
ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।
রাম, চিত্রকূটে দীর্ঘদিন বাস করছিলেন। কারণ সীতার কাছে স্থানটি প্রিয় মনে হবে, এই কামনায় এবং নিজের সন্তুষ্টির জন্যও এই পাহাড় বন তাঁর প্রিয় হয়েছিল। রাম, সীতাকে চিত্রকূটের বিচিত্র সৌন্দর্য দেখাতে লাগলেন ঠিক যেমন ইন্দ্র, স্ত্রী শচীকে শোভা দর্শন করান তেমন। তিনি অকপটে তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করতে লাগলেন। এই মনোরম পর্বত দর্শনে রামকে রাজ্যবিচ্যুতি, সুহৃদগণের বিচ্ছেদ দুঃখ আর ব্যথিত করে না। সীতাকে দেখালেন, পর্বত পাখিতে পরিপূর্ণ, বিবিধ ধাতুমণ্ডিত চূড়াগুলি যেন ঊর্দ্ধমুখে গগন স্পর্শ করছে। এই পার্বত্য প্রদেশের কোনও স্থান রক্তবর্ণ, কোনটি আবার রক্তিমাভ, কোনও স্থান পীতবর্ণ, কোনও শিখরে মণিপ্রভার ঔজ্জ্বল্য।
এমন ধাতুবিশিষ্ট পর্বতের কোথাও পুষ্পরাগ, কোথাও বা কেতকীফুলের আভা, কোনও স্থানে জ্যোতির প্রভা, কোথাও জ্যোতিরস নামে ধাতুর ঔজ্জ্বল্য দেদীপ্যমান। হরিণ, বাঘ, তরক্ষু (অজগর জাতীয় বৃহৎ সাপ), ঋক্ষ (ভল্লুক) প্রভৃতি হিংস্র প্রাণী ও বহু বিহঙ্গকুলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান যেন গিরির শোভা হয়েছে। আম, জাম, অসন, লোধ্র, পিয়াল, পনস, ধব, অঙ্কোল, তিনিশ, বিল্ব, তিন্দুক, বেণু, মধুক, তিলক, বদরী, আমলকী, নীপ, ও বীজক প্রভৃতি ছায়াপ্রধান ফলন্ত গাছের সারি পর্বতের শোভা বৃদ্ধি করেছে।
রাম, সীতাকে দেখালেন, পর্বতের সমতলপ্রদেশে কিন্নর-কিন্নরীরা কেমন কামোত্তেজক বিভঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিদ্যাধরীদের বসন ক্রীড়াচ্ছলে তরুশাখায় উড্ডীয়মান। কোথাও যেন পৃথিবী ভেদ করে জলপ্রপাত, ঊর্দ্ধে প্রকাশিত, মনে হচ্ছে পর্বত যেন মদস্রাবী হস্তী। গিরিগুহামুখ হতে প্রবাহিত নানা পুষ্পগন্ধী সমীরণ কার ঘ্রাণেন্দ্রিয়েই না সুখাবহ? আপ্লুত রাম সীতাকে বললেন, এই ফুলফলেভরা স্থানে তোমার ও লক্ষ্মণের সান্নিধ্যে বহু বৎসর বাস করলেও আমার কোন আক্ষেপ নেই। যদীহ শরদোঽনেকাস্ত্বয়া সার্দ্ধমনিন্দিতে। লক্ষ্মণেন চ বৎস্যামি ন মাং শোকঃ প্রধক্ষ্যতি।।
এমন ধাতুবিশিষ্ট পর্বতের কোথাও পুষ্পরাগ, কোথাও বা কেতকীফুলের আভা, কোনও স্থানে জ্যোতির প্রভা, কোথাও জ্যোতিরস নামে ধাতুর ঔজ্জ্বল্য দেদীপ্যমান। হরিণ, বাঘ, তরক্ষু (অজগর জাতীয় বৃহৎ সাপ), ঋক্ষ (ভল্লুক) প্রভৃতি হিংস্র প্রাণী ও বহু বিহঙ্গকুলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান যেন গিরির শোভা হয়েছে। আম, জাম, অসন, লোধ্র, পিয়াল, পনস, ধব, অঙ্কোল, তিনিশ, বিল্ব, তিন্দুক, বেণু, মধুক, তিলক, বদরী, আমলকী, নীপ, ও বীজক প্রভৃতি ছায়াপ্রধান ফলন্ত গাছের সারি পর্বতের শোভা বৃদ্ধি করেছে।
রাম, সীতাকে দেখালেন, পর্বতের সমতলপ্রদেশে কিন্নর-কিন্নরীরা কেমন কামোত্তেজক বিভঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিদ্যাধরীদের বসন ক্রীড়াচ্ছলে তরুশাখায় উড্ডীয়মান। কোথাও যেন পৃথিবী ভেদ করে জলপ্রপাত, ঊর্দ্ধে প্রকাশিত, মনে হচ্ছে পর্বত যেন মদস্রাবী হস্তী। গিরিগুহামুখ হতে প্রবাহিত নানা পুষ্পগন্ধী সমীরণ কার ঘ্রাণেন্দ্রিয়েই না সুখাবহ? আপ্লুত রাম সীতাকে বললেন, এই ফুলফলেভরা স্থানে তোমার ও লক্ষ্মণের সান্নিধ্যে বহু বৎসর বাস করলেও আমার কোন আক্ষেপ নেই। যদীহ শরদোঽনেকাস্ত্বয়া সার্দ্ধমনিন্দিতে। লক্ষ্মণেন চ বৎস্যামি ন মাং শোকঃ প্রধক্ষ্যতি।।
রামের ইচ্ছা—এই বহু ফলফুলসমন্বিত, দ্বিজগণ অধ্যুষিত, বিচিত্র সুরম্য পর্বত শিখরে তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে বাস করতে ইচ্ছুক। কৃতজ্ঞচিত্তে রাম, চিত্রকূটবাসের সুফল স্মরণ করলেন। এইখানে বসবাসের ফলে রামের পিতৃঋণ পরিশোধ ও ভরতের প্রিয়সাধন এই দুই উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয়েছে। অনেন বনবাসেন ময়া প্রাপ্তং ফলদ্বয়ম্। পিতুশ্চানৃণতা ধর্ম্মে ভরতস্য প্রিয়ং তথা।। বৈদেহীও কী এই মনোরম স্থানে দর্শন করে প্রসন্ন হননি? রামের পিতৃপুরুষগণ অন্তিমে বনবাস, মোক্ষসাধন হয় বলে মনে করেছেন। চারিদিকে নীল, পীত, শুভ্র, অরুণবর্ণের বিবিধ শিলাখণ্ড শোভা বিস্তার করে আছে। রাত্রিতে সহস্র ওষধি অগ্নিশিখার মতো প্রদীপ্ত শিখা বিস্তার করেছে। পর্বতের কোনটি ক্ষয়প্রাপ্ত, কোথাও উদ্যান সদৃশ, কোথাও বা অখণ্ড শিলাতল দৃশ্যমান।
চিত্রকূট যেন পৃথিবী ভেদ করে মনোরমরূপে প্রকাশমান, এর শিখরসমূহ সবগুলিই যেন মঙ্গলময়। রাম সীতার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন, তাঁর, পুন্নাগ, ভূর্জ্জপত্র ও পদ্মদল, উত্তরচ্ছদযুক্ত আস্তরণগুলি যেন কামিদের উপভোগ্য। কামীরা কমলগুলি দলিত ও মর্দিত করেছে। ফলফুলসলিলসমন্বিত চিত্রকূটপর্বত যেন নিজ মনোরম শোভায় উত্তর কুরুদেশকে অতিক্রম করে বিরাজমান। রাম সীতার কাছে অকপটে স্বীকার করলেন, ইমন্তু কালং বনিতে বিজিহ্রিবাংস্ত্বয়া চ সীতে সহ লক্ষ্মণেন। রতিং প্রপৎস্যে কুলধর্ম্মবর্দ্ধিনীং সতাং পথিক স্বৈর্নিয়মৈঃ পরৈঃ স্থিতঃ।। প্রিয়ে, আমি তোমার ও লক্ষ্মণের সঙ্গে স্বারোপিত শ্রেষ্ঠকুলধর্মের সমৃদ্ধিবৃদ্ধিকর সজ্জনাশ্রিত ধর্মপথে বিহার করে, পরমানন্দ লাভ করছি।
চিত্রকূট যেন পৃথিবী ভেদ করে মনোরমরূপে প্রকাশমান, এর শিখরসমূহ সবগুলিই যেন মঙ্গলময়। রাম সীতার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন, তাঁর, পুন্নাগ, ভূর্জ্জপত্র ও পদ্মদল, উত্তরচ্ছদযুক্ত আস্তরণগুলি যেন কামিদের উপভোগ্য। কামীরা কমলগুলি দলিত ও মর্দিত করেছে। ফলফুলসলিলসমন্বিত চিত্রকূটপর্বত যেন নিজ মনোরম শোভায় উত্তর কুরুদেশকে অতিক্রম করে বিরাজমান। রাম সীতার কাছে অকপটে স্বীকার করলেন, ইমন্তু কালং বনিতে বিজিহ্রিবাংস্ত্বয়া চ সীতে সহ লক্ষ্মণেন। রতিং প্রপৎস্যে কুলধর্ম্মবর্দ্ধিনীং সতাং পথিক স্বৈর্নিয়মৈঃ পরৈঃ স্থিতঃ।। প্রিয়ে, আমি তোমার ও লক্ষ্মণের সঙ্গে স্বারোপিত শ্রেষ্ঠকুলধর্মের সমৃদ্ধিবৃদ্ধিকর সজ্জনাশ্রিত ধর্মপথে বিহার করে, পরমানন্দ লাভ করছি।
আরও পড়ুন:

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-১০৩: নির্বাসিত অর্জুনের দাম্পত্যজীবনে নতুন সম্পর্কের বিচিত্র সংযোজন

সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৯o: ছাতারে
রাম, সীতাকে, স্বচ্ছসলিলা, হংসসারসশোভিতা, তীরবর্তী কুসুমতরুলতাবিশিষ্টা, রম্যা মন্দাকিনীর শোভা দেখালেন। তীরে রয়েছেন বল্কলজটাজিনধারী স্নানরত ঋষিরা। ঋষিরা ঊর্ধ্ববাহু হয়ে সূর্যোপসনারত। মন্দাকিনীর বিচিত্র শোভা। কোথাও বিপুল তরঙ্গভঙ্গ, কোথাও বা সিদ্ধপুরুষরা তীরভূমিতে বিরাজমান,কোথাও মুক্তাপ্রতিম নির্মল জলরাশি। জলস্রোতে ভেসে যায় পুষ্পরাশি,তীর চক্রবাকেদের মধুর কলতানে মুখর। রামের এক স্বর্গীয় অনুভূতি হল, চিত্রকূটবাস ও মন্দাকিনীর এই শোভাদর্শন যেন নাগরিক জীবন এমন কি সীতার সঙ্গসুখ থেকেও অধিক প্রিয় মনে হল তাঁর। দর্শনং চিত্রকূটস্য মন্দাকিন্যাশ্চ শোভনে। অধিকং পুরবাসাচ্চ মন্যে তব চ দর্শনাৎ।।
তিনি বিমুগ্ধ মনে সীতাকে অনুরোধ করলেন, তপস্যা ও দমসমন্বিত অপাপবিদ্ধ সিদ্ধপুরুষেরা যেখানে অবগাহন স্নান করেন, আজ সীতা, রামের সঙ্গে সেই মন্দাকিনীতে অবগাহন করুন। সখীসম মন্দাকিনী নদীতে স্নানকালীন, নানা কমলদল চয়ন করুন। রামের অনুরোধ, সীতা যেন হিংস্রপ্রাণীদের পৌরজনপদবাসী, পর্বতটিকে অযোধ্যা ও মন্দাকিনীকে সরযূ নদী বলে মনে করেন। রামের মনে, পরম সন্তুষ্টি। ধর্মাত্মা লক্ষ্মণ পাশে আছেন, সেই সঙ্গে আছেন অনুগতা স্ত্রী, উভয়েই তাঁর পরম প্রীতির কারণ। সীতার কাছে, রামের সরল স্বীকারোক্তি, উপস্পৃশংস্ত্রিষবণং মধুমূলফলাশনঃ। নাযোধ্যায়ৈ ন রাজ্যায় স্পৃহয়েয়ং ত্বয়া সহ।।
এইখানে ত্রিসন্ধ্যা মন্দাকিনীর জলে স্নান করে, মধু, মূল, ফল প্রভৃতি ভোজ্য গ্রহণ করে, অযোধ্যা কিংবা রাজ্য কোনটিতেই আমার আর কিছুমাত্র আকাঙ্খা নেই। রামের অনুভব—হস্তীর দল, মন্দাকিনীর জল আলোড়িত করে অবগাহন করছে, গজ, সিংহ, বানরকুল মন্দাকিনীর জল পান করছে, কোথাও পুষ্পিত কুসুমভারে যেন পুষ্পাভরণে সজ্জিতা নদী, এমন কোন ব্যক্তি আছেন যিনি এই রমণীয় মন্দাকিনী দর্শন করে, সুখী ও শ্রান্তিহীন হন না? রঘুকুলবর্দ্ধক রাম, স্ত্রীর সঙ্গে, এমন নদীবিষয়ক আলাপচারিতায়, দৃষ্টির অঞ্জনতুল্য সুন্দর চিত্রকূট পর্বতে ভ্রমণ করতে লাগলেন।
তিনি বিমুগ্ধ মনে সীতাকে অনুরোধ করলেন, তপস্যা ও দমসমন্বিত অপাপবিদ্ধ সিদ্ধপুরুষেরা যেখানে অবগাহন স্নান করেন, আজ সীতা, রামের সঙ্গে সেই মন্দাকিনীতে অবগাহন করুন। সখীসম মন্দাকিনী নদীতে স্নানকালীন, নানা কমলদল চয়ন করুন। রামের অনুরোধ, সীতা যেন হিংস্রপ্রাণীদের পৌরজনপদবাসী, পর্বতটিকে অযোধ্যা ও মন্দাকিনীকে সরযূ নদী বলে মনে করেন। রামের মনে, পরম সন্তুষ্টি। ধর্মাত্মা লক্ষ্মণ পাশে আছেন, সেই সঙ্গে আছেন অনুগতা স্ত্রী, উভয়েই তাঁর পরম প্রীতির কারণ। সীতার কাছে, রামের সরল স্বীকারোক্তি, উপস্পৃশংস্ত্রিষবণং মধুমূলফলাশনঃ। নাযোধ্যায়ৈ ন রাজ্যায় স্পৃহয়েয়ং ত্বয়া সহ।।
এইখানে ত্রিসন্ধ্যা মন্দাকিনীর জলে স্নান করে, মধু, মূল, ফল প্রভৃতি ভোজ্য গ্রহণ করে, অযোধ্যা কিংবা রাজ্য কোনটিতেই আমার আর কিছুমাত্র আকাঙ্খা নেই। রামের অনুভব—হস্তীর দল, মন্দাকিনীর জল আলোড়িত করে অবগাহন করছে, গজ, সিংহ, বানরকুল মন্দাকিনীর জল পান করছে, কোথাও পুষ্পিত কুসুমভারে যেন পুষ্পাভরণে সজ্জিতা নদী, এমন কোন ব্যক্তি আছেন যিনি এই রমণীয় মন্দাকিনী দর্শন করে, সুখী ও শ্রান্তিহীন হন না? রঘুকুলবর্দ্ধক রাম, স্ত্রীর সঙ্গে, এমন নদীবিষয়ক আলাপচারিতায়, দৃষ্টির অঞ্জনতুল্য সুন্দর চিত্রকূট পর্বতে ভ্রমণ করতে লাগলেন।
আরও পড়ুন:

গল্পবৃক্ষ, পর্ব-১৯: নাগজাতক— অকৃতজ্ঞ সেই লোকটা

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-১১৩: শরৎকুমারী স্নানাগারের সামনে বসে সারাক্ষণই সাজতেন
রাম সীতাকে প্রকৃতির শোভা দর্শন করালেন। এর পরে পর্বতের সানুদেশে উপবেশন করলেন। স্ত্রীর তৃপ্তি বিধান করে, বিবিধ সুস্বাদু ভোজ্য মাংসের মধ্যে,এটি পবিত্র, এটি সুস্বাদু, এটি অগ্নিতপ্ত এমনভাবে ভোজ্য মাংসের কোনটি কী প্রকার বর্ণনা করলেন। এই সময়ে, ভরতের অনুগামী সৈন্যদলের বিপুল কোলাহল ও পদধূলিজাল যেন গগন স্পর্শ করল। এই ভয়ানক শব্দে, পীড়িত ও সন্ত্রস্ত হাতির দল নিজ নিজ দলের সঙ্গে দিকে দিকে পলায়ন করতে লাগল। রাঘব রাম, সৈন্যদলের সশব্দ উপস্থিতি অনুভব করে, দেখলেন, দ্রুত ধাবমান দলপতিদের।
রাম, লক্ষ্মণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সুমিত্রানন্দন লক্ষ্মণ কী ভয়ঙ্কর, তুমুল শব্দ শুনতে পেয়েছেন? এই মহারণ্যে কী সিংহের সন্ত্রাসে হস্তী, মহিষ, মৃগ, সহসা দিক দিগন্তে পলায়নপর হয়েছে? কোন রাজা বা রাজপুত্র কী বনে মৃগয়া করতে এসেছেন? কিংবা কোনও হিংস্র শ্বাপদ এই ঘটনার মূল কারণ?রাম আদেশ করলেন, সৌমিত্র লক্ষ্মণ যেন কারণ অনুসন্ধান করেন। এই পর্বত বিহঙ্গদের দুর্লঙ্ঘ,তাই এমন ঘটনার যথাযথ তথ্য অবগত হওয়া প্রয়োজন। লক্ষ্মণ তৎক্ষণাৎ একটি পুষ্পিত শালগাছে আরোহণ করে,সব দিক বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করে, পূর্বদিকে তাকালেন। পরে উত্তরদিকে দেখতে দেখতে হস্তী, অশ্ব, রথ ও পদাতিক সৈন্যবিশিষ্ট এক বিরাট সৈন্যবাহিনী দেখতে পেলেন।
শব্দের উৎস সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে লক্ষ্মণ, রামের নিরাপত্তাবিষয়ে চিন্তিত হয়ে রামকে বললেন,অগ্নি নির্বাপিত করুন। দেবী সীতা, গুহামধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করুন। ধনুক, তীর ও বর্ম সজ্জিত করে প্রস্তুত থাকুন। অগ্নিং সংশময়ত্বার্য্যঃ সীতা চ ভজতাং গুহাম্। সজ্জং কুরুষ্ব চাপস্য শরাংশ্চ কবচং তথা।। রাম প্রত্যুত্তরে লক্ষ্মণকে বললেন, এই সেনাবাহিনী কার বলে মনে হয়? কস্যেমাং মন্যসে চমূম্
প্রজ্জ্বলিত ক্রোধাগ্নির দহনজ্বালায় সেই সেনাদলকে দগ্ধ করে, লক্ষ্মণ বলে উঠলেন, কৈকেয়ীপুত্র ভরত রাজ্যে অভিষিক্ত হয়ে, নিজরাজ্য সম্পূর্ণভাবে নিজস্ব (শত্রুমুক্ত) করবার জন্যে আমাদের উভয়কে বধ করতে আসছেন। সম্পন্নং রাজ্যমিচ্ছংস্তু ব্যক্তং প্রাপ্যাভিষেচনম্। আবাং হন্তুং সমভ্যেতি কৈকেয্যা ভরতঃ সুতঃ।। লক্ষ্মণ, রামের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন, দূরে দৃশ্যমান একটি সুন্দর বিশাল মহীরুহ, ওখানেই আছে উজ্জ্বল স্কন্ধবিশিষ্ট কোবিদারধ্বজ রথ। একদল অশ্বারোহী সৈন্য দ্রুত এই দিকেই আসছে।গজারোহী সৈন্যরা সানন্দে শোভা পাচ্ছে।লক্ষ্মণ প্রস্তাব দিলেন, ধনুর্ধারণ করে তাঁরা দুজনে, পর্বতশৃঙ্গে অবস্থান করবেন। কিংবা অস্ত্রহাতে এখানেই অপেক্ষা করবেন।
রাম, লক্ষ্মণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সুমিত্রানন্দন লক্ষ্মণ কী ভয়ঙ্কর, তুমুল শব্দ শুনতে পেয়েছেন? এই মহারণ্যে কী সিংহের সন্ত্রাসে হস্তী, মহিষ, মৃগ, সহসা দিক দিগন্তে পলায়নপর হয়েছে? কোন রাজা বা রাজপুত্র কী বনে মৃগয়া করতে এসেছেন? কিংবা কোনও হিংস্র শ্বাপদ এই ঘটনার মূল কারণ?রাম আদেশ করলেন, সৌমিত্র লক্ষ্মণ যেন কারণ অনুসন্ধান করেন। এই পর্বত বিহঙ্গদের দুর্লঙ্ঘ,তাই এমন ঘটনার যথাযথ তথ্য অবগত হওয়া প্রয়োজন। লক্ষ্মণ তৎক্ষণাৎ একটি পুষ্পিত শালগাছে আরোহণ করে,সব দিক বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করে, পূর্বদিকে তাকালেন। পরে উত্তরদিকে দেখতে দেখতে হস্তী, অশ্ব, রথ ও পদাতিক সৈন্যবিশিষ্ট এক বিরাট সৈন্যবাহিনী দেখতে পেলেন।
শব্দের উৎস সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে লক্ষ্মণ, রামের নিরাপত্তাবিষয়ে চিন্তিত হয়ে রামকে বললেন,অগ্নি নির্বাপিত করুন। দেবী সীতা, গুহামধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করুন। ধনুক, তীর ও বর্ম সজ্জিত করে প্রস্তুত থাকুন। অগ্নিং সংশময়ত্বার্য্যঃ সীতা চ ভজতাং গুহাম্। সজ্জং কুরুষ্ব চাপস্য শরাংশ্চ কবচং তথা।। রাম প্রত্যুত্তরে লক্ষ্মণকে বললেন, এই সেনাবাহিনী কার বলে মনে হয়? কস্যেমাং মন্যসে চমূম্
প্রজ্জ্বলিত ক্রোধাগ্নির দহনজ্বালায় সেই সেনাদলকে দগ্ধ করে, লক্ষ্মণ বলে উঠলেন, কৈকেয়ীপুত্র ভরত রাজ্যে অভিষিক্ত হয়ে, নিজরাজ্য সম্পূর্ণভাবে নিজস্ব (শত্রুমুক্ত) করবার জন্যে আমাদের উভয়কে বধ করতে আসছেন। সম্পন্নং রাজ্যমিচ্ছংস্তু ব্যক্তং প্রাপ্যাভিষেচনম্। আবাং হন্তুং সমভ্যেতি কৈকেয্যা ভরতঃ সুতঃ।। লক্ষ্মণ, রামের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন, দূরে দৃশ্যমান একটি সুন্দর বিশাল মহীরুহ, ওখানেই আছে উজ্জ্বল স্কন্ধবিশিষ্ট কোবিদারধ্বজ রথ। একদল অশ্বারোহী সৈন্য দ্রুত এই দিকেই আসছে।গজারোহী সৈন্যরা সানন্দে শোভা পাচ্ছে।লক্ষ্মণ প্রস্তাব দিলেন, ধনুর্ধারণ করে তাঁরা দুজনে, পর্বতশৃঙ্গে অবস্থান করবেন। কিংবা অস্ত্রহাতে এখানেই অপেক্ষা করবেন।
আরও পড়ুন:

উপন্যাস: আকাশ এখনও মেঘলা, পর্ব-৬: আকাশ এখনও মেঘলা

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬৮: দুর্গম গিরি কান্তার ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’
লক্ষ্মণ মনে করেন, রাম ও সীতাদেবী ও তাঁর বিপন্নতার মূল হলেন ভরত। তাই যুদ্ধে ভরতকে আয়ত্তাধীন করতে পারলে, তাঁর জন্যে বিশেষ ব্যবস্থা নেবেন লক্ষ্মণ। যাঁর কারণে রাঘব রাম অবশ্যপ্রাপ্য রাজ্যচ্যুত হয়েছেন, সেই ভরত আজ সম্মুখে আগত এবং অবশ্যই তিনি বধের যোগ্য। ভরতের বধ, কোনও দোষের নয়। প্রথমে যে অপরাধ করেছে তাকে নিধন করা,অধর্ম নয়। বরং পূর্বে যিনি অপরাধ করেছেন তাঁর হত্যা ধর্মসঙ্গত বলে লক্ষ্মণ মনে করেন। ভরত হত হলে, রাম সসাগরা পৃথিবী ভোগ করতে পারবেন। রাজ্যলিপ্সু কৈকেয়ী, আজ যুদ্ধে, নিহত পুত্রকে দর্শন করুন। দুঃসহক্রোধে জ্বলে উঠলেন লক্ষ্মণ, শোকাভিভূতা কৈকেয়ী দেখুন, হস্তী যেমন তরুকে ছিন্নভিন্ন করে সেইভাবে আমিও কেমনভাবে তাঁর পুত্রকে হত্যা করি। তারপরে তাঁকেও সবান্ধবে হত্যা করব। ময়া পশ্যেৎ সুদুঃখার্ত্তা হস্তিভিন্নমিব দ্রুমম্। কৈকেয়ীঞ্চ বধিষ্যামি সানুবন্ধাং সবান্ধবাম্।।
লক্ষ্মণ,রামকে সতর্কবার্তা দিলেন। আজ ধরণীর পাপমুক্তির সময় সমাগত।এতদিন যে ক্রোধ সংযত ছিল, কোনওদিন লক্ষ্মণ তাকে অসংযত হতে দেননি,আজ তৃণসম শত্রুসৈন্যের প্রতি সেই ক্রোধাগ্নি নিক্ষেপ করবেন লক্ষ্মণ। শাণিত শরে, শত্রু শরীর ছিন্নভিন্ন করে আজই চিত্রকূটের নন্দনবন রক্তাক্ত করে তুলবেন তিনি। লক্ষ্মণ, আরও বিশদে বললেন, তীরবিদ্ধ করে শত্রুর হস্তী ও অশ্বগুলির হৃদয় ছিন্ন করবেন। শ্বাপদেরা মৃত নরশরীর আকর্ষণ করে নিয়ে যাবে। লক্ষ্মণের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা,মহাযুদ্ধে,সসৈন্য ভরতকে হত্যা করে লক্ষ্মণ আজ নিঃসন্দেহে, ধনুর্বাণের ঋণমুক্ত হবেন। শরাণাং ধনুষশ্চাহমনৃণোঽস্মিন্ মহারণে। সসৈন্যং ভরতং হত্বা ভবিষ্যামি ন সংশয়ঃ।।
লক্ষ্মণ,রামকে সতর্কবার্তা দিলেন। আজ ধরণীর পাপমুক্তির সময় সমাগত।এতদিন যে ক্রোধ সংযত ছিল, কোনওদিন লক্ষ্মণ তাকে অসংযত হতে দেননি,আজ তৃণসম শত্রুসৈন্যের প্রতি সেই ক্রোধাগ্নি নিক্ষেপ করবেন লক্ষ্মণ। শাণিত শরে, শত্রু শরীর ছিন্নভিন্ন করে আজই চিত্রকূটের নন্দনবন রক্তাক্ত করে তুলবেন তিনি। লক্ষ্মণ, আরও বিশদে বললেন, তীরবিদ্ধ করে শত্রুর হস্তী ও অশ্বগুলির হৃদয় ছিন্ন করবেন। শ্বাপদেরা মৃত নরশরীর আকর্ষণ করে নিয়ে যাবে। লক্ষ্মণের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা,মহাযুদ্ধে,সসৈন্য ভরতকে হত্যা করে লক্ষ্মণ আজ নিঃসন্দেহে, ধনুর্বাণের ঋণমুক্ত হবেন। শরাণাং ধনুষশ্চাহমনৃণোঽস্মিন্ মহারণে। সসৈন্যং ভরতং হত্বা ভবিষ্যামি ন সংশয়ঃ।।
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১০৫: সরজমিনে

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৮৭: মা সারদার লিঙ্গপুজো
রাম চিত্রকূটের প্রাকৃতিক পরিবেশে, সীতার সান্নিধ্যে ভুলে গেলেন, একদা অযোধ্যার রাজ্যাধিকার হতে বঞ্চনার ইতিহাস, সুহৃদবর্গের স্নেহধন্য সান্নিধ্য,কোন অপ্রাপ্তিবোধ, কোনও সব হারানোর হাহাকার তাঁর নেই, নেই কোনও রাজকীয় আবহের শূন্যতা। রামের দৃষ্টি প্রকৃতির রূপ, রস, গন্ধ আহরণে মগ্ন, সমাহিত। রাম শুধু একা নন, প্রিয়া সীতাকেও সেই রস আহরণের আস্বাদ ভাগ করে দিতে উন্মুখ তিনি। আক্ষেপ নেই, নেই কোনও পরিতাপ, কোনও অনুশোচনা নেই, রয়েছে শুধু গভীর আত্মতৃপ্তি।
বনবাস রামের জীবন এক অভাবনীয় ঐশ্বরিক আশীর্বাদ যেন। সাধারণ জীবনেও প্রকৃতির এক ম্যাজিকাল এফেক্ট থাকে, যা শুধু অনুভববেদ্য। সাংসারিক জটিলতা, ক্লেদ, গ্লানি, কূট আবিলতা—সবকিছু থেকে মুক্ত হতেই মানুষ ছুটে যায় প্রকৃতির কোলে।পরিস্থিতি রামকে বনবাসজীবনে বাধ্য করেছে। এর ফলে,শাপে বর হয়েছে।রামের চিত্তশুদ্ধি হয়েছে। গ্লানিমুক্ত রাম রাজনৈতিক জটিলতা থেকে মুক্ত হয়ে শুধু প্রিয়া স্ত্রী ও অনুগত ভাইয়ের সান্নিধ্যে জীবন অতিবাহিত করতে চেয়েছেন। বন্য ফলমূল ও সুস্বাদু মৃগমাংস আস্বাদনে রাজভোগ্য ভোজ্য আস্বাদেই পরিতৃপ্ত হয়েছেন।
পাহাড়, নদী, অরণ্যের মুক্ত অবারিত পরিবেশে, মানুষের চাহিদা ও অভাববোধ জনিত যে আক্ষেপ তার থেকে কিছুটা হলেও সাময়িক মুক্তি সম্ভব। পাহাড়ের আছে একান্ত আন্তরিক গ্রহণের আদর, নদীর মধ্যে আছে সব কিছু ধুয়ে মুছে বাঁধা বিঘ্ন সড়িয়ে এগিয়ে চলার গতিময়তা, অরণ্যের গহনে আছে অপার রহস্যময়তা আবিষ্কারের আনন্দ।মানুষ তাই পাহাড়ে,ঐকান্তিক নিরালায় ক্ষণিক আশ্রয় খোঁজে, চলার পথে, ছুটির অবকাশে, নদীর সান্নিধ্যে গ্লানি, ক্লেদ ধুয়ে আবার এগিয়ে চলার সাহস ও উৎসাহ পায়। অরণ্যের নিবিড় গহনে,নতুনত্বের অনুসন্ধানে ভুলে যায় সংসারিক বন্ধনের জটিলাবর্ত।
প্রকৃতির এই ইন্দ্রজাল, সাধারণের মনে ক্রিয়াশীল হয়, তাই মানুষ বার বার ছুটে যায় কোন অবকাশে তার নিজস্ব চিত্রকূটে, কোনও মন্দাকিনীর তীরে বা কোন গহন অরণ্যবাসে। তবে রামের মতো মনের গ্রহণযোগ্যতা যে থাকতেই হবে, তবেই তো অনুভবের আনন্দ সাড়া দেবে। রাম এখানে কোন দৈব ব্যক্তিত্ব নন, একজন পোড় খাওয়া,বঞ্চিত সাধারণ মানুষের প্রতিভূমাত্র,এভাবেও হয়তো ভাবনার অবকাশ আছে।
বনবাস রামের জীবন এক অভাবনীয় ঐশ্বরিক আশীর্বাদ যেন। সাধারণ জীবনেও প্রকৃতির এক ম্যাজিকাল এফেক্ট থাকে, যা শুধু অনুভববেদ্য। সাংসারিক জটিলতা, ক্লেদ, গ্লানি, কূট আবিলতা—সবকিছু থেকে মুক্ত হতেই মানুষ ছুটে যায় প্রকৃতির কোলে।পরিস্থিতি রামকে বনবাসজীবনে বাধ্য করেছে। এর ফলে,শাপে বর হয়েছে।রামের চিত্তশুদ্ধি হয়েছে। গ্লানিমুক্ত রাম রাজনৈতিক জটিলতা থেকে মুক্ত হয়ে শুধু প্রিয়া স্ত্রী ও অনুগত ভাইয়ের সান্নিধ্যে জীবন অতিবাহিত করতে চেয়েছেন। বন্য ফলমূল ও সুস্বাদু মৃগমাংস আস্বাদনে রাজভোগ্য ভোজ্য আস্বাদেই পরিতৃপ্ত হয়েছেন।
পাহাড়, নদী, অরণ্যের মুক্ত অবারিত পরিবেশে, মানুষের চাহিদা ও অভাববোধ জনিত যে আক্ষেপ তার থেকে কিছুটা হলেও সাময়িক মুক্তি সম্ভব। পাহাড়ের আছে একান্ত আন্তরিক গ্রহণের আদর, নদীর মধ্যে আছে সব কিছু ধুয়ে মুছে বাঁধা বিঘ্ন সড়িয়ে এগিয়ে চলার গতিময়তা, অরণ্যের গহনে আছে অপার রহস্যময়তা আবিষ্কারের আনন্দ।মানুষ তাই পাহাড়ে,ঐকান্তিক নিরালায় ক্ষণিক আশ্রয় খোঁজে, চলার পথে, ছুটির অবকাশে, নদীর সান্নিধ্যে গ্লানি, ক্লেদ ধুয়ে আবার এগিয়ে চলার সাহস ও উৎসাহ পায়। অরণ্যের নিবিড় গহনে,নতুনত্বের অনুসন্ধানে ভুলে যায় সংসারিক বন্ধনের জটিলাবর্ত।
প্রকৃতির এই ইন্দ্রজাল, সাধারণের মনে ক্রিয়াশীল হয়, তাই মানুষ বার বার ছুটে যায় কোন অবকাশে তার নিজস্ব চিত্রকূটে, কোনও মন্দাকিনীর তীরে বা কোন গহন অরণ্যবাসে। তবে রামের মতো মনের গ্রহণযোগ্যতা যে থাকতেই হবে, তবেই তো অনুভবের আনন্দ সাড়া দেবে। রাম এখানে কোন দৈব ব্যক্তিত্ব নন, একজন পোড় খাওয়া,বঞ্চিত সাধারণ মানুষের প্রতিভূমাত্র,এভাবেও হয়তো ভাবনার অবকাশ আছে।

ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।
লক্ষ্মণ সতর্ক প্রহরী। অতর্কিত আসন্ন বিপদের সম্মুখীন হয়ে যিনি সাধারণের মতোই সবকিছু থেকে প্রাণঘাতী বিপদের কথাই ভেবে থাকেন। প্রতারিত মানুষ যেমন সিঁদুরে মেঘে দৈব দুর্বিপাকের আভাস দেখেন, লক্ষ্মণ তার ব্যতিক্রম নন। প্রতিশোধস্পৃহা সাধারণের ধর্ম। সেখানে অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনাবোধের কোনও স্থান নেই। ভরত ও তাঁর সৈন্যবাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্মণকে উত্তেজিত করেছে। কোন সদর্থক চিন্তা তাঁর মনে স্থান পায়নি। ষড়রিপুর অন্যতম ক্রোধ, তাঁর দূরদর্শিতা, বিবেকবোধ গ্রাস করেছে। ভরতের আগমনের উদ্দেশ্যে শুধুই ধ্বংস, মৃত্যু, আক্রমণের ছায়া দেখেছেন লক্ষ্মণ। তিনি ভরতের সঙ্গে, মনে মনে কল্পিত ছায়াযুদ্ধে সশস্ত্র এবং নৃশংস পরিসমাপ্তির দিকে এগিয়েছেন।
লক্ষ্মণ সেই সাধারণের প্রতীক যাঁরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অনেক বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন,যা সবসময়ে সঠিক নয়, বিবেচনাপ্রসূত নয়ই। প্রিয়জনের নিরাপত্তার প্রশ্নে নিবেদিতপ্রাণ লক্ষ্মণরা ক্রোধে আত্মহারা হয়ে, প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠেন, সর্বদা যার হয়তো যৌক্তিকতা নেই বা সেটি সমর্থনযোগ্য নয়। তবু এই ভাবাবেগে অস্থির, ক্রোধে বিবেকহীন লক্ষ্মণরা ভুল চিন্তা করেন,ভুলের মাসুল দিতে হয়।জীবন আবহমান।রামলক্ষ্মণের যুগ্ম সাযুজ্য ধরে রাখে ভারসাম্য, সতত প্রবহমান সাংসারিক গতিময়তা,মহাকাব্যিক চিন্তায় আধুনিক জীবনের সংযোগ।—চলবে।
লক্ষ্মণ সেই সাধারণের প্রতীক যাঁরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অনেক বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন,যা সবসময়ে সঠিক নয়, বিবেচনাপ্রসূত নয়ই। প্রিয়জনের নিরাপত্তার প্রশ্নে নিবেদিতপ্রাণ লক্ষ্মণরা ক্রোধে আত্মহারা হয়ে, প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠেন, সর্বদা যার হয়তো যৌক্তিকতা নেই বা সেটি সমর্থনযোগ্য নয়। তবু এই ভাবাবেগে অস্থির, ক্রোধে বিবেকহীন লক্ষ্মণরা ভুল চিন্তা করেন,ভুলের মাসুল দিতে হয়।জীবন আবহমান।রামলক্ষ্মণের যুগ্ম সাযুজ্য ধরে রাখে ভারসাম্য, সতত প্রবহমান সাংসারিক গতিময়তা,মহাকাব্যিক চিন্তায় আধুনিক জীবনের সংযোগ।—চলবে।
* মহাকাব্যের কথকতা (Epics monologues of a layman): পাঞ্চালী মুখোপাধ্যায় (Panchali Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপিকা, সংস্কৃত বিভাগ, যোগমায়া দেবী কলেজে।