ড. স্বাতী মোহন।
সেই ছেলেবেলা থেকেই অসীমের প্রতি মানুষের এক অমোঘ আকর্ষণ। কারও কারও বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই আকর্ষণ দৈনন্দিন বাস্তবতার সঙ্গে মিশে গিয়ে পৃথকভাবে স্বাতন্ত্র্যবাহী আকার ধারণ করতে পারে না, আবার কারও ক্ষেত্রে সেই আকর্ষণই তাকে করে তোলে সাধারণের মধ্যে সবিশেষ। আর সেইরকমই বিশেষ এক ব্যক্তিত্ব হলেন ড. স্বাতী মোহন। যিনি মাত্র ন-বছর বয়সেই বুঝে গিয়েছিলেন ওই বিপুল মহাকাশের গভীর অন্তস্তলেই লুকিয়ে রয়েছে তাঁর ভবিষ্যৎজীবনের সকল প্রাপ্তির চাবিকাঠি। এই প্রাপ্তি কেবল ব্যক্তিগত পার্থিব জীবনকেন্দ্রিক প্রাপ্তি নয়, এই প্রাপ্তির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বিশ্ববাসীর সামগ্রিক প্রাপ্তির খুঁটিনাটি, বিজ্ঞানের মঞ্চে অবতীর্ণ হয়ে সেই বৃহত্তর প্রাপ্তির অংশ হিসাবেই স্বাতী আজ সাধারণের মাঝে হয়ে উঠেছেন সবিশেষ।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই মহাকাশবিজ্ঞানীর জন্ম বেঙ্গালুরুতে হলেও মাত্র এক বছর বয়সেই তিনি চলে যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। স্বাতীর বেড়ে ওঠা, লেখাপড়া সমস্তটাই সম্পন্ন হয় প্রবাসের মাটিতে। প্রবাসের মাটিতে বেড়ে ওঠা এই ভারতীয় কন্যে মাত্র ন-বছর বয়সেই স্টার স্ট্রেক দেখে অনুসন্ধিৎসু হয়ে পড়েন মহাকাশ বিজ্ঞানের প্রতি, যদিও সময়ের নিয়মে পরিকল্পনা বদলেছিল তাঁর। একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ হওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত প্রতিভা ঠিকই তার খুঁজে নেয় কোনও না কোনওভাবে। ঠিক সেরকমভাবেই ১৬ বছর বয়সে পদার্থবিদ্যা পড়তে গিয়ে তিনি তার সিদ্ধান্ত বদল করেন এবং মেকানিক্যাল এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন স্বাতী। ভবিষ্যতে ওই একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাস্ট্রোনটিক্সে এম.এস করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
এইসময় থেকেই আরম্ভ হয় স্বাতীর উড়ান। প্রফেসর ডেভ মিলারের সঙ্গে ‘স্পেস সিস্টেম ল্যাবরেটরি’-তে অন-অরবিট অপারেশন নিয়ে তিনি গবেষণা করেছেন দিনের পর দিন। পাশাপাশি তিনি সিঙ্ক্রোনাইজড পজিশন হোল্ড এনগেজ এবং রিওরিয়েন্ট এক্সপেরিমেন্টাল স্যাটেলাইট নিয়েও কাজ করেছেন বহুদিন। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS)-এ করেছেন একাধিক পরীক্ষানিরীক্ষা, যেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন এমআইটি (MIT) প্রাক্তন নভোচারী ড্যান তানি এবং গ্রেগ চ্যামিটফ। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত স্ফিয়ারস (SPHERES) জিরো রোবোটিক্স প্রতিযোগিতাতেও কাজ করেছেন। পরবর্তীকালে এমআইটিতে, তিনি গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট কাউন্সিল, সিডনি-প্যাসিফিক রেসিডেন্স হল (সিডনি-প্যাসিফিক ইন্টারকালচারাল এক্সচেঞ্জ (SPICE) সহ) এবং বহুদিন যাবৎ জড়িত ছিলেন অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিক্সের গ্র্যাজুয়েট অ্যাসোসিয়েশন ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে।
মহাকাশবিজ্ঞানের ইতিহাস ড. স্বাতী মোহনের অন্যতর সমস্ত গবেষণামূলক কাজের মধ্যেও যে কাজটির জন্য তাঁকে সৃষ্টির শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মনে রাখবে সেটি হল মঙ্গলগ্রহে পারসিভ্যারান্স অভিযান। লালগ্রহে প্রাণের সন্ধানে যে অভিযানটি মহকাশবিজ্ঞানে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচ্য সেই অভিযানের সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয়ে দেখার দায়িত্ব ছিল ড. স্বাতী মোহনের ওপর, আর তাঁর কর্মদক্ষতার জোরেই শেষ সাত মিনিটের সমস্ত উৎকণ্ঠাকে জয় করে মঙ্গলের মাটিতে সুষ্ঠভাবে ও সাফল্যের সঙ্গে অবতরণ করে মার্কিন মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রের রোভার পারসিভেরান্স। রোভারের গাইডেন্স, নেভিগেশন ও কন্ট্রোলস অপারেশনসের দায়িত্বে ছিলেন স্বয়ং স্বাতী মোহন, আর জিএন অ্যান্ড সি-এর দায়িত্ব যথার্থভাবে পালন করার মধ্য দিয়ে এই অভিযান সার্থক করে তোলেন তিনি এবং তাঁর টিম। পালন করলেন স্বাতী মোহন এবং তাঁর টিম। ২০১২ সালে কিউরিওসিটি রোভার এবং ২০১৮ সালে মহাকাশযান ‘ইনসাইট’-এর পর ২০২০ সালের ৩০ জুলাই লালগ্রহের রুক্ষ মাটিতে প্রাণের সন্ধান করার জন্য আমেরিকার ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল এয়ার ফোর্স স্টেশন (Cape Canaveral Air Force Station) থেকে অ্যাটলাস ফাইভ লঞ্চ ভেহিকেলে মঙ্গলে পাড়ি দেয় নাসার রোভার ‘পারসিভের্যা্ন্স’ এবং ৬ মাস ১৮ দিন পর সেই ‘পারসিভের্যােন্স’ অবতরণ করে মঙ্গলের মাটিতে। পারসিভেরান্স অভিযানে মঙ্গল থেকে খননকার্যের মাধ্যমে মাটি ও পাথর সংগ্রহ করে ৪৩টি টেস্ট টিউবে সংরক্ষণ করা হয়। নাসাসূত্রে জানা গিয়েছিল ২০২৬ সালের নাসার সম্ভাব্য পরবর্তী মঙ্গল অভিযানে সেই টেস্ট টিউবগুলি পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
নাসা অভিযানে ভারতের মহিমাকে অক্ষুণ্ণ করে রাখলেন ড. স্বাতী মোহন তাঁর কীর্তির মধ্যে দিয়ে। স্বাতীর স্বামী ডাঃ সন্তোষ নাদিপুরম, লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই-এর শিশুরোগ-সংক্রামক রোগের চিকিৎসক এবং ইউসিএলএ-তে ডেভিড গেফেন স্কুল অফ মেডিসিন-এর পেডিয়াট্রিক সংক্রামক রোগের ক্লিনিকাল প্রশিক্ষক। ড. মোহন এবং নদীপুরমের দুই কন্যার মধ্যে একন ইতিমধ্যেই রয়েছে, ২০১৩ সালে এবং ২০২০ সালের মঙ্গল প্রকল্পে কাজ করতে আরম্ভ করেছেন। অসীমের এই উড়ানে এই প্রবাসী ভারতীয় কন্যাকে স্বাগত। ড. স্বাতী মোহনের কীর্তি বিশ্বের বিজ্ঞানমঞ্চে স্বর্ণাক্ষরে চিরকাল খোদাই করা থাকুক এই আশা ও ভরসাতেই ভারত তথা বিশ্বের সমস্ত অবিস্মরণীয়ারা পা বাড়াক তাঁদের উড়ানের পথে, আর আমরা বিস্ময়ভরে দেখি কেমন করে তাঁরা পেরিয়ে যান সমস্ত কঠিন বেড়াজালের শৃঙ্খল, হয়ে ওঠেন বিশ্বের ইতিহাসে এক এবং অন্যতমা।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই মহাকাশবিজ্ঞানীর জন্ম বেঙ্গালুরুতে হলেও মাত্র এক বছর বয়সেই তিনি চলে যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। স্বাতীর বেড়ে ওঠা, লেখাপড়া সমস্তটাই সম্পন্ন হয় প্রবাসের মাটিতে। প্রবাসের মাটিতে বেড়ে ওঠা এই ভারতীয় কন্যে মাত্র ন-বছর বয়সেই স্টার স্ট্রেক দেখে অনুসন্ধিৎসু হয়ে পড়েন মহাকাশ বিজ্ঞানের প্রতি, যদিও সময়ের নিয়মে পরিকল্পনা বদলেছিল তাঁর। একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ হওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত প্রতিভা ঠিকই তার খুঁজে নেয় কোনও না কোনওভাবে। ঠিক সেরকমভাবেই ১৬ বছর বয়সে পদার্থবিদ্যা পড়তে গিয়ে তিনি তার সিদ্ধান্ত বদল করেন এবং মেকানিক্যাল এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন স্বাতী। ভবিষ্যতে ওই একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাস্ট্রোনটিক্সে এম.এস করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
এইসময় থেকেই আরম্ভ হয় স্বাতীর উড়ান। প্রফেসর ডেভ মিলারের সঙ্গে ‘স্পেস সিস্টেম ল্যাবরেটরি’-তে অন-অরবিট অপারেশন নিয়ে তিনি গবেষণা করেছেন দিনের পর দিন। পাশাপাশি তিনি সিঙ্ক্রোনাইজড পজিশন হোল্ড এনগেজ এবং রিওরিয়েন্ট এক্সপেরিমেন্টাল স্যাটেলাইট নিয়েও কাজ করেছেন বহুদিন। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS)-এ করেছেন একাধিক পরীক্ষানিরীক্ষা, যেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন এমআইটি (MIT) প্রাক্তন নভোচারী ড্যান তানি এবং গ্রেগ চ্যামিটফ। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত স্ফিয়ারস (SPHERES) জিরো রোবোটিক্স প্রতিযোগিতাতেও কাজ করেছেন। পরবর্তীকালে এমআইটিতে, তিনি গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট কাউন্সিল, সিডনি-প্যাসিফিক রেসিডেন্স হল (সিডনি-প্যাসিফিক ইন্টারকালচারাল এক্সচেঞ্জ (SPICE) সহ) এবং বহুদিন যাবৎ জড়িত ছিলেন অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিক্সের গ্র্যাজুয়েট অ্যাসোসিয়েশন ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে।
মহাকাশবিজ্ঞানের ইতিহাস ড. স্বাতী মোহনের অন্যতর সমস্ত গবেষণামূলক কাজের মধ্যেও যে কাজটির জন্য তাঁকে সৃষ্টির শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মনে রাখবে সেটি হল মঙ্গলগ্রহে পারসিভ্যারান্স অভিযান। লালগ্রহে প্রাণের সন্ধানে যে অভিযানটি মহকাশবিজ্ঞানে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচ্য সেই অভিযানের সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয়ে দেখার দায়িত্ব ছিল ড. স্বাতী মোহনের ওপর, আর তাঁর কর্মদক্ষতার জোরেই শেষ সাত মিনিটের সমস্ত উৎকণ্ঠাকে জয় করে মঙ্গলের মাটিতে সুষ্ঠভাবে ও সাফল্যের সঙ্গে অবতরণ করে মার্কিন মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রের রোভার পারসিভেরান্স। রোভারের গাইডেন্স, নেভিগেশন ও কন্ট্রোলস অপারেশনসের দায়িত্বে ছিলেন স্বয়ং স্বাতী মোহন, আর জিএন অ্যান্ড সি-এর দায়িত্ব যথার্থভাবে পালন করার মধ্য দিয়ে এই অভিযান সার্থক করে তোলেন তিনি এবং তাঁর টিম। পালন করলেন স্বাতী মোহন এবং তাঁর টিম। ২০১২ সালে কিউরিওসিটি রোভার এবং ২০১৮ সালে মহাকাশযান ‘ইনসাইট’-এর পর ২০২০ সালের ৩০ জুলাই লালগ্রহের রুক্ষ মাটিতে প্রাণের সন্ধান করার জন্য আমেরিকার ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল এয়ার ফোর্স স্টেশন (Cape Canaveral Air Force Station) থেকে অ্যাটলাস ফাইভ লঞ্চ ভেহিকেলে মঙ্গলে পাড়ি দেয় নাসার রোভার ‘পারসিভের্যা্ন্স’ এবং ৬ মাস ১৮ দিন পর সেই ‘পারসিভের্যােন্স’ অবতরণ করে মঙ্গলের মাটিতে। পারসিভেরান্স অভিযানে মঙ্গল থেকে খননকার্যের মাধ্যমে মাটি ও পাথর সংগ্রহ করে ৪৩টি টেস্ট টিউবে সংরক্ষণ করা হয়। নাসাসূত্রে জানা গিয়েছিল ২০২৬ সালের নাসার সম্ভাব্য পরবর্তী মঙ্গল অভিযানে সেই টেস্ট টিউবগুলি পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
নাসা অভিযানে ভারতের মহিমাকে অক্ষুণ্ণ করে রাখলেন ড. স্বাতী মোহন তাঁর কীর্তির মধ্যে দিয়ে। স্বাতীর স্বামী ডাঃ সন্তোষ নাদিপুরম, লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই-এর শিশুরোগ-সংক্রামক রোগের চিকিৎসক এবং ইউসিএলএ-তে ডেভিড গেফেন স্কুল অফ মেডিসিন-এর পেডিয়াট্রিক সংক্রামক রোগের ক্লিনিকাল প্রশিক্ষক। ড. মোহন এবং নদীপুরমের দুই কন্যার মধ্যে একন ইতিমধ্যেই রয়েছে, ২০১৩ সালে এবং ২০২০ সালের মঙ্গল প্রকল্পে কাজ করতে আরম্ভ করেছেন। অসীমের এই উড়ানে এই প্রবাসী ভারতীয় কন্যাকে স্বাগত। ড. স্বাতী মোহনের কীর্তি বিশ্বের বিজ্ঞানমঞ্চে স্বর্ণাক্ষরে চিরকাল খোদাই করা থাকুক এই আশা ও ভরসাতেই ভারত তথা বিশ্বের সমস্ত অবিস্মরণীয়ারা পা বাড়াক তাঁদের উড়ানের পথে, আর আমরা বিস্ময়ভরে দেখি কেমন করে তাঁরা পেরিয়ে যান সমস্ত কঠিন বেড়াজালের শৃঙ্খল, হয়ে ওঠেন বিশ্বের ইতিহাসে এক এবং অন্যতমা।