সোমবার ৮ জুলাই, ২০২৪


রাঙা আলুতে থাকে বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের মতো দরকারি উপাদান। ছবি: সংগৃহীত।

ছোটদের খাওয়াদাওয়া নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত থাকি। সবাই ভাবেন এমন কিছু একটা খাবার চাই, যা বাচ্চারা আনন্দের সঙ্গে খাবে আবার তা থেকে ওরা অনেকটা পুষ্টিও পাবে। সারা বছর ধরে বাজারে নানা ধরণের সব্জি পাওয়া যায়। এর মধ্যে অন্যতম হল, রাঙা আলু বা মিষ্টি আলু। তবে এটা মূলত শীতকালে বেশি পাওয়া যায়। মিষ্টি আলু মাটির নিচে জন্মায়। এর মিষ্টি স্বাদ এবং নরম ভাবের জন্য এটা বাচ্চা থেকে বড় প্রায় সবারই প্রিয় একটি খাবার। তবে এই মিষ্টি আলু সেদ্ধ করে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
‘আমেরিকান ওবেসিটি অ্যাসোসিয়েশন’-এর মতে, রাঙা আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) এতটাই কম যে এর থেকে তৈরি হওয়া গ্লুকোজ দ্রুত রক্তে মিশে যেতে পারে। কী কী কারণে পাতে রাঙা আলু রাখতেই হবে তার বেশ কিছু কারণও দর্শিয়েছে ‘আমেরিকান ওবেসিটি অ্যাসোসিয়েশন’। পুষ্টিবিদরাও দিলেন তেমনই নিদান। এতে ভিটামিন এ, প্রয়োজনীয় খনিজ ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের মতো দরকারি উপাদান মজুত থাকে। মূলত শীতে পাওয়া যায় এই সব্জি। তাই শীতকাল জুড়েই কেন পাতে রাখতে হবে তা, রইল তারই কারণ।
আরও পড়ুন:

পটল একদমই পছন্দ নয়? এই সব্জির ৭ গুণ জানলে অবাকই হবেন

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৬৮: আনন্দের নির্বাসন থেকে উত্তরণের উপায়?

 

রাঙা আলু কেন খাবেন?

 

মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুণ

১০০ গ্রাম মিষ্টি আলুতে থাকে মাত্র ৮৬ ক্যালোরি শক্তি। ০.১ গ্রাম ফ্যাট থাকে। এটি পটাশিয়ামের খুব ভালো উৎস। সেই সঙ্গে এতে আছে পর্যাপ্ত প্রোটিন ও ফাইবার। মিষ্টি আলুতে নির্দিষ্ট মাত্রায় ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন বি৬ পাওয়া যায়।
 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

শিশুকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করা খুব বড় একটা চ্যালেঞ্জ। সঠিক সময়ে সঠিক খাবার না খেলে আমরা বিভিন্ন রোগে শিকার হতে পারি। মিষ্টি আলুতে থাকে ভিটামিন-এ এবং সি, যা ছোটদের সর্দি, কাশি, ফ্লু এবং অন্যান্য ভাইরাস জনিত সমস্যার বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন:

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৫২: দেশহিতৈষী মা সারদা

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-২৮: জ্ঞানদানন্দিনী দেবী—উনিশ শতকের বলিষ্ঠ লেখক এবং সমাজসংস্কারক

 

হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে

মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করে এবং হজম ক্ষমতা উন্নত করে। নিয়মিত মিষ্টি আলু সেদ্ধ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাসের সমস্যা, যা ছোটদের খুব সাধারণ বিষয়, তা অনেকখানি কমে যায়।
 

উপকারী কার্বস

কার্বোহাইড্রেট মানেই যে তা অপকারী, তা কিন্তু নয়। বরং এনার্জি বাড়াতে এই সব্জি কাজে আসে। শরীর গঠনের প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেটের অন্যতম উৎস এই রাঙা আলু। প্রতি ৩০০ গ্রাম রাঙা আলু সেদ্ধ থেকে ৫৮ গ্রাম মতো কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। নো কার্বস ডায়েটে অভ্যস্তরাও একে সহজেই পাতে নিতে পারেন। কারণ, এর কার্বোহাইড্রেট দ্রুত রক্তে মিশে শক্তি উৎপন্ন করতে পারে।

আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৭১: সাইকেল ও জীবন

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৪২: আর যাহা খাও বাপু বিষমটি খেয়ো না

 

ওজন নিয়ন্ত্রণ

মিষ্টি আলুর স্বাদ মিষ্টি হলেও এটি কম ক্যালোরি এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার৷ ফলে আপনার পেটকে দীর্ঘ সময়ের জন্য ভরা রাখে ৷
 

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে

মিষ্টি আলু ভিটামিন-এ এর খুব ভালো উৎস। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মিষ্টি আলু রাখলে ছোটদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করবে।
 

জল শোষণকারী

মেটাবলিজম বাড়ানোর পাশাপাশি শরীরের জলকে শোষণ করে নিতে এই সব্জি ওস্তাদ। জলের সঙ্গেই শরীরের টক্সিনকে দূর করতেও বিশেষ কার্যকরী। তাই জমে থাকা জলের প্রভাবে শরীর ফুলে গেলে তার হাত থেকে অনেকটাই নিষ্কৃতি দেয় এই সব্জি। শরীরের পিএইচ ফ্যাক্টরে ভারসাম্য রাখতেও সাহায্য করে এটি।

আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯৩: মৃণালিনীর মৃত্যু হয়েছিল কীসে?

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬৩: বাবু ডাক্তার ও ‘ডাক্তারবাবু’

 

গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের উপস্থিতি

মিষ্টি আলুতে শরীরের প্রয়োজনীয় প্রায় সমস্ত প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ, যেমন: ক্যালশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম এবং জিঙ্ক রয়েছে। ক্যালশিয়াম, ফসফরাস এবং ম্যাগনেশিয়ামের মতো পুষ্টি গ্রহণের ফলে শিশুর হাড় শক্তিশালী হয়। অন্যদিকে, আয়রন এবং ভিটামিন বি৬ এর মতো পুষ্টি উপাদান রক্তাল্পতা প্রতিরোধেও সাহায্য করতে পারে।
 

অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট

রাঙা আলুতে জিঙ্ক সুপারঅক্সাইড, স্পোরামিন, ক্যাটালেস ধরনের অ্যান্টিঅক্সাইডের পরিমাণ বেশি থাকে বলে এগুলি শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content