অডিয়ো ক্লিপ (পর্ব-৬)
কী অদ্ভুতকাণ্ড, ফোনটা মিস্টার সরখেল করলেন। ফোন করলেন অনেকটা রাতেই। সরখেল মানুষটি ব্যতিক্রমী। নিছক কর্তব্যপালন করেন না। একটা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে একজন সরকারি কর্মচারীর কাজ খাতায়-কলমে যেখানে শেষ হয় সেখান থেকে আরও এগিয়ে গিয়ে কিছু করার চেষ্টা করেন। ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্টের বড়কর্তা ভৈরব চক্রবর্তী নিশ্চয়ই এই মানুষটির চাকরির পদোন্নতি ঘটাবেন না। তিনি তদন্তের ব্যাপারে কিছু খুঁজে বার করলে হয়তো খুশি হতে পারেন, কিন্তু ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে সহৃদয় ব্যবহারের কোনও ফায়দা উনি পাবেন না। লোকটির সম্বন্ধে কিছুই জানে না নীলাঞ্জন, কিন্তু যেন স্পষ্ট আন্দাজ করতে পারে সরখেল কোনও ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়েননি। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় বসার কথাও ভাবেননি। হয়তো এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে কার্ড করা ছিল। একটা সময় পশ্চিমবাংলায় এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে স্বচ্ছভাবেই শিক্ষিত যুবক-যুবতীর চাকরি হত। হয়ত সেভাবেই পুলিশের চাকরি পেয়েছিলেন।
—খুব অড সময়ে ফোন করলাম। আপনাকে একবার আসতে হবে। আপনার দুই বন্ধুকেও ফোন করেছি। ছাড়ছি।
মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৭২: বনবাসজীবনে প্রকৃতির প্রভাব কি রামের দুঃখকে মুছে দিয়েছিল?
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬৩: বাবু ডাক্তার ও ‘ডাক্তারবাবু’
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৫৬: নান্দনিক শিক্ষায় উৎসাহী ছিলেন শ্রীমা
পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৫০: পুত্রস্নেহে অন্ধ হলে পিতাকেও ধৃতরাষ্ট্রের মতো দুর্দশা ভোগ করতে হয়
হাসপাতালের সামনে দেখল বেশ কয়েকটা গাড়ি! এত রাতে এখানে এতও গাড়ি কেন? ক্যাবটা একটু আগেই ছেড়ে দিল নীলাঞ্জন। হঠাৎ নজরে এল নিউজ টিভি ওবি ভ্যান, সুচেতার অফিসের লোকেরা কি রাতে ডিউটির পর এসেছে? পুলিশের দুটো গাড়ি হয়তো সুচেতার কেসটা প্রশাসন হাই প্রোফাইল কেস হিসেবে দেখছে। আর সুচেতা তো নিঃসন্দেহে সেলিব্রিটি মৃদুল বা ঋষভকে দেখতে পাচ্ছে না সরখেলবাবুকেও।
হঠাৎ ধৃতিমান এগিয়ে এসে কাঁধে হাত রাখলেন। ধৃতিমানকে এই সময়ে দেখে খুব আশ্চর্য হল নীলাঞ্জন।
—আপনি এত রাতে?
গীতা: সম্ভবামি যুগে যুগে, পর্ব-৩: কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে
বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-৩: টলস্টয় ও সোফিয়া—সে কি কেবলই যাতনাময়…/৩
—আপনি ভিতরে চলুন এখানে ভিড় হয়ে যাবে।
—কেন কী হয়েছে?
এতক্ষণ নীলাঞ্জন সত্যি সত্যি জীবনের ভয়ঙ্কর সত্যিটা আন্দাজ করতে পারেনি দু’ একজন অন-ক্যামেরা নিউজ-ইন্ট্রো শুরু করেছে। সেখান থেকে কয়েকটা কথা বুলেটের মতো নীলাঞ্জনের মস্তিষ্কে বিদ্ধ করল।
“অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি” …”সব চিকিৎসা ব্যর্থ করে…” কিছক্ষণ আগে আমাদের প্রিয় সহকর্মী” … নিজের সমস্ত শক্তি হারিয়ে ফেলে নীলাঞ্জন।
যখন অন্ধকার কেটে আবার চোখে আলো পড়ল তখন সে হাসপাতালে বোধহয় ক্লিনিকের বেডে শুয়ে, আশেপাশে অনেকগুলো উৎকণ্ঠিত মুখ। ধীরে ধীরে উঠে বসল নীলাঞ্জন। বুঝতে পারল এই মূহূর্ত থেকে জীবনটা পাল্টে গেল। মৃদুল জানাল ধৃতিমান ধরে ফেলেছিল না হলে নীলাঞ্জনের চোট লাগতে পারতো।
মৃদুলরা ভিতরের দুমড়ে যাওয়া রক্তাক্ত ক্ষত দেখতে পাচ্ছে না!
—আমি সুচেতার কাছে যাবো।
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৫৮: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা— বাবুর ও বন জুঁই
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯৬: স্রোতস্বিনী পদ্মায় লাফিয়ে কবির কটকি চটি-উদ্ধার
পুলিশের তরফ থেকে সঙ্গত কারণেই ষড়যন্ত্রের দিকটা গোপন রাখা হয়েছে। সুচেতাকে নিয়ে হাসপাতাল ছাড়ার আগে ধৃতিমানের সঙ্গে আবার দেখা। ধৃতিমান মুখ কিছু বললেন না, গভীরভাবে আলিঙ্গন করে ফিসফিস করে বললেন—
—সান্ত্বনা দেওয়ার কোনও ভাষা নেই। তবে ন্যায়বিচার দেওয়ার চেষ্টা করব।
নীলাঞ্জন হঠাৎ বলে উঠল—
—সুচেতা চলে যাবার পর কেসটা আরও স্ট্রং হল বলুন? ধারা ৩০২
তাই না?
ধৃতিমান ভাবল, আইপিসি ৩০২, না কি হাতেহাতে পাতে গরম বিএনএস ১০৩?—চলবে।