ছবি সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
ছবি নির্মাণ পর্বে বহু ঘটনা ঘটে থাকে যা আমজনতার জানার কথা নয়। তেমন আকর্ষণীয় সব তথ্য ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরছেন অধ্যাপক অভিনেতা ড. শঙ্কর ঘোষ।
পরিচালক অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় যখন ‘পিতা-পুত্র’ ছবি তৈরি করছিলেন তখন ডাক্তারি পাঠরত নায়কের চরিত্রের জন্য উত্তমকুমারকে বেছেছিলেন। পিতার চরিত্রে কমল মিত্র। অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় যখন অগ্রদূত গোষ্ঠীর সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন তখন অনেকগুলো ছবিতে উত্তমকুমারকে পেয়েছিলেন। কিন্তু স্বনামে ছবি করতে নেমে তখন পর্যন্ত একটি ছবিতেও অরবিন্দবাবু নায়ক হিসেবে উত্তমকুমারকে পাননি। ‘পিতা-পুত্র’ ছবির ব্যাপারে উত্তমকুমারের কাছে তাঁর যাওয়া। অরবিন্দবাবুর স্টুডিও মহলে পরিচিতি ঢুলুদা নামে। সেইমতো উত্তমকুমার তাঁকে ঢুলুদা বলে সম্বোধন করতেন। চিত্রনাট্য পড়ে উত্তমকুমারের মনে হয়েছে এই চরিত্র করার বয়স তাঁর পার হয়ে গিয়েছে। সেই মতো তিনি পরিচালককে বললেন, ‘কমবয়সি নায়ক দরকার এই চরিত্র করার জন্য। আপনি বরং আমার বয়সি কোনও চরিত্র নিয়ে ছবি করুন আমি তৎক্ষণাৎ সম্মতি দেব।’ অগত্যা সেই পুত্রের ভূমিকায় এলেন স্বরূপ দত্ত।
উত্তমকুমারকে নিয়ে ছবি করার ক্ষেত্রে অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়কে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এই সময় তিনি পড়লেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাড়া জাগানো একটি ছোটগল্প ‘হিঙের কচুরি’। গল্পটা তাঁর মনে ধরল। নায়িকা কেন্দ্রিক গল্প। পদ্ম নামে এক ভাগ্যবিড়ম্বিত নারীর গল্প। সেখানে চিত্রনাট্য তৈরি করার সময় অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় একটি নতুন চরিত্র নিয়ে এলেন। চরিত্রের নাম অনঙ্গ দত্ত। মানুষটি নিয়মিত কাছে আসেন পদ্মের। সেই পদ্মের সত্যিকারের মা হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে অনঙ্গ দত্তের বিরাট ভূমিকা। মূল গল্পে এ চরিত্র নেই। চিত্রনাট্য করার পর ছবির নাম দিলেন নিশিপদ্ম। একদিন স্ক্রিপ্ট শোনালেন উত্তমকুমারকে। উচ্ছ্বসিত উত্তমকুমার সঙ্গে সঙ্গে সম্মতি দিলেন। উত্তমকুমার অনঙ্গ দত্ত, পদ্ম চরিত্রে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। অরবিন্দবাবু ছবি করার সময় সব ব্যাপারে পরিচালক তরুণ মজুমদারের সঙ্গে আলোচনা করে নিতেন ।তরুণ মজুমদার উৎসাহ দেননি এমন গল্প নিয়ে ছবি করতে। তার কারণ নিষিদ্ধপল্লির মেয়েদের গল্প নিয়ে তিনি যে ‘আলোর পিপাসা’ ছবি করেছিলেন তা দর্শকেরা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন যেখানে সন্ধ্যা রায় বসন্ত চৌধুরীর মতো শিল্পীরা ছিলেন। তবে এই ব্যাপারে অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় দমে যাননি। ওই গল্প ওই কাস্টিং নিয়ে তিনি ছবি করলেন নিশিপদ্ম। ১৯৭০ সালে মুক্তি পাওয়া ছবি সুপারহিট। ছবিটি অভিনয় গল্পে গানে জমজমাট। উত্তম সাবিত্রী জুটির অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছবি নিশিপদ্ম। অন্যান্য ভূমিকায় ছিলেন অসীম চক্রবর্তী, অনুপকুমার, জহর রায়, নৃপতি চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ শিল্পী। নিশিপদ্ম নির্মাণ পর্বের এই গল্প আমাকে নিজে পরিচালক অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যখন তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম কলকাতা দূরদর্শনের ‘ক্লোজআপ’ অনুষ্ঠানে।
নচিকেতা ঘোষের সুরে মান্না দের গাওয়া ‘না না না আজ রাতে আর যাত্রা শুনতে যাব না’, ‘যা খুশি ওরা বলে বলুক ওদের কথায় কী আসে যায়’ এবং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া ‘ওরে সকল সোনা মলিন হল কালো সোনার চেয়ে’ গানগুলি সময়কে হার মানিয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নিশিপদ্ম ছবির সুবাদে ১৯৭০ সালে মান্না দে শ্রেষ্ঠ গায়ক এবং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গায়িকার সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছিলেন। ছবির টাইটেল সং শ্যামল মিত্রের গাওয়া ‘রাজার পঙ্খি উইড়া গেলে রাজা নতুন পঙ্খি বান্ধে’ আজও শ্রোতাদের আলোড়িত করে চলেছে। নিশিপদ্ম ছবির চিত্রনাট্য নিয়ে হিন্দিতে শক্তি সামন্ত ছবি করেছিলেন ছবির নাম দিলেন ‘অমর প্রেম’।প্রধান দুই চরিত্রের শিল্পী ছিলেন রাজেশ খান্না শর্মিলা ঠাকুর।
উত্তমকুমার অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় জুটি ক্লিক করে যাওয়ায় অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় উত্তমকুমারকে নিয়ে আরও কয়েকটি ছবি পরবর্তী সময়ে করেছিলেন। সে সবকটি ছবি অসম্ভব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেই তালিকায় আছে ধন্যি মেয়ে, মৌচাক, অগ্নীশ্বর। শুরুটা যে হয়েছিল নিশিপদ্ম ছবির মধ্য দিয়ে তা কিন্তু ভোলার নয়।
উত্তমকুমারকে নিয়ে ছবি করার ক্ষেত্রে অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়কে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এই সময় তিনি পড়লেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাড়া জাগানো একটি ছোটগল্প ‘হিঙের কচুরি’। গল্পটা তাঁর মনে ধরল। নায়িকা কেন্দ্রিক গল্প। পদ্ম নামে এক ভাগ্যবিড়ম্বিত নারীর গল্প। সেখানে চিত্রনাট্য তৈরি করার সময় অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় একটি নতুন চরিত্র নিয়ে এলেন। চরিত্রের নাম অনঙ্গ দত্ত। মানুষটি নিয়মিত কাছে আসেন পদ্মের। সেই পদ্মের সত্যিকারের মা হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে অনঙ্গ দত্তের বিরাট ভূমিকা। মূল গল্পে এ চরিত্র নেই। চিত্রনাট্য করার পর ছবির নাম দিলেন নিশিপদ্ম। একদিন স্ক্রিপ্ট শোনালেন উত্তমকুমারকে। উচ্ছ্বসিত উত্তমকুমার সঙ্গে সঙ্গে সম্মতি দিলেন। উত্তমকুমার অনঙ্গ দত্ত, পদ্ম চরিত্রে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। অরবিন্দবাবু ছবি করার সময় সব ব্যাপারে পরিচালক তরুণ মজুমদারের সঙ্গে আলোচনা করে নিতেন ।তরুণ মজুমদার উৎসাহ দেননি এমন গল্প নিয়ে ছবি করতে। তার কারণ নিষিদ্ধপল্লির মেয়েদের গল্প নিয়ে তিনি যে ‘আলোর পিপাসা’ ছবি করেছিলেন তা দর্শকেরা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন যেখানে সন্ধ্যা রায় বসন্ত চৌধুরীর মতো শিল্পীরা ছিলেন। তবে এই ব্যাপারে অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় দমে যাননি। ওই গল্প ওই কাস্টিং নিয়ে তিনি ছবি করলেন নিশিপদ্ম। ১৯৭০ সালে মুক্তি পাওয়া ছবি সুপারহিট। ছবিটি অভিনয় গল্পে গানে জমজমাট। উত্তম সাবিত্রী জুটির অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছবি নিশিপদ্ম। অন্যান্য ভূমিকায় ছিলেন অসীম চক্রবর্তী, অনুপকুমার, জহর রায়, নৃপতি চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ শিল্পী। নিশিপদ্ম নির্মাণ পর্বের এই গল্প আমাকে নিজে পরিচালক অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যখন তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম কলকাতা দূরদর্শনের ‘ক্লোজআপ’ অনুষ্ঠানে।
নচিকেতা ঘোষের সুরে মান্না দের গাওয়া ‘না না না আজ রাতে আর যাত্রা শুনতে যাব না’, ‘যা খুশি ওরা বলে বলুক ওদের কথায় কী আসে যায়’ এবং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া ‘ওরে সকল সোনা মলিন হল কালো সোনার চেয়ে’ গানগুলি সময়কে হার মানিয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নিশিপদ্ম ছবির সুবাদে ১৯৭০ সালে মান্না দে শ্রেষ্ঠ গায়ক এবং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গায়িকার সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছিলেন। ছবির টাইটেল সং শ্যামল মিত্রের গাওয়া ‘রাজার পঙ্খি উইড়া গেলে রাজা নতুন পঙ্খি বান্ধে’ আজও শ্রোতাদের আলোড়িত করে চলেছে। নিশিপদ্ম ছবির চিত্রনাট্য নিয়ে হিন্দিতে শক্তি সামন্ত ছবি করেছিলেন ছবির নাম দিলেন ‘অমর প্রেম’।প্রধান দুই চরিত্রের শিল্পী ছিলেন রাজেশ খান্না শর্মিলা ঠাকুর।
উত্তমকুমার অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় জুটি ক্লিক করে যাওয়ায় অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় উত্তমকুমারকে নিয়ে আরও কয়েকটি ছবি পরবর্তী সময়ে করেছিলেন। সে সবকটি ছবি অসম্ভব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেই তালিকায় আছে ধন্যি মেয়ে, মৌচাক, অগ্নীশ্বর। শুরুটা যে হয়েছিল নিশিপদ্ম ছবির মধ্য দিয়ে তা কিন্তু ভোলার নয়।