ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।
আমাদের শরীরের প্রধানত চারটি অঙ্গ ডায়াবেটিসজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিডনি, হার্ট, চোখ ও স্নায়ু। কোন কোন উপসর্গ শরীরে দেখা দিলে আমরা বুঝব যে ডায়াবেটিসজনিত সমস্যার কারণে এটি হচ্ছে?
চোখ
● ডায়াবেটিস ধরা পড়ার দু-এক বছরের মধ্যে কারও দৃষ্টিশক্তি কমে আসছে। চোখে ঝাপসা দেখছেন বা চোখের পাওয়ারটির ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। যেমন আপনি নতুন চশমা নিয়েছেন কিন্তু সেই চশমা ঠিকমতো কাজ করছে না অর্থাৎ আপনার সামনে থাকা বই আপনি পড়তে পারছেন না। চোখের সামনে কালো স্পট দেখছেন বা কালো কালো স্পট চোখের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমন যদি দেখেন তাহলে দ্রুত ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের পরামর্শও নিতে হবে। কারণ, আমাদের চোখের পিছন দিকে রেটিনা বলে একটি অঙ্গ আছে। সেই রেটিনা ডায়াবেটিসে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হলে কিন্তু আমাদের দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে থাকে। আরেকটি বিষয় হল, রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাকে সম্পূর্ণরূপে ঠিক করার মতো পর্যাপ্ত ওষুধ কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের হাতে নেই।
সুতরাং আমাদের প্রথম থেকেই সজাগ হতে হবে, যাতে রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তাই ডায়াবেটিসকে শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বছরে একবার হলেও ডায়াবেটিস রোগীকে চক্ষু বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিতে হবে এবং রেটিনাকে ঠিক রাখার জন্য যদি কোনও ওষুধ দেন তা নিতে হবে।
নার্ভ
● অনেক সময় স্নায়ুর সমস্যা আমরা বুঝতে পেরেও অবহেলা করে থাকি। ধরা যাক, কারও পা ঝিনঝিন করছে বা কিছুক্ষণ বসে থাকার পর পা-টি অসাড় হয়ে যাচ্ছে। আপনি যখন হাঁটছেন তখন আপনার মনে হচ্ছে বালির বা তুলোর উপর দিয়ে হাঁটছেন। এসব উপসর্গ যদি থাকে তাহলে বুঝতে হবে পায়ের স্নায়ুগুলি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিসে প্রধানত পায়ের স্নায়ুই ক্ষতিগ্রস্ত হয়, হাতের নার্ভ অতটা হয় না। সুতরাং ওপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলি যদি আপনার ক্ষেত্রে দেখা যায় বা আপনার পা অস্বাভাবিক রকম ফুলে যাচ্ছে মনে হয়; পায়ের তলায় ছোট ছোট লাল লাল স্পট পড়ে ব্যথা হচ্ছে মনে হয় তাহলে কিন্তু অবশ্যই সজাগ হতে হবে।
পায়ের রক্ত সঞ্চালনে যে ধমনীগুলি আছে সেগুলিও ডায়াবেটিসজনিত কারণে অকেজো হয়ে যেতে পারে। সুতরাং আমাদের করণীয় হল প্রতিদিন স্নানের পর পায়ের পাতাটিকে লক্ষ রাখা। পায়ে কোনও লাল লাল স্পট পড়েছে কি না, আঙুলের ফাঁকে সাদা সাদা দাগ পড়ছে কি না তা দেখতে হবে। নিজে না দেখতে পারলেও আয়নায় সাহায্য নিতে পারেন। যদি দেখেন এরকম কিছু হচ্ছে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
কিডনি
● কিডনির সমস্যা শুরুর দিকে বোঝার কোনও উপায় নেই। তার কারণ হল আমাদের কিডনি থেকে প্রোটিন বেরিয়ে যায়। কিন্তু কিডনি থেকে এই প্রোটিন যখন প্রথম বের হয় তখন কোনও সমস্যা হয় না। পরে অর্থাৎ কিডনি থেকে প্রোটিন যখন অনেকটা বেরিয়ে যায় তখন দেখবেন আপনি যখন ইউরিন করছেন তখন ফেনা হচ্ছে। এই ইউরিন করার পর যদি ফেনা হয় তাহলে কিন্তু বুঝতে হবে আপনার ইউরিনের শরীরের প্রোটিনটি বেরিয়ে যাচ্ছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হল ডায়াবেটিস বা ব্লাড প্রেশার বেড়ে যাওয়া বা একসঙ্গে দুটোই। একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা হল, প্রতি ১০০-র মধ্যে ৯৫ জনের কিডনির সমস্যার পেছনে প্রধান কারণ হল ডায়াবেটিস বা ব্লাড প্রেশারের জন্য।
করণীয় কী
করণীয় হল, কিডনি থেকে প্রোটিন বেরিয়ে যাওয়ার একটা পরীক্ষা আছে ‘ইউরিন ফর স্পট ইসিআর’। খুব সহজেই কিন্তু এই পরীক্ষাটি করা যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম যে ইউরিন, সেই ইউরিনের স্যাম্পেল থেকেই এটি করা যায়। এই টেস্টের একটি মাত্র আছে, যেই মাত্রা দেখে ডাক্তারবাবুরা বুঝতে পারেন রোগী কোন স্টেজে আছেন। সেই মাত্রা দেখেই ডাক্তারবাবুরা ওষুধ দেবেন। ব্লাড প্রেশারের সমস্যা ব্লাড প্রেশারের ওষুধ দিয়ে, ডায়াবেটিসের সমস্যা ডায়াবেটিসের ওষুধ দিয়ে। প্রথম দিকে যদি এটি ধরা পড়ে তাহলে রুগির ঠিক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কিডনির সমস্যাও সময়ে চিকিৎসা করালে ঠিক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কিডনিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে পাওয়া যেতে পারে। কিডনি বেশি খারাপ হয়ে গিয়ে ডায়ালোসিস পর্যন্ত না পৌঁছায় তার ব্যবস্থাও করা যায়।
সুতরাং আমাদের প্রথম থেকেই সজাগ হতে হবে, যাতে রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তাই ডায়াবেটিসকে শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বছরে একবার হলেও ডায়াবেটিস রোগীকে চক্ষু বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিতে হবে এবং রেটিনাকে ঠিক রাখার জন্য যদি কোনও ওষুধ দেন তা নিতে হবে।
পায়ের রক্ত সঞ্চালনে যে ধমনীগুলি আছে সেগুলিও ডায়াবেটিসজনিত কারণে অকেজো হয়ে যেতে পারে। সুতরাং আমাদের করণীয় হল প্রতিদিন স্নানের পর পায়ের পাতাটিকে লক্ষ রাখা। পায়ে কোনও লাল লাল স্পট পড়েছে কি না, আঙুলের ফাঁকে সাদা সাদা দাগ পড়ছে কি না তা দেখতে হবে। নিজে না দেখতে পারলেও আয়নায় সাহায্য নিতে পারেন। যদি দেখেন এরকম কিছু হচ্ছে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
করণীয় হল, কিডনি থেকে প্রোটিন বেরিয়ে যাওয়ার একটা পরীক্ষা আছে ‘ইউরিন ফর স্পট ইসিআর’। খুব সহজেই কিন্তু এই পরীক্ষাটি করা যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম যে ইউরিন, সেই ইউরিনের স্যাম্পেল থেকেই এটি করা যায়। এই টেস্টের একটি মাত্র আছে, যেই মাত্রা দেখে ডাক্তারবাবুরা বুঝতে পারেন রোগী কোন স্টেজে আছেন। সেই মাত্রা দেখেই ডাক্তারবাবুরা ওষুধ দেবেন। ব্লাড প্রেশারের সমস্যা ব্লাড প্রেশারের ওষুধ দিয়ে, ডায়াবেটিসের সমস্যা ডায়াবেটিসের ওষুধ দিয়ে। প্রথম দিকে যদি এটি ধরা পড়ে তাহলে রুগির ঠিক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কিডনির সমস্যাও সময়ে চিকিৎসা করালে ঠিক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কিডনিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে পাওয়া যেতে পারে। কিডনি বেশি খারাপ হয়ে গিয়ে ডায়ালোসিস পর্যন্ত না পৌঁছায় তার ব্যবস্থাও করা যায়।
ডায়াবেটিসে আর এক ধরনের হার্ট ফেলিওর হতে পারে যেখানে পাম্পিং ক্ষমতা ঠিক আছে কিন্তু সংকোচন প্রসারণ ঠিকমতো করতে পারছে না। ডাক্তারি পরিভাষায় এর নাম ‘ডায়াস্টোরি হার্ট ফেলিওর’। এক্ষেত্রে ডাক্তারবাবুরা ‘এন্টি পো বিএনপি’ নামে একটি রক্ত পরীক্ষা করে রোগীর ডায়াস্টোরি হার্ট ফেলিওর হচ্ছে কি না দেখে নেন।
বুক ধড়ফড় করা থেকে শুরু করে হাঁপানো এমন সমস্যা যদি দেখা যায় কোনও ডায়াবেটিস রোগীর তাহলে বুঝতে হবে তার হার্টের সমস্যা শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিতে হবে।