ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।
গবেষকরা বলছেন, অ্যালঝাইমার্স রোগের ক্ষেত্রে বায়োলজিকাল ক্লক বা জৈবিক ঘড়ির স্বাভাবিক ছন্দের ব্যাঘাতে রোগের চিকিৎসায় এবং উপসর্গ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, রোগীর পরিচর্যাকারীরা প্রায়শই অ্যালঝাইমার্স রোগীদের পরিবর্তিত ‘সার্কেডিয়ান রিদম’ দ্বারা সৃষ্ট অনিয়মিত ঘুমের ধরণগুলির সঙ্গে লড়াই করেন। কারণ, আমাদের শরীরের স্বাভাবিক দৈনিক চক্রের সঙ্গে তা মেলে না। তাই লাইট থেরাপির মতো নতুন গবেষণা এই রোগের চিকিৎসায় একটি কার্যকর হাতিয়ার হতে পারে।
এছাড়াও, জৈবিক ঘড়িতে অ্যালঝাইমার্সের প্রভাবগুলিকে আরও ভালোভাবে বোঝা রোগ প্রতিরোধের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ হতে পারে। বয়ঃসন্ধিকালে ঘুমের মান খারাপ হওয়া অ্যালঝাইমার্সের জন্য একটি ঝুঁকির কারণ। কেন? কারণ, আমাদের মস্তিষ্ক, বিশ্রামের মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবে নিজেদেরকে ‘অ্যামাইলয়েড বিটা প্রোটিন’ থেকে পরিষ্কার করে, যা অ্যালঝাইমার্সের ক্ষতিকারক জট তৈরি করে বলে মনে করা হয়।
প্রসঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান: ককটেলেই ফিরবে যৌবন, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের চমক
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩১: বিড়াল ঘাঁটলেই কি ডিপথেরিয়া হতে পারে?
অ্যালঝাইমার্স ঠিক কী?
অ্যালঝাইমার্স হল ডিমেনশিয়ার সবচেয়ে সাধারণ রূপ, যা সারা বিশ্বের কয়েক কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে। এর বৈশিষ্ট্য হল, প্রগতিশীল স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেতে থাকে এবং ক্রমে রোগী এমন অবস্থায় এসে পৌঁছয় যে, তারা তাদের নিজের প্রিয়জনকেও চিনতে পারে না। তবে অস্থিরতা, আগ্রাসন, দুর্বল বিচার এবং অবিরাম অনুসন্ধানের মতো আরও অনেক লক্ষণও থাকতে পারে। এই লক্ষণগুলির প্রায়ই সন্ধের দিকে এবং রাতের বেলায় বেশি দেখা যায়।
ডাঃ ফেরিস এবং তার সহযোগীরা অ্যালঝাইমার্স রোগে জৈবিক ঘড়ির ঠিক কী ঘটে, তা আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য অ্যালঝাইমার্সের একটি ‘মাউস মডেল’ ব্যবহার করেছেন’। তাঁরা মূলত আলোর সংস্পর্শ পরিবর্তন করে ইঁদুরদের ‘জেট ল্যাগ’ দিয়েছিলেন। তারপরে এটি তাদের আচরণকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল তা পরীক্ষা করেন। অ্যালঝাইমার্সের ইঁদুরগুলি সাধারণ ইঁদুরের চেয়ে বেশ আলাদাভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়।
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৫: চন্দ্রমণির বধূবরণ
হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৮: হৃদয়ে আমার দিয়েছে ঢেউ, ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ
গবেষকরা প্রাথমিকভাবে ভেবেছিলেন, এটি মস্তিষ্কে প্রদাহের কারণে হতে পারে, যাকে ‘নিউরোইনফ্লেমেশন’ বলা হয়। তাই তারা ‘মাইক্রোগ্লিয়া’ নামক অনাক্রম্য বা ইমিউন কোষগুলির দিকে তাকিয়েছিল যেগুলি অ্যালঝাইমার্সের চিকিৎসার বিকাশের জন্য আরও ভালো এবং বতর্মানে এই রোগের গবেষণায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা শেষ পর্যন্ত এই ‘হাইপোথিসিস’টি বাতিল করে দিয়েছিলেন। কারণ, মাইক্রোগ্লিয়া ইঁদুরের মধ্যে কত দ্রুত অভিযোজিত হয়েছিল, তার ওপর কোনও প্রভাব ফেলে না। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা আরেকটি সম্ভাব্য অপরাধীকেও বাতিল করেছেন, সেটি হল ‘মিউট্যান্ট টাউ’। ‘মিউট্যান্ট টাউ’ হল একটি অস্বাভাবিক প্রোটিন, যা অ্যালঝাইমার্সের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে জট তৈরি করে। এই জটগুলির উপস্থিতিও ইঁদুরের কীভাবে অভিযোজিত হয়েছিল তাতে কোনও পার্থক্য দেখা যায়নি।