ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।
রাতবিরেতে বিপদ, প্রয়োজন টাকার। ব্যাঙ্ক খোলা থাকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। বাড়িতে বেশি টাকা রাখাও সম্ভব নয়। মানুষের প্রয়োজন হল বিজ্ঞানের। বিজ্ঞানলক্ষ্মী তার বরপুত্রদের সাহায্যে তৈরি করালেন এমন এক যন্ত্রের, যা মানুষকে সবসময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিলেন ‘অটোমেটেড টেলার মেশিন’ বা, এটিএম। আম আদমি নাম দিলেন অলটাইম মানি, বর্তমানে অবশ্য এই নামই বেশি চলে।
প্রথমে, ১৯৬১ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে এই ক্যাশ মেশিন প্রথম বসানো হয়, উদ্যোক্তা নিউইয়র্ক সিটি ব্যাঙ্ক। এরপর তা বসানো হয়, ১৯৬৭ সালে লন্ডনের এনফিল্ড শহরে। তারপর ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র পৃথিবীতে এবং একদিন তা পৌছে যায় ভারতেও। এটিএম ইনন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (ATMIA) হিসাবে অনুযায়ী, সমগ্র পৃথিবীতে প্রায় তিন লক্ষ এই যন্ত্র আছে। ভারতে এই সংখ্যাও বেশ কয়েক হাজার। উন্নয়নশীল দেশ এই ভারত। একবিংশ শতাব্দীতে সবচেয়ে দ্রুত অর্থনৈতিক উত্থান ঘটেছে ভারতের। বর্তমানে বিভিন্ন প্রয়োজনে এটিএমে মানুষের নিত্য যাতায়াত বেড়েছে। কিন্তু সিংহভাগ মানুষই জানেন না যে, এটিএমের কি-বোর্ড এবং মনিটরের স্ক্রিনে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু ও ভাইরাস বর্তমান থাকে। এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে আমেরিকার নিউইয়র্ক সিটির গবেষণাগার থেকে।
আরও পড়ুন:
বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রথম বাঙালি অধিকর্তা ড. কালিপদ বিশ্বাস
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৪৪: সুন্দরবনের সুন্দরী গাছ
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর জিনোমিক্স এন্ড সিস্টেমস বায়োলজি’র অধিকর্তা জানে কার্লটন, ২০১৪ সালে ৬৬টি এটিএমের কি-বোর্ড ও স্কিন থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করেন। ওই বিজ্ঞানীদল ম্যা নহাটন, কুইন ও ব্রুকলিন থেকে এই নমুনাগুলি সংগ্রহ করেন ও তাদের পরীক্ষালব্ধ ফলগুলি ‘এমস্ফিয়ার’ নামক বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশ করেন। তারা ডিএনএ সিকোয়েন্স, ‘16SrRNA’ ও ‘18SrRNA’ পরীক্ষার মাধ্যমে জীবাণু, ছত্রাক ও প্রোটোজোয়াগুলি সনাক্ত করেন।
আরও পড়ুন:
দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-২০: মানকুমারী বসু—সাহিত্য জগতের উজ্জ্বল রত্ন!
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৪২: শ্রীমার ভাইপো খুদি
এটিএম থেকে প্রাপ্ত অনুজীব
আরও পড়ুন:
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৮৪: নোবেল পাওয়ায় বন্ধু দিয়েছিলেন লজ্জাবতীর চারা
হে নূতন…
এছাড়াও, করোনা ভাইরাসের মতো বিভিন্ন ছোঁয়াচে রোগের ভাইরাস এই এটিএমের কি-বোর্ড ও স্ক্রিন থেকে পাওয়া যায়। এই প্রকার ভাইরাস সমগ্র বিশ্ববাসী মহামারীর সৃষ্টি করেছে ও অসংখ্য মানুষের মৃত্যু এবং চরম দুর্গতির কারণ হয়েছে।
পরীক্ষা না হলে বা বর্তমানে এই অতিমারী না হলে, হয়তো কখনওই আমরা জানতে পারতাম না, এটিএম হতে পারে জীবাণুর আতুড়ঘর। তাই এটিএম থেকে বাড়ি ফিরে, হাত ভালো করে ধুয়ে ফেলা দরকার বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন। সতর্কতা এবং ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতাই আমাদের বিভিন্ন রোগবালাই থেকে অনেকাংশে রক্ষা করতে পারে।
পরীক্ষা না হলে বা বর্তমানে এই অতিমারী না হলে, হয়তো কখনওই আমরা জানতে পারতাম না, এটিএম হতে পারে জীবাণুর আতুড়ঘর। তাই এটিএম থেকে বাড়ি ফিরে, হাত ভালো করে ধুয়ে ফেলা দরকার বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন। সতর্কতা এবং ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতাই আমাদের বিভিন্ন রোগবালাই থেকে অনেকাংশে রক্ষা করতে পারে।
* ড. উৎপল অধিকারী, সহ-শিক্ষক, আঝাপুর হাই স্কুল, আঝাপুর, জামালপুর, পূর্ব বর্ধমান।