আন্তর্জাতিক জেরিয়াট্রিক এবং জেরন্টলজি কনফারেন্স-এর সৌজন্যে।
উন্নত বিশ্বে অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও চিকিৎসাবিদ্যা উন্নতির শীর্ষবিন্দুকে ছোঁয়ার প্রক্রিয়ায় অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করছে। বাড়ছে চিকিৎসাবিদ্যায় প্রযুক্তিগত উন্নয়নও। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের দেশে এখনও প্রবীণদের চিকিৎসা পদ্ধতিতে রয়েছে বিভিন্ন প্রকারের ঘাটতি। এর অন্যতম কারণ, প্রবীণদের চিকিৎসায় যে বিভাগটিকে বিশেষ বিভাগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, সেই জেরিয়াট্রিক মেডিসিন নামক বিভাগটি এখনও আমাদের দেশে সেভাবে প্রচলিত নয়, তাই বেশিরভাগ মানুষ এই বিষয়ে ওয়াকিবহালও নন। ‘জেরিয়াট্রিক’ বিষয়টি আমাদের দেশে এখনও খুব কম সংখ্যক মেডিকেল কলেজে পড়ানো হয়। সম্প্রতি কলকাতা মেডিকেল কলেজে জেরিয়াট্রিক মেডিসিন বিভাগ চালু হয়েছে। প্রবীণদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে রয়েছে এমন বিশেষ কয়েকটি দিক সম্পর্কে চিকিৎসকদের ওয়াকিবহাল থাকা অত্যন্ত জরুরি। সমগ্র বিশ্বের তুলনায় আমাদের দেশে প্রবীণদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ায় ভারতে এই চিকিৎসা পদ্ধতির গুরুত্ব অনেক বেশি।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক জেরিয়াট্রিক এবং জেরন্টলজি কনফারেন্স’-এ এই গুরুত্বের স্বরূপটি আরও পরিস্ফুট হয়ে উঠল দেশ- বিদেশের প্রবীণদের চিকিৎসায় সরাসরি ভাবে যুক্ত বিভিন্ন চিকিৎসকের আলোচনার মধ্য দিয়ে। চল্লিশ জনেরও বেশি চিকিৎসক এই কনফারেন্সে প্রবীণদের শারীরিক, মানসিক ও পরিচর্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন। ‘জেরিয়াট্রিক সোসাইটি অব ইন্ডিয়া’র পশ্চিমবঙ্গ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলনে অনলাইন মাধ্যমে অংশ নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, মণিপুর, অসম, কর্ণাটক, কেরল, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্য এবং ইংল্যান্ড, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নেপাল ও বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন প্রথিতযশা চিকিৎসকেরা। প্রায় হাজার জনের মতো চিকিৎসক এবং জেরিয়াট্রিক স্বাস্থ্যকর্মী এবং বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরাও অংশ নেন এতে। সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আদ্যাপীঠ রামকৃষ্ণ সংঘ-এর সম্পাদক ব্রহ্মচারী মুরাল ভাই।
সম্মেলনে প্রবীণদের পরিচর্যায় নিযুক্ত ‘কেয়ার গিভার’ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ‘এ গাইড ফর এ জেরিয়াট্রিক সোশ্যাল ওয়ার্কার (কেয়ার গীভার)’ নামক একটি ‘গাইড বুক’-এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হয়। বইটিতে দেশের বিভিন্ন চিকিৎসকেরা খুব সহজ ভাষায় প্রবীণদের পরিচর্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন। বইটিতে মূলত যে বিশেষ কয়েকটি দিকে আলোকপাত করা হয়েছে সেগুলি হল—
● দৈনন্দিন পরিচর্যার বিভিন্ন দিক।
● শয্যাশায়ীদের পরিচর্যার বিভিন্ন দিক।
● ডিমেনশিয়া, পারকিনসন এর মতন বিশেষ রোগীদের পরিচর্যার বিভিন্ন দিক।
● গৃহভিত্তিক চিকিৎসায় পরিচর্যার বিভিন্ন দিক।
● করোনা আক্রান্ত প্রবীণদের পরিচর্যার বিভিন্ন দিক।
● প্রবীণদের উপযোগী গৃহসজ্জার বিভিন্ন দিক।
● প্রবীণদের মানসিক পরিচর্যার বিভিন্ন দিক।
আমাদের দেশে এ ধরনের কাজ এই প্রথম। সংগঠনের সহ সম্পাদক ও বার্ধক্য চিকিৎসক ডাঃ ধীরেশকুমার চৌধুরি জানান, ‘আমাদের দেশে প্রায় বেশিরভাগ ‘কেয়ার গিভার’-এর কোনও প্রশিক্ষণ নেই, এমনকি অনেকের অক্ষরজ্ঞান পর্যন্ত নেই। ফলে তাদের অজ্ঞানতার কারণে অনেক সময় অনভিপ্রেত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় প্রবীণদের। জেরিয়াট্রিক সোসাইটির মতো কিছু সংগঠনের উদ্যোগে বেসরকারিস্তরে কিছু প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাই প্রশিক্ষণের বইটির গুরুত্ব অপরিসীম।’
সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি ও বিশিষ্ট বার্ধক্য চিকিৎসক ডাঃ কৌশিকরঞ্জন দাস বলেন, ‘এ বছরের মধ্যেই কলকাতায় জেরিয়াট্রিক প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষ কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশের মধ্যে এই ধরনের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা সম্ভবত প্রথম।’
শহরের অন্যতম দু’টি কর্পোরেট হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত এবং বিদেশে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশিষ্ট মেডিসিন ও জেরিয়াট্রিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ চিন্ময়কুমার মাইতি বলেন, ‘এই প্রশিক্ষণ ভীষণভাবে জরুরি। বিদেশে বিশেষ করে ইংল্যান্ড বা আমেরিকার মতো দেশে প্রবীণদের পরিচর্যা করতে গেলে প্রত্যেকের বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হয়, এমনকি বাড়ির লোক হলেও।’
সম্মেলনের অর্গানাইজিং সেক্রেটারি ও বিশিষ্ট জেরিয়াট্রিসিয়ান ডাঃ কৃষ্ণাঞ্জন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘এই বছরের শেষে কলকাতাতে আবারও একটি এই ধরনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, যেখানে অংশগ্রহণ করবেন দেশ- বিদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তিনি আরও জানান, সম্মেলনে চিকিৎসক ছাড়াও ‘কেয়ার গিভার’ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের কথা মাথায় রেখে বিশেষ আলোচনা ও কর্মশালার আয়োজন করা হবে।
আশা করা যায়, এই উদ্যোগ আমাদের দেশের প্রবীণদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক নতুন দিক উন্মোচন করতে সক্ষম হবে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক জেরিয়াট্রিক এবং জেরন্টলজি কনফারেন্স’-এ এই গুরুত্বের স্বরূপটি আরও পরিস্ফুট হয়ে উঠল দেশ- বিদেশের প্রবীণদের চিকিৎসায় সরাসরি ভাবে যুক্ত বিভিন্ন চিকিৎসকের আলোচনার মধ্য দিয়ে। চল্লিশ জনেরও বেশি চিকিৎসক এই কনফারেন্সে প্রবীণদের শারীরিক, মানসিক ও পরিচর্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন। ‘জেরিয়াট্রিক সোসাইটি অব ইন্ডিয়া’র পশ্চিমবঙ্গ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলনে অনলাইন মাধ্যমে অংশ নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, মণিপুর, অসম, কর্ণাটক, কেরল, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্য এবং ইংল্যান্ড, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নেপাল ও বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন প্রথিতযশা চিকিৎসকেরা। প্রায় হাজার জনের মতো চিকিৎসক এবং জেরিয়াট্রিক স্বাস্থ্যকর্মী এবং বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরাও অংশ নেন এতে। সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আদ্যাপীঠ রামকৃষ্ণ সংঘ-এর সম্পাদক ব্রহ্মচারী মুরাল ভাই।
সম্মেলনে প্রবীণদের পরিচর্যায় নিযুক্ত ‘কেয়ার গিভার’ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ‘এ গাইড ফর এ জেরিয়াট্রিক সোশ্যাল ওয়ার্কার (কেয়ার গীভার)’ নামক একটি ‘গাইড বুক’-এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হয়। বইটিতে দেশের বিভিন্ন চিকিৎসকেরা খুব সহজ ভাষায় প্রবীণদের পরিচর্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন। বইটিতে মূলত যে বিশেষ কয়েকটি দিকে আলোকপাত করা হয়েছে সেগুলি হল—
আমাদের দেশে এ ধরনের কাজ এই প্রথম। সংগঠনের সহ সম্পাদক ও বার্ধক্য চিকিৎসক ডাঃ ধীরেশকুমার চৌধুরি জানান, ‘আমাদের দেশে প্রায় বেশিরভাগ ‘কেয়ার গিভার’-এর কোনও প্রশিক্ষণ নেই, এমনকি অনেকের অক্ষরজ্ঞান পর্যন্ত নেই। ফলে তাদের অজ্ঞানতার কারণে অনেক সময় অনভিপ্রেত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় প্রবীণদের। জেরিয়াট্রিক সোসাইটির মতো কিছু সংগঠনের উদ্যোগে বেসরকারিস্তরে কিছু প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাই প্রশিক্ষণের বইটির গুরুত্ব অপরিসীম।’
সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি ও বিশিষ্ট বার্ধক্য চিকিৎসক ডাঃ কৌশিকরঞ্জন দাস বলেন, ‘এ বছরের মধ্যেই কলকাতায় জেরিয়াট্রিক প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষ কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশের মধ্যে এই ধরনের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা সম্ভবত প্রথম।’
শহরের অন্যতম দু’টি কর্পোরেট হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত এবং বিদেশে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশিষ্ট মেডিসিন ও জেরিয়াট্রিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ চিন্ময়কুমার মাইতি বলেন, ‘এই প্রশিক্ষণ ভীষণভাবে জরুরি। বিদেশে বিশেষ করে ইংল্যান্ড বা আমেরিকার মতো দেশে প্রবীণদের পরিচর্যা করতে গেলে প্রত্যেকের বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হয়, এমনকি বাড়ির লোক হলেও।’
সম্মেলনের অর্গানাইজিং সেক্রেটারি ও বিশিষ্ট জেরিয়াট্রিসিয়ান ডাঃ কৃষ্ণাঞ্জন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘এই বছরের শেষে কলকাতাতে আবারও একটি এই ধরনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, যেখানে অংশগ্রহণ করবেন দেশ- বিদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তিনি আরও জানান, সম্মেলনে চিকিৎসক ছাড়াও ‘কেয়ার গিভার’ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের কথা মাথায় রেখে বিশেষ আলোচনা ও কর্মশালার আয়োজন করা হবে।
আশা করা যায়, এই উদ্যোগ আমাদের দেশের প্রবীণদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক নতুন দিক উন্মোচন করতে সক্ষম হবে।