![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/06/pisach-pahar-17.jpg)
অলঙ্করণ: সৌমি দাসমণ্ডল।
শাক্য আজ বছরখানেক হল লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগে এসেছে। তার মতো অল্পবয়সী অফিসার এই বিভাগে খুব কমই আছে। বেশিরভাগই বহুদিনের পোড়খাওয়া, নানা কেসে সফল অফিসার। তাঁদের নিয়েই গঠিত লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ দেশের গর্ব। এক সময় লন্ডনের স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের পরেই লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের নাম করা হত।
এখন অবশ্য সে রামও নেই, অযোধ্যাও নেই। তবু যা আছে, তা-ও রীতিমতো গর্বের বিষয়। শাক্য সিংহ সেই গর্বের মুকুটে নতুন পালক। বিখ্যাত লেখক সমুদ্র মুখোপাধ্যায় হত্যা-রহস্য কিংবা ভোর রাতের রহস্যময় খুনের তদন্তে তার নাম অল্পদিনেই লালবাজারের ঝানু সিনিয়ার অফিসারদের কানে পৌঁছেছিল। পরে বিশিষ্ট নেতা নকুলেশ্বর সমাজপতির হত্যারহস্যের দ্রুত সমাধান করায় আর তাকে আটকে রাখা যায়নি।
থানার সেকেন্ড অফিসার থেকে জুনিয়ার অফিসার হিসেবে তাকে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগে তুলে আনা হয়। অনাদিকুমার ঘোষ সংক্ষেপে একেজি-র সে খুব প্রিয় পাত্র। নকুলেশ্বরের কেসটা একেজি-ই দেখছিলেন এবং শাক্যের তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও ক্ষুরধার অনুমানশক্তির তিনি অন্যতম ভক্ত হয়ে উঠেছিলেন। এ ছোকরা লম্বা রেসের ঘোড়া। অনেকদূর যাবে। একদিন হয়ত এই বিভাগের সর্বোচ্চ পদটাই তার কপালে নাচছে। তাতে অবশ্য একেজি খুশিই হবেন। যোগ্য ব্যক্তির যোগ্য পদে বসাই উচিত। প্রায়শই তা হয় না বলে পুলিশ বিভাগ নিন্দা কুড়োয়।
শাক্য খুব নিয়মনিষ্ঠ, সে ঘড়ি ধরে কাকভোরে ওঠে এবং নিয়মিত শরীরচর্চার পর স্নান সেরে একটা ভালো রকম ব্রেকফাস্ট সেরে অফিসে আসে। দুপুরে লাঞ্চে সে কেবল ফল, সেদ্ধ সব্জি আর টক দই খায়। রাতের খাবারও তার নির্দিষ্ট। কেবলমাত্র কোনও তদন্তের কাজে কোথাও আটকা পড়লে সে সাধারণত হালকা কিছু খেয়ে নেই বাইরের খাবার। সে এগিটেরিয়ান, জিম করে বলে তাকে এ-ব্যাপারে কিছু কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছে। নাহলে বাবার মৃত্যুর পরে সে আমিষ পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছে।
এখন অবশ্য সে রামও নেই, অযোধ্যাও নেই। তবু যা আছে, তা-ও রীতিমতো গর্বের বিষয়। শাক্য সিংহ সেই গর্বের মুকুটে নতুন পালক। বিখ্যাত লেখক সমুদ্র মুখোপাধ্যায় হত্যা-রহস্য কিংবা ভোর রাতের রহস্যময় খুনের তদন্তে তার নাম অল্পদিনেই লালবাজারের ঝানু সিনিয়ার অফিসারদের কানে পৌঁছেছিল। পরে বিশিষ্ট নেতা নকুলেশ্বর সমাজপতির হত্যারহস্যের দ্রুত সমাধান করায় আর তাকে আটকে রাখা যায়নি।
থানার সেকেন্ড অফিসার থেকে জুনিয়ার অফিসার হিসেবে তাকে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগে তুলে আনা হয়। অনাদিকুমার ঘোষ সংক্ষেপে একেজি-র সে খুব প্রিয় পাত্র। নকুলেশ্বরের কেসটা একেজি-ই দেখছিলেন এবং শাক্যের তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও ক্ষুরধার অনুমানশক্তির তিনি অন্যতম ভক্ত হয়ে উঠেছিলেন। এ ছোকরা লম্বা রেসের ঘোড়া। অনেকদূর যাবে। একদিন হয়ত এই বিভাগের সর্বোচ্চ পদটাই তার কপালে নাচছে। তাতে অবশ্য একেজি খুশিই হবেন। যোগ্য ব্যক্তির যোগ্য পদে বসাই উচিত। প্রায়শই তা হয় না বলে পুলিশ বিভাগ নিন্দা কুড়োয়।
শাক্য খুব নিয়মনিষ্ঠ, সে ঘড়ি ধরে কাকভোরে ওঠে এবং নিয়মিত শরীরচর্চার পর স্নান সেরে একটা ভালো রকম ব্রেকফাস্ট সেরে অফিসে আসে। দুপুরে লাঞ্চে সে কেবল ফল, সেদ্ধ সব্জি আর টক দই খায়। রাতের খাবারও তার নির্দিষ্ট। কেবলমাত্র কোনও তদন্তের কাজে কোথাও আটকা পড়লে সে সাধারণত হালকা কিছু খেয়ে নেই বাইরের খাবার। সে এগিটেরিয়ান, জিম করে বলে তাকে এ-ব্যাপারে কিছু কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছে। নাহলে বাবার মৃত্যুর পরে সে আমিষ পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছে।
শাক্যর মা তার খুব ছোটোবেলাতেই মারা যান। তাকে মানুষ করেছে তার চেয়ে বছর দশেকের বড় দিদি এবং বাবা। দিদিকে সে মায়ের মতোই দেখে এবং এই সংসারে দিদি আর তার পরিবার ছাড়া শাক্যর নিজের কেউ বর্তমান নেই। সে কনফার্মড ব্যাচেলর। কলেজ লাইফে এক ব্যর্থ প্রেমের স্মৃতি এখনও তার মনে দগদগে আঘাত হয়ে জেগে আছে। কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে? অতএব সেই স্মৃতি সে ইচ্ছে করে মনে করে না, তবে ভুলতেও পারে না। একাকী জীবন নিয়ে এখন আর তার কোনও আক্ষেপ নেই। কোনও ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা সে করে বসেনি।
আবার যদি কোনওদিন তার চিত্ত চঞ্চল করে তোলে কেউ, তাহলে হয়তো সে নতুন কিছু ভাববে। কিন্তু আপাতত সে এই নিয়ে কিছু ভাবতে রাজি নয়। এই জীবনে একা থাকাই ভালো। বয়সকালে দিদি আছে, মায়ের মতো যে তাকে ঘিরে রেখেছে সদা-সর্বদা। দিদির অবশ্য এখন বিয়ে হয়েছে। জামাইবাবু সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। দিদি একটি স্কুলে ম্যাথমেটিক্সের টিচার। আর আছে, দুটি যমজ এবং বিচ্ছু ভাগ্নে-ভাগ্নি— পলক আর পালক। ওদের চোখে, “মামুদাদা” হল যাকে বলে এভরি ইউথ আইকন। অতএব ওরাও বড় হয়ে “মামুদাদা”র মতো পুলিশ অফিসার হবে।
শাক্যকে ওরা “মামুদাদা” বলে ডাকে কারণ, সম্পর্কে শাক্য মামু হলেও আসলে সে তাদের “দাদা”-ই। বলা বাহুল্য, শাক্য ব্যাপারটা মেনে নিয়েছে এবং ভাগ্নি এই কারণে প্রতি বছর নিয়ম করে পলকের সঙ্গে সঙ্গে মামুদাদাকেও ভাইফোঁটা দেয়। বাবা মারা গিয়েছেন আজ বছর তিনেক হল। তারপর থেকে দিদি-জামাইবাবু-পলক আর পালক—এদের মায়াময় ছায়া তার জীবনের একমাত্র আশ্রয় ও শান্তি।
আবার যদি কোনওদিন তার চিত্ত চঞ্চল করে তোলে কেউ, তাহলে হয়তো সে নতুন কিছু ভাববে। কিন্তু আপাতত সে এই নিয়ে কিছু ভাবতে রাজি নয়। এই জীবনে একা থাকাই ভালো। বয়সকালে দিদি আছে, মায়ের মতো যে তাকে ঘিরে রেখেছে সদা-সর্বদা। দিদির অবশ্য এখন বিয়ে হয়েছে। জামাইবাবু সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। দিদি একটি স্কুলে ম্যাথমেটিক্সের টিচার। আর আছে, দুটি যমজ এবং বিচ্ছু ভাগ্নে-ভাগ্নি— পলক আর পালক। ওদের চোখে, “মামুদাদা” হল যাকে বলে এভরি ইউথ আইকন। অতএব ওরাও বড় হয়ে “মামুদাদা”র মতো পুলিশ অফিসার হবে।
শাক্যকে ওরা “মামুদাদা” বলে ডাকে কারণ, সম্পর্কে শাক্য মামু হলেও আসলে সে তাদের “দাদা”-ই। বলা বাহুল্য, শাক্য ব্যাপারটা মেনে নিয়েছে এবং ভাগ্নি এই কারণে প্রতি বছর নিয়ম করে পলকের সঙ্গে সঙ্গে মামুদাদাকেও ভাইফোঁটা দেয়। বাবা মারা গিয়েছেন আজ বছর তিনেক হল। তারপর থেকে দিদি-জামাইবাবু-পলক আর পালক—এদের মায়াময় ছায়া তার জীবনের একমাত্র আশ্রয় ও শান্তি।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/05/samayupdates_pisach-pahar-16.jpg)
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১৬: আবার নুনিয়া
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/05/miss-mohini.jpg)
ভৌতিক উপন্যাস: মিস মোহিনীর মায়া, পর্ব-৫: চেয়ারে বসতে গিয়ে নজর গেল বিছানায়, দেখি সেই পুতুলের সবুজ চোখ দুটো আমাকে দেখছে
এ ছাড়া শাক্য আর একটা ব্যাপারেই শান্তি পায়, যখন কোনও জটিল কেস সে মাথা ঘামিয়ে সমাধান করে ফেলে, যা সমাধান করতে অন্য অফিসারদের নাকানি-চোবানি খেতে হয়। প্রতিটি জটিল অপরাধ তার কাছে চ্যালেঞ্জের মতো। সেই চ্যালেঞ্জ সে হেরে গেলে নিজের কাছে নিজেকে ছোটো বলে মনে হয় তার। এই কারণেই তার জিদ চেপে যায় আরও।
কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে তার ভালো লাগে, আরও ভালো লাগে সেইসব জটিল ধাঁধার সমাধান করতে। তার মনে হয়, নিখুঁত অপরাধ বলে কিছু হয় না। যেমন কোন ধাঁধাই সমাধানহীন নয়। সব ধাঁধারই উত্তর আছে, যতক্ষণ না কেউ তা পাচ্ছে, ততক্ষণ ধাঁধাটা যেন মস্ত এক প্রহেলিকা। একবার সমাধানসূত্র হাতে পেয়ে গেলেই সেই ধাঁধা আর ধাঁধা থাকে না, সহজ অঙ্ক হয়ে যায়। জটিল অপরাধও তেমনি। আসলে দরকার অপরাধ সম্পর্কে যাবতীয় খুঁটিনাটি, তথ্যপ্রমাণ ইত্যাদি জানা, যাচাই করা এবং বিশ্লেষণ করা। বিশ্লেষণ করার সময় একজন ভালো গোয়েন্দাকে সবসময় নিরপেক্ষ থাকতে হয়। তা না হলে, তদন্তের লক্ষ্য ভুল দিকে সরে যেতে পারে।
একজন গোয়েন্দা তাঁর তদন্ত শুরুর সময় সব্বাইকে সন্দেহ করবেন। তারপর অনুমান-প্রমাণের হাত ধরে একে একে বাদ দেবেন। আসলে অপরাধে যেটা জানা সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ, সেটা হল কার্যকারণ। কেন অপরাধটা সংঘটিত হয়েছে, সেটা জানতে পারলেই অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু সব সময় সেটা জানাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কোনও কোনও কেস এমন ভাবেই অতর্কিত হাজির হয়, তখন মাথার মধ্যে সবসময় ঘুরতে থাকে সেই ধাঁধাটাই। আজ অনেকদিন হয়ে গেল, তেমন কোনও কেস এসে পড়েনি তার হাতে। এখনকার কেসে কোনো ধাঁধা নেই। বেশিরভাগই পলিটিক্যাল মার্ডার কিংবা ব্যক্তিগত কারণ কিংবা ত্রিকোণ প্রেমের দ্বন্দ্বে ঘটিয়ে ফেলা অপরাধ। রহস্যময় অপরাধের সংখ্যা ক্রমশই কমছে।
কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে তার ভালো লাগে, আরও ভালো লাগে সেইসব জটিল ধাঁধার সমাধান করতে। তার মনে হয়, নিখুঁত অপরাধ বলে কিছু হয় না। যেমন কোন ধাঁধাই সমাধানহীন নয়। সব ধাঁধারই উত্তর আছে, যতক্ষণ না কেউ তা পাচ্ছে, ততক্ষণ ধাঁধাটা যেন মস্ত এক প্রহেলিকা। একবার সমাধানসূত্র হাতে পেয়ে গেলেই সেই ধাঁধা আর ধাঁধা থাকে না, সহজ অঙ্ক হয়ে যায়। জটিল অপরাধও তেমনি। আসলে দরকার অপরাধ সম্পর্কে যাবতীয় খুঁটিনাটি, তথ্যপ্রমাণ ইত্যাদি জানা, যাচাই করা এবং বিশ্লেষণ করা। বিশ্লেষণ করার সময় একজন ভালো গোয়েন্দাকে সবসময় নিরপেক্ষ থাকতে হয়। তা না হলে, তদন্তের লক্ষ্য ভুল দিকে সরে যেতে পারে।
একজন গোয়েন্দা তাঁর তদন্ত শুরুর সময় সব্বাইকে সন্দেহ করবেন। তারপর অনুমান-প্রমাণের হাত ধরে একে একে বাদ দেবেন। আসলে অপরাধে যেটা জানা সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ, সেটা হল কার্যকারণ। কেন অপরাধটা সংঘটিত হয়েছে, সেটা জানতে পারলেই অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু সব সময় সেটা জানাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কোনও কোনও কেস এমন ভাবেই অতর্কিত হাজির হয়, তখন মাথার মধ্যে সবসময় ঘুরতে থাকে সেই ধাঁধাটাই। আজ অনেকদিন হয়ে গেল, তেমন কোনও কেস এসে পড়েনি তার হাতে। এখনকার কেসে কোনো ধাঁধা নেই। বেশিরভাগই পলিটিক্যাল মার্ডার কিংবা ব্যক্তিগত কারণ কিংবা ত্রিকোণ প্রেমের দ্বন্দ্বে ঘটিয়ে ফেলা অপরাধ। রহস্যময় অপরাধের সংখ্যা ক্রমশই কমছে।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/06/Keblader-chotbela-1.jpg)
ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-১: আমি ‘কেবলই’ স্বপন…
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/06/recipe.jpg)
স্বাদে-আহ্লাদে: আম কাসুন্দি প্রিয়? বানানোর সময় এই বিষয়গুলি খেয়াল রাখবেন
কে জানত এমন এক প্রহেলিকাময় ধাঁধার সমাধানের জন্য খুব তাড়াতাড়িই তাকে কলকাতা ছেড়ে অনেকটা দূরে পাড়ি দিতে হবে? মাস খানেক আগে এক সন্ধ্যায় একেজি-র চেম্বারে যখন তার ডাক পড়ল, তখনও সে বুঝতে পারেনি, আগামী কয়েক মাস তার আহার-নিদ্রা সব উড়ে যাবে। সেদিন হাতের কাজ সেরে সময় মতোই বেরিয়ে যাবে ভেবেছিল সে। দিদি-জামাইবাবুর আসার কথা। অবশ্য ভরত আছে। বাবার মৃত্যুর অনেক আগে থেকেই দিদি ভরতকে এ-বাড়ির কাজে বহাল করেছিল। সে প্রায় দশ-এগারো বছর হতে চলল। দিদি-জামাইবাবু এলে ভরত খুশিই হয়। অন্তত কথা বলার লোক পায়। তার “দাদা”-কে সে আর কথা বলার জন্য পায় কতক্ষণ?
উঠে পড়েছিল শাক্য। এমন সময় মোবাইল বেজে উঠল। শাক্য ধরেই নিয়েছিল, দিদি। সে ফোন তুলে বলতে যাবে, “আসছি”, তার আগেই স্ক্রিনে দেখল ভেসে উঠেছি একেজি-র নাম। দেখেই সতর্ক হয়ে গেল সে। এই সময় একেজি-র ফোন আসা মানেই কোনো নতুন কেস, কিংবা পুরানো কেস যা আনসলভ্ড্ অবস্থায় লালবাজারের হাতে এসে পড়েছে। কিন্তু এমন কী কেস হতে পারে, যা আনসলভড্ কিংবা জটিল ? স্মরণাতীত কালের মধ্যে কাছাকাছি ঘটে যাওয়া এমন কোনো কেসের কথা তার মনে পড়ল না।
ফোন তুলেই সে বলল, “গুড ইভিনিং স্যার।”
“ইয়েস মাই ডিয়ার, গুড ইভিনিং!” একেজি-র ভরাট গলা শোনা গেল, “তুমি অফিসে আছো, না কী বেরিয়ে পড়েছ?”
“অফিসেই আছি। তবে বেরুবো ভাবছিলাম!”
“বেরনোর আগে একবার আমার চেম্বারে এলে ভালো হয়। আসবে?”
“ইয়েস স্যার! কিন্তু কী ব্যাপার? কোনো জটিল ধাঁধা?”
“হুঁ!” চিন্তিত শোনালো একেজি-র গলা, “জটিল এবং ভয়ানক! আমি বুঝতে পারছি না একে কোন খাতে ফেলবো! ভৌতিক ব্যাপার, না কী মানুষের কীর্তি!”
“মানে?” অবাক হল শাক্য।
উঠে পড়েছিল শাক্য। এমন সময় মোবাইল বেজে উঠল। শাক্য ধরেই নিয়েছিল, দিদি। সে ফোন তুলে বলতে যাবে, “আসছি”, তার আগেই স্ক্রিনে দেখল ভেসে উঠেছি একেজি-র নাম। দেখেই সতর্ক হয়ে গেল সে। এই সময় একেজি-র ফোন আসা মানেই কোনো নতুন কেস, কিংবা পুরানো কেস যা আনসলভ্ড্ অবস্থায় লালবাজারের হাতে এসে পড়েছে। কিন্তু এমন কী কেস হতে পারে, যা আনসলভড্ কিংবা জটিল ? স্মরণাতীত কালের মধ্যে কাছাকাছি ঘটে যাওয়া এমন কোনো কেসের কথা তার মনে পড়ল না।
ফোন তুলেই সে বলল, “গুড ইভিনিং স্যার।”
“ইয়েস মাই ডিয়ার, গুড ইভিনিং!” একেজি-র ভরাট গলা শোনা গেল, “তুমি অফিসে আছো, না কী বেরিয়ে পড়েছ?”
“অফিসেই আছি। তবে বেরুবো ভাবছিলাম!”
“বেরনোর আগে একবার আমার চেম্বারে এলে ভালো হয়। আসবে?”
“ইয়েস স্যার! কিন্তু কী ব্যাপার? কোনো জটিল ধাঁধা?”
“হুঁ!” চিন্তিত শোনালো একেজি-র গলা, “জটিল এবং ভয়ানক! আমি বুঝতে পারছি না একে কোন খাতে ফেলবো! ভৌতিক ব্যাপার, না কী মানুষের কীর্তি!”
“মানে?” অবাক হল শাক্য।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/05/Health-2.jpg)
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-২২: স্টেরয়েড বড় ভয়ঙ্কর ওষুধ?
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/06/curd.jpg)
হেলদি ডায়েট: টক দই স্বাস্থ্যকর, তবে খাওয়ার সময় এই সব নিয়ম না মানলেই বাড়বে বিপদ
“ধরো, এমন কোনো কেস যদি তোমার হাতে এসে পড়ে শাক্য, যেখানে তুমি দিশেহারা হয়ে যাও যে, সেটা একটা সুপারন্যাচারাল ব্যাপার, যা অনেক যুগ ধরে ঘটে আসছে, তখন তুমি কী ভাবে দেখবে ঘটনাটিকে?”
“সুপারন্যাচারাল ব্যাপার?”
“হ্যাঁ। লোকাল থানা অন্তত সে রকমই রিপোর্ট দিয়েছে। আর একজন সরকারি ডাক্তার তিনিও একটা স্টেটমেন্ট দিয়েছেন তাঁর এক পেশেন্টের ব্যাপারে, যেটা শুনলে তুমি হতবাক হয়ে যাবে। আমি বিভ্রান্ত বোধ করছি। তুমি তো জানো, তা না হলে আমি আমার তরুণ তুর্কীদের খাটাই না!”
“জানি স্যার। সেজন্য নয়। আপনার দেওয়া কাজ করতে পারলে বেশ ভালোই লাগে আমার। আপনি তো জানেন, এ সমস্ত কেসে মাথা ঘামিয়ে আমি মজা পাই। ঠিক যেমন পেতাম ফিজিক্স নিয়ে এমএসসি করার সময়। কিন্তু আমি অবাক হচ্ছি, এই টোয়েন্টিফাস্ট সেঞ্চুরিতে পৌঁছেও লালবাজারকে এমন একতা কেসের ছানবিন করতে হচ্ছে, যেখানে বলা হচ্ছে, কোনও সুপারন্যাচারাল থিংস জড়িত আছে। আর লোকাল থানার ব্যাপারে যেটুকু হিন্টস দিলেন, তাতে মনে হচ্ছে, তারা হাত গুটিয়ে বসে আছে যে এটা পুলিশের কেসই নয়। ওঝা-টোঝার মতো বুজরুকদের ব্যাপার। এতেই অবাক হচ্ছি!”
“আমিও হয়েছি। তবে অন্যদিক থেকে চাপ আসছে। ওই স্পট থেকে একজন মিসিং হয়েছে। তার পরিচিতর আত্মীয় আবার তোমার এক বস। বুঝতেই পারছো, এটা ডিপার্টমেন্টের ইজ্জতের সওয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন।”
“আত্মীয়? কে বলুন তো?”
“এসো। বলছি।” ফোন ছেড়ে দিলেন একেজি।
শাক্য চিন্তিত মুখে অতি দ্রুত তাঁর চেম্বারের দিকে হাঁটা দিল। —চলবে
“সুপারন্যাচারাল ব্যাপার?”
“হ্যাঁ। লোকাল থানা অন্তত সে রকমই রিপোর্ট দিয়েছে। আর একজন সরকারি ডাক্তার তিনিও একটা স্টেটমেন্ট দিয়েছেন তাঁর এক পেশেন্টের ব্যাপারে, যেটা শুনলে তুমি হতবাক হয়ে যাবে। আমি বিভ্রান্ত বোধ করছি। তুমি তো জানো, তা না হলে আমি আমার তরুণ তুর্কীদের খাটাই না!”
“জানি স্যার। সেজন্য নয়। আপনার দেওয়া কাজ করতে পারলে বেশ ভালোই লাগে আমার। আপনি তো জানেন, এ সমস্ত কেসে মাথা ঘামিয়ে আমি মজা পাই। ঠিক যেমন পেতাম ফিজিক্স নিয়ে এমএসসি করার সময়। কিন্তু আমি অবাক হচ্ছি, এই টোয়েন্টিফাস্ট সেঞ্চুরিতে পৌঁছেও লালবাজারকে এমন একতা কেসের ছানবিন করতে হচ্ছে, যেখানে বলা হচ্ছে, কোনও সুপারন্যাচারাল থিংস জড়িত আছে। আর লোকাল থানার ব্যাপারে যেটুকু হিন্টস দিলেন, তাতে মনে হচ্ছে, তারা হাত গুটিয়ে বসে আছে যে এটা পুলিশের কেসই নয়। ওঝা-টোঝার মতো বুজরুকদের ব্যাপার। এতেই অবাক হচ্ছি!”
“আমিও হয়েছি। তবে অন্যদিক থেকে চাপ আসছে। ওই স্পট থেকে একজন মিসিং হয়েছে। তার পরিচিতর আত্মীয় আবার তোমার এক বস। বুঝতেই পারছো, এটা ডিপার্টমেন্টের ইজ্জতের সওয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন।”
“আত্মীয়? কে বলুন তো?”
“এসো। বলছি।” ফোন ছেড়ে দিলেন একেজি।
শাক্য চিন্তিত মুখে অতি দ্রুত তাঁর চেম্বারের দিকে হাঁটা দিল। —চলবে
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel) – পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।