ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
সাহিত্য শব্দের অর্থ ‘সহিতের ভাব’ বা ‘সহভাববিশিষ্ট’ অর্থাৎ মিলন। এই মিলন বা যোগ সাহিত্যিকের সঙ্গে পাঠকের, শব্দের সঙ্গে অর্থের, জ্ঞানের সঙ্গে উপলব্ধির, হৃদয়ের সঙ্গে হৃদয়ের। সাহিত্য আসলে মানুষের সঙ্গে মানুষের নিবিড় ঘনিষ্ঠতারই ইতিবৃত্ত। সাহিত্যপাঠে মানবমনে তৈরি হয় অপরের প্রতি সহানুভূতি, সহমর্মিতা। মনের কোমল বৃত্তিগুলির শুদ্ধ উচ্চারণ অবচেতন থেকে শেখায় সাহিত্য। আনন্দের সঙ্গী, বেদনার উপশম, সংগ্রামের হাতিয়ার হয়ে ওঠে সাহিত্য। মানবিকতাবোধ জাগরণে, মনের ভাবনা সম্প্রসারণের চিরসঙ্গী সাহিত্য। ক্রমশই সে হয়ে ওঠে মানব মনেরই এক বিকল্প সত্তা। কিন্তু কেবলমাত্র সাহিত্যপাঠের মাধ্যমে সেই আনন্দের অনুসন্ধান ছাড়াও জীবন ও জীবিকার স্বার্থে সাহিত্যকে বিষয় হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য কীভাবে আমাদের জীবিকার পথে দিশা দেখাতে পারে?
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে জীবিকা অর্জনের জন্য অনেক রকমের পথ খোলা থাকে। সফল হওয়া যায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে। বাংলার মতো বিষয় নিয়ে স্নাতকোত্তরের পর স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ তো থাকেই। এছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রেই কর্মসংস্থানের প্রভূত সম্ভাবনা থাকে।
স্কুলে শিক্ষকতা
পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুলেই প্রথম কিংবা দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে বাংলা পড়ানো হয়। সুতরাং বাংলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের পর বিভিন্ন সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা ও ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকতা করা সম্ভব।
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা এবং গবেষণা
নেট অথবা সেট পরীক্ষা দিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সুযোগ থাকে। এছাড়া ওই একই পরীক্ষার মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্কোরের উপর বিভিন্ন স্কলারশিপ (যেমন জেআরএফ, এসআরএফ ইত্যাদি) নিয়ে গবেষণার অবকাশও থাকে।
রিসার্চ প্রোজেক্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও তার অধীনস্থ বিভিন্ন কলেজ ও নানা সংস্থায় অনেক রিসার্চ প্রোজেক্ট চলে। সেই প্রকল্পগুলিতে সহকারী হিসাবেও কাজের সুযোগ থাকে।
সাংবাদিকতা
সাহিত্য নিয়ে পড়লে নিজস্ব ভাবনা প্রকাশ করা ও লেখার একটা সহজাত ক্ষমতা তৈরি হয়। এই বিশেষ ক্ষমতাকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করে সাংবাদিকতাতেও চূড়ান্ত সফল হওয়া যায়। অর্থাৎ বাংলা নিয়ে পড়াশোনা করে প্রিন্টিং ও ইলেক্ট্রনিক্স উভয় মাধ্যমেই সাংবাদিক হওয়া যায়। তবে বাংলা পড়ার পর সাংবাদিকতার কোর্স করে নিলে আরও সুবিধা হয়।
স্ক্রিপ্ট রাইটার
ভাষা সম্পর্কিত সম্যক জ্ঞান, কল্পনাশক্তি ও সৃজনী প্রতিভার সমন্বয়ে সিনেমা, থিয়েটার, নাটক বা সিরিয়ালে চিত্রনাট্যকার বা স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসাবে কাজ করার সুযোগ ও সম্ভাবনা থাকে।
অনুবাদক
বাংলার সঙ্গে যদি অতিরিক্ত আরও দু-একটি ভাষায় দখল ও সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকে তাহলে বাণিজ্য, আইন, সাহিত্য নানান ক্ষেত্রে অনুবাদকের কাজ পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে অবশ্য বাংলার পাশাপাশি অন্য একটি ভাষাতেও প্রায় সমান দক্ষতা থাকা বাঞ্ছনীয়। বিদ্যালয় স্তরে দ্বিতীয় বা তৃতীয় ভাষা এবং স্নাতক স্তরে জেনারেল বা সাধারণ বিষয়ের মধ্যে ভাষা ও সাহিত্যের যে বিষয়গুলি নির্বাচন করা হয় (যেমন ইংরাজি, সংস্কৃত, হিন্দি ইত্যাদি) সেগুলির ভাষা, ব্যাকরণ ও সাহিত্য সম্পর্কে সমান জ্ঞান অর্জন করে রাখলে সুবিধা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সংস্থাও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ভাষার প্রশিক্ষণ দেয়।
প্রকাশনা সংস্থায় সুযোগ
বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়ে সাহিত্যের জ্ঞান ও লেখনীশক্তির সহায়তায় বিভিন্ন বাংলা প্রকাশনা সংস্থায় নানান ধরনের কাজের সুযোগ থাকে।
প্রুফ রিডার
বাংলায় স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের পর বাংলা বানান, ব্যাকরণ ও ভাষায় যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করলে প্রুফ রিডার হিসাবে কাজ করার সুযোগ থেকে যায়। প্রুফ রিডিঙের নির্দিষ্ট নিয়মাবলিগুলি এক্ষেত্রে জেনে রাখা আবশ্যক।
লাইব্রেরিয়ান বা গ্রন্থাগারিক
সাহিত্য নিয়ে যাঁরা পড়শোনা করেন সাধারণত তাঁরা সাহিত্যানুরাগী হন। গল্প, উপন্যাস-কবিতা বা বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে ভালোবাসেন। বইয়ের প্রতি এই ভালোবাসাকে কাজে লাগিয়ে লাইব্রেরিয়ান বা গ্রন্থাগারিক হওয়া যায়। এক্ষেত্রে বাংলা নিয়ে পড়ার পর লাইব্রেরি সায়েন্স নিয়ে পড়লে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি গ্রন্থাগারে এবং স্কুল-কলেজের গ্রন্থাগারিকের পদে কাজে যোগ দেওয়া সম্ভব।
এছাড়া বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে রাজ্য ও সর্বভারতীয় স্তরের (যেমন, আইএএস, ডব্লুবিসিএস, আইএফএস ইত্যাদি) প্রশাসনিক পদে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পাশাপাশি রেল, ব্যাংক বা টেলিকমের মতো নানান সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাতেও নির্দিষ্ট পরীক্ষার মাধমে বিভিন্ন পদে কর্মসংস্থানের অবকাশ তো থাকেই।
সবশেষে বলা যায়, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করলে বিভিন্ন কর্মসংস্থানের সুযোগ ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনা যেমন থাকে তেমনই সাহিত্যপাঠের মাধ্যমে নিজ আত্মিক উন্নতিও সম্ভব।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে জীবিকা অর্জনের জন্য অনেক রকমের পথ খোলা থাকে। সফল হওয়া যায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে। বাংলার মতো বিষয় নিয়ে স্নাতকোত্তরের পর স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ তো থাকেই। এছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রেই কর্মসংস্থানের প্রভূত সম্ভাবনা থাকে।
পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুলেই প্রথম কিংবা দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে বাংলা পড়ানো হয়। সুতরাং বাংলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের পর বিভিন্ন সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা ও ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকতা করা সম্ভব।
নেট অথবা সেট পরীক্ষা দিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সুযোগ থাকে। এছাড়া ওই একই পরীক্ষার মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্কোরের উপর বিভিন্ন স্কলারশিপ (যেমন জেআরএফ, এসআরএফ ইত্যাদি) নিয়ে গবেষণার অবকাশও থাকে।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও তার অধীনস্থ বিভিন্ন কলেজ ও নানা সংস্থায় অনেক রিসার্চ প্রোজেক্ট চলে। সেই প্রকল্পগুলিতে সহকারী হিসাবেও কাজের সুযোগ থাকে।
সাহিত্য নিয়ে পড়লে নিজস্ব ভাবনা প্রকাশ করা ও লেখার একটা সহজাত ক্ষমতা তৈরি হয়। এই বিশেষ ক্ষমতাকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করে সাংবাদিকতাতেও চূড়ান্ত সফল হওয়া যায়। অর্থাৎ বাংলা নিয়ে পড়াশোনা করে প্রিন্টিং ও ইলেক্ট্রনিক্স উভয় মাধ্যমেই সাংবাদিক হওয়া যায়। তবে বাংলা পড়ার পর সাংবাদিকতার কোর্স করে নিলে আরও সুবিধা হয়।
ভাষা সম্পর্কিত সম্যক জ্ঞান, কল্পনাশক্তি ও সৃজনী প্রতিভার সমন্বয়ে সিনেমা, থিয়েটার, নাটক বা সিরিয়ালে চিত্রনাট্যকার বা স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসাবে কাজ করার সুযোগ ও সম্ভাবনা থাকে।
বাংলার সঙ্গে যদি অতিরিক্ত আরও দু-একটি ভাষায় দখল ও সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকে তাহলে বাণিজ্য, আইন, সাহিত্য নানান ক্ষেত্রে অনুবাদকের কাজ পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে অবশ্য বাংলার পাশাপাশি অন্য একটি ভাষাতেও প্রায় সমান দক্ষতা থাকা বাঞ্ছনীয়। বিদ্যালয় স্তরে দ্বিতীয় বা তৃতীয় ভাষা এবং স্নাতক স্তরে জেনারেল বা সাধারণ বিষয়ের মধ্যে ভাষা ও সাহিত্যের যে বিষয়গুলি নির্বাচন করা হয় (যেমন ইংরাজি, সংস্কৃত, হিন্দি ইত্যাদি) সেগুলির ভাষা, ব্যাকরণ ও সাহিত্য সম্পর্কে সমান জ্ঞান অর্জন করে রাখলে সুবিধা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সংস্থাও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ভাষার প্রশিক্ষণ দেয়।
বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়ে সাহিত্যের জ্ঞান ও লেখনীশক্তির সহায়তায় বিভিন্ন বাংলা প্রকাশনা সংস্থায় নানান ধরনের কাজের সুযোগ থাকে।
বাংলায় স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের পর বাংলা বানান, ব্যাকরণ ও ভাষায় যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করলে প্রুফ রিডার হিসাবে কাজ করার সুযোগ থেকে যায়। প্রুফ রিডিঙের নির্দিষ্ট নিয়মাবলিগুলি এক্ষেত্রে জেনে রাখা আবশ্যক।
সাহিত্য নিয়ে যাঁরা পড়শোনা করেন সাধারণত তাঁরা সাহিত্যানুরাগী হন। গল্প, উপন্যাস-কবিতা বা বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে ভালোবাসেন। বইয়ের প্রতি এই ভালোবাসাকে কাজে লাগিয়ে লাইব্রেরিয়ান বা গ্রন্থাগারিক হওয়া যায়। এক্ষেত্রে বাংলা নিয়ে পড়ার পর লাইব্রেরি সায়েন্স নিয়ে পড়লে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি গ্রন্থাগারে এবং স্কুল-কলেজের গ্রন্থাগারিকের পদে কাজে যোগ দেওয়া সম্ভব।
এছাড়া বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে রাজ্য ও সর্বভারতীয় স্তরের (যেমন, আইএএস, ডব্লুবিসিএস, আইএফএস ইত্যাদি) প্রশাসনিক পদে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পাশাপাশি রেল, ব্যাংক বা টেলিকমের মতো নানান সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাতেও নির্দিষ্ট পরীক্ষার মাধমে বিভিন্ন পদে কর্মসংস্থানের অবকাশ তো থাকেই।
সবশেষে বলা যায়, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করলে বিভিন্ন কর্মসংস্থানের সুযোগ ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনা যেমন থাকে তেমনই সাহিত্যপাঠের মাধ্যমে নিজ আত্মিক উন্নতিও সম্ভব।