শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


আমার বাড়ির কাছেই একটি বরফে ঢাকা টিলার ওপরে সন্ধ্যভ্রমণ।

ভোর রাত থেকে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বড় বড় যন্ত্রপাতির আওয়াজ আর সময়ে সময়ে সড়ককর্মীদের চেঁচামেচি। আমার বাড়ি একদম শহরের কেন্দ্রস্থলে হওয়ায় এ আমার প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা। বাড়ির বাইরের দিকের ঘরটায় শুয়ে পড়লে পরের দিন সকালে আর এলার্ম দেওয়ার দরকার নেই। আগের রাতে বরফ পড়লে ভোর তিনটে থেকে শুরু হয়ে যায় কোলাহল। বিরাট বড় বড় যন্ত্র লাগানো সব গাড়ি চলে আসে নীচে। তারপর শুরু হয় বিভিন্ন রকমের কাজ।

প্রথমেই, গুঁড়ো গুঁড়ো বরফ রাস্তার ওপর থেকে থেকে ঘষে সরিয়ে দেওয়া হয় দুই পাশে ফুটপাথে। তারপর আর একটি গাড়ি এসে পর্যবেক্ষণ করে যে রাস্তায় কোনও শক্ত বরফ জমে আছে কি না। যদি থাকে তাহলে তাকে আগে ভাঙতে হয় তারপরে আবার সরানোর কাজ চলে। তারপরে শুরু হয় নুন ছড়ানোর কাজ যাতে বরফ পড়লে গলে যায়। এই নুনের কেলাসগুলো (ক্রিস্টাল) বেশ বড় হয়। তাতে আবার আর এক সমস্যা। বরফ গলে গেলে রাস্তার ওপরে এই কেলাসগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। তার ওপর দিয়ে জোরে গাড়ি চললেই সেগুলো ছিটকাতে থাকে। ছিটকে এসে পেছনের গাড়ির উইন্ডশিল্ডে বা সামনের কাচে লেগে মাঝেমধ্যেই তাতে ফাটল ধরে যায়।
আমার একবার গাড়িতেও একবার এইরকম একটি ফাটল ধরেছিল। সেটা বেশ মজার অভিজ্ঞতা। মজার থেকে তাকে অবশ্য বিরক্তিকর বলাই ভালো। যখন ওই পাথরের মতো কেলাস ছিটকে এসে কাচে লাগল তখন সেই ফাটলের মাপ একটা নখের চেয়েও কম। মানে কোনওরকমে দেখা যায় আর কী। আমি ভাবলাম এতে আর কী হবে। পরে কখনও ঠিক করিয়ে নেব। কিন্তু ঠান্ডার জায়গায় এমন কিছু সমস্যা আছে যেগুলো আমরা প্রথমে বুঝেই উঠতে পারি না। তারপর দু’তিন দিন গাড়িটা বাইরে রাখা ছিল। স্বাভাবিকভাবেই তার ওপরে পুরো বরফ জমে গিয়েছে। বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে একটা বরফের স্তূপ। পরে যেদিন গাড়ি নিয়ে বেরোব সেদিন সেই সমস্ত বরফ ঝেড়ে গাড়িতে উঠে গাড়ির মধ্যেকার হিটার চালিয়ে দিলাম। ওই হিটারের গরমে কাচে জমাট হয়ে থাকা বরফগুলো গলে যায়।

লেক জেনেভার ধারে তুষারভাস্কর্যের মেলা।

আমি হিটার চালিয়ে, ঘরে গিয়েছি কফি নিয়ে আসার জন্য। পাঁচ মিনিট হয়েছে কী হয়নি, এসে দেখি সর্বনাশ কাণ্ড। বাইরের প্রচণ্ড ঠান্ডা আর গাড়ির ভেতরে হিটারের গরম; তাপমাত্রার অত পার্থক্যের জন্য ওই নখের সমান ফাটলটা দু’দিকে লম্বা হয়ে পুরো কাচটাকে দখল করে চারভাগে ভাগ করে দিয়েছে। নেহাত এখনকার গাড়িতে কাচ ভেঙে পড়ে যায় না ওরকম ফাটল থাকলেও, তাই রক্ষে। না হলে গোটা গাড়িতে কাচ পড়ে একাকার কাণ্ড হত। অগত্যা আর কিছু করার নেই। সব কাজ বাতিল করে তখনই ছুটতে হল ডিলার-এ। না হলে আবার পরেরবার তাপমাত্রার পার্থক্য হলে আরও বেশ কিছু অংশে ভাগ হয়ে যাবে কাচটা। তারা আবার কাচ বদলে দিতে তবে আবার চালালাম।
 

বাইরে দূরে

লেখা পাঠানোর নিয়ম: এই বিভাগে পাঠকদের সঙ্গে আপনার সেরা ভ্রমণ অভিজ্ঞতার কাহিনি ভাগ করে নিতে পারেন। ভ্রমণ কাহিনি লিখতে হবে ১০০০ শব্দের মধ্যে ইউনিকোড ফরম্যাটে। সঙ্গে বেশ কিছু ছবি ও ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ পাঠাতে হবে। ছবি ও ভিডিও ক্লিপ লেখকেরই তোলা হতে হবে। ওয়াটারমার্ক থাকা চলবে না। ইমেল: samayupdatesin.writeus@gmail.com


Skip to content