শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


নিশীথ রাতের নীরবতা,
বা প্রত্যুষের নির্জনতা,
বলতে পারবে কার বেশি গভীরতা?

প্রভাতের সূর্য,
নাকি পূর্ণিমা রাতের চাঁদ,
বলো দেখি কে পারবে ভাঙতে
সব সৌন্দর্যের বাঁধ?

বৃষ্টিস্নাত পাহাড়ি অরণ্য,
কিংবা পলাশে রাঙানো জঙ্গল ঘন,
কার বলো তো বেশি লাবণ্য?

উদ্যাম সে চঞ্চল ঝর্না,
নাকি নিষ্পাপ পাহাড়িয়া চপল কন্যা,
হৃদয়ে তোমার কে বেশি বয় বন্যা?

কোনও এক গাঁয়ের বধূর নকশিকাঁথা,
বা হঠাৎ খুঁজে পাওয়া তোমার ডায়েরির ছেঁড়া পাতা,
কে থাকবে বলো তো বেশি তোমার হৃদয়ে গাঁথা?

ভেসে আসা ভোরের সুরেলা আজান,
নাকি মধুর প্রভাতি কীর্তন গান,
বলতে পারো কোনটি বেশি
প্রভুর প্রতি মায়াবী দরদের গান?

শরতে ঝরে পড়া শিউলি ফুল,
কিংবা প্রিয়ার চুলের খোঁপায় বকুল,
কাকে একবার ছুঁতে তুমি বেশি হচ্ছ ব্যাকুল?

শতবার ভেবেও এসবের উত্তর খোঁজা
প্রায় যেখানে অসম্ভব রকম দায়,
সেখানে কোন সাহসে মানুষ খুঁজতে চায়
অবদানের মাপকাঠিতে নারী পুরুষ কে বেশি যায়?
মাতৃজঠর করতে শেখেনি লিঙ্গ ভেদ,
সে যে আমাদের মূঢ়তা
বা বলা ভালো ভীষণ ধৃষ্টতা,
হয়ে শির বারবার নত,
তবুও যুগযুগান্ত ব্যর্থ চেষ্টায় থেকেছি আমরা রত,
ভাঙব কিনা তাদের!!!
চিরদিনের তরে যারা অভেদ…

আবার আর একটা নারী দিবস পালন হবে আজ৷ একটা দিবস জুড়ে তোলপাড় হবে নারীদের গুণকীর্তনে, আবার কোথাও বা নারীকে মহান দেখানোর চেষ্টায় শুধুই পুরুষ বিদ্বেষ৷ কিন্তু একটা দিবসই কি যথেষ্ট নারীদের সম্মানিত করার জন্য? তাদের অবদান কি এতটাই ঠুনকো যে যৎসামান্য এটুকু করলেই সব ঋণ শোধ হয়ে যাবে? এই ঋণ তো সভ্যতার শেষ দিন পর্যন্ত অপরিশোধ্য, ঠিক যেমনটি পুরুষের ঋণও৷ মানব সভ্যতার প্রতিটি সোপানেই যে নারী পুরুষ মিলেমিশে একাকার, অভেদ…কেন তবে এই ব্যর্থ প্রয়াস?
কবি নজরুলই বলে গিয়েছিলেন নারী পুরুষ সম্পর্কের আসল
নির্যাস—
“বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।…”

তাই বরং বিভেদ নয়, পারস্পরিক শ্রদ্ধাশীল হতে শিক্ষা দিই শিশুকাল থেকে। তবেই পুরো মানবজাতির সামগ্রিক মঙ্গল৷

ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।

Skip to content