অলঙ্করণ: সৌমি দাসমণ্ডল।
রিমিতার ঘুম ভোরবেলার দিকে ভেঙে গেল। অনেক রাত হয়েছিল কাল। সমস্ত ঝঞ্ঝাট, ট্রেন ও বাসযাত্রার ক্লান্তি, তার উপর পুলিশের হ্যাপা—সব মিলিয়ে দেহ-মন ক্লান্ত ছিল। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল, তা সে নিজেও জানে না। খায়ওনি ভালো করে। ইচ্ছেই করছিল না খেতে। খাবার দেখলে বরং বমি পাচ্ছিল তার। পূষণ ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিল, জোর করেনি তাকে। কোনও মতে এক-আধ টুকরো কাবাব গলা দিয়ে পেটে নেমেছিল তার। বাকিটা কী হয়েছে সে জানে না। পূষণও খুব আপসেট ছিল।
এখানে আসার পরিকল্পনা সেই-ই করেছিল। কোনও এক গ্রুপে এই পিশাচ পাহাড় ট্যুরের প্রশংসা পড়েই সে সিদ্ধান্ত নেয় এইরকম একটা রোম্যান্টিক প্লেসে না এলে জীবনই বৃথা। অতএব, শুভস্য শীঘ্রম্—এই বিবেচনায় দ্রুত আসার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। হাতে সময় কম, দু’দিনই সই। অফিসে ছুটি চাইলে বড়জোর আর একদিন পাওয়া যাবে, কিন্তু ছুটিগুলিকে এখনই নষ্ট করতে চাইছিল না সে। অতএব উইকএন্ডের সামান্য দু’দিন নিজেদের মতো করে কাটানোর সিদ্ধান্ত নেয় তারা। আগেও যেমন নিয়েছে। কে জানত, সেই ট্যুর এমন বিভীষিকায় পরিণত হবে?
কাল রাতেই ভেবেছিল রিমিতা, মামাকে ফোন করবে। তার মামা একেজি লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান। বাইরে রাশভারি মানুষ, কিন্তু ভিতরে ভিতরে অসম্ভব নরম-কোমল এবং স্নেহ-ভালোবাসায় পূর্ণ। মামার একমাত্র মেয়ে আমেরিকায় থাকে। জামাই এবং দিদি দুজনেই আই-টি-তে আছে। ওদের দু’টি ছেলে-মেয়ে। তারাও বেশ বড় হয়ে গিয়েছে। দু’ বছরে একবার যান মামা-মামি। নাতি-নাতনি অন্ত প্রাণ। আর ভালোবাসেন রিমিতাকে। রিমিতা তাঁর একমাত্র বোনের মেয়ে। তা-ও সে বোন আবার অনেক ছোট। চার ভাইয়ের পর এক বোন। অনেক আদরের। নিজের মেয়ের না থাকার অভাব এখানে মামা-মামি পূরণ করে নেন রিমিতাকে দিয়েই। পূষণকে তাঁদের দুজনের পছন্দ।
অন্যান্যবার পূষণের সঙ্গে কোথাও এই রকম ট্যুরে গেলে মামা-মামিকে বলে আসে সে। না হলে তাঁরা রাগ করেন। দুশ্চিন্তাও করেন। মামা বলেন, “পুলিশ ফোর্সে আছি বলেই তো জানি মামণি, দিনকাল এখন খুব খারাপ। কখন যে কী হয়ে যায়, তা কেউ বলতে পারে না। আর মেয়েদের জন্য এই পৃথিবীর কোন প্রান্তই সুরক্ষিত নয়। নেকড়ে-হায়না সব ঘুরে বেড়াচ্ছে দাঁত-নখ লুকিয়ে। একটু সুযোগ পেয়েছে কী দাঁত-নখ বার করতে দেরি করবে না! সেই কারণেই চিন্তা করি রে মামণি। তুই আমার ভাগ্নি বটে, কিন্তু আসলে তো তুই আমার মেয়েই। আমার ছোট মেয়ে! ফলে যেখানেই যাবি এই বাবা-মাকে বলে যাস।”
এখানে আসার পরিকল্পনা সেই-ই করেছিল। কোনও এক গ্রুপে এই পিশাচ পাহাড় ট্যুরের প্রশংসা পড়েই সে সিদ্ধান্ত নেয় এইরকম একটা রোম্যান্টিক প্লেসে না এলে জীবনই বৃথা। অতএব, শুভস্য শীঘ্রম্—এই বিবেচনায় দ্রুত আসার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। হাতে সময় কম, দু’দিনই সই। অফিসে ছুটি চাইলে বড়জোর আর একদিন পাওয়া যাবে, কিন্তু ছুটিগুলিকে এখনই নষ্ট করতে চাইছিল না সে। অতএব উইকএন্ডের সামান্য দু’দিন নিজেদের মতো করে কাটানোর সিদ্ধান্ত নেয় তারা। আগেও যেমন নিয়েছে। কে জানত, সেই ট্যুর এমন বিভীষিকায় পরিণত হবে?
কাল রাতেই ভেবেছিল রিমিতা, মামাকে ফোন করবে। তার মামা একেজি লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান। বাইরে রাশভারি মানুষ, কিন্তু ভিতরে ভিতরে অসম্ভব নরম-কোমল এবং স্নেহ-ভালোবাসায় পূর্ণ। মামার একমাত্র মেয়ে আমেরিকায় থাকে। জামাই এবং দিদি দুজনেই আই-টি-তে আছে। ওদের দু’টি ছেলে-মেয়ে। তারাও বেশ বড় হয়ে গিয়েছে। দু’ বছরে একবার যান মামা-মামি। নাতি-নাতনি অন্ত প্রাণ। আর ভালোবাসেন রিমিতাকে। রিমিতা তাঁর একমাত্র বোনের মেয়ে। তা-ও সে বোন আবার অনেক ছোট। চার ভাইয়ের পর এক বোন। অনেক আদরের। নিজের মেয়ের না থাকার অভাব এখানে মামা-মামি পূরণ করে নেন রিমিতাকে দিয়েই। পূষণকে তাঁদের দুজনের পছন্দ।
অন্যান্যবার পূষণের সঙ্গে কোথাও এই রকম ট্যুরে গেলে মামা-মামিকে বলে আসে সে। না হলে তাঁরা রাগ করেন। দুশ্চিন্তাও করেন। মামা বলেন, “পুলিশ ফোর্সে আছি বলেই তো জানি মামণি, দিনকাল এখন খুব খারাপ। কখন যে কী হয়ে যায়, তা কেউ বলতে পারে না। আর মেয়েদের জন্য এই পৃথিবীর কোন প্রান্তই সুরক্ষিত নয়। নেকড়ে-হায়না সব ঘুরে বেড়াচ্ছে দাঁত-নখ লুকিয়ে। একটু সুযোগ পেয়েছে কী দাঁত-নখ বার করতে দেরি করবে না! সেই কারণেই চিন্তা করি রে মামণি। তুই আমার ভাগ্নি বটে, কিন্তু আসলে তো তুই আমার মেয়েই। আমার ছোট মেয়ে! ফলে যেখানেই যাবি এই বাবা-মাকে বলে যাস।”
কিন্তু এবার পিশাচ পাহাড়ে আসার ব্যাপারটা এত দ্রুত ঘটেছে যে মামাকে আর বলে আসার সুযোগ হয়নি তার। এখন মামাকে সে যদি বলে তার এহেন বিপদের কথা, তাহলে মামা প্রথমেই খুব রেগে যাবেন, তারপরে অভিমান করবেন। যদিও একইসঙ্গে যেখানে যা ফোন করার করে দেবেন, সঙ্গে সঙ্গে হয়তো ওই থানার অফিসারই ছুটে এসে নিজের দায়িত্বে তাকে আর পূষণকে কলকাতায় পৌঁছে দেবেন। কিন্তু সে দ্বিধায় পড়ে মামাকে জানাতে পারছিল না। কেমন একটা অপরাধবোধ কাজ করছিল তার মধ্যে।
পাশেই শুয়ে আছে পূষণ। একখানা বক্সার শর্টস আর বুকে লাভ মি ফরএভার লেখা একখানা টি-শার্ট পরা। গায়ে একখানা ব্ল্যাঙ্কেট জড়িয়েই শুয়েছিল, এখন তা পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়ে আছে। পূষণ কুঁকড়ে শুয়ে আছে। বাইরের ঠান্ডা ঘরের মধ্যে থেকেই মালুম পড়ছে ভালোমতোই। মনে করার চেষ্টা করল রিমিতা, শেষ কবে বেড়াতে গিয়ে এইরকম আলাদা আলাদা ব্ল্যাঙ্কেট জড়িয়ে শুয়ে থেকেছে তারা? মনে পড়ল না তার। সে যদিও বা চেয়েছে, পূষণ কখনও আলাদা ব্ল্যাঙ্কেটে তাকে শুতেই দেয়নি। বরং বলেছে, “আরে তুমি তো আলাদা ব্ল্যাঙ্কেটেই ঘুমাবে!”
“আর তুমি? ঠান্ডায় সারারাত কাঁপবে শুয়ে শুয়ে?”
“তা কেন? আমিও ব্ল্যাঙ্কেট জড়াবো!”
“মানে?”
“মানে হল গিয়ে, তুমি ব্ল্যাঙ্কেট জড়িয়েই ঘুমাবে, যেমনটা তুমি চাও। আর আমিও ব্ল্যাঙ্কেট জড়িয়েই ঘুমাবো। কিন্তু তোমার ব্ল্যাঙ্কেট আর আমার ব্ল্যাঙ্কেট তো আর এক নয়!”
“কী সব বকছো উল্টপাল্টা?”
“স্যুইটহার্ট! তোমার ওই তুচ্ছ ব্ল্যাঙ্কেটকে গায়ে জড়াবে? আমি তো আমার ব্ল্যাঙ্কেট গায়ে জড়াবো। আর সেই ব্ল্যাঙ্কেট হচ্ছো তুমি!” বলে তাকে জড়িয়ে ধরে আচমকাই তার বুকে মুখ ঘষতে ঘষতে বলেছে, “এতে যা উষ্ণতা পাই আমি, তা কি কোনও বাজারের ব্ল্যাঙ্কেট দিতে পারে?”
“অসভ্য !” বলেও বুকে, পেটে পূষণের ভালোবাসার অত্যাচারে আনন্দ পেয়েছে সে।
পাশেই শুয়ে আছে পূষণ। একখানা বক্সার শর্টস আর বুকে লাভ মি ফরএভার লেখা একখানা টি-শার্ট পরা। গায়ে একখানা ব্ল্যাঙ্কেট জড়িয়েই শুয়েছিল, এখন তা পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়ে আছে। পূষণ কুঁকড়ে শুয়ে আছে। বাইরের ঠান্ডা ঘরের মধ্যে থেকেই মালুম পড়ছে ভালোমতোই। মনে করার চেষ্টা করল রিমিতা, শেষ কবে বেড়াতে গিয়ে এইরকম আলাদা আলাদা ব্ল্যাঙ্কেট জড়িয়ে শুয়ে থেকেছে তারা? মনে পড়ল না তার। সে যদিও বা চেয়েছে, পূষণ কখনও আলাদা ব্ল্যাঙ্কেটে তাকে শুতেই দেয়নি। বরং বলেছে, “আরে তুমি তো আলাদা ব্ল্যাঙ্কেটেই ঘুমাবে!”
“আর তুমি? ঠান্ডায় সারারাত কাঁপবে শুয়ে শুয়ে?”
“তা কেন? আমিও ব্ল্যাঙ্কেট জড়াবো!”
“মানে?”
“মানে হল গিয়ে, তুমি ব্ল্যাঙ্কেট জড়িয়েই ঘুমাবে, যেমনটা তুমি চাও। আর আমিও ব্ল্যাঙ্কেট জড়িয়েই ঘুমাবো। কিন্তু তোমার ব্ল্যাঙ্কেট আর আমার ব্ল্যাঙ্কেট তো আর এক নয়!”
“কী সব বকছো উল্টপাল্টা?”
“স্যুইটহার্ট! তোমার ওই তুচ্ছ ব্ল্যাঙ্কেটকে গায়ে জড়াবে? আমি তো আমার ব্ল্যাঙ্কেট গায়ে জড়াবো। আর সেই ব্ল্যাঙ্কেট হচ্ছো তুমি!” বলে তাকে জড়িয়ে ধরে আচমকাই তার বুকে মুখ ঘষতে ঘষতে বলেছে, “এতে যা উষ্ণতা পাই আমি, তা কি কোনও বাজারের ব্ল্যাঙ্কেট দিতে পারে?”
“অসভ্য !” বলেও বুকে, পেটে পূষণের ভালোবাসার অত্যাচারে আনন্দ পেয়েছে সে।
আরও পড়ুন:
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৩০: থানায়—সময়: সকাল
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩৬: গলা সাধলেই লতাকণ্ঠী?
কাল রাতেও হয়তো এমনই কোন নতুন ভালোবাসাবাসির প্ল্যান ছিল তার। নিত্য-নতুন টেকনিক সে মাথা থেকে আবিষ্কার করে রীতিমতো। তারপর এই ট্যুরে গিয়ে সেগুলি হাতে-কলমে করে দেখায়। বলে, “মাথার মধ্যে যা জন্মায় তা থিয়োরি, আর হোটেলের রুমে কিংবা বাথটাবে কিংবা নির্জন জঙ্গলে যা হয়, তা প্র্যাক্টিক্যাল! দুটির দু’রকম মেজাজ স্যুইটহার্ট!” বলেই যাত্রাদলের অভিনয়ের ভঙ্গিতে দুটি হাত তার কাঁধের উপরে রেখে বলবে হয়তো, “তুমি কী বুঝবে রমণী? তুমি তো কখনও ভালোবেসে ভিখারি হওনি!”
মনে পড়তেই হাসি পেল রিমিতার। কাল সন্ধ্যের পর থেকে এই প্রথম। পূষণের দিকে মায়াভরা চোখে তাকালো সে। আলতো হাতে পায়ের কাছ থেকে ব্ল্যাঙ্কেট তুলে টেনে দিল গলা পর্যন্ত। সামান্য নড়াচড়া করল পূষণ। তারপর ব্ল্যাঙ্কেটের ওম পেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল আবার। কাল রাতে কোনওরকমে স্নান সেরে রাতপোশাক পরে ঘুমিয়ে পড়েছিল সে। পোশাকের সামনের নটটা বাঁধতে বাঁধতে সে উঠে দাঁড়াল। নিঃশব্দে, যাতে পূষণের ঘুম না ভাঙে। দু’ পাও এগোয়নি, হঠাৎ পিছন দিক থেকে কেউ তার পোশাক ধরে টান দিল। অবাক হয়ে ঘুরেই দেখে, পূষণ ! ঘুম ঘুম চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে। বাঁ হাতে তার রাতপোশাকের এক প্রান্ত মুঠি করে ধরে রেখেছে।
রিমিতা লজ্জিত হল। নিশ্চয়ই সে অসাবধানতাবশত শব্দ করে ফেলেছে। পূষণের ঘুম খুব পাতলা, ফলে তার জেগে ওঠা স্বাভাবিক। রিমিতা বলল, “স্যরি। আমি তোমার ঘুম ভাঙিয়ে ফেললাম। যদিও আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম, যাতে শব্দ না হয়, তবুও… !”
মনে পড়তেই হাসি পেল রিমিতার। কাল সন্ধ্যের পর থেকে এই প্রথম। পূষণের দিকে মায়াভরা চোখে তাকালো সে। আলতো হাতে পায়ের কাছ থেকে ব্ল্যাঙ্কেট তুলে টেনে দিল গলা পর্যন্ত। সামান্য নড়াচড়া করল পূষণ। তারপর ব্ল্যাঙ্কেটের ওম পেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল আবার। কাল রাতে কোনওরকমে স্নান সেরে রাতপোশাক পরে ঘুমিয়ে পড়েছিল সে। পোশাকের সামনের নটটা বাঁধতে বাঁধতে সে উঠে দাঁড়াল। নিঃশব্দে, যাতে পূষণের ঘুম না ভাঙে। দু’ পাও এগোয়নি, হঠাৎ পিছন দিক থেকে কেউ তার পোশাক ধরে টান দিল। অবাক হয়ে ঘুরেই দেখে, পূষণ ! ঘুম ঘুম চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে। বাঁ হাতে তার রাতপোশাকের এক প্রান্ত মুঠি করে ধরে রেখেছে।
রিমিতা লজ্জিত হল। নিশ্চয়ই সে অসাবধানতাবশত শব্দ করে ফেলেছে। পূষণের ঘুম খুব পাতলা, ফলে তার জেগে ওঠা স্বাভাবিক। রিমিতা বলল, “স্যরি। আমি তোমার ঘুম ভাঙিয়ে ফেললাম। যদিও আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম, যাতে শব্দ না হয়, তবুও… !”
আরও পড়ুন:
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৪৭: সে কোন প্রভাতে হইল মোর সাধের ‘নবজন্ম’
কলকাতার পথ-হেঁশেল, পর্ব-৪: হাজরা মোড়ে নাম না জানা কচুরিখানা
পূষণ আধো জড়ানো গলায় বলল, “স্যুইটহার্ট! বাইরের শব্দে কী এসে যায়? তুমি আমার কাছ থেকে দূরে গেলে আমি পাগলা ঘন্টির আওয়াজ শুনতে পাই কানে, আর যখন বুকে জড়িয়ে রাখো, তখন মনে হয় আমি কোন নির্জন আদিম পৃথিবীতে কোনও নাসপাতি গাছের তলায়, কেবল তোমার সঙ্গে আছি। চারদিকে আর কোন শব্দ নেই, মায়া নেই, অপরূপ নেই! ফলে তুমি উঠে গেলে আমার ঘুম ভাঙবেই! ওই যে বললাম, পাগলা ঘন্টির আওয়াজ!”
রিমিতা হেসে ফেলল। “বাব্বা! তুমি পারোও বটে। অফিসে কাজ না করে কবিতা লিখতে পারতে। ঘুম ভেঙে উঠেই যা কাব্য লিখতে বসেছ!”
“তোমাকে দেখলেই আমার মাথার মধ্যে হাজার হাজার কবিতা প্রজাপতির মতো ওড়াউড়ি করে স্যুইটহার্ট! আমি কোনওদিন না পাগল হয়ে যাই!”
“ফিউচার টেন্স নয়, এটা পাস্ট টেন্স হবে। অনেক আগেই পাগল হয়ে গিয়েছ। এখন প্রেজেন্ট কন্টিনিউয়াস টেন্সের পর্ব চলছে।”
“চলতে আর দিচ্ছ কই? উঠেই চলে যাচ্ছ! জানো তো, জাপানিরা ব্রাহ্ম মুহূর্তে সেক্স করে,তাদের ধারণা, এতে সূর্যের মতো শক্তিশালী ও রূপবান সন্তানের জন্ম হয়! আর তোমার সঙ্গে তো স্বয়ং সূর্যদেবই আছে!”
“সূর্যদেব না হাতি! জাপানিরা কী করে তা আমি জানি না, আমার জানার দরকার নেই। ছাড় এখন আমায়, আমি ওয়াশরুমে যাবো।”
“একা একা?”
“নয়তো কি আমি এই রিসর্টের সবাইকে নিয়ে যাবো ওয়াশ রুমে?”
“সবাইকে কেন? সবাই ওর কী মর্ম বুঝবে? কেবল আমি আর তুমি! কাল রাতের ঘাটতিটা পূরণ করে দিতে হবে না। এতগুলো কনডোম কিনে আনলাম, তুমিও নিশ্চয়ই ব্যাগের মধ্যে পিল এনেছ, আর সেগুলো পকেটে ভরেই কলকাতা ফিরে যাবো?”
রিমিতা হেসে ফেলল। “বাব্বা! তুমি পারোও বটে। অফিসে কাজ না করে কবিতা লিখতে পারতে। ঘুম ভেঙে উঠেই যা কাব্য লিখতে বসেছ!”
“তোমাকে দেখলেই আমার মাথার মধ্যে হাজার হাজার কবিতা প্রজাপতির মতো ওড়াউড়ি করে স্যুইটহার্ট! আমি কোনওদিন না পাগল হয়ে যাই!”
“ফিউচার টেন্স নয়, এটা পাস্ট টেন্স হবে। অনেক আগেই পাগল হয়ে গিয়েছ। এখন প্রেজেন্ট কন্টিনিউয়াস টেন্সের পর্ব চলছে।”
“চলতে আর দিচ্ছ কই? উঠেই চলে যাচ্ছ! জানো তো, জাপানিরা ব্রাহ্ম মুহূর্তে সেক্স করে,তাদের ধারণা, এতে সূর্যের মতো শক্তিশালী ও রূপবান সন্তানের জন্ম হয়! আর তোমার সঙ্গে তো স্বয়ং সূর্যদেবই আছে!”
“সূর্যদেব না হাতি! জাপানিরা কী করে তা আমি জানি না, আমার জানার দরকার নেই। ছাড় এখন আমায়, আমি ওয়াশরুমে যাবো।”
“একা একা?”
“নয়তো কি আমি এই রিসর্টের সবাইকে নিয়ে যাবো ওয়াশ রুমে?”
“সবাইকে কেন? সবাই ওর কী মর্ম বুঝবে? কেবল আমি আর তুমি! কাল রাতের ঘাটতিটা পূরণ করে দিতে হবে না। এতগুলো কনডোম কিনে আনলাম, তুমিও নিশ্চয়ই ব্যাগের মধ্যে পিল এনেছ, আর সেগুলো পকেটে ভরেই কলকাতা ফিরে যাবো?”
আরও পড়ুন:
যত মত, তত পথ, পর্ব-৪: শ্রীরামকৃষ্ণের কথা রবীন্দ্রনাথের গান
পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-২০: দু’জন সন্ন্যাসী এক জায়গায় হলেই সাধন-ভজন ভুলে তাঁরা জগৎ-সংসারের কথায় মগ্ন হয়ে যান
“তুমি শুধু পাগল নয়, আস্ত শয়তান একটা!” ছদ্ম কোপে পূষণের দিকে তাকায় রিমিতা।
“পাগলামির আর কী দেখলে? আর শয়তানি পরে দেখাচ্ছি। আপাততো চলো ওয়াশরুম সেক্স করে আসা যাক!” বলে বছানা ছেড়ে তড়াক করে উঠে রিমিতাকে পাঁজকোলা করে তুলে নেয় পূষণ। রিমিতা ছদ্ম কোপে পা নাড়ে, কিন্তু দুই হাত দিয়ে পূষণের গলাও জড়িয়ে রাখে।
রিমিতা কোনওরকমে বলে, “অ্যাই শোনো, আমি এখন এই হিম ঠান্ডা জলে স্নান করতে পারবো না। আগে ভালো করে পাওয়ার আসুক। গিজার না চালিয়ে এই ঠান্ডায় স্নান করলে আমাকে আর দেখতে হবে না। জ্বর হবেই হবে !”
পূষণ বলল, “স্নান কে করবে এই সাত-সকালে? বললাম না, আমরা সেক্স করতে যাচ্ছি! ওয়াশরুম সেক্স এখন আর ওই সব স্নান-টানের কথা ভেবো না, এখন টাইম অনলি ফর ফান-এর!”
ঠিক সেই সময়েই নীচে একদল লোক ছোটাছুটি করছিল। কাপাডিয়া হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বাইরের ঠান্ডাতেও কুলকুল করে ঘামছেন তিনি। কী শুরু হল পিশাচ পাহাড় রিসর্টে। দু’-দুটো লাশ? একজন তো বোঝাই যাচ্ছে সুবল, কিন্তু আর একজন?—চলবে।
“পাগলামির আর কী দেখলে? আর শয়তানি পরে দেখাচ্ছি। আপাততো চলো ওয়াশরুম সেক্স করে আসা যাক!” বলে বছানা ছেড়ে তড়াক করে উঠে রিমিতাকে পাঁজকোলা করে তুলে নেয় পূষণ। রিমিতা ছদ্ম কোপে পা নাড়ে, কিন্তু দুই হাত দিয়ে পূষণের গলাও জড়িয়ে রাখে।
রিমিতা কোনওরকমে বলে, “অ্যাই শোনো, আমি এখন এই হিম ঠান্ডা জলে স্নান করতে পারবো না। আগে ভালো করে পাওয়ার আসুক। গিজার না চালিয়ে এই ঠান্ডায় স্নান করলে আমাকে আর দেখতে হবে না। জ্বর হবেই হবে !”
পূষণ বলল, “স্নান কে করবে এই সাত-সকালে? বললাম না, আমরা সেক্স করতে যাচ্ছি! ওয়াশরুম সেক্স এখন আর ওই সব স্নান-টানের কথা ভেবো না, এখন টাইম অনলি ফর ফান-এর!”
ঠিক সেই সময়েই নীচে একদল লোক ছোটাছুটি করছিল। কাপাডিয়া হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বাইরের ঠান্ডাতেও কুলকুল করে ঘামছেন তিনি। কী শুরু হল পিশাচ পাহাড় রিসর্টে। দু’-দুটো লাশ? একজন তো বোঝাই যাচ্ছে সুবল, কিন্তু আর একজন?—চলবে।
* ধারাবাহিক উপন্যাস (novel) – পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক (Pishach paharer atanka) : কিশলয় জানা (Kisalaya Jana) বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজ।