মাইগ্রেনের সমস্যা অনেক কারণেই হতে পারে, তা সে আবহাওয়া পরিবর্তনেই হোক বা চড়া রোদ লেগে হয়ে থাকে অনেকের। অনেককেই মাসের তিন-চারটে দিন মাইগ্রেনের যন্ত্রণায় কাবু হতে হয়। কোনও কোনও মাসে দু’-তিন বার এমন যন্ত্রণা হয় যে, কাজ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে। কিন্তু মাথাব্যথা খুবই সাধারণ একটি উপসর্গ। কোন মাথাব্যথা মাইগ্রেনের, কোনটা নয়, তা বুঝতে অনেকটা সময় লেগে যায় আমাদের।
মাইগ্রেনের সমস্যায় অনেকের মাথা দপদপ করে। কারও আবার মাথার যে কোনও এক পাশে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়। সময় বিশেষে আবার তার অনেক সময় দিক পরিবর্তিত হতে পারে। চিকিৎসকেরা বলেন, এই ধরনের যন্ত্রণা নাকি জিনগত। পরিবারের কারও থাকলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে। কিন্তু এই অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তির উপায় কী? সাধারণত মাইগ্রেনের ব্যথায় কাবু হলে অনেকেই ‘পেনকিলার’ জাতীয় ওষুধ খেয়ে থাকেন। তবে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যথার ওষুধ খেলে অনেক রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয়েছে, এই ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু ঘরোয়া টোটকাও রয়েছে। এমন কিছু ভেষজ রয়েছে, যেগুলি পানীয় হিসাবে খেলে মাইগ্রেনের যন্ত্রণায় আরাম মিলতে পারে। আসুন জেনে নিই সেগুলি কী কী।
চুমুক দিতে পারেন এই ৩ উষ্ণ পানিয়ে
লৌকিক চিকিৎসা
● স্নায়ুঘটিত তীব্র যন্ত্রণা হলে মান্দা গাছের পাতার মণ্ড যন্ত্রণার স্থানে লাগানোর প্রচলন সুন্দরবন অঞ্চলে দেখা যায়। তাছাড়া চর্ম রোগের ক্ষেত্রে পুরো উদ্ভিদের ভস্ম ত্বকে লাগানোর প্রচলন রয়েছে। বাত ও ক্ষত নিরাময়ে পুরো গাছটির মন্ড প্রলেপ দিলে ব্যথা ও ক্ষত নিরাময় হয়। আবার উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অন্যান্য ভেষজ উদ্ভিদের সাথে মান্দা ব্যবহার করা হয়। হোমিওপ্যাথিতে নাক্স ভমিকা যে কাজ করে মান্দা নাকি অনুরূপ কাজ করে বলে জানা গেছে। তবে বর্তমানে এই উদ্ভিদটিকে সুন্দরবনবাসী কতটুকু চেনে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
পুদিনা এবং ক্যামোমাইল চা
● পুদিনা এবং ক্যামোমাইল চায়ের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলি স্নায়ুর উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। পুদিনা মাথা এবং ঘাড়ের পেশি শিথিল রাখে। অন্য দিকে, ক্যামোমাইল মানসিক চাপ দূর করে। গরম জলে কয়েকটি পুদিনা পাতা এবং ক্যামোমাইল ফুলের শুকনো পাপড়ি ফুটিয়ে সেই পানীয় খেলে মাইগ্রেনের ব্যথা অনেকটাই কমে যেতে পারে।
আদা এবং হলুদ দেওয়া চা
● আদা এবং হলুদ— দু’টি ভেষজই দারুণ উপকারী। এই দু’টি ভেষজেরই প্রদাহনাশক গুণ রয়েছে। যা মাইগ্রেনের কষ্ট নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। জলের মধ্যে কয়েক টুকরো আদা এবং কাঁচা হলুদ ফুটিয়ে পানীয় তৈরি করে নিন। চায়ের মতো করেই সকাল-সন্ধ্যায় খান এই পানীয়।