সিন্নি: পর্ব-১২
—কী বললি? বিয়ে করবি? আমাকে?
—হ্যাঁ! আমি তোকে ভীষণ ভালোবাসি রীনা। তোকে কখনও বলতে
পারিনি।
—তবে আজ বললি কেন?
—আমি জানি তুইও আমাকে খুব ভালোবাসিস। এই দেখ আমাদের আজ সন্ধেবেলার পুরী যাওয়ার রেল টিকিট টু টায়ার এসি। বিশ্বাস কর তোর কোনও কষ্ট হবে না। নিজে না খেলেও রাজরানীর মতো রাখবো তোকে।
—রীণা চিৎকার করে উঠেছিল—
—এনাফ! জাস্ট স্টপ ইট অ্যান্ড গেট আউট। কখনও বলেছি আমি তোকে ভালোবাসি? কোন দুঃখে তোর মতো স্কুল না টপকানো ইলেকট্রিক মিস্ত্রিকে আমি বিয়ে করবো? আমার এমবিশন সম্বন্ধে
কোনও ধারণা আছে তোর? পচাপচা ছবিগুলো দেখে ডায়লগ মারছিস। নিজের ঘর সংসার চালাতে পারিস না? এর ওর বাড়িতে ইলেকট্রিকের দুটো ওয়ারিং করে আমাকে কেন একটা সাধারণ মেয়েকে বিয়ে করলেও খাওয়াতে পারবি না। সাহস কত, পুরীতে যাবে? টু টায়ার এসি? বিয়ে করবে? স্কাউন্ড্রেল কোথাকার!
রহস্য উপন্যাস: হ্যালো বাবু!, পর্ব-৩৩: রীনাকে নিয়ে পালিয়ে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে বিয়ের পরিকল্পনা ছিল প্রলয়ের
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯১: এক আলমারি বই : রাণুর বিয়েতে কবির উপহার
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৫১: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা—পশুর, ধুধুল ও হাবল
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৪৯: রসিক স্বভাব মা সারদা
পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৪৬: রাজার নিয়ন্ত্রণহীন অনুচরেদের কুকর্মের দায় রাজাকেই নিতে হয়
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৪৩: এক্সপায়ারি ডেটের ওষুধ খাবেন?
—রীনা মেয়েটা সাংঘাতিক কানিং। একে ইন্টালিজেন্স বা বুদ্ধিমত্তা বলে না। এটা মানুষ ঠকানো ধূর্ততা।
শ্রেয়ার অনুমান সত্যি হল। সত্যি মেয়েরা কমবয়সে ফেসরিডিং করতে পারে। প্রথম ১০-১৫ মিনিট একটানা শ্রেয়ার প্রশ্নের উত্তরে কোনও জবাব দেয়নি প্রলয়। দাঁতে দাঁত দিয়ে চোয়াল শক্ত করে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বসেছিল।
—দেখো প্রলয় আমি তোমায় সাহায্য করতে চাই?
এই একটা কথাই যেন এতক্ষণ ধরে দাঁত চেপে মুখে তালা দিয়ে থাকা প্রলয়ের ভেতরের সমস্ত বাঁধ ভেঙে দিল। সে চিৎকার করে বলে উঠল—
—দয়া করে আমাকে সাহায্য করার কথা বলবেন না। কারও সহানুভূতির দরকার নেই আমার! মেয়েদের বিশ্বাস করা যায় না। তারা পুরুষ মানুষকে ঠকায়। রীনা একটা মিথ্যুক। সে ঠগ। জোচ্চর। এই বলে সেহাউ হাউ করে কেঁদে ফেলল।
দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-২৬: কুসুমকুমারী দাশ—লক্ষ্মী সরস্বতীর যুগ্ম মূর্তি
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৬৯: আবার সত্যব্রত
—একটা ধূর্ত মেয়ের জন্য প্রলয়ের সারাটা জীবন এ ভাবে নষ্ট হয়ে যাবে, এটা ভাবতেই বড্ড খারাপ লাগছে। কোনও উপায় থাকলে আমি ওকে ছেড়ে দিতাম। প্রলয়কে দেখে বারবার আমার ছোটভাইয়ের কথা মনে হচ্ছে। জুভেনাইল আওতা থেকেও বেরিয়ে এসেছে!
শ্রেয়া আবার ইন্টারোগেশন রুমে ঢুকে প্রলয়ের জবানবন্দি নিতে বসলেন। আমি শ্রেয়াকে কিছুতেই বলতে পারলাম না, নিখিল সেন হত্যারহস্যের সমাধান আজও হয়নি। কারণ আমি মৃত নিরঞ্জন দেবের স্বপ্ন সফল করতে তাঁর মেয়ে মেডিকেল কলেজের কৃতীছাত্রী সংযুক্তা দেবের কোনও ক্ষতিহতে দিইনি। ‘উইকেন্ড এসকর্টস’ সেজে সংযুক্তা নিখিল সেনের ওপর বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিয়েছিল। সাহায্যকারী ছিলেন নিখিল সেনের স্ত্রী শ্রুতি সেন। তাকেও ছেড়ে দিয়েছিলাম, কারণ তাদের বিরুদ্ধের প্রমাণগুলো জমা করিনি।
প্রলয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল। সে শ্রেয়াকে বলেছিল তার সংসারটা শেষ হয়ে যাবে। মা তো আর ব্যবসাটা চালাতে পারবে না!
শ্রেয়া কথা রেখেছিলেন। নিজের ইনফ্লুয়েনস খাটিয়ে প্রলয়ের ব্যবসাটা অন্য একজনকে বিক্রি করিয়ে একটা মোটা টাকা প্রলয়ের মাকে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। আর এক মহিলা এনজিওতে তাঁর কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন শ্রেয়া।—চলবে।