রবিবার ২ জুন, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পুণের হাসপাতালের নিয়নেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিইউ) ১৬৪২ জন নবজাতক ভর্তি ছিল। গবেষকরা এদের মধ্যে পালমোনারি হাইপারটেনশন (পিপিএইচএন) এ আক্রান্ত ৩১ জন নবজাতকের ওপর এই গবেষণাটি চালিয়ে ছিলেন।

নবজাতকদের গুরুতর পালমোনারি হাইপারটেনশন, যা একটি মারাত্মক রোগ। নবজাতকদের ক্ষেত্রে তার রেসকিউ থেরাপি হিসেবে ভেসোপ্রেসিন-এর ব্যবহার এক যুগান্তকারী চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে পুণের হাসপাতালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে। ভেসোপ্রেসিন হল একটি হরমোন, যা রক্তনালীকে সংকুচিত করে রক্তচাপ বাড়াতে পারে।
পুনের সূর্য মাদার অ্যান্ড চাইল্ড সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নবজাতক এবং শিশু বিভাগের অধ্যক্ষ এবং গবেষক দলের প্রধান ডাঃ সচিন শাহ’র মতে পালমোনারি হাইপারটেনশন হল একটি বিরল এবং প্রাণঘাতী অবস্থা। নবজাতকের মধ্যে প্রতি ৫০০ জনের মধ্যে একজনের ঘটে। এই গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি ‘আমেরিকান জার্নাল অফ পেরিনেটোলজি’তে প্রকাশিত হয়েছে। ভবিষ্যত এই গবেষণা দিশা দেখাতে পারে। শুধু তাই নয়, ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসে নবজাতকদের চিকিৎসা করতে সাহায্য করবে। তবে ডাঃ শাহ জানিয়েছেন, সাধারণ নবজাতকদের মধ্যে এই চিকিৎসার ফলাফল লক্ষ্য করার জন্য আরও উন্নত মূল্যায়ন ও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
আরও পড়ুন:

প্রসঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান: তিনজনের ডিএনএ নিয়ে জন্মাল শিশু, সুদূর প্রসারী দিশা দেখাতে পারে বিজ্ঞানীদের এই সাফল্য

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-২৩: বায়োপসি মানেই ক্যানসার?

 

পিপিএইচএন কী?

নবজাতকদের জন্মের পর ফুসফুসের রক্তনালীগুলি প্রসারিত হতে ব্যর্থ হলে অক্সিজেনের মাত্রা কম হয়। সেই সঙ্গে ফুসফুসের ধমনীতে রক্তে চাপ খুব বেশি থাকে। এই অবস্থাকে পিপিএইচএন বা পালমোনারি হাইপারটেনশন বলা হয়। পিপিএইচএন চিকিৎসার প্রধান লক্ষ্য, গুরুতর জটিলতা প্রতিরোধ করে শিশুর অঙ্গে অক্সিজেন প্রবাহ বৃদ্ধি করা। পিপিএইচএন-এ আক্রান্ত নবজাতকদের ক্ষেত্রে যখন অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি কাজ করতে অসফল হয়, তখন ভ্যাসোপ্রেসিন একটি রেসকিউ থেরাপি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নবজাতকদের অক্সিজেনেশন এবং রক্তচাপ উন্নত করতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন:

লাইট সাউন্ড ক্যামেরা অ্যাকশন, পর্ব-১: কেবলই দৃশ্যের জন্ম হয়…

ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-১: আমি ‘কেবলই’ স্বপন…

২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ওই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১৬৪২ জন নবজাতকদের থেকে পিপিএইচএন-এ আক্রান্ত ৩১ জনের ওপর এই গবেষণাটি চালানো হয়। এর মধ্যে ২৯ জন নবজাতকের ক্ষেত্রে ভ্যাসোপ্রেসিনের ব্যবহারের ফলে ৬ ঘণ্টার মধ্যে অক্সিজেনের মাত্রার উন্নতি হয়। ডাঃ শাহ জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গিয়েছে পিপিএইচএন-এ আক্রান্ত প্রায় ৩০ শতাংশ শিশু ইনহেল্ড নাইট্রিক অক্সাইড (আইএনও) এবং উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি অসিলেটরি ভেন্টিলেশন (এইচএফওভি) এর মতো স্ট্যান্ডার্ড চিকিৎসাগুলিতে খুব একটা সাড়া দেয় না।
আরও পড়ুন:

অজানার সন্ধানে: পাচার হয়েছিল টন টন সোনা ও দামি ধাতু! ৮৫ বছরের সেই ভূতুড়ে রেলস্টেশন এখন অভিজাত হোটেল

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৬৫: গায়ের জামা হাওয়ায় উড়বে বলে দেহের সঙ্গে ফিতে দিয়ে বেঁধে রাখতেন

রোগীর সামগ্রিক মৃত্যুর হার ১১.৮ শতাংশ থেকে ৩৬.৪ শতাংশ পর্যন্ত, যা হাসপাতালের পরিকাঠামো ও গুণগত মান এবং ক্লিনিকাল যত্নের উপর নির্ভর করে। তবে বিভিন্ন জায়গায় মৃত্যুর এই হারের পরিবর্তন হতে পারে। পুনের হাসপাতালে পরিকাঠামো এবং ডাক্তারদের ও কর্মীদের ক্লিনিক্যাল দক্ষতার জন্যই এই গবেষণা সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করেছে বলে ডাঃ সচিন শাহ।
* প্রসঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান (health-science): ড. দোলন দাস, (Dolan Das) শারীরবিদ্যার অধ্যাপিকা, কল্যাণী মহাবিদ্যালয়।

Skip to content