ছোটবেলা থেকে টেলিপর্দায় অভিনয় শুরু করলেও রানি রাসমণি তাঁর কাছে একটা মাইলস্টোনের মতো। জি বাংলার জনপ্রিয় ‘করুণাময়ী রানী রাসমণি’ ধারাবাহিকে রানি রাসমণির ছোট থেকে শেষ বয়স পর্যন্ত চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া রায়-কে। আলাদা করে পরিচয় করানোর প্রয়োজন পড়ে না। তাঁর অভিনয় জীবনের অনেক অজানা কথা নিয়ে সময় আপডেটস-এর মুখোমুখি অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া রায়।
● অভিনয় জীবনে আসা কীভাবে?
●● আমার বাবা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাবার বন্ধুর সূত্রেই আমার ক্যামেরার সামনে মুখ দেখানো। আর তারপর আমি সিলেক্টও হই। জনপ্রিয় বাংলা ধারাবাহিক ‘মা’-তে কতকগুলো বাচ্চা মেয়েকে দেখানো হয়েছিল। প্রথমদিকে ওই বাচ্চাগুলোর মধ্যে আমি একজন ছিলাম। তারপর একই চ্যানেলের আরও একটি ধারাবাহিক ‘দুর্গা’-তে অভিনয় করেছি। তারপর একটি ধারাবাহিকে যিশু সেনগুপ্ত-র মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। এভাবেই ধীরে ধীরে আমার অভিনয়ের পরিসরটা বাড়তে থাকে।
● সম্প্রতি রিলিজ করেছে ওয়েব সিরিজ ‘মুক্তি’। এরকম একটি দেশাত্মবোধক গল্পে কাজ করে কেমন লাগছে?
●●আমার খুবই ভালো লেগেছে। এটি একটি পিরিয়ড পিস। আর আমি ছোটবেলা থেকে অনেকগুলো পিরিয়ড পিস করেছি। ‘রাজকাহিনী’-তে ছিলাম আমি। যেটা একেবারেই স্বাধীনতার একটা গল্প নিয়েই তৈরি। এই ‘মুক্তি’ ওয়েব সিরিজটিতেও সেরকমই দেশাত্মবোধক একটি গল্প রয়েছে। খুবই ভালো লাগছে এরকম একটা চরিত্রে অভিনয় করতে পেরে। নিজেকে অন্যরকমের চরিত্রে প্রেজেন্ট করতে এমনিতেই খুব ভালো লাগে।
● ওয়েব সিরিজ ‘মুক্তি’-তে অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তীর সঙ্গে তোমাকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
●● ঋত্বিক চক্রবর্তী-র সঙ্গে কাজ করাই আমার কাছে বড় প্রাপ্তি এই ওয়েব সিরিজ জুড়ে। যেহেতু, এই সিরিজে আমি ঋত্বিকদা’র বিপরীতে অভিনয় করেছি। তাই আমার সব সিনই ঋত্বিকদা’র সঙ্গে ছিল। আমি বরাবরই ঋত্বিকদা’র বিরাট ফ্যান। আর এই ওয়েব সিরিজে কাজ করতে গিয়ে যখন সামনে থেকে দেখলাম, তখন আরও বেশি ফ্যান হয়ে গেছি। ঋত্বিকদা প্রচণ্ড ভালো একটা মনের মানুষ। আমরা এই সিরিজটায় খুব মজা করে কাজ করেছি।
● ধারাবাহিক, সিনেমা, ওয়েব সিরিজ—তিনটেতেই তুমি অভিনয় করেছ, এর মধ্যে কোনটা তোমার বেশি কাছের?
●● ধারাবাহিক, সিনেমা, ওয়েব সিরিজ—তিনটে প্ল্যাটফর্মেই আমি অভিনয় করেছি। অভিনয়ের আলাদা কিছু হয় না। সব ক্ষেত্রেই এক। তবে হ্যাঁ, নিজেকে বিভিন্ন চরিত্রে মেলে ধরার একটা চ্যালেঞ্জ তো অবশ্যই থাকে, সেটা সিনেমা হোক, ধারাবাহিক হোক কিংবা ওয়েব সিরিজ। তাই আমি মনে করি এই তিনটেই আমার কাছের। কারণ এখানে অভিনয়টাই আসল।
● বর্তমানে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ভারতীয় চলচ্চিত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ বলে তোমার মনে হয়?
●● বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সিনেমাহল নিয়ে সকলেই একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। কারণ দেখাই যাচ্ছে, বড় বড় ছবি এখন ওটিটিতে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ওটিটি একটা বিরাট রোল প্লে করছে। আমি নিজে সিরিজ দেখতে বেশি পছন্দ করি। এটা সিনেমার মতো অত সময়ের হয় না আবার ধারাবাহিকের মতো মাসের পর মাস চলেও না। তাই কম সময়ে ভালো কাজ ওয়েব সিরিজে দেখতেই এখন সকলে পছন্দ করে। বিশেষ করে আমাদের আগের প্রজন্ম এবং আমাদের প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ওটিটিতেই বেশি মজেছে। তবে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখার মজাই আলাদা। সেটার সঙ্গে কোনও কিছুর তুলনা হয় না।
● বর্তমান সময়ে নাটকের গুরুত্ব কতটা রয়েছে বলে তোমার মনে হয়?
●● হ্যাঁ, আমি নাটক দেখতে খুবই ভালোবাসি। থিয়েটার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা বেশিরভাগই খুবই ভালো কাজ করছেন। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কাছে থিয়েটার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। অনেকে অভিনয় শিখতে চান। কিন্তু ওইভাবে অভিনয় শেখা যায় না। আমার মনে হয়, অভিনয় শেখার জন্য বেস্ট অপশন হল থিয়েটার। এটাই অভিনয় শেখার আদর্শ জায়গা।
● পরবর্তীতে কোথায় দেখা যাবে দিতিপ্রিয়াকে?
●● পাভেল পরিচালিত ‘কলকাতা চলন্তিকা’ ছবিতে দেখা যাবে আমাকে। সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছরই এই ছবির মুক্তি পাওয়ার কথা। এছাড়াও, অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটি ছবি করছি। যার নাম ‘আয় খুকু আয়’। কিছুদিন আগে একটি ছবির শুটিং শেষ করেছি। ছবির নাম ‘অচেনা উত্তম’। এই ছবিতে আমি অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করেছি। অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও একটি ছবিতে কাজ করছি।
ছবি সৌজন্যে : ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম