শনিবার ৯ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

এখন অল্প বয়সেই ফ্যাটি লিভার দেখা দিচ্ছে। এই রোগে আক্রান্ত হলেই খাওয়াদাওয়ায় অনেক রকম বিধিনিষেধ চলে আসে। জেনে নিন, ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত হলে কী খাওয়া যাবে, আর কী খাওয়া যাবে না। বর্তমান জীবনযাত্রায় ফ্যাটি লিভার ডিজিজ খুব সাধারণ একটি সমস্যা। ফ্যাটি লিভার ডিজিজ সাধারণত দুই ধরনের হয়—১.অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এবং ২. নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। এখন প্রায় ৩৮ শতাংশ মানুষ নন-অ্যালকোহলিকফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন। নাম অনুসারে, ফ্যাটি লিভার রোগ মানে আপনার লিভারে খুব বেশি চর্বি রয়েছে। একটি সুস্থ শরীরে, লিভার টক্সিন অপসারণ করতে সাহায্য করে এবং পিত্ত উত্পাদন করে, হজমকারী প্রোটিন। সাধারণত যাঁরা স্থূলকায় বা বসে থাকা এবং যারা উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাবার খান তাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি করে দেখা যায়।
পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবারযুক্ত এবং কম চর্বিযুক্ত খাবার রোগের অবস্থা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। ফ্যাটি লিভার রোগের দুটি পরিচিত কারণ হল, অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন এবং লিপিড থেকে আসা ক্যালোরির উচ্চ অনুপাতযুক্ত খাবার। ধীরে ধীরে ওজন হ্রাস এবং নিজেকে বিভিন্ন কাজকর্মের মধ্যে নিযুক্ত রাখা এই রোগ মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয়। ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণে খাদ্যতালিকায় কোন কোন খাবার রাখতে হবে?
আরও পড়ুন:

কিশমিশ খেলে কি সত্যিই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে?

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৬২: শ্রীমার দক্ষিণ ভারত থেকে প্রত্যাবর্তন

 

ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণে কী কী খাবেন?

 

সবুজ শাক-সব্জি

সবুজ শাক-সব্জির মধ্যে যে পলিফেনল ও নাইট্রেট পাওয়া যায়। এই দুই উপাদান লিভারের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তবে সেদ্ধ করা খাবার বা রান্না করা খাবারের থেকে কাঁচা শাকসব্জি বা স্যালাড জাতীয় খাবারে উপকার বেশি পাওয়া যায়। কারণ রান্না এবং সেদ্ধ করে ফেললে এর মধ্যে থাকা পলিফেনলের পরিমাণ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের কার্যকারিতা অনেকটাই কমে যায়।
 

রেড মিট

রেড মিট, যেমন গরু বা খাসির মাংস খাওয়া কমাতে হবে। তবে মুরগির মাংস খাওয়াতে সমস্যা নেই।

আরও পড়ুন:

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৬৪: সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ও লৌকিক চিকিৎসা—গিরা শাক ও যদু পালং

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৫৬:কোনও একটি দাবিতে বিরোধীরা জোট বাঁধুক কখনও চায় না শাসক

 

লেবু

শরীর থেকে যত টক্সিন বেরিয়ে যাবে, ততই লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তাই ঈষদুষ্ণ গরম জলে কয়েক ফোঁটা পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খেলে শরীর থেকে সহজেই টক্সিন বেরিয়ে যায়। লিভারও সুস্থ থাকে।
 

ডাল ও বীজ জাতীয় খাবার

ডাল, ছোলা, মটরশুঁটি ইত্যাদি খাবারে স্টার্চ এবং ফাইবার ভরপুর মাত্রায় থাকে। এ সব খাবার পরিপাকতন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকর। তাই এগুলি রোজকার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। পাশাপাশি এই সব খাবার ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতেও সাহায্য করে।

আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৯৭: কী করে গল্প লিখতে হয়, ছোটদের শিখিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ

গীতা: সম্ভবামি যুগে যুগে, পর্ব-৮: যেথা আমি যাই নাকো / তুমি প্রকাশিত থাকো

 

ঘরে পাতা টক দই

টক দইয়ে ভালো ব্যাকটেরিয়া অর্থাৎ প্রোবায়োটিক আছে, যা শরীর থেকে দূষিত পদার্থ সহজেই বার করে দেয়। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই টক দই রাখতে হবে।
 

সামুদ্রিক মাছ

ইলিশ, পমফ্রেট ইত্যাদি মাছে থাকা ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড উপকারি। এই সব মাছ খেলে রক্তে এইচডিএল কোলেস্টেরল অর্থাৎ ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে। আবার ক্ষতিকর ট্রাইগ্লিসারাইড কমিয়ে লিভারে চর্বি ও প্রদাহ কমায়।
 

মশলাপাতি

কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিন লিভারের জন্য খুবই উপকারী। রাতে দুধের মধ্যে এই হলুদ গুলে খাওয়া যেতে পারে। কাঁচা রসুনও যকৃতের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন:

বিখ্যাতদের বিবাহ-বিচিত্রা, পর্ব-৮: জোসেফ কনরাড ও জেসি কনরাড—আমি রূপে তোমায় ভোলাব না…/৩

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৩৮: নন্দিতা কৃপালনি— বিশ শতকের বিদুষী

 

কী কী খাওয়া যাবে না?

চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার ফ্যাটি লিভারের জন্য খুবই খারাপ।
নরম পানীয় অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।
উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজা হয় এইরকম খাবার গ্রহণ করা চলবে না।
কাঁচা নুন খাওয়া যাবে না।
প্রক্রিয়াজাত খাবার যাতে নুনের মাত্রা অনেক বেশি সেগুলি এড়িয়ে চলতে হবে।
শর্করা জাতীয় খাবার কম পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে।
রেডমি খাওয়া চলবে না।
মদ্যপান বন্ধ করতে হবে।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content