শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

এ যেন জ্বরজারির মরশুম চলছে। বর্ষা বিদায় নেওয়ার সময় যেমন ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি লেগেই থাকে, তেমনি বাড়ে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। ভাইরাল ফিভার থেকে শুরু করে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার মতো বিভিন্ন ধরনের জ্বরের আক্রমণ ঠেকাতে হলে আগে থেকেই যথেষ্ট সাবধানতা নেওয়া উচিত, রদবদল ঘটানো উচিত দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায়। তবে জ্বর হলে কী কী করবেন? সময় মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি এক নজরে দেখে নেওয়া যাক জ্বর হলে কী কী খাবেন আর কী কী খাবেন না।
 

একঝলকে জেনে নিন কী কী খাবেন, আর কী কী খাবেন না

জ্বরের সময় শরীরের তাপমাত্রা প্রতি ডিগ্রি ফারেনহাইট বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপাক ক্রিয়ার হার প্রায় সাত শতাংশ বেড়ে যায়। ফলে ক্যালরি চাহিদাও ৫০ শতাংশ কিংবা তারও বেশি বাড়তে পারে। ফলে জ্বরের সময় দরকার হাই ক্যালোরি ডায়েট।

অন্যদিকে জ্বরের লেজুর হিসেবে থাকে অরুচি, বমি বমি ভাব, পেটভার, ডায়েরিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি—এ সব সমস্যা থাকলে বারবার অল্প পরিমাণে সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।

আরও পড়ুন:

ডায়েট ফটাফট: কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগছেন? কী খাবেন, কী খাবেন না?

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-১৭: অ্যাঁ, বলো কী নন্দলাল…!

টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি ইত্যাদি জ্বরে দেহপ্রটিন ধ্বংসের হারও অনেক বেড়ে যায়। এ সময় মাছ, চিকেন, ডিম, দুধ, ছানা, ডাল সেদ্ধ ইত্যাদি রুচি অনুযায়ী খাওয়া উচিত। ডিম সেদ্ধ বা পোচ, চিকেন স্ট্যু, মাছ ভাজা, ছানা, দইয়ের ঘোল ইত্যাদি যেমন প্রোটিনের যোগান দেয়, তেমনই চলতে পারে ব্লেন্ড ফ্লেভার এর হাইপ্রোটিন ড্রিংক।

জ্বরের সময় দেহে সঞ্চিত গ্লাইকোজেনের ভাঁড়ারে টান পড়ে। ফলে শক্তির যোগান অক্ষুণ্ণ রাখতে মধু, গ্লুকোজ, ফলের রস, কাস্টার্ড, সন্দেশ, খেজুর, কিসমিস, কলা, রসগোল্লা, আপেল, আলু সেদ্ধ, আলু ভাজা, ডাল, সুজির উমা, খিচুড়ি, টোস্ট, কর্ণফ্লেক্স ইত্যাদি স্বাদ অনুযায়ী চাহিদা মতো খাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৪৯: অনেক যতনে ‘বড়দিদি’-র পর্ব রাখিনু সেথা

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩৯: খাবারে একদম মশলা নয়?

যাঁদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স এবং গ্লুটেন অ্যালার্জি আছে তাঁরা মোটেই দুধ ও গমের প্রোডাক্ট খাবেন না। তবে দুধের বদলে দই, ছানা এ সব খাওয়া যেতে পারে। আমন্ড মিল্ক, রাইস মিল্ক, সয়া মিল্ক। গ্লুটেন অ্যালার্জি থাকলে রুটির বদলে ভাত, মুড়ি, চিঁড়ে, খই, ওটস ইত্যাদি খাওয়া উচিত।

এই সময়ে ভিটামিন- এ, ভিটামিন-সি এবং ভিটামিন-বি কমপ্লেক্সের বাড়তি চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে রঙিন ফল শাক-সব্জি, আনাজপাতি ও লেবু জাতীয় ফলের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া উচিত। মুসম্বি লেবু, বাতাবি লেবু, আম, কলা, আপেল, আঙুর, বেদানা, পেয়ারা ইত্যাদি যে কোনও ফলই রুচি অনুযায়ী খাওয়া যায়।

অল্প স্বল্প শুকনো ফল, বাদাম, আমন্ড, খেজুর, কিসমিস ইত্যাদি খাওয়া গেলে মুখের রুচি আনার পাশাপাশি ক্যালোরি ও নিউট্রিয়েন্টস চাহিদা পূরণ হয়।
আরও পড়ুন:

পালকিতে যেতে যেতে লেখা হয়েছিল ‘বর্ণপরিচয়’

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-১৬: সুন্দরবনের লৌকিক দেবতা পঞ্চানন্দ বা বাবাঠাকুর

ডিহাইড্রেশন এড়ানোর জন্য জ্বরের সময় সারাদিনে অন্তত তিন থেকে পাঁচ লিটার জল বা বিভিন্ন তরল খাবার খাওয়া উচিত। ওআরএস, ডাবের জল, ফলের রস, দইয়ের ঘোল, ডালের জল, চিকেন বা ফিস স্ট্যু ইত্যাদি সবই তরল খাবার হিসেবে আদর্শ।

জ্বরের সময় হজমশক্তি দুর্বল থাকার জন্য অতিরিক্ত ভাজাভুজি, ফাস্টফুড, বাইরের খাবার, গ্রেভি জাতীয় খাবার, ঘি, চর্বি, রেডমিট, মশলাদার খাবার, আইসক্রিম, কোলড্রিংস, পিৎজা, কেক, পেস্ট্রি, হিং, গরম মশলা, ভাজা মশলা দেওয়া খাবার ও গুরুপাক জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

আগেকার দিনের জ্বর হলেই দুধ, সাবু, পথ্য দেওয়া হতো। সে-সব দিন এখন শেষ। এখন জ্বর হলে দুধ বা সাবু কোনওটাই চলবে না। বরং হাই প্রোটিন, পুষ্টিকর, সহজপাচ্য এবং অবশ্যই রুচিবর্ধক খাবার দেওয়া উচিত।

যোগাযোগ: ৯৮৩০২১৪৯৭১

Skip to content