অর্জুন স্বর্গে গিয়েছেন। আর এদিকে অর্জুনকে ছাড়া পাণ্ডবদের আরো পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে। কাম্যকবনে সংযমে, আত্মসমালোচনায়, সাধুসঙ্গে অন্যরকমের যাপন চলছে তাঁদের…

অর্জুন স্বর্গে গিয়েছেন। আর এদিকে অর্জুনকে ছাড়া পাণ্ডবদের আরো পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে। কাম্যকবনে সংযমে, আত্মসমালোচনায়, সাধুসঙ্গে অন্যরকমের যাপন চলছে তাঁদের…
অনন্যমনা এক পুরুষ চলেছেন স্বর্গের পথে। সে পথ সাধারণের পথ নয়। সে পথের যোগ্যতা তিনি অর্জন করেছেন। মহাদেবের দেওয়া দেবশক্তি পেয়েছেন তিনি।
দেবরাজ ইন্দ্রের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ইন্দ্র আরও গভীরতর বনের পথে চললেন। ভয়ঙ্কর সে বন সাধারণ মানুষের অগম্য ছিল। নানারঙের ফুলে ফলে ছেয়ে ছিল গাছগুলো।
অর্জুনের প্রতি যুধিষ্ঠিরের অগাধ আস্থা। তাই তাঁকে ডেকে বলেন, ‘অর্জুন দেবতাদের খুশি করতে হবে তোমাকে। পৌঁছতে হবে ইন্দ্রের কাছে। তিনি তুষ্ট হলে স্বর্গীয় সমস্ত অস্ত্র কৌশল তুমি জানতে পারবে।’
পাণ্ডবভাইরা বনবাসে। আজ তো দুর্যোধনের আনন্দের দিন হওয়ার কথা। সেটা হওয়ারই কথা ছিল। কিন্তু নিয়তি তা হতে দিলে তো! পাণ্ডবেরা রাজ্যছাড়া হয়েও যেন সদাসর্বদা রয়েছেন চারপাশে। বিদুর ধৃতরাষ্ট্রের মন্ত্রী হতে পারেন।
রোহিত বনে গিয়েছিল। উঠতি বয়সের ছেলে ছিল সে। বাবা কবে কোন দেবতাকে কথা দিয়ে রেখেছেন, ছেলে হলে তাকে উত্স র্গ করে যজ্ঞ করবেন, একথা জানার পর থেকে সে ঘরছাড়া। বাবার কথা সে মানবে কেন?
রাজনীতি বড় কঠিন। এখানে কে যে কখন পাশার চা্ল চালে, তা বোঝাও বড় কঠিন। পাশার সভায় যে ঘোরালো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, সে অবস্থায় যুধিষ্ঠিরদের সকলকে নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে সভার সমর্থন পাওয়া যেতো না।
দুঃশাসনের এমন আচরণে দ্রৌপদী স্পষ্ট অনুভব করতে পারলেন, এই সভায় এমন একজনও নেই যিনি তাঁর সম্মান রক্ষা করতে পারেন। নিজের পাঁচ পতির দুর্বলতা তিনি জানেন। তাঁদের দোষারোপ করেন না।
বৈশম্পায়নের গল্প বলার আসরে আজ বুঝি সূচ পড়লেও আওয়াজ হবে! স্তব্ধ হয়ে সকলে শুনছেন সেদিনের সেই পাশার আসরের কাহিনী। না চাইতেও কেমন করে ব্যসনের দাস হয়ে যুধিষ্ঠির সব বিকিয়ে দিলেন!
হস্তিনাপুরের পাশাখেলার আসর যেন পরীক্ষাক্ষেত্র ছিল। এতকাল নিজেদের স্বভাবের গলদটুকু তবুও বা রেখে ঢেকে চলছিলেন সকলে। মনে বিষ থাকলেও মুখে মধুর প্রলেপটা ছিল। সেটুকুও ঘুচে গেল।
যুধিষ্ঠির ছিলেন দুর্বলচিত্ত। কিন্তু দুটো সদর্থক দিক ছিল যুধিষ্ঠিরের। প্রথমত, তিনি ছিলেন ধর্মপরায়ণ। দ্বিতীয়ত, তাঁদের পাঁচ ভাইয়ের পরস্পরের প্রতি ভালোবাসাটা খুব তীব্র ছিল।
পাণ্ডবদের প্রতি আবাল্য ঈর্ষাপরায়ণ ছিলেন দুর্যোধন৷ সেই অযথা হিংসের জেরেই গোপনে পাণ্ডবদের ক্ষতি করবার চেষ্টা করেছেন বারংবার৷ কিন্তু সফল হননি৷
জরাসন্ধের বিনাশ হল। আর তেমন প্রতিবাদী রাজা রইলেন কই! পাণ্ডবেরা নিষ্কণ্টক হয়ে রাজপাট গুছিয়ে বসলেন ইন্দ্রপ্রস্থে। সঙ্গে পেলেন সহায় কৃষ্ণকে।
পাণ্ডবভাইয়েরা আসলে ছাইচাপা আগুন৷ তেমন ইন্ধন পেলে অসাধ্যসাধন করতে পারেন তাঁরা৷
কৃতজ্ঞ দানব যুধিষ্ঠিরের জন্য একটি সাততলা অপূর্ব সভা তৈরি করে দিল৷ এমন সভা যে দেবতা দানবেরাও দেখে চমকে উঠতে পারেন!