বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

দিন কয়েক বাদেই দুর্গাপুজো। শুধুই আনন্দ। সঙ্গে রয়েছে জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া। তাই উৎসবের মরসুমে শরীর ভালো রাখতেই হবে। কিন্তু তাতেও যদি হয়ে যায় কোনও সমস্যা, তাহলে কীভাবে সামাল দেবেন, ভেবে দেখেছেন! উৎসব দিনে শারীরিক অসুস্থতা এড়াতে রইল কিছু জরুরি পরামর্শ।
 

ভিড় এড়িয়ে চলুন

এখনও পুরোপুরি করোনা যায়নি। তাই বয়স্ক, শিশু, গর্ভবতী মহিলা ও অসুস্থদের যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। যাঁরা হার্টের, ফুসফুসের, ডায়াবেটিস সমস্যা বা অন্য কোনও কঠিন রোগে ভুগছেন তাঁরা চেষ্টা করবেন শারীরিক দূরত্ব বিধি মেনে চলার। সন্ধ্যে বা রাতে ভিড়ের মধ্যে না গিয়ে সকালের দিকে প্রতিমা দর্শন করাই ভালো। মনে রাখতে হবে, শারীরিক দূরত্ব বিধি যেন অবশ্যই বজায় থাকে। কারণ যে কোনও সংক্রামক রোগ যেমন— করোনা, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি ভিড় জায়গাতেই বেশি ছড়ায়।
 

মাস্ক পরতেই হবে

ঠাকুর দেখতে গেলে ভিড় হবেই। তাই মাস্ক পরা অনিবার্য। এতে আপনি ও পরিবার নিরপদের থাকবেন।
 

স্যানিটাইজার মাস্ট

ঠাকুর দেখা, আড্ডা, পেটপুজোর ফাঁকে ঘন ঘন সাবান-জল বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।

 

সঙ্গে রাখুন ওআরএস

এই সময় ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, হেপাটাইটিস, ডায়রিয়া — এই ধরনের রোগ বেশি হয়। তাই চেষ্টা করবেন বাইরে গিয়ে কাটা ফল, ফুচকা, কুলপি ইত্যাদি যেগুলিতে জল থাকে সেগুলি না খাওয়ার। বাইরে কোথাও গেলে জল সঙ্গে রাখুন। ওআরএস জল খাওয়া খুবই উপকারী। যাঁরা সারারাত জেগে ঠাকুর দেখছেন তাঁদের গরমে ডিহাইডেশন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। তাই ওআরএস জল সঙ্গে রাখাই ভালো। এই সময় ভুলেও সফট ড্রিংক খেতে যাবেন না। এগুলি ডিহাইডেশন আরও বাড়িয়ে তোলে। উপরন্ত ঠান্ডা সফট ড্রিংক খেলে গলা ব্যথা হতে পারে। তার থেকে জ্বর, সর্দি কাশি হতে পারে।

আরও পড়ুন:

পুজোর ছুটিতে সপরিবারে ঘুরতে যাচ্ছেন? কোন কোন বিষয় মাথায় রাখবেন? রইল ডাক্তারবাবুর জরুরি পরামর্শ

ত্বকের পরিচর্যায়: চুল পড়ার কারণগুলো জানলেই তা রুখে দেওয়া যায়, রইল ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৩৫: শেকল-বাঁধা ঠাকুরবাড়ির খাতা

ছোটদের যত্নে: শিশু পেটের ব্যথায় ভুগছে? তাহলে শিশু বিশেষজ্ঞের এই পরামর্শগুলি মেনে চলুন

 

বদহজমের সমস্যা

পুজোর সময় যে শারীরিক অসুস্থতা বেশি নাড়া দিয়ে ওঠে তা হল বদহজমের সমস্যা। মূলত সঠিক সময়ে না খাওয়া, রাত জাগা, উপবাস করা, জাঙ্ক ফুড ও ফাস্ট ফুড খাওয়া, জল না পান করা, ঘুম না হওয়া ইত্যাদির কারণে এই সময়ে বদহজমের সমস্যা দেখা দেয়। আর এই সমস্যা থেকে বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, পেটে ব্যথা ইত্যাদির মতো সমস্যা দেখা দেয়। সুতরাং, সময় থাকতেই সর্তক হতে হবে, মেনে চলতে হবে কয়েকটি সাধারণ নিয়ম।

 

বাইরে খাবারদাবার

বাইরের খাবার খাওয়ার আগে একটা করে এনজাইম ট্যাবলেট খেতে পারেন। যাঁদের অ্যাসিডিটি হয় তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টাসিড খেতে পারেন। এছাড়া চার থেকে পাঁচ দিন সকালে খালি পেটে একটা প্যান্টোপ্রাজল জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন, তাতে অ্যাসিডিটি অনেকটাই কমবে। পাশাপাশি যে সব খাবারে অ্যালার্জি আছে, পুজোর আগে এই কয়েকটি দিন সেগুলি বরং এড়িয়েই চলুন।

আরও পড়ুন:

শাশ্বতী রামায়ণী, পর্ব ১৭: অপেক্ষার অবসান — অযোধ্যায় চার রাজকুমার

ষাট পেরিয়ে, পর্ব-৬: সুস্থ বার্ধক্যের চাবিকাঠি পুষ্টি— তৃতীয় ভাগ

মহাভারতের আখ্যানমালা, পর্ব-৩৬: অক্ষবিদ্যাশিক্ষা করলেন নলরাজা

হোমিওপ্যাথি: শ্বেতি ঠিক কেন হয়? এই রোগ কি পুরোপুরি নিরাময় সম্ভব?

 

যাঁরা নিয়মিত ওষুধ খান

যাঁরা নিয়মিত ওষুধ খান যেমন হার্টের, ফুসফুসের, ডায়াবেটিস ইত্যাদির সেগুলি সময় মতো খেতে হবে। এই সময় কোনও অবহেলা করা চলবে না। কারণ, পুজোর সময় বিভিন্ন হসপিটালে ডাক্তারের সংখ্যা কম থাকে। প্রাইভেট ডাক্তার চেম্বারগুলোও অনেক বন্ধ থাকে। তাই এই সময় শরীরের দিকে বিশেষ নজর দি হবে।
 

পুজোর আগে ডাক্তারবাবুর পরামর্শ

সম্ভব হলে পুজোর আগে ডাক্তার দেখিয়ে নিন। চিকিৎসকের যোগাযোগ নম্বর সঙ্গে রেখে দিন, যাতে আপতকালীন ভিত্তিতে যোগাযোগ করতে পারেন। নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্র, হসপিটালের নম্বর কাছে রাখতে ভুলবেন না।
 

পর্যাপ্ত ঘুম

যাঁরা রাত জেগে ঠাকুর দেখছেন তাঁরা দিনে ভালো করে ঘুমিয়ে নেবেন। কেন না দিনে না ঘুমিয়ে যদি সারারাত জেগে ঠাকুর দেখেন, তাহলে শরীরের দুর্বলতা আরও বেড়ে যাবে। হজমের সমস্যাও হতে পারে। নিয়মিত যা যা ওষুধ আপনারা খান, সেগুলো এই সময় একদমই বন্ধ করবেন না। যাঁরা নিয়মিত ইনসুলিন নেন তাঁরাও যথা সময়ে এটি নিবেন।
ব্যস, এই কয়েটি বিষয় মেনে চললে, পুজো কাটবে আনন্দে।

সকলকে শারদীয়ার শুভেচ্ছা।

ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে

যোগাযোগ: ৯৮৩১৬৭১৫২৫


Skip to content