবল পচে উঠে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল না, তাতে পোকাও ধরেছিল। আজ ভোরে মৃত্যু হলে যা সম্ভব নয়। আদুরী আর মারুতি মাহাত—বুধনের মা-বাবা হাউহাউ করে কেঁদে উঠল। পুত্রশোক খুব বড় শোক। কিন্তু সত্যব্রত যখন বলল, এক সপ্তাহ আগেই বুধনের মৃত্যু হয়েছে, তখন যে প্রশ্নটা সকলকে হতবাক করে দিল, তাহলে এতদিন বুধন হিসাবে যে মারুতির ঘরে ফিরে এসেছিল সে কে? কী তার উদ্দেশ্য?—চলবে
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel) – পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।