স্কেচ: লেখক।
রথ দু’ রকম। সোজা রথ আর উল্টো রথ। সরস্বতী পুজোর পর শিশুসংঘের দ্বিতীয় ভেঞ্চার এটি। এতে খরচাপাতি বিশেষ নাই। প্যান্ডেল লাগে না। বড়সড় প্রতিমা কেনার তাগিদ নেই ফিবছর। রথ মোটামুটি একটা থাকলে হল। আর লাগবে সমমনস্ক কটি ‘শিশু’, কিছু ফুল বেলপাতা আর কটা নকুলদানা। একটা জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরামের মূর্তি থাকলে ভালো, না পোষালে শুধু জগন্নাথ, যদি সম্ভব হয়। মানে এগুলো হল এলিমেন্টারি। এর সঙ্গে স্বাদমতো ও সাধ্যমতো চাইনিজ টুনি, মার্বেল পেপারের শিকল, মোমবাতি, ঘণ্টা, ভেঁপু, ভুভুজেলা, কাঁসি, ঢোল ইত্যাদি। এ গুলো ডিজায়ারেবল।
আরও পড়ুন:
হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-১: রস নাই?
অনন্ত এক পথ পরিক্রমা, পর্ব-২৫: ধর্ম লাভ হলে পাথরের মূর্তিও প্রাণবন্ত হয়, প্রতিটি জীবে ঈশ্বরের উপস্থিতি অনুভূত হয়
যাইহোক, সবকিছু নিয়ে মোটামুটি সাড়ে পাঁচটা থেকে ছটার মধ্যে নগর পরিক্রমায় বেরিয়ে পড়তে হবে। নইলে লাভের বেলায় ঘণ্টা। কিছু দশ, কুড়ি আর কটা খুচরো সাজিয়ে রাখতে হবে চোখে পড়ার মতো করে। তারপর “ও কাকু, ও পিসি, ও দাদা, ও দিদা” করে ধরো আর নকুলদানা দাও। প্রসাদ। প্রসাদ নিলে দক্ষিণা দিতে হয়, নইলে ঠাকুর পাপ দেবে।
আরও পড়ুন:
ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-৩: গায়ে আমার পুলক লাগে
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-১: সুন্দরবনের শেকড়ের খোঁজে
অতএব, দক্ষিণ হাতটা বাড়িয়ে রাখতেই হবে। ওটাই আসল। আর কটি কথা। নকুল যারা নেবে তারা সকলে পয়সা নাও দিতে পারে। নকুলে টানাটানি থাকলে নকুল ফেরত নেওয়া যেতে পারে। এতে ঠাকুর পাপ দেবে না। এরকম অনেক দল-ই বেরোবে। কে কতো পাবে বলা মুশকিল। পকেটে খুচরো রাখবেন। আর শেষ কথা হল চেহারাতে না হলেও মনে মনে শিশু হলেও এই দলে আসা যায়। জয় জগন্নাথ।
* ক্যাবলাদের ছোটবেলা (kyablader-chotobela): লেখক: ড. অভিষেক ঘোষ (Abhishek Ghosh) সহকারী অধ্যাপক, বাগনান কলেজ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগ থেকে স্নাতকস্তরে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত। স্নাতকোত্তরের পর ইউজিসি নেট জুনিয়র এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ পেয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগে সাড়ে তিন বছর পূর্ণসময়ের গবেষক হিসাবে যুক্ত ছিলেন। সাম্বপুরাণের সূর্য-সৌরধর্ম নিয়ে গবেষণা করে পিএইচ. ডি ডিগ্রি লাভ করেন। আগ্রহের বিষয় ভারতবিদ্যা, পুরাণসাহিত্য, সৌরধর্ম, অভিলেখ, লিপিবিদ্যা, প্রাচ্যদর্শন, সাহিত্যতত্ত্ব, চিত্রকলা, বাংলার ধ্রুপদী ও আধুনিক সাহিত্যসম্ভার। মৌলিক রসসিক্ত লেখালেখি মূলত: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়ে চলেছে বিভিন্ন জার্নাল ও সম্পাদিত গ্রন্থে। সাম্প্রতিক অতীতে ডিজিটাল আর্ট প্রদর্শিত হয়েছে আর্ট গ্যালারিতে, বিদেশেও নির্বাচিত হয়েছেন অনলাইন চিত্রপ্রদর্শনীতে। ফেসবুক পেজ, ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে নিয়মিত দর্শকের কাছে পৌঁছে দেন নিজের চিত্রকলা। এখানে একসঙ্গে হাতে তুলে নিয়েছেন কলম ও তুলি। লিখছেন রম্যরচনা, অলংকরণ করছেন একইসঙ্গে।