বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

আজ আমরা জেনে নেব ডায়াবিটিসের সাধারণ লক্ষণ কী কী? অর্থাৎ ডায়াবেটিক রোগীদের সাধারণত কী কী উপসর্গ দেখা যায়। আগে যে তিনটি উপসর্গ সাধারণ ভাবে দেখা যেত সেগুলি হচ্ছে— বেশি করে খিদে পাওয়া, অতিরিক্ত জলতেষ্টা পাওয়া এবং বার বার প্রস্রাব করা। বিশেষত, রাতের দিকে বার বার প্রস্রাব পাওয়া।
 

আর কোন কোন উপসর্গে সাবধান হতে হবে?

এখনকার দিনে বেশি করে খিদে পাওয়া, অতিরিক্ত জলতেষ্টা পাওয়া এবং বার বার প্রস্রাব করা —এই তিনটি ‘ক্লাসিক’ উপসর্গ ডায়াবেটিক রোগীদের মধ্যে আর খুব বেশি দেখা যায় না। এই তিন উপসর্গ প্রধানত টাইপ-১ ডায়াবিটিসের রোগীদের ক্ষেত্রেই বেশি লক্ষ্য করা যায়।
আমাদের দেশে মূলত টাইপ-২ ডায়াবিটিসের সমস্যাই বেশি। এই টাইপ-২ ডায়াবিটিসে কিন্তু অনেক সময় উপসর্গ থাকে না। আবার হয়তো যে উপসর্গগুলো থাকে সেগুলো আবার একেবারে নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ নয়। অর্থাৎ, কারও হয়তো মাথা ঝিমঝিম করছে, ঘুম পাচ্ছে, কাজ করতে ইচ্ছে করছে না। অনেক সময় ওঠাৎ ওজনও কমে যায় ইত্যাদি দেখা যায়।

এই হঠাৎ যদি কারও ওজন কমে গেলে অবশ্যই ডায়াবিটিস হচ্ছে কিনা তাঁর জন্য রক্ত পরীক্ষা করে দেখতে হবে। আর কী কী হতে পারে? বার বার শরীরে জীবাণু সংক্রমণের প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। কারও ধরুন বুকে কফ, কাশি হচ্ছে। বার বার ইউরিনে ইনফেকশন হচ্ছে। বার বার জ্বর আসছে। অর্থাৎ শরীরে বার বার জীবাণু প্রবেশ করছে। এই জীবাণুর সংক্রমণ যদি বার বার হয়, তাহলে অবশ্যই ডায়াবিটিসের পরীক্ষা করানো উচিত।
হঠাৎ করে যদি ওজন কমে যায় তখন তো পরীক্ষা করতেই হবে। এছাড়া ওজন যদি আরও বেড়ে যায় তাহলেও কিন্তু পরীক্ষা করতে। এখন দেখা যাচ্ছে, আমরা যখন রক্ত পরীক্ষা করছি তার অনেক আগে থেকে কিন্তু ডায়াবিটিস শুরু হয়ে যাচ্ছে। সেই কারণে আমরা বলি, যাঁদের পরিবারে ডায়াবিটিস হওয়ার ইতিহাস আছে, অর্থাৎ বাবা-মা-দাদা-মাসি-পিসি প্রমুখের ডায়াবিটিস থাকলে ৩০ বছর বয়েসের পর থেকে বছরে একবার করে ডায়াবিটিসের জন্য রক্ত পরীক্ষা করা উচিত। যদি পরীক্ষায় না কিছু ধরা পড়ে তা হলে তো ভালোই। তবুও তাঁদের বছরে একবার করে নিয়মিত পরীক্ষা করতেই হবে।
আরও পড়ুন:

ডায়াবিটিসে ভুগছেন? সকালের জলখাবারে কী ধরনের খাবার খেতে পারেন? রইল ডক্তারবাবুর জরুরি পরামর্শ

বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল, পর্ব-১: চায়ের দোকান থেকে বিশ্বজয়

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-১৮: দেখা-অদেখা চেনা-অচেনায় ‘মরণের পরে’

 

কী কী পরীক্ষা করা হয়?

ডায়াবিটিসের জন্য আমরা সাধারণত রক্তের ফাস্টিং ব্লাড সুগার পরীক্ষা করি। ৮ ঘণ্টা খালি পেটে থেকে ফাস্টিং ব্লাড সুগার করতে হয়। এক্ষেত্রে শুধু জল খাওয়া যেতে পারে।

এইচবিএ১সি পরীক্ষাও করে দেখা হয়। এই পরীক্ষায় তিন মাসে গড় ব্লাড সুগার দেখা হয়।

খাবার দু’ঘণ্টার পরে অর্থাৎ দুপুরবেলা খাবার শুরু করা থেকে দু’ঘণ্টার পরে পিপি সুগার পরীক্ষা করা হয়।

আরও পড়ুন:

খাই খাইঃ রোজ রোজ এক রকম খাবারে অরুচি? খুদের জন্য রইল ভিন্ন স্বাদের এই রেসিপি

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৪৬: ছোটদের, একান্তই ছোটদের ‘ভাই-বোন সমিতি’

 

সঙ্গে আর কী কী পরীক্ষা করা বুদ্ধিমানের কাজ

আপনারা জানেন, ডায়াবিটিসের সঙ্গে অনেক আনুসঙ্গিক রোগ জড়িয়ে থাকে, যেমন হার্টের সমস্যা, কিডনির সনস্যা, ফ্যাটি লিভারের সমস্যা, স্থূলতার সমস্যা (ওবেসিটি) প্রভৃতি। সুতরাং আরও কিছু পরীক্ষা করতেই হয়। যেমন ১২ ঘণ্টা খালি পেটে থেকে লিপিড প্রফাইল টেস্ট করতে হয়। লিপিড প্রফাইল টেস্ট করলে আমরা বুঝতে পারব— কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডস বাড়ছে কিনা।

ডায়াবিটিসের সঙ্গে যেহেতু থাইরয়েডর সমস্যা রয়েছে তাই রক্তের টিএসএইচ পরীক্ষা করতে হবে। সুগার পরীক্ষার দিনই আট ঘণ্টা খালি পেতে থেকে করা যেতে পারে।

রক্তে ইউরিয়া করিয়েটিনিনের মাত্রা দেখার জন্য পরীক্ষা করতে হবে।

লভার ফাংশন টেস্ট করতে হবে।

এছাড়াও একটা ইসিজি করে দেখে নেওয়া ভালো। কারণ, ইসিজি হচ্ছে হার্টের একদম প্রাথমিক একটি পরীক্ষা।
এই সব সাধারণ পরীক্ষাগুলি অবশ্যই করতে হবে। এই সব পরীক্ষায় যদি কিছু অস্বাভাবিকতা থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শুরু করতে হবে চিকিৎসা।

যোগাযোগ: ৯৮৩১৬৭১৫২৫

* সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন (health-checkup – Health Tips) : ডাঃ আশিস মিত্র (Dr. Ashis Mitra), বিশিষ্ট মেডিসিন ও ডায়াবিটিস বিশেষজ্ঞ।

Skip to content